
আমার বন্ধু শাহেদ। শাহেদ জামাল।
খুবই ভালো একটা ছেলে। সামাজিক এবং মানবিক। হৃদয়বান তো অবশ্যই। দুঃখের বিষয় শাহেদের সাথে আমার দেখা হয় মাসে একবার। অথচ আমরা একই শহরে থাকি। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য শাহেদ মোবাইল ফোন ব্যবহার করে না। খুব প্রয়োজন হলে শাহেদ কারো কাছ থেকে মোবাইল ধার নিয়ে ফোন দেয়। শাহেদ জামাল ফেসবুকেও নাই। আজ শাহেদ জামালের ব্যথিত। তার মন মেজাজ খুব বিক্ষিপ্ত। কারন, তার চোখের সামনে এক শিক্ষক কে কিছু লোক মারছে। সমানে মেরেই যাচ্ছে নাকমুখ দিয়ে রক্ত পড়ছে। জামা ছিরে গেছে। লোকটার অপরাধ সে আওয়ামীলীগ করতো। কেউ আওয়ামীলীগ করলেই তাকে মারতে হবে? সে যদি অন্যায় করে থাকে তাহলে দেশের আইন অনুযায়ী তার শাস্তি হবে। কিন্তু কতিপয় লোক সেই আওয়ামীলীগারকে সমানে মেরেই চলেছে। এমন মার গুলিস্তান এলাকায় চোর ছিনতাইকারীকে মারা হয়। না ইহা ঠিক নয়। দেশে কি কোনো আইন নেই? নিজের হাতে আইন কারা তুলে নিচ্ছে? কেন নিচ্ছে? ইউনুস সাহেব চুপ কেন? নাকি তার ইশারাতেই এমনটা হচ্ছে?
গতকালের কথা।
শাহেদ জামাল দেখলো- সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অসংখ্য হুজুর জড়ো হয়েছে। তাদের কর্মকান্ড অস্বাভাবিক। একটা পুতুলকে শাড়ি ব্লাউজ পরানো হয়েছে। সেই পুতুলকে দড়ি দিয়ে ঝুলানো হয়েছে। তারপর একে একে প্রতিটা হুজুর সেই নারী পুতুলকে জুতো দিয়ে মারছে। থু থুথু দিচ্ছে। যেন হাজার জনমের জমে থাকা রাগ জিদ নারী পুতুলকে জুতো মেরে প্রতিশোধ নিচ্ছে। এমন কুৎসিত দৃশ্য জাতি আগে দেখেনি। ইউনুস সরকারের আমলে নারীকে চূড়ান্ত রকম অপমান করা হলো! সরকার থেকে তাদের বাঁধা দেওয়া হলো না। বলা হলো না, তারা অন্যায় কাজ করেছে। ভুল কাজ করেছে। এই ঘটনা নিজ চোখে দেখে- শাহেদ জামালের খুব খারাপ লাগে। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা না থাকাতে দেশে এরকম হচ্ছে। শেখ হাসিনা সমস্ত বদদের থামিয়ে রাখতে পেরেছিলেন। এই সমস্ত ধার্মিকেরা জাতিকে কলুষিত করছে। আসলে এরা পরিবার এবং মাদ্রাসা থেকে সঠিক শিক্ষা পায়নি। বিশ্ব এগিয়ে গেছে, ধার্মিকেরা পেছনেই রয়ে গেছে। শেখ হাসিনা ছাড়া এদের আর কে লাইনে আনবেন?
শাহেদ জামাল একজন রিকশাচালকের কথা শুনে মুগ্ধ হলো।
হুজুররা যখন নারীদের অপমান করছে, বাজে কথা বলছে, কুশপুত্তলিকায় জুতো দিয়ে মারছে। থু থু দিচ্ছে। শাড়ি খুলে গেছে। রিকশাচালক হুজুরদের কর্মকান্ড দেখে ভীষন মন খারাপ করেছে। সে বলল- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেন। এটাকে গরুর খামার বানিয়ে দেন। এখানে যারা লেখাপড়া করে তারা নিজেদের বড় শেঠ ভাবে। আসলে তারা ছাগল। ইয়াবা খায় আর প্রেম করে। এরা যদি খাটি মানুষ হতো- তাহলে তারা এই সমস্ত হুজুরদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতো। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের উচিৎ ছিলো- আজ হুজুরদের পিটিয়ে পিঠের ছাল তুলে ফেলা। রিকশা চালকের মতো শাহেদ জামালের ইচ্ছা করছিলো- প্রতিটা হুজুরকে জিজ্ঞেস করা- জুতো দিয়ে মারছো, কাকে মারছো? তোমার মা, স্ত্রী আর বোনকে? নারীর উপর তোমাদের এত রাগ কেন? হুজুরদের কর্মকান্ড দেখে পুরো জাতি হতবাক! কিন্তু ইউনুস সাহেব চুপ। তার নিরবতাই বলে দিচ্ছে- পুত্তলিকায় জুতো দিয়ে মারাতে তার সায় আছে। যতদিন যাচ্ছে, মানুষ তত শেখ হাসিনার অভাব বোধ করছে।
শাহেদ জামাল জানে, সাময়িক ভাবে জামাত শিবির দেশটাকে দখল করেছে।
সেটা দীর্ঘস্থায়ী হবে না। এরা ভেসে যাবে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের লোক চুপ থাকবে না। এনসিপি দলটা সারাক্ষন ভয়ে আছে। তাদের ভয় আওয়ামীলীগ। তারা যে ক'বার আওয়ামীলীগের নাম মুখে নেয়, ততবার আল্লাহর নামও মুখে নেয় না। দেশের সাধারন মানুষ আওয়ামীলীগকে ভয় পাচ্ছে না, এমন কি বিএনপিও আওয়ামীলীগকে ভয় পাচ্ছে না। শুধু ভয় পাচ্ছে হাসনাত, সারজিস, নাহিদসহ সমস্ত জামাত শিবির। ভয় কারা পায়? যারা অন্যায় করে তারাই ভয় পায়। অন্যায় না করলে ভয় পাওয়ার কোনো কারন নেই। হাসনাত, সারজিসসহ জামাত শিবির যে অন্যায় করেছে, তাদের ক্ষমা করে দেওয়া উচিৎ হবে না। তারা শেখ মুজিবের বাড়ি ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়েছে, শেখ মুজিবের ভাস্কর্য ভেঙ্গে দিয়েছে, আওয়ামীলীগের পার্টি অফিসে আগুন দিয়েছে। জঘন্য সব অন্যায় করেছে তথাকথিত এইসব ছাত্ররা। এদের অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে। কঠিন শাস্তি। ভুলে গেলে চলবে না, দেশ স্বাধীন হওয়ার অনেক পরে রাজাকাদের বিচার হয়েছিলো। শেখ মুজিবকে হত্যার অনেক বছর পর অপরাধীদের বিচার হয়েছিলো। নব্য রাজাকারদেরও বিচার হবে। হবেই।
এই দেশ আমাদের।
এই দেশে আনন্দ নিয়ে বেঁচে থাকার জন্য আমাদের সবার গুরুত্বপুর্ন ভূমিকা পালন করতে হবে। এমনিতেই আমরা উন্নত দেশের তুলনায় অনেক পিছিয়ে আছি। আমাদের দুঃখ দুর্দশার জন্য দায়ী দেশের কুসন্তানেরা। এরা জাতিকে সামনের দিকে নিতে দিচ্ছে না। জাতির জন্য মাদ্রাসা আজ অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মাদ্রাসা শিক্ষা ভুল শিক্ষা। মাদ্রাসা শিক্ষা দিয়ে জাতি কি করে এগোবে? স্কুলের সংখ্যার চেয়ে মাদ্রাসা সংখ্যা বেশি। লাইব্রেরীর চেয়ে মসজিদের সংখ্যা বেশি। গাছের চেয়ে আগাছার সংখ্যা বেশি। শেখ হাসিনা না থাকাতে ৭১ এর পরাজিত শক্তি আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। এরা জাতিকে শেষ করে দিতে চায়। চারপাশ দেখে শুনে দেশের মানুষ আজ ভালো নেই। স্বাধীনতাকামী মানুষেরা ভালো নেই। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের লোকেরা ভালো নেই। তবে আমরা আশাবাদী। শেখ হাসিনা রাজাকারদের বিচার করেছেন, নব্য রাজাকারদেরও বিচার হবে। এই জামাত শিবির আবার গর্তে লুকাবে। কবি বলেছেন, দেরী হোক যায়নি সময়। এইসব নব্যরাজাকারদের বিচার হবেই। এই দেশ আমাদের। ৭১ এর পরাজিতদের না। জয় বাংলা।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা মে, ২০২৫ দুপুর ২:৩৭

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


