somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

অঞ্জলি

২৬ শে অক্টোবর, ২০২৩ দুপুর ১:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমার বাসা বৈঠকখানা রোডে। কলকাতা।
অনেক পুরনো এলাকা।দেখবেন একটা পুরান লাল বিল্ডিং আছে। নীচ তলায় অনেক গুলো দোকানপাট। দোতলায় আমাদের বাসা। এটা আমার দাদার বাড়ি। দাদা নিউজ প্রিন্ট কাগজের ব্যবসা করতেন। এখন এই বাড়ির মালিক আমার বাবা। আমরা দুই ভাই, এক বোন। বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। বোন থাকে বারাসাত। আর আমার ছোট ভাই নর্থ ডাকোটায় লেখাপড়া করছে।

আমি আনন্দবাজার পত্রিকাতে কাজ করি।
সার্কুলেশন বিভাগে কাজ করি। আমার পদবী সার্কুলেশন ম্যানেজার। আনন্দবাজার পত্রিকা অফিস নিশ্চয়ই চিনেন? অফিসে আমার কাজ হচ্ছে পত্রিকা গুলো যথাসময়ে পাঠকের হাতে পৌছায় কিনা সেটা দেখভাল করা। সারাদিন আমাকে অফিসের বাইরেই থাকতে হয়। রোদ পুড়ি, বৃষ্টিতে ভিজি। অভ্যাস হয়ে গেছে, এখন আর খারাপ লাগে না। দুপুরে কোনো সস্তার রেস্টুরেন্ট থেকে খেয়ে নিই। অফিস থেকে আমাকে বাইক দিয়েছে। এই বাইক নিয়েই কলকাতার রাস্তায় সারাদিন ঘুরে বেড়াই।

সপ্তাহে একদিন আমার ছুটি।
সেদিন আমি ক্যামেরা নিয়ে বেড়িয়ে যাই। আমার শখ ফোটোগ্রাফী। ইচ্ছা আছে খুব শ্রীঘই কলকাতা আর্ট সেন্টারে একটা এক্সজিবিশন করবো। যাইহোক, আমি দীঘা চলে যাই। সারাদিন সেখানেই থাকি। পাহাড় আর সমুদ্র আমার অনেক ভালো লাগে। আমার একটা প্রেমিকা ছিলো অঞ্জলি নাম। সহজ সরল সুন্দর একটা মেয়ে। দারুণ হাসিখুশি। চোখে মোটা করে কাজল দিলে অঞ্জলিকে দেবী প্রতিমার মতো লাগতো। আমরা দুজন দুজনকে অনেক ভালোবাসতাম। অঞ্জলির বাড়ি ছিলো রানাঘাট। আর তখন আমি শিবচর থাকতাম একটা মেসে। যাইহোক, একদিন অঞ্জলির সাথে দেখা হয়ে গেল। প্রেম হয়ে গেলো। ভালোবাসা হয়ে গেলো। অঞ্জলি এখন আমেরিকা থাকে। শুনেছি তার এক ছেলে, এক মেয়ে। স্বামী সন্তান নিয়ে সে সুখেই আছে।

অঞ্জলির সাথে কিভাবে পরিচয় হয়- সেই গল্পটা বলা যেতে পারে।
তখন আমি স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু কলেজে পড়ি। যাইহোক, সল্টলেক গিয়েছি খালার বাড়ি। ভরদুপুরে আমি খালার বাড়ি থেকে বের হয়েছি। উদ্দ্যেশ্য একটা সিগারেট খাবো। তখন দেখলাম এক মেয়ে একা একা দাড়িয়ে আইসক্রিম খাচ্ছে। ফুটপাতে থাকা কয়েকটা ছোট ছোট ছেলেমেয়েকে আগ্রহ নিয়ে আইসক্রিম কিনে দিচ্ছে। দৃশ্যটা দেখতে ভালো লাগছে। অবাক ব্যাপার হচ্ছে মেয়েটা রাস্তা পার হয়ে আমার সামনে এলো। মুখে তার সহজ সরল সুন্দর হাসি। তার দুই হাতে দুটো আইসক্রিম। মেয়েটা হেসে বলল, নিন আইসক্রিম খান। অনেকক্ষণ ধরে আপনি আমার দিকে তাকিয়ে ছিলেন। দেখে ভীষণ মায়া হলো। আমি আইসক্রিম নিলাম। কসম খেয়ে বলতে পারি অঞ্জলির মতো এত সুন্দর করে আইসক্রিম খেতে পৃথিবীর আর কোনো মেয়ে পারবে না।

দুনিয়াতে দশটা ভালো মেয়ের লিস্ট তৈরি করলে-
সেখানে অবশ্যই অঞ্জলি নামটা থাকবে। আমাদের দীর্ঘ পাচ বছরের প্রেম। আমি লেখাপড়া শেষ করে বসে আছি, চাকরি পাচ্ছি না। এদিকে অঞ্জলির লেখাপড়া শেষ। সে চাকরি করছে। সেলারি ভালো। অঞ্জলির বাবা মা বিয়ের জন্য তাকে চাপ দিচ্ছে। তারপরও অঞ্জলি দুই বছর আমার জন্য অপেক্ষা করেছে। আমি শালা একটা চাকরি জোগাড় করতে পারি নাই। তখন আমার করুন অবস্থা। মা মারা গেলেন। আব্বা অসুস্থ। একটা সিগারেট খাবো সেই টাকাও নেই। অঞ্জলি আমাকে সিগারেটের প্যাকেট কিনে দিত। জোর করে পকেটে টাকা গুজে দিত। দুপুরবেলা আমরা বস কেবিনে খেতে যেতাম।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে অক্টোবর, ২০২৩ দুপুর ১:২২
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মাদ্রাসা শিক্ষা, বৈশ্বিক রাজনীতি, সহিংসতা ও জঙ্গিবাদ

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৪:৪৫


লেখাটির শুরুতে একটি ভূমিকা দেওয়া যাক। সর্বশেষ দেশে গিয়ে কয়েকদিন গ্রামের বাড়িতে ছিলাম। উত্তরবঙ্গে, নিতান্ত অনুন্নত আমাদের সেই গ্রামে এতগুলো কওমি মাদ্রাসা হয়েছে দেখে অবাক হয়েছিলাম। আগে গ্রামে... ...বাকিটুকু পড়ুন

চোখের জল

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৪৬


সুদীর্ঘ ১৭ বছরের জমে থাকা
বিনম্র চোখের এক কোণে জল!
প্রকাশে এলো এই জনসমুদ্রে-
জনসমুদ্র তুলছে আনন্দাশ্রুর
ঢেউ- দেখছে নতুন ফুলের গন্ধ;
এ নৈঃশব্দের আর্তনাদ বুঝতে
হবে শুধু তোমাকে- আমাকে
গড়ে তুলতে হবে মনুষ্যের প্রণয়ে
সূর্য ভোর- যেখানে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকার মানুষের জীবন

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১৪


ঢাকাতে মানুষ বড় বিচিত্র ভাবে বেঁচে থাকে। নিয়মিত ঢাকার রাস্তার ঘুরে বেড়ানোর কারণে এই রকম অনেক কিছু আমার চোখে পড়ে। সেগুলো দেখে মনে হয় মানুষ কত ভাবেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

পৃথিবীর কিছু অঞ্চলে প্রায় সারা বছর বৃষ্টিপাতের কারণ কী?

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯

পৃথিবীর কিছু অঞ্চলে প্রায় সারা বছর বৃষ্টিপাতের কারণ কী?



পৃথিবীর কিছু অঞ্চলে প্রায় সারা বছরই বৃষ্টিপাত হয়। মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, আফ্রিকার কিছু দেশ এবং দক্ষিন আমেরিকার কিছু দেশ ও অঞ্চলে বছরের... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশ কখনো এমন করে বলতে পেরেছে কি?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫


ভারতে গরু ও গোমাংস নিয়ে হত্যা বা সহিংসতার নির্দিষ্ট সংখ্যা বলা কঠিন কারণ এটি রাজ্য, সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং 'গরু রক্ষা' বাহিনী ইত্যাদীর কারণে একেক যায়গাতে একেক রকম। ভারত গোমাংস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×