somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

বিহারীদের ইতিহাস

২২ শে নভেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ভারতের পূর্বে অবস্থিত বিহার রাজ্য।
বিহারিরা ভারতের বিহার রাজ্যের একটি জনগোষ্ঠী। এই জনগোষ্ঠীর ইতিহাস তিন হাজার বছরে বেশি। এরা মূলত ইন্দো-আর্য জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত। বর্তমানে ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশে এদের বসবাস। খুবই অবহেলিত এই জনগোষ্ঠি। ঠিক এরকম অবহেলিত হচ্ছে এখন রোহিংগারা। দেশভাগের পর বিহারীরা পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশে বিহারিদের অনেকে আটকা পরা পাকিস্তানী বলে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে প্রায় ১৫ লাখ বিহারী ছিলো। মুক্তি যুদ্ধের বিরোধিতা করে বিহারীরা। কি অদ্ভুত ওরা ভারতের অধিবাসী। কিন্তু কথা বলে উর্দুতে। সাপোর্ট করে পাকিস্তানকে। আমাদের দেশে কি বিহারীরা খুব ভালো আছে? না ভালো নেই। দরিদ্র দেশে যারা আশ্রয় নেয় তারা ভালো থাকে না। হোক বিহারী বা রোহিংগা।

বিহারীরা আমাদের ভাষা আন্দোলনেরও বিরোধিতা করে।
ওদের প্রিয় ভাষা উর্দু। ওরা নিজেদের সাথে উর্দু ভাষাতেই কথা বলে। মুক্তিযুদ্ধের পর পাকিস্তান সরকার এক লাখ ৭০ হাজার বিহারীদের ফেরত নেয়। বাকি গুলো থেকে যায় আমাদের দেশে। ১৯৭২ সালে এইসব বিহারীদের নাগরিত্ব দেওয়া হয়। যারা বাংলাদেশের নাগরিত্ব নিয়েছিলো, তাদের আর ফিরিয়ে নেয়নি পাকিস্তান সরকার। বিহারীরা আমাদের দেশে ভালো নেই। সত্যিকথা বলতে ওরা আমাদের দেশে মানবেতর জীবনযাপন করছে। ওরা লেখাপড়ায় ভালো করছে না। তাই সমাজের নিচু কাজ করছে। তবে ৭১ এর পরে যাদের জন্ম তারা লেখাপড়া শিখে বাঙ্গালীদের সাথে মিশে যেতে সক্ষম হয়েছে। একথা সত্য বিহারীরা মুক্তিযুদ্ধের ৫৩ বছরও এই বাংলাদেশটাকে ভালোবাসতে পারেনি। তারা আজও হৃদয়ে পাকিস্তান ধারন করে আছে।

দেশভাগের আগে ১৯৪৬ সালে বিহারে ধর্মীয় দাঙ্গার কারনে-
৩০ হাজার বিহারী মারা যায়। তারপর ভয়ে বহু বিহারীরা বিহার ও কলকাতা থেকে বাংলাদেশে চলে আসে। কিছু পাকিস্তানে চলে যায়। কিন্তু তারা নিজেদের পশ্চিম পাকিস্তানী বলে দাবী করতো। যুদ্ধের সময় তারা রাজাকারদের সাথে হাত মিলিয়েছিলো। খুব লুটপাট করেছে। বাঙ্গালী জনতা রাজারাক গ্রুপে জয়েন করা কমপক্ষে ৩০০ শ' বিহারীকে মেরে নদীতে ফেলে দেয়। তবে হাতে গোনা কয়েকজন বিহারী মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। বাংলাদেশ সরকার দয়া করে বিহারীদের থাকার জায়গা দিয়েছে। মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্পে ২৫ হাজার বিহারী থাকে। এরা শহর পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ করে। ফুটপাতে হকারি করে। নেশা দ্রব্য বিক্রি করে। মিরপুর জুটপট্রিতে ক'দিন পরপরই মারামারি হয়।পুলিশ ধাওয়া করে। অনেকের নামে থানায় মামলা আছে।

মিরপুর ১০ নম্বরে বহু বিহারী থাকে।
২০১৪ সালে মিরপুরবাসীদের সাথে বিহারীদের ঝগড়া হয়। তখন মিরপুরবাসী ৯জন বিহারীকে পুড়িয়ে মেরে ফেলে। যুদ্ধের পর যেসব বিহারীদের জন্ম সরকার তাদের নাগরিকত্ব ও ভোটের অধিকার প্রদান করে। মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পে ৩৫ হাজার বিহারী ভোটার রয়েছে এবং মিরপুরে ৫৫ হাজার ভোটার রয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে থাকা ১১৬টি ক্যাম্পে এই জনগোষ্ঠীর সাড়ে ৫ লাখ লোক বসবাস করে আসছে। বাংলাদেশের যেসব অঞ্চলে বিহারীরা রয়েছেন তার মধ্যে বেশিরভাগের বসবাস সৈয়দপুরে। ১৮৭০ সালে সৈয়দপুরে ইংরেজ সরকার একটি রেল কারখানা স্থাপন করে তখন ইংরেজরা ৭০০০ বিহারীকে শ্রমিক হিসেবে নিয়ে আসে। যেহেতু বিহারিরা বর্তমানে বাংলাদেশে স্থায়ী, তাই সরকারের উচিত তাদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করে দক্ষতা অনুযায়ী মানবসম্পদে পরিণত করা। বিহারী শব্দের আক্ষরিক অর্থ 'বিহারের মানুষ'। ১৯৭১ সালে পূর্ব পুরুষদের একটি ভুল সিদ্ধান্তের মাশুল গুনছে বর্তমান এই প্রজন্ম।

তথ্যসুত্রঃ উইকিপিডিয়া এবং মুক্তিযুদ্ধ ও পাকিস্তানী বাঙ্গালী# মিল্টন খন্দকার।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে নভেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:০৮
৮টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শোকের উচ্চারণ।

লিখেছেন মনিরা সুলতানা, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ সকাল ১০:১৬

নিত্যদিনের জেগে উঠা ঢাকা - সমস্তরাত ভারী যানবাহন টানা কিছুটা ক্লান্ত রাজপথ, ফজরের আজান, বসবাস অযোগ্য শহরের তকমা পাওয়া প্রতিদিনের ভোর। এই শ্রাবণেও ময়লা ভেপে উঠা দুর্গন্ধ নিয়ে জেগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

যা হচ্ছে বা হলো তা কি উপকারে লাগলো?

লিখেছেন রানার ব্লগ, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ দুপুর ১:২৮

৫ হাজার মৃত্যু গুজব ছড়াচ্ছে কারা?

মানুষ মারা গিয়েছে বলা ভুল হবে হত্যা করা হয়েছে। করলো কারা? দেশে এখন দুই পক্ষ! একে অপর কে দোষ দিচ্ছে! কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

আন্দোলনের নামে উগ্রতা কাম্য নয় | সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যবাদকে না বলুন

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৫:২৭



প্রথমেই বলে নেয়া প্রয়োজন "বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার সমস্ত অপচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে" ধীরে ধীরে দেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসছে। ছাত্রদের কোটা আন্দোলনের উপর ভর করে বা ছাত্রদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কোন প্রশ্নের কি উত্তর? আপনাদের মতামত।

লিখেছেন নয়া পাঠক, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৬

এখানে মাত্র ৫টি প্রশ্ন রয়েছে আপনাদের নিকট। আপনারা মানে যত মুক্তিযোদ্ধা বা অতিজ্ঞানী, অতিবুদ্ধিমান ব্লগার রয়েছেন এই ব্লগে প্রশ্নটা তাদের নিকট-ই, যদি তারা এর উত্তর না দিতে পারেন, তবে সাধারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাকুরী সৃষ্টির ব্যাপারে আমাদের সরকার-প্রধানরা শুরু থেকেই অজ্ঞ ছিলেন

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ রাত ৯:০৭



আমার বাবা চাষী ছিলেন; তখন(১৯৫৭-১৯৬৪ সাল ) চাষ করা খুবই কষ্টকর পেশা ছিলো; আমাদের এলাকাটি চট্টগ্রাম অন্চলের মাঝে মোটামুটি একটু নীচু এলাকা, বর্ষায় পানি জমে থাকতো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×