
বাংলাদেশে কিছু বেজন্মা আছে। আছে কিছু জারজ সন্তান।
আরো আছে কিছু অমানবিক এবং হৃদয়হীন মানুষ। এরা ১৯৭১ সালের রাজাকারের মতো ভয়ংকর। দেশ স্বাধীন হয়েছে কিন্তু রাজাকারের বীজ রয়ে গেছে। এরা দেশটাকে নরকে পরিনত করতে চায়। এরা দেশের শত্রু। গত ৫৩ বছরে কোনো সরকারই এদের বিনাশ করতে পারেনি। বরং সরকার যেন ওদের উৎসাহ দিয়ে মাথায় তুলেছে।
এদেশের সন্তান হয়ে কি করে পারে দেশের সম্পদ নষ্ট করতে?
শেখ মুজিবের ৩২ বাড়ি ভেঙে দিলো, লুটপাট করলো এমনকি আগুন দিয়ে সব পুড়িয়ে দিলো। শেখ মুজিব মারা গেছে ১৯৭৫ সালে তাহলে এই ২০২৪ সালে কেন তার বাড়িঘর আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিতে হবে? কেন তার ভাস্কর্য ভেঙে দিতে হবে। কেন তার ছবিতে থু থু দিতে হবে? জুতো দিয়ে মারতে হবে? কেন তার ভাস্কর্যে প্রস্বাব করে দিতে হবে? যারা এই কাজ করেছে তারা পারিবারিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত।
কেন একজন মানুষকে ধরে বেধে মারতে হবে?
কেন একজন বয়স্ক মানুষকে বিবস্ত্র করে অপদস্ত করতে হবে? তারা যদি অপরাধী হয়, চোর, ডাকাত, দূর্নীতিবাজ বা রাজনীতিবিদ হয়, দেশের আইনে তাদের বিচার হবে। নিজের হাতে আইন কেন তুলে নিতে হবে? কে বা কারা ওদের দায়িত্ব দিলো এভাবে অপমান করার। ইচ্ছে মতো মারবে, তারপর বলবে নাচ কর, গান কর। ছবি তুলবে, ভিডিও করবে। হা হা করে হাসবে। রুচির এত অধপতন কেন? কোন দেশে বাস করছি আমরা।
অনেকদিন আগে একটা বই পড়েছিলাম, বইয়ের কাহিনী অনেকটা এই রকম:
লোকজন আনন্দ পাচ্ছে না। তাদের বিনোদনের অনেক অভাব। বই ভালো লাগে না, সিনেমা ভালো লাগে না। তখন তারা কয়েকজন মানুষকে ছেড়ে দিয়ে বলল, দৌড়রাও। লোক গুলো পাগলের মতো দৌড়াতে শুরু করলো। তখন তাদের একদল লোক পিস্তল নিয়ে তাড়া করলো। যাকে কাছে পেলো তাদের গুলি করে মেরে ফেলল। মৃত ব্যাক্তির সামন নাচতে শুরু করলো। হত্যা করে তারা বিপুল আনন্দ পেলো, বিনোদন পেলো।
এই সমাজের মানুষ গুলো অমানবিক এবং হৃদয়হীন।
যারা আগুন দিচ্ছে, মানুষ মারছে, সস্তা উপহাস করছে, পুলিশ পিটিয়ে মারছে, থানায় আগুন লাগিয়ে দিচ্ছে, শেখ মুজিবের ভাস্কর্য ভেঙে দিচ্ছে, লুটপাট করছে, মন্দির পুড়িয়ে দিচ্ছে, মেট্রোরেল স্টেশন ভেঙে দিচ্ছে, দেশের সম্পদ নষ্ট করছে, ডাকাতি করছে তাদের একটাই নাম। তারা সন্ত্রাস। তারা বেজন্মা। তারা জারজ। তারা রাজাকার। এদেরকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে। এদের গোড়া উপড়ে ফেলতে হবে। নইলে এই দেশের ভালো হবে না।
দেশটা আমাদের সবার। কারো বাপের না, কারো স্বামীর না।
এই দেশে হিন্দু, মুসলিম, খ্রিস্টান, বৌদ্ধসহ সব ধর্মের লোক থাকবে। শান্তিতে থাকবে, আনন্দে থাকবে। কেউ কাউকে আক্রমণ করবে না। জ্বালাও পোড়াও করবে না। লুটপাট করবে না। কোনো ভাস্কর্য ভেঙে দিবে না, মন্দির ভেঙে দিবে না। যারাই এগুলো করবে তারাই জারজ সন্তান, তারাই সন্ত্রাস, তারাই রাজাকার। এই সব বেজন্মাদের রাজাকারদের কারাগারে পাঠাতে হবে। কঠিন শাস্তি দিতে হবে।
শেখ হাসিনার ভুলের জন্য আজ তার এই অবস্থা।
তিনি ধরে ধরে অযোগ্যদের ক্ষমতায় বসিয়েছেন। তারচেয়ে বুদ্ধিমানদের তিনি পছন্দ করতেন না। তিনি পছন্দ করতেন, চাটুকারিতা। এই জন্য তার আশেপাশের লোকজনরা শুধু চাটুকারিতা করে গেছেন। তিনি জনগনের কথা শুনতেন না। তিনি তার বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে বিভোর ছিলেন। অন্য কারো বাপের স্বপ্নের কথা তার মাথায় আসে নাই। তার যা মন চেয়েছে তিনি তাই করে গেছেন। একক স্বেচ্ছাচারিতা করে গেছেন। মন্ত্রী এমপিরা কোনো সিদ্ধান্ত নিতেন না। সব আপা করবেন, আপা বলবেন। দব আপা জানেন। সবাই আপার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকতো। বিষয়টা আপা খুব উপভোগ করতেন।
বিশ্বজিৎ কে দিনে দুপুরে কুপিয়ে মারলো।
তবু তিনি ছাত্রলীগকে অফ করলেন না। তার আজ এই অধপতনের জন্য ছাত্রলীগ অনেকাংশে দায়ী। এরপর দায়ী তার দলের মন্ত্রী এমপিরা। তারা ইচ্ছে মতো দূর্নীতি করেছে। তিনি তাদের বাধা দেননি। এদিকে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠে গেছে। গত পনের বছরে মানুষের কলিজা ভাজা ভাজা হয়ে গেছে। মানুষের ক্ষোভ, রাগ, হতাশা, বেকারত্ব, দুখ কষ্ট। সব মিলিয়ে মানুষ আর পারছিলো না। তাই তারা ঘর থেকে বের হতে বাধ্য হয়েছিলো। ১৯৭২ সালেই শেখ মুজিবের ছাত্রলীগকে অফ করা দরকার ছিলো। শেখ মুজিব যে ভুল করেছেন, হাসিনাও সেই একই ভুল করেছেন।
শেখ হাসিনা গত পনের বছরে শুধু তার বাবার নাম নিয়েছেন।
সব কিছুতে তার বাবার নাম। স্কুল, কলেজ, রাস্তাঘাট, সেতু, ব্রীজ সব কিছুতেই উনি বাবার নাম নিয়েছেন। দেশ কি শেখ মুজিব একা স্বাধীন করেছেন? আর কারো ভূমিকা নেই? কেন তার মধ্যে এত দীনতা, কেন এত নীচু মানসিকতা? উনি যদি মাওলানা ভাসানী, তাজ উদ্দীন সহ কৃষক, শ্রমিক, রিকশা চালক, কবি সাহিত্যিক, ছাত্র শিক্ষক সবার নাম মুখে নিতেন তাহলে কি শেখ মুজিব ছোট হয়ে যেতেন? না তিনি ছোট হতেন? এদিকে দেশের মানুষ মন খুলে কথা বলতে পারতো না। লিখতে পারতো না। অজানা এক ভয়ে থাকতো, আতংকে থাকতো। যদি গুম হয়ে যায়। যদি খুন হয়ে যায়।
তিনি শুধু তার বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে ব্যস্ত ছিলেন,
তাহলে আমাদের বাপ দাদার স্বপ্ন কে পূরণ করবে? দেশ তো সবার। আমাদেরও তো দেশ নিয়ে কতশত স্বপ্ন আছে। সত্যিকথা বলতে আমাদের দেশটা উন্নয়নের মহাসড়কে না। উন্নয়ন শুধু হয়েছে মন্ত্রী, এমপি, ছাত্রলীগ আর যুবলীগের। এককথায় আওয়ামীলীগের সবার। সাধারণর মানুষের গজব অবস্থা হয়েছে। দেশে বেকারদের সংখ্যা বেড়েছে। কিন্তু শেখ হাসিনা চাকরি সৃষ্টি করেন নাই। যাদের টাকা নেই, ক্ষমতাবান চাচা মামা নেই, তারা রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছে। যার সামান্য জমিজমা আছে, সে জমি বেচে মধ্যপ্রাচ্যে গিয়ে অনেক কষ্ট করে টাকা উপার্জন করছে।
আগামীতে যারা ক্ষমতায় আসবে তাদের উচিৎ আওয়ামী লীগ থেকে শিক্ষা নেওয়া। নইলে তাদেরও একই অবস্থা হবে। প্রকৃতি কাউকে ক্ষমা করে না।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই আগস্ট, ২০২৪ সকাল ১১:৩৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



