আপনাদের সমস্যা আমি বুঝি না।
আপনারা সব কিছুতেই ইসলামকে টেনে আনেন কেন? আমাদের দেশ কি ইসলামের নিয়মে চলে? দেশ চলে সংবিধান অনুযায়ী। এই সমাজের কেউ ইসলামের নিয়ম পুরোপুরি মেনে চলে না। সৌদি আরবের লোকজন না। সামান্য গোছলের ব্যাপারে ইসলামকে টেনে আনার কারন কি? আপনি কি জীবনে ১০০% ইসলামের নিয়মে চলেন? ইসলামের নিয়মে কেউই পুরোপুরি চলতে পারে না। চলে না। মসজিদের ইমাম সাহেবও না। নবীজির আমল আর এই আমল এক না। সব কিছু বদলে গেছে। শুনুন, গোঁড়ামি বাদ দিন। কুসংস্কার বাদ দিন। উন্নত ও আধুনিক জীবনযাপন করুণ। সহজ সরল জীবনযাপন করুণ।
মানুষ গোসল কেন করে?
পরিস্কার পরিচ্ছন্ন হওয়ার জন্য। যদি জামা কাপড় পড়ে গোছল করেন তাহলে আপনার শরীর পুরোপুরি পরিস্কার হবে না। মূলত গোছল করার নিয়ম উলঙ্গ হয়েই। আপনি তো আর পুকুরে বা নদীর পাড়ে গোছল করবেন না। আপনি গোছল করবেন আপনার বাথরুমে। সেখানে আপনি উলঙ্গ হলে সমস্যা কি? কেউ তো আপনাকে দেখবে না। ইসলাম অনেক কথাই বলে। সেসব কথা বেশির লোকজনই মানে না। সহজ সরল সত্য কথা হলো- এই যুগের মানুষেরা ইসলাম নিয়ে চিন্তিত নয়। তারা বিজ্ঞানের দাস হয়ে গেছে। মোবাইল ছাড়া, ইন্টারনেট ছাড়া এযুগের মানুষ চলতেই পারবে না। কোরআন বা নবীজি বলেছেন কোথাও তোমরা মোবাইল ব্যবহার করো, ইন্টারনেট ব্যবহার করো। অথচ আপনি তো ব্যবহার করছেন? এটা কতটকু সিদ্ধ?
ইসলামের কথায় দেশ চলে না।
ইসলামের নিয়ম কানুন কেউই পুরোপুরি মেনে চলে না। তুচ্ছ বিষয় নিয়ে চিন্তা করা বোকামি। ইসলামের নিয়ম যদি মানতেই হয়- তাহলে মানুষকে সাহায্য করুণ। দরিদ্রকে খাওয়ার ব্যবস্থা করে দিন। অসুস্থকে চিকিৎসা করিয়ে দেন। দরিদ্র পিতা মাতার সন্তানকে স্কুলে ভরতি করিয়ে দেন। তাদের লেখাপড়ার খরচ দেন। বেকারদের চাকরির ব্যবস্থা করে দেন। ইসলাম তো এসব করতে বলেছে, এসব করে দেখান। এসব না করে আপনি এসেছেন উলঙ্গ হয়ে গোছল করা যাবে কিনা জানতে। যা দিয়ে দেশ বা সমাজের কোনো উপকার হবে না। এমন কিছু করুণ, এমন কিছু ভাবুন যা দিয়ে মানুষের উপরকার হবে, মঙ্গল হবে। আপনি উলঙ্গ হয়ে গোছল করলে অথবা জামা কাপড় পড়ে গোছল করলে কারো কিছুই যাবে আসবে না। কাজেই এসব ফালতু চিন্তা বাদ দিন। মানুষ হয়ে জন্মেছেন, পারলে মানুষের জন্য কিছু করুণ।
যদি ইসলামের নিয়ম মানতেই হয়-
তাহলে আপনি উলঙ্গ হয়ে গোছল করতে পারবেন না। এমনকি সহবাস করার সময় পুরোপুরি উলঙ্গ হতে পারবেন না। এখন পৃথিবী অনেক উন্নত। ১৪শ' বছর আগের নিয়ম কানুন এখন মেনে চলা সম্ভব না। আর মেনে চলাও বোকামি হবে। যখন কোরআন দুনিয়ায় এলো। তখন কি ল্যাপটপ ছিলো? ইন্টারনেট ছিলো? উড়োজাহাজ ছিলো? মোবাইল ফোন ছিলো? তাহলে এই আধুনিক যুগে এসে আপনি এসব ব্যবহার করছেন কেন? অর্থ্যাত যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে গেলে আপনার ইসলাম থেকে দূরে থাকতে হবে। একসাথে তো দুই নৌকায় পা দিতে পারবেন না। যান নামাজ পড়ুন। নামাজ পড়তে পড়তে কপালে স্থায়ী কালো দাগ করে ফেলুন। এটা সহজ। কিন্তু মানুষের উপকার করা সহজ নয়। সবাই পারে না। সেই মন, সেই কলিজা সবার হয় না। সবাই পারে না। পুরো কোরআন মুখস্ত করে ফেলা সম্ভব। কিন্তু একজন দরিদ্র পরিবারকে আয়ের পথ করে দেওয়া সম্ভব নয়।
দেখুন নবীজির আমলের একটা ঘটনা বলি-
এক লোকের মাথায় উকুন হয়েছে। সে সারাক্ষণ তার মাথা চুলকাতেই থাকে। শেষে সে বাধ্য হয়ে নবীজির কাছে গেলো। বলল, হুজুর আমার মাথায় উকুন হয়েছে। খুব যন্ত্রনা। কি করি বলেন। তখন নবীজি বললেন, রোজা রাখো। বরকি কোরবানী দাও। চুল ফেলে দাও। এই যুগে কারো মাথায় উকুন হলে কেউ বলবে রোজা রাখো? চুল ফেলে দাও? বরকি কোরবানী দাও? এখন এমন সেম্পু আছে, মাথায় দিলেই উকুন নাই হয়ে যায়। তাহলে নবীজি এমন কথা বললেন কেন? কারন নবীজির সময়ে জ্ঞান বিজ্ঞান উন্নত ছিলো না। এখন আপনিই ঠিক করুণ, ১৪শ' বছর আগের নিয়ম মতো চলবেন? না আধুনিক জীবনযপন করবেন? উপরের লেখাটুকু পড়ে আমাকে নিশ্চয়ই মনে মনে গালাগালি করছেন? নাস্তিক ভাবছেন। ভাবুন, যা খুশি ভাবুন।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই মার্চ, ২০২৩ বিকাল ৩:১৫