আমি মানুষজনের কাছ থেকে তাদের ভূতের গল্প গুলো মন দিয়ে শুনি। তারপর নিজে নিজে তাদের গল্পের ব্যখ্যা খুঁজে বের করি। কিন্তু এই ব্যাখ্যা নিয়ে তাদের সাথে আলোচনা করি না। কারন সে ভূত নিয়েই থাকতে চায়। ব্যাখ্যা চায় না। এক জীবনে সে লক্ষ কোটিবার এই গল্প জনে জনে বলে বেড়াবে। মানুষের চরিত্র এরকমই। সে ভুল বিশ্বাস নিয়ে থাকতে চায়। যারা জীবনে সঠিক শিক্ষা পায়নি তাঁরা এইসব ভূত তূত আর কুসংস্কার বেশি বিশ্বাস করে। এজ্জন্য মানুষকে পড়তে হবে। প্রচুর পড়াশোনা করতে হবে।
ভূত বলতে দুনিয়াতে কিছু নেই। এগুলো কুসংস্কার। কিছু মানুষ আজন্ম ভয় পেতে ভালোবাসে। তাদের মনের কোনো ঘুপটি মেরে আছে ভয়। গাছ থেকে একটা পাতা খসে পড়লেও তাঁরা ভয় পায়। রাতের বেলা টিনের চালে শব্দ শুনলেও এরা ভয়ে কাঁপে। ভাবে কোনো অশরীরি বোধহয়। কিন্তু তাঁরা মাথা খাটায় না। লজিক ব্যবহার করে না। এই শ্রেনীর মানুষের লজিক অত্যন্ত দুর্বল। যে জিনিস দুনিয়াতে নাই সেটা দেখা যাওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না। মাথাটা কাজে লাগাও। দেখবে সমস্ত ভুল জীবন থেকে দূরে চলে যাবে।
পৃথিবীর সব মানুষের জীবনে ভূতের অভিজ্ঞতা আছে। ধরুন, আমার মা বা বাবা আমাকে একটা ভূতের গল্প বলল। তাদের জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে। তখন সন্তান হিসেবে আমি ভাববো- আমার বাবা মা যখন ভূত দেখেছে তাহলে নিশ্চয়ই ভূত আছে। বাবা মা তো আর মিথ্যা বলবেন না। এমন কি দাদা, দাদী, চাচা, মামা এরাও ভূতের গল্প বলে। এভাবেই ছোটবেলা থেকেই আমাদের মাথায় ভূত চেপে বসে। এবং আমৃত্যু ভূত বিশ্বাস নিয়েই জীবনযাপন করতে হয়। এজন্য বাবা আমাদের উচিৎ ছেলেমেয়েকে সঠিক গল্প বলা। সত্য গল্প বলা।
আমার নিজেরও ভূত দেখার অভিজ্ঞতা আছে। গ্রামে, শহরে, মধ্যদুপুরে, খালি বাসায়। কিন্তু আমি একজন আধুনিক এবং সচেতন মানুষ হিসেবে লজিক ব্যবহার করে বুঝেছি এগুলো ভূত নয়। আমার দেখা ঘটনা গুলোর ব্যাখ্যা আছে। যারা ভূত দেখেছেন, তাদের ঘটনা গুলোর সুন্দর ও সহজ ব্যখ্যা আছে। কিন্তু বেশির ভাগ লোকজনই ব্যাখা খুঁজে না। তাঁরা ভুল বিশ্বাস নিয়েই থাকতেই ভালোবাসে। এদের কে সুন্দর ব্যখ্যা দেওয়া হলেও এরা বিশ্বাস করবে না। তাঁরা ভুল বিশ্বাসকেই আকড়ে ধরে। এই সুযোগে দুষ্টলোকেরা নানানা রকম ভূতের গল্প ফাঁদে।
যারা ভূত বিশ্বাস করেন। বা দাবী করেন নিজের জীবনে ভূতের ঘটনা ঘটেছে- তাঁরা মূলত বেশির ভাগ ঘটনাই বানিয়ে বানিয়ে বলেন। সত্য মিথ্যা মিশিয়ে বলেন। এটা মানুষের স্বাভাবিক স্বভাব। আর গল্প গুলো এক মুখ থেকে আরেক মুখে গেলে- ডাল পালা বাড়তে থাকে। শাখা প্রশাখা গজাতে থাকে। যাইহোক, ভূত মানুষের কোনো ক্ষতি করে না। অশরীরি যদি কিছু থেকেও থাকে, সে গুলো মানুষের ক্ষতি বা ভালো করার ক্ষমতা নেই। মানুষই মানুষের ক্ষতি করে। ভূত থাক বা না থাক, মানুষ ভূতের ভয় পেতে মানুষ ভালোবাসে। এজন্যই ভূতের মুভি গুলো বেশ জনপ্রিয়। ভূত নিয়ে আজও গল্প উপন্যাস লেখা হয়। আমি নিজেও লিখেছি।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে আগস্ট, ২০২২ দুপুর ১:০১