somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

কিশোর বয়সের ডায়েরী

৩০ শে জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ১:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



শাহেদ তার পুরনো ডায়েরী হাতে নিয়েছে।
এক পৃষ্ঠাতে লেখা- ছোটবেলায় একবার পদ্মানদীতে ডুবে গেলাম। হারিয়ে গেলাম। মরে গেলাম। ভাসতে ভাসতে দূরে কোথাও চলে গেলাম। নদী থেকে মৃত আমাকে তোলা হলো। লোকজন ভিড় করে আমাকে দেখতে থাকলো। তখন একজন সাধুবাবা এলেন। চুলে জট। হাতে লাঠি। আঙুলে অনেক গুলো আংটি। তিনি আমার বুকে মাথায় হাত বুলিয়ে দিতেই আমি উঠে বসেছিলাম। কিন্তু এরকম ঘটনা তার জীবনে ঘটেছে বলে তার মনে পড়ছে না। যদি এই ঘটনা তার জীবনে না ঘটেই থাকে তাহলে শাহেদ তার ডায়েরীতে এটা লিখেছে কেন? সে কি মিথ্যা লিখেছে। কিন্তু মানুষ তো ডায়েরীতে সাধারণত মিথ্যা কথা লেখে না।

শাহেদ পরের পাতায় গেলো।
সেখানে লেখা নীলা নামে একটি মেয়ের কথা। হ্যাঁ নীলাকে তার মনে আছে। দেখতে খুব সুন্দর ছিলো। বড় বড় চোখ। ঠোঁটে সারাক্ষণ হাসি লেগেই থাকতো। ভরাট বক্ষ। মেদহীন কোমর। মাথা ভরতি চুল। একবার নীলা আর শাহেদ সারারাত একসাথে ছিলো। নীলা শাহেদকে বুকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়েছিলো। তখন শাহেদের বয়স অল্প। আর নীলা অনেক বড়। কিন্তু শাহেদ কখনও নীলাকে আন্টি বলে ডাকেনি। নাম ধরে ডাকতো- নীলা। এই নীলা! নীলা বলতো, হ্যাঁ আমাকে নাম ধরেই ডাকো। শুনতে ভালো লাগে। সেই সময় শাহেদের কচি বয়স। আর নীলা একদম যুবতী। শাহেদ তখন সবে মাত্র স্কুলে পড়ে। শাহেদ লুকিয়ে লুকিয়ে মুগ্ধ চোখে নীলার দিকে তাকিয়ে থাকতো। কচি বয়সের প্রেম তো এরকমই হয়।

নীলা শাহেদকে যখন তখন ঝাপটে ধরতো।
শাহেদের কান গরম হয়ে যেতো। কিন্তু বড় ভাল লাগতো। নীলার শরীরে কি সুন্দর গন্ধ! শাহেদ জানতো না নীলার অতীত ইতিহাস। কে তার স্বামী। কে তার বাবা মা। অথবা কে তার প্রেমিক। অবশ্য তখন শাহেদের তেরো বয়র বয়স। এই বয়সে জ্ঞান বুদ্ধি পরিপক্কতা পায় না। অন্যদিকে নীলার বয়স ছিলো শাহেদের ডবল। শাহেদ মনে মনে নীলাকে নিজের প্রেমিকা মনে করতো। রাতে গভীর গোপনে সে নীলাকে মনে মনে আদর করতো। নীলার বুকে মাথা রাখত। নিজের মুখ ঘসতো। এই রকম ভাবনা চিন্তা সেই অল্প বয়সে অন্যরকম বোধ জাগাতো শরীরে-মনে। ডায়েরী লেখার কারনেই নীলা আজও মনোমুগ্ধকর সৃতি হয়ে রয়েছে।

একবার নীলা কি যেন একটা বিপদে পড়েছিলো।
তাই কিছু দিন শাহেদদের বাসায় থাকতে এসেছিলো। একদিন বিকেলে নীলা শাহেদকে নিয়ে পার্কে যায়। সেখানে এক যুবক নীলার সাথে দেখা করতে এলো। যুবককে দেখেই শাহেদের মেজাজ খারাপ হলে গেলো। যুবক ঠিক করে সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারে না। চুল এলোমেলো। দেখতে ভাল নয়। শার্টের বোতাম খোলা। নীলা বলল, শাহেদ তুমি যাও খেলা করো। আমি সুমনের সাথে কিছুক্ষন কথা বলি। এই সামান্য কথাতে শাহেদ দারুন অপমান বোধ করে। তার চোখে প্রায় পানি এসে গেলো। শাহেদ নীলাকে ভালোবাসে। ভালোবাসার মানুষ যদি চোখের সামনে অন্য লোকের সাথে কথা কয়, তখন কেমন লাগে! শাহেদের বুক মুচড়ে মুচড়ে গেলো।

একদিন বাবা মা দুজনেই বেড়াতে গেলো।
তাঁরা শাহেদকে সাথে করে নিয়ে গেলো না। নীলাকে বলে গেলো- যেন শাহেদকে যথাসময়ে খাবার দেওয়া হয়। পড়তে বসার কথা মনে করিয়ে দেওয়া হয়। বাসায় কেউ নেই! শুধু শাহেদ আর নীলা। শাহেদের মনে হচ্ছে আজ অন্যরকম কিছু একটা হবে। অন্য রকম কিছু একটা ঘটবে। কারন আজ সকালে শাহেদ দুটা শালিক পাখি দেখছে। দুপুর থেকেই আকাশে মেঘ জমতে শুরু করেছিলো। বিকেলে শুরু হলো ঝুম বৃষ্টি। কঠিন বৃষ্টি। এই বৃষ্টিতে ভিজে সেই যুবক বাসায় এলো। যে যুবক সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারে না। শার্টের বোতাম খোলা। চুল এলোমেলো। নীলা যুবককে ঘরের মধ্যে নিয়ে দরজা বন্ধ করে দিলো। সেদিন শাহেদ খুব কষ্ট পেয়েছিলো। তার ইচ্ছা করছিলো দূরে কোথাও পালিয়ে যেতে।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ১:৩৪
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছবিতে গণতন্ত্রের নামে মবতন্ত্র

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১০



তথাকথিত গণতন্ত্রকামীদের পীর আল্লামা পিনাকী এবং ছোট হুজুর ইলিয়াস মোল্লার উস্কানীতে দেশজুড়ে চলছে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নামে মবতন্ত্র। আল্লামা পিংকুর যুক্তি হচ্ছে- যে বা যারাই তাদের (গণতন্ত্রকামীদের) সূরে কথা না... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় আগ্রাসনবিরোধী বিপ্লবীর মৃত্যু নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৭



শরিফ ওসমান হাদি। তার হাদির অবশ্য মৃত্যুভয় ছিল না। তিনি বিভিন্ন সভা-সমাবেশ, আলোচনা ও সাক্ষাৎকারে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি অনেকবার তার অস্বাভাবিক মৃত্যুর কথা বলেছেন। আওয়ামী ফ্যাসিবাদ ও ভারতবিরোধী... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ডায়েরী- ১৭৩

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৩৪



গত কয়েকদিন আমি চিনি ছাড়া চা খাচ্ছি।
সারাদিনে মাত্র দুই কাপ চা। আগে চা খেতাম কমপক্ষে ৮ থেকে দশ কাপ। সবচেয়ে বড় কথা চা যেমন-তেমন, সিগারেট খাচ্ছি না।... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাকিস্তান ও চীন কি ভারত-বাংলাদেশ যুদ্ধ বাধাতে চায়?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:৩১



ভারত-বাংলাদেশ যুদ্ধে পাকিস্তান ও চীনের লাভ আছে। যুদ্ধে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্থ্য হলে ভারত বিরোধীতায় তারা সহজে বাংলাদেশীদের তাদের পাশে পাবে। বাংলাদেশের নিরাপত্তার অযুহাতে এখানে তারা সামরিক ঘাটি স্থাপনের সুবিধার... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রচুর ব্লগিং করুন, কিন্তু......

লিখেছেন জটিল ভাই, ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৫৯

♦أَعُوْذُ بِاللهِ مِنَ الشِّيْطَانِ الرَّجِيْمِ (বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহ্'র নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি)
♦بِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ (পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহ্'র নামে)
♦ٱلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ (আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক)


(ছবি নেট হতে)

তা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×