আমি সহজ সরল মানুষ। সহজ সরল জীবনযাপন করি। আমার জীবন আনন্দময়। জটিলতা কুটিলতা আমার মোটেও পছন্দ নয়। খুব স্বল্প সময় নিয়ে মানুষ দুনিয়াতে আসে। তাই ঝগড়া বিবাদ না করাই উত্তম। মানুষের জীবন হবে আনন্দময়। বুদ্ধিমান মানুষেরা যত পারে দুনিয়ার মজা, রুপ, রস আনন্দ ভোগ করে নেয়। দরিদ্র দেশে এবং দরিদ্র পরিবারে জন্ম গ্রহনটা যেন একটা অভিশাপ। আমাদে আশেপাশে ভারত, বাংলাদেশে আর পাকিস্তান হলো দরিদ্র দেশ। এসব দেশের রাজনীতিবিদরা হয় অসৎ। এজন্য জনগনের ভোগান্তির শেষ। আমাদের চেয়েও দরিদ্র দেশ তাদের জ্ঞান আর পরিশ্রম দিয়ে আজকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে।
আমি যে ধরনের জীবন চেয়েছিলাম- সেরকম জীবন পাইনি। আসলে বেশির ভাগ মানুষই তার মনের মতোন করে জীবনযাপন করতে পারে না। আমি চেয়েছিলাম দেশের সেরা কোম্পানীতে বড় পদে কাজ করবো। অফিস থেকে আমাকে গাড়ি দিবে, ড্রাইভার দিবে। তিন হাজার স্কয়ার ফিটের ফ্লাট দিবে। আমার সেলারি হবে ৬ লাখ টাকা। অন্যান্য সুবিধা বাদে। অফিসে আমার রুমটা হবে অনেক বড়। আমার ব্যাক্তিগত পিয়ন থাকবে দুইজন। পিয়ন দুইজনকে অবশ্যই বুদ্ধিমান হতে হবে। অফিসে আমার কাজ থাকবে শুধু ফাইলে সই করে দেওয়া। অফিসে কোনো পলিটিক্স থাকবে না। বদমাশ লোক থাকবে না।
প্রতিমাসে আমি পরিবার নিয়ে দেশের বাইরে বেড়াতে যাবো। খরচ বহন করবে অফিস। অফিসের কাজে ঢাকার বাইরে গেলে হেলিকাপ্টার দিতে হবে। আমার একটা নিজস্ব লাইব্রেরী থাকবে। লাইব্রেরীতে থাকবে আমার পছন্দ মতো বই। কেদারায় আরাম করে শুয়ে বসে আমি বই পড়বো। লাইব্রেরীতে অবশ্যই এসি থাকতে হবে। যখন আমি বই পড়বো এক ঘন্টা পর-পর আমাকে দুধ চা দিতে হবে। চা আমি চাইতে পারবো না। ঠিক এক ঘন্টা পর যেন হাত বাড়ালেই যেন চা পাই। বই পড়ার সময় আমাকে একেবারেই বিরক্ত করা যাবে না। আমি সমাজের লোকজনদের বুঝাবো তোমরা বই পড়ো, জ্ঞান আহোরন করো। কারো মুখ থেকে কিছু শুনো না। এমনকি নির্বোধ ওয়াজকারীদের মুখ থেকে রুপকথার গল্প গুলো বিশ্বাস করো না।
আমি লিখব। আমাকে লিখে যেতে হবে। কারন আমি বিশ্বাস করি লিখে লিখে সমাজ বদলে দেওয়া সম্ভব। আমি দুষ্টলোকদের বিরুদ্ধে লিখব। অসৎ ব্যবসায়ীদের কথা লিখব, দূর্নীতিবাজ মন্ত্রীদের কথা লিখব, দালাল আর চাটুকারদের বিরুদ্ধে লিখব। মন্ত্রী-এমপিদের ছত্রছায়ায় থেকে যারা মন্দ কাজ করছে তাদের কথা লিখব। এমন কি সমাজে যারা লিখে লিখে ক্রাইম করছে, তাদের বিরুদ্ধে লিখব। যারা মানুষের ঊপর অন্যায় করছে তাদের বিরুদ্ধে লিখব। মোটকথা সমাজে যারা অসৎ ও অন্যায় কর্ম করছে, দেশের ক্ষতি করছে তাদের বিরুদ্ধে আমি লিখব। লেখালেখির মধ্যে একটা অকৃত্রিম আনন্দ আছে। তবে যন্ত্রনাও কম নয়।
সমাজের অসহায় মানুষদের জন্য আমি ভালো কিছু করবো। যেসব কিশোর কিশোরী শিক্ষা থেকে দূরে আছে, তাদের লেখাপড়ার ব্যবস্থা করবো। যাদের থাকার জায়গা নেই, রাস্তায় থাকে- তাদের থাকার ব্যবস্থা করবো। যারা টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছে না, তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করবো। যারা মানুষকে ঠকায়, মানুষের সাথে প্রতারণা করে তাদের থাপ্পড় দিবো। যারা ভালোর মুখোশ পড়ে থাকে, তাদের মুখোশ খুলে ফেলব। সোজা কথা আমার দুনিয়া হবে সহজ সরল সুন্দর। আমি আমার আশে পাশে কোনো খারাপ মানুষ রাখবো না। নব্য ধনীদের প্রেস ক্লাবের সামনে লাইন ধরে দাঁড় করিয়ে চাবুক দিয়ে মারবো। এবং সরকার কেন নব্য ধনীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এজন্য সরকারকে অবশ্যই জবাবদিহিতা করতে হবে।
আমাদের মসজিদ, মন্দির আর গির্জা দরকার নাই। এগুলো মানুষদের সুপথে আনতে পারে না। একমাত্র শিক্ষা এবং সঠিক শিক্ষা, জ্ঞান মানুষকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে পারে। ধর্ম পালন করে কিছু পাওয়া যায় না। ধর্ম মানুষকে কিছু দেয় না। মানুষের জীবনের সবচেয়ে বড় সম্পদ জ্ঞান। জ্ঞান দিয়ে দেশ সমাজ বদলে ফেলা যায়। ধর্ম দিয়ে নয়। বিজ্ঞান যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তাতে অবশ্য ধর্ম কোনঠাসা হয়ে পড়েছে। মানুষ যত এগিয়ে যাবে ধর্ম তত পিছিয়ে পড়বে। এভাবে একদিন ধর্ম দুনিয়া থেকে হারিয়ে যাবে। মানুষ আফিম মুক্ত হবে। মানুষের মনে যে কুসংস্কার গুলো লুকিয়ে আছে সেগুলো বের করতে হবে। কুসংস্কার দূর করার ওষুধ হচ্ছে জ্ঞান।
আমি সব মানুষকে নিয়ে ভালো থাকতে চাই। সমাজের দুষ্টদের আমি ভালো করবো। দুষ্টরাতো আর মায়ের পেটে থাকতে দুষ্ট হয়নি। দুনিয়াতে এসেই দুষ্ট হয়েছে। তাদের ভালো হওয়ার সুযোগ দিতে হবে। সুযোগ পেলে মন্দ লোকেরাও ভালো হতে পারে। আমি বিশ্বাস করতে চাই- কোনো মানুষই জেনে শুনে মন্দ কাজ করে না। যে লোকটা গাছ কাটার ব্যবসা করে তারও নিশ্চয়ই গাছের প্রতি মায়া রয়েছে। মানুষের জীবনে সসবচেয়ে বড় অস্ত্রই হচ্ছে ভালোবাসা। এই ভালোবাসা দিয়ে পৃথিবীটাকে সুন্দর করে সাজানো সম্ভব।