
গ্রাম কি সুন্দর। মাটি আছে। মাঠ আছে।
বিশাল আকাশ আছে। পুকুর আছে। তবু মানুষ গ্রাম ছেড়ে শহরে চলে আসে। একসময় প্রতিটা গ্রাম ছিলো স্বনির্ভর ও স্বয়ংসম্পূর্ণ। গ্রামে দারিদ্রতা থাকলেও লোকজনের মধ্যে আনন্দ ও ভালোবাসা ছিলো। কামার, কুমোর, তাতি, জোলা, জেলে, ওঝা, চাষা, কবিরাজ সব ছিলো গ্রামে। ইংরেজরা এসেই গ্রাম গুলো নষ্ট করে দিলো। লোভ খুব খারাপ একটা ব্যাপার। রাস্তাঘাট করলো, কলকারখানা করলো, ব্রীজ তৈরি করলো, পাকা দালান করলো। গ্রামকে নিঃস্ব করে দিলো। কাপড় তৈরি হয় মেশিনে, তাতিরা ক্ষতি গ্রস্ত হলো। বিদেশ থেকে আসতে শুরু করলো সকল পন্য। দেশের পন্য মার খেতে শুরু করলো। অর্থনীতির প্যাচে পড়লো গ্রাম গুলো। গ্রাম গ্রামই থাক। গ্রামকে শহর করার কোনো দরকার ছিলো না। দিন শেষে মানুষই ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
গ্রামের মানুষ চাইলে তাদের হারানো অতীত ফিরিয়ে আনতে পারে।
ইংরেজরা শেষ করে দিয়ে গেলো আমাদের। যতটুকু অবশিষ্ট ছিলো সেটা কেড়ে নিলো দেশভাগ। ফলাফল আমাদের মানুষ, আমাদের পরিবেশ সমস্ত কিছু দুষিত করে দিয়ে গেলো। গরীবের অনেক কষ্ট। তাই গরীবেরাই ভালো থাকে। যারা প্রতিদিন ভালো ভালো খাবার খায়, তারা খাবারের স্বাদ পায় না। আগামী ৬০ বছরের মধ্যে পৃথিবীতে গজব নেমে আসবে। ভূমিকম্প হবে, বরফ গলে যাবে, নীচু দেশ গুলো তলিয়ে যাবে, তাপমাত্রা অনেক বেড়ে যাবে। ফলাফল প্রাকৃতিক দুর্যোগ। পৃথিবীর জনসংখ্যা অর্ধেক কমে যাবে। এজন্য অবশ্য মানুষই দায়ী। পৃথিবী জন্মের পর মানুষ শুধু পৃথিবীর ক্ষতিই করে গেছে, যত্ন নেয়নি। কলকারখানা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি হয়ে গেছে। নদী অনেক বড় সম্পদ। আজ নদীতে মাছ নেই। গাছ নেই। বনজঙ্গল সব উজাড় করে ফেলেছে মানুষ।
ভবিষ্যত প্রজন্মের কথা কেউ ভাবছে না।
কোথায় রেখে যাচ্ছেন আপনার আদরের ছেলেমেয়েকে? চারিদিকে ঠক প্রতারক। অন্যদিকে পৃথিবী ধ্বংসের মুখে। মানুষের সুন্দর ভাবে জীবনযাপন করার জন্য এই গ্রহতে সব কিছুই ছিলো। অথচ মানুষ তিলে তিলে পৃথিবীকে ক্ষয় করে ফেলেছে। এখন বর্ষাকালে বৃষ্টি হয় না। নদী গুলো প্রায় মৃত। কলকারখানার ধোয়া সমস্ত কিছুকে দুষিত করে দিচ্ছে। মাটি হয়ে গেছে দুর্বল। মাটির রস ও শক্তি একদম ক্ষয় হয়ে গেছে। এখন নদীতে জাল ফেললেই মাছ আসে না। শ্বাস নেবার মতো সচ্ছ বাতাস নেই। কোনো মানুষ ভালো নেই। সবার কোনো না কোনো অসুখ আছেই। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা ভেবে হলেও- পৃথিবীকে সারিয়ে তুলতে হবে। গাছ দিয়ে সারা বিশ্ব ভরে দিতে হবে। কলকারখানা কমাতে হবে। নদী দুষন একেবারে বন্ধ করে দিতে হবে। এছাড়া বাঁচার আর কোনো উপায় নাই। শুধু নিজের পরিবারের কথা ভাবলে হবে না, পুরো বিশ্বের কথা ভাবতে হবে।
আমার লেখা কেউ পড়ুক বা না পড়ুক-
তবু আমি লিখে যাবো। তবু আমি বলে যাবো। চিৎকার করে বলব। মানুষকে সহজ সত্য গুলো বুঝাতে হবে। সবচেয়ে ভালো হতো- স্কুলে গিয়ে গিয়ে ছেলেমেয়েদের বুঝানো। তাদের সচেতন করা। তাদের বুঝাতে হবে- মানুষ বাস করার জন্য একটাই গ্রহ আছে। ওজোন স্তর ভারী হচ্ছে, গাছ, মাটি আকাশ থেকে টেনে বৃষ্টি নামাতে পারছে না। তাই এই গ্রহের ক্ষতি হয় এরকম কোনো কাজ করা যাবে না। সরকার কিচ্ছু করবে না। তাদের আছে শুধু গালগল্প। তাঁরা আসল সত্যটা, আসল সমস্যাটা ইচ্ছা করেই অনুধাবন করছে না। বিশ্বকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে বাঁচাতে হলে- নদী দুষন বন্ধ করতে হবে। কলকারখানা বন্ধ করতে হবে। গাছ লাগাতে হবে। পুরো পৃথিবী সবুজ করে দিতে হবে। পৃথিবী ভালো থাকলে আমরা ভালো থাকবো। কি হবে কারি কারি টাকা পয়সা দিয়ে? যদি পৃথিবীটাই আমরা ধ্বংস করে দেই? এই পৃথিবীর সকল খারাপের জন্য দায়ী মানুষ। তাদের লোভ।
আজকাল মা বাপকে ছেলেমেয়েরা তেমন ভালোবাসতে পারে না।
ফলে কাউকেই ভালোবাসতে পারে না। এটা হলো একটা পিকিউলিয়ার লাভলেসনেসের যুগ। আজকাল মা বাপ মরলেও ছেলেমেয়ে তেমন কাদে না। সমস্যা হলো কোনো সংসারই পিসফুল নিয়। পরস্পরের প্রতি বিশ্বস্ত নয়, বিদ্বেষ, ঘৃনা আর জেলাসি। পরিবার থেকে এখন এটা সমাজে ছড়িয়ে গেছে। চারিদিকে কত রকমের ভালোবাসা। কিন্তু ভালোবাসা কাকে বলে সেটাই লোকে সঠিক বুঝে না। প্রেমিক প্রেমিকারা কত ভালোবাসার কথা বলে, বিয়ে করে। তারপর তাদের ঝগড়া দেখে পাড়াপ্রতিবেশি। ভালোবাসার গভীরতায় যেতেই পারে না। ভালোবাসা মানে ভালো করা। নিজের ভালো করা, অন্যের ভালো করা, সমাজের ভালো করা। দেশের ভালো করা। অর্থাৎ সকলকে নিয়ে ভালো থাকা। আমাদের চারপাশের পরিস্থিতি সবসময় অনুকুল থাকবে না, তাই বলে নিজেকে পরিস্থিতির কাবু না করে- র্ধৈয্য, ভালবাসা এবং সহমর্মিতা নিয়ে পরিস্থিতিকে কাবু করতে হবে। সুখ সবসময় নিজেকেই তৈরি করে নিতে হয়।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জুন, ২০২৩ বিকাল ৪:৫২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




