somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

বিড়াল 'আপদ না বিপদ'?

২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



হুমায়ুন আহমেদের একটা বই আছে, 'বিপদ' নামে। পড়েছেন?
অথবা আপনি কি পুফি' বইটা পড়েছেন। দুটা বইতে বিড়ালের কথা বলা হয়েছে। বিড়াল সহজ জিনিস নয়। বিড়াল খামচি বা আচড় দিলে আপনাকে ইনজেকশন নিতে হবে। আমাদের নবীজি বিড়াল পছন্দ করেন। অনেক বাসায় দেখেছি বিড়াল পালে। কুকুর পোষার চেয়ে বিড়াল পালা ভালো। আমার এক ভাগ্নী কুকুর বিড়াল দুটাই পালে। ওদের ঘরে বাজে গন্ধ! ওদের বাসায় যাওয়া আমি ছেড়ে দিয়েছি। কুকুর বিড়াল নিয়ে ভাগ্নী মাঝে মাঝে আমাদের বাসায় আসে। খুব আহ্লাদ করে। আমার ইচ্ছে করে ভাগ্নীকে বাসা থেকে বের করে দেই। কিন্তু পারি না। ইদানিং ভাগ্নী রাস্তার কুকুরদের খাবার দেয়। এলাকায় সমস্ত কুকুর এখন ভাগ্নীর বাড়ির কাছে আস্তানা গেড়েছে। তোমার পশু প্রেম যে অন্যকে বিরক্ত করছে, সেটা কেন বুঝো না?

আমি কুকুর বিড়াল পছন্দ না করলেও একবার আমাদের বাসায় বিড়াল পালা হয়।
তখন আমার বয়স ১৬। একটা বিড়াল প্রতিদিন আমাদের বাসায় আসতো। ঠিক দুপুর এবং রাতের বেলা খাওয়ার সময় আসতো। এসে মিউ মিউ করতো। মা বিড়ালকে খাবার দিতো। একসময় বিড়ালটার ভয়ডর চলে গেলো। সে সরাসরি ঘরে ঢুকে যায়। সোফায় বসে টিভি দেখে। রান্নাঘরের আশপাশ দিয়ে ঘুরাঘুরি করে। যেন বাড়িটা তার নিজের। আমার ইচ্ছে করে বিড়ালটাকে লাথথি দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেই। মার জন্য পারি না। আমি খেতে বসলেই বিড়ালটা পায়ের কাছে এসে মিউ মিউ করে। আমি ফিরেও তাকাই না।

শেষমেশ বিড়ালটা আমাদের বাড়িতে পুরোপুরি দাখিল হলো।
যথাসময়ে খাবার পাচ্ছে, ঘুমাতে পারছে, যত্ন আদরের কোনো ত্রুটি নেই। আমরাও বিড়ালটাকে মেনে নিলাম। থাকুক। কোনো সমস্যা তো করছে না। বিড়ালটা আমাকে পছন্দ করে না, এটা সে স্পষ্ট আমাকে বুঝিয়ে দেয়। দেখতে দেখতে বিড়ালটা বড় হয়ে গেলো। দেখতে বেশ মিষ্টি চেহারা। প্রতিদিন নিয়ম করে সে বাইরে যায়। বেশ ফুরফুরে মেজাজ তার। একদিন ঘটনা ঘটে গেলো! বিড়ালটা প্রেগন্যান্ট হয়ে গেলো। আমরা জানি না কোন বিড়াল এই কাজ করলো। আমি বাসার লোকজনদের বললাম, এবার আর বিড়ালটাকে বাসায় ঢুকতে দিবে না। নইলে ক'দিন পর বাচ্চা দিয়ে ঘর ভরে ফেলবে।

এখন বিড়ালটা নিয়মিত এক বাটি দুধ পায়।
ভালো খাবার দাবার পায়। দেখতে দেখতে বিড়ালের পেট ফুলে গেলো। বিড়াল এখন বাইরে যায় না। তার ঘরে শুয়ে বসে অলস সময় কাটায়। একদিন সকালে দেখি বিড়ালটা অনেক গুলো বাচ্চা জন্ম দিয়েছে। আমি দু:খিত বিড়ালটার নামটা ভুলে গিয়েছি। সম্ভবত মিনু বা এরকম কিছু একটা হবে। যাইহোক, ছোট ছোট বাচ্চা গুলোকে দেখতে ভালো লাগে। বাচ্চা গুলো বড় হলো। এরপর শুরু হলো যন্ত্রণা। বাচ্চা গুলো পুরো ঘর এলোমেলো করে দেয়। আমরা অনেক সহ্য করলাম। মা বিড়ালকে বললাম, তোমার বাচ্চাদের ঘর নোংরা করতে মানা করো। তোমাদের আশ্রয় দেওয়া হয়েছে, পুরো বাড়ি তোমাদের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়নি। বিড়াল কি মানুষের কথা বুঝতে পারে? অন্তত ভালোবাসাটা পশু পাখি আর মানুষ সবাই টের পায়।

একদিন বিড়াল এবং তার ছানা গুলো বাইরে গেছে রোদ পোহাতে।
কে বা কারা বিড়াল ও তাদের বাচ্চাদের মেরে ফেলেছে অথবা বস্তায় করে দূরে কোথাও ফেলে দিয়েছে। আমরা চার ভাই, মা এবং বাবা মিলে রাস্তায় নেমে পড়লাম বিড়াল গুলোকে খুজতে। সারাদিন বিড়াল গুলোকে খুজলাম, কিন্তু পেলাম না। আমাদের বাসার সবার মন খারাপ। সে রাতে আমরা কেউ খেলাম না। পরের দিন আমরা বিড়ালের ছবি দিয়ে লিফলেট ছাপালাম। বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে লিফলেট দিলাম, বিড়াল গুলো কেউ দেখেছে কিনা খোজ নিলাম। কোথাও খুজে পেলাম না। কোথাও না। মাইকিং করানো হলো। বিড়ালকে পাইয়ে দিলে পুরস্কার দেওয়া হবে এরকম কথাও বলা হলো। আমাদের বিড়ালটি তার বাচ্চা গুলোকে নিয়ে আর ফিরে এলো না।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৩২
৮টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুহূর্ত কথাঃ সময়

লিখেছেন ফাহমিদা বারী, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৭



সামুতে সবসময় দেখেছি, কেমন জানি ভালো ব্লগাররা ধীরে ধীরে হারিয়ে যায়! যারা নিয়মিত লেখে, তাদের মধ্যে কেউ কেউ প্রচণ্ড নেগেটিভ স্বভাবের মানুষ। অন্যকে ক্রমাগত খোঁচাচ্ছে, গারবেজ গারবেজ বলে মুখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিশ্চিত থাকেন জামায়েত ইসলাম এবার সরকার গঠন করবে

লিখেছেন সূচরিতা সেন, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৪২


আমাদের বুঝ হওয়ার পর থেকেই শুনে এসেছি জামায়েত ইসলাম,রাজাকার আলবদর ছিল,এবং সেই সূত্র ধরে বিগত সরকারদের আমলে
জামায়েত ইসলামের উপরে নানান ধরনের বিচার কার্য এমন কি জামায়েতের অনেক নেতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রকৌশলী এবং অসততা

লিখেছেন ফাহমিদা বারী, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:৫৭


যখন নব্বইয়ের দশকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সিদ্ধান্ত নিলাম এবং পছন্দ করলাম পুরকৌশল, তখন পরিচিত অপরিচিত অনেকেই অনেকরকম জ্ঞান দিলেন। জানেন তো, বাঙালির ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ডাক্তারিতে পিএইচডি করা আছে। জেনারেল পিএইচডি। সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

NVR (No Visa Required) এর জন্য জেনে রাখা দরকার

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৯
×