somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

আজকের ডায়েরী- ১৫৫

২৩ শে মে, ২০২৫ দুপুর ১২:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



১। একজন নামকরা ডাক্তার আছেন।
তার সিরিয়াল পেতে দুই-তিন মাস সময় লাগে। এই ডাক্তার আমার মাকে দেখানো হবে। কিন্তু সিরিয়াল পাচ্ছিলাম না। শেষে একজন বললেন, যে ব্যাক্তি সিরিয়াল দেয় তাকে এক হাজার টাকা বিকাশ করে দেন। তাহলে দুই দিন দিনের মধ্যে সিরিয়াল পেয়ে যাবেন। সিরিয়াল দেওয়া লোকটাকে এক হাজার টাকা বিকাশ করে দিলাম। একদিন পরই উনি ডাক্তারের সিরিয়ালের ব্যবস্থা করে দিলেন। মাকে ডাক্তার দেখাতে পারলাম। ডাক্তার ওষুধ দিয়ে দিলেন এবং একমাস পর আবার দেখা করতে বললেন। আবার ডাক্তারের সিরিয়াল পাওয়া যায় না। এক হাজার টাকা বিকাশ করা হলো। ডাক্তারের সিরিয়াল পাওয়া গেলো। ডাক্তার, হাসপাতাল আর ওষুধ- খুবই রমরমা ব্যবসা। সারা বছরের ব্যবসা।

এই ডাক্তারেরে, যে লোক সিরিয়াল দেয়, সে ধনী হয়ে গেছে।
ঢাকায় তার তিনটা ফ্লাট। নিজের গাড়িও আছে। আল্লাহ চাইলে ধনী হতে কত ক্ষন! যাইহোক, মাকে আবার ডাক্তার দেখানোর সময় হয়েছে। ডাক্তার দেশে নাই। ঈদের পর আসবেন ডাক্তার। এখন মা কি করবেন? সিরিয়াল দেওয়া লোকটা ফোন করলাম। সে বলল- ডাক্তার তার রোগীদের উদ্দেশ্যে বলে গেছেন। প্রেসক্রিপশনে যে ওষুধ লেখা আছে, সেই ওষুধ গুলোই চালিয়ে যেতে হইবে। মায়ের গত মাসের ওষুধ গুলো এমাসে আবার কিনলাম। আমার নিজেরও ডাক্তার দেখানো দরকার। বিশেষ করে চোখের ডাক্তার। এরপর দাতের ডাক্তার। মসজিদে না গিয়েও পারা যায়। কিন্তু ডাক্তারের কাছে না গিয়ে উপায় নাই। বেঁচে থাকতে হলে- ডাক্তারের কাছে যেতে হবে, মসজিদে না গেলেও সমস্যা নেই।

২। মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন ভাইয়ের সাথে কথা বলা দরকার।
অথচ আমি ভয়াবহ জ্যামে আটকে আছি। মেট্রোরেলে গজব ভিড়। তাই মনে করলাম, বাসে করে বাসায় ফিরব। বাসে উঠে দেখি বাস আর সামনে এগোয় না। প্রতিটা মোড়ে মোড়ে জ্যাম। বাসে আমি ঘেমে গেছি। এরমধ্যে বাসের সিট গুলো চিপা চিপা। শান্তিতে বসা যায় না। টানা দুই ঘন্টা সময় লেগেছে মিরপুর থেকে কাওরান বাজার আসতে। আমার পা ব্যথা হয়ে গেছে। আমি ঘেমে গেছি। এরমধ্যে বাসে ঠাসাঠাসি করে মানুষ দাঁড়িয়ে আছে। ঘামের কটু গন্ধ। আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে। মনে হচ্ছে আজ আমি স্ট্রোক করে মারা যাবো। ছোট কন্যা ফারাজার কথা খুব মনে পড়ছে। সারাদিনে মেয়ে আমাকে একটা ফোন দেয় না। বরং আমি ফোন দিলে বলে, বাবা এখন কথা বলতে পারবো না। আমি বিজি। চার বছরের বাচ্চা বলে, আমি বিজি। কথা বলতে পারবো না।

যাইহোক, মিরপুর থেকে সাড়ে তিন ঘন্টা জ্যামে বসে থেকে বাসায় ফিরিলাম।
আমি প্রচন্ড ক্লান্ত। বিধ্বস্ত। শার্ট ঘামে ভেজা। সিড়ি ভেঙ্গে ছয় তলায় উঠলাম। বাসায় ফিরে দেখি পুরো ঘর এলোমেলো। সুরভি রান্না নিয়ে ব্যস্ত। আগামীকাল বাসায় মেহমান আসবে। সকালে গ্যাস থাকে না, তাই সে অর্ধেক রান্না করে রাখবে রাতে। আমি ক্ষুধার্থ। এবং ক্লান্ত। সুরভিকে বলতে ইচ্ছা করলো- নুডুলস রান্না করো। আর এক কাপ চা দাও। কিন্তু কিভাবে বলব? সে নিজেই রান্না নিয়ে মহা ব্যস্ত। ফারাজা খেলায় ব্যস্ত। ডাকলাম, কাছে এলো না। সুরভি বলল, একটু বাজারে যাও। টিকা বানাবো। মাংস কিমা করে আনো। প্লীজ। আমি যে ক্লান্ত, বিধস্ব। সুরভি এক কাপ চা দিলো না! আজিব মাইয়ালোক। আমি মরে গেলে বুঝবে মজা। ফারাজাকে ডাকলাম, সে বাবার কাছে এলো না। খেলা নিয়ে ব্যস্ত। অথচ সারাদিন পর বাপ ঘরে ফিরেছে।

৩। রাস্তায় বের হলাম।
কেন জানি মেজাজ খুব খারাপ লাগছে। রাত নয়টা বাজে। রাস্তায় জ্যাম। একপাশ দিয়ে রাস্তা কাটা। সুয়ারেজ লাইনের কাজ চলছে। এরই মাঝে রাস্তার পাশে বসেছে ফলের বাজার। সারিবদ্ধ ভাবে ফল বিক্রি হচ্ছে। আম, লিচু, জাম, কাঠাল। লোকজন পাগলের মতো আম-টাম কিনছে। ফারাজা রাতে ভাত খাওয়া শেষে দুটা আম খায়। ঘরে আম আছে। তবু আমি পাচ কেজি আম কিনে নিলাম। বাজারে এখন হিমসাগর আম দিয়ে ভরা। দেখলেই লোভ লাগে। আমি নিশ্চিত আম বাসায় নিয়ে গেলে সুরভি চিল্লাচিল্লি করবে। লিচু কিনলাম না। ছোট লিচু। খেতে স্বাদ হবে না। কাঠালও কিনলাম না। জাম কিনলাম না। জাম তিন শ টাকা কেজি বলছে। আর কিছু দিন পর দুই শ' টাকা কেজি পাওয়া যাবে। তখন কেনা যাবে।

এখন আমার মন শান্ত হয়েছে।
রেস্টুরেন্ট থেকে এক কাপ চা খেয়ে বাজার নিয়ে বাসায় ফিরলাম। বাজার পাঠিয়ে দিয়ে আমি মার ঘরে বসলাম। মা বলল, আমার বুয়া তিন দিন ধরে আসে না। মার ঘরে যে বুয়া কাজ করে তার নাম কোহিনুর। বিরাট ফাজিল। কোহিনূর মাসে ২০ দিন আসে না। আগে কোহিনূর আমার ঘরেও কাজ করতো। সুরভি মানা করে দিয়েছে। কোহিনূর টানা পাচ দিন পর এসে একটা গল্প ফাঁদবে। অদ্ভুত এক গল্প বলবে। সেই গল্প বলতে বলতে দুই ঘন্টা পার হয়ে যাবে। তারপর কোহিনূর বলবে, খালা আজ কাজ করবো না। আমার কাচপুর যেতে হবে। সেখানে জমি কিনেছি। কোহিনূর দুপুরের খাবার খেয়ে চলে যাবে। এখন আমাদের ঘরে কাজ করে মিনহাজের মা। সে প্রতিদিন আসে। তার সমস্যা হলো- সে প্রতিমাসে তার সেলারি বাড়ানোর কথা বলে।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে মে, ২০২৫ দুপুর ১২:০৩
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

পেচ্ছাপ করি আপনাদের মূর্খ চেতনায়

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:৩৮

আপনারা হাদি হতে চেয়েছিলেন, অথচ হয়ে গেলেন নিরীহ হিন্দু গার্মেন্টস কর্মীর হত্যাকারী।
আপনারা আবাবিল হয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাড়াতে চেয়েছিলেন, অথচ রাক্ষস হয়ে বিএনপি নেতার ফুটফুটে মেয়েটাকে পুড়িয়ে মারলেন!
আপনারা ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নজরুল পরিবারের প্রশ্ন: উগ্রবাদী হাদির কবর নজরুলের পাশে কেন?

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:০১



প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে কাজী নজরুল ইসলামের দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পাশে। শনিবার বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টে নাগাদ সেখানেই দাফন করা হল ভারতবিদ্বেষী বলে পরিচিত ইনকিলাব মঞ্চের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির আসল হত্যাকারি জামাত শিবির কেন আলোচনার বাহিরে?

লিখেছেন এ আর ১৫, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৪


গত মাসের শেষের দিকে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পারওয়ারের ছেলে সালমান, উসমান হাদির সঙ্গে খু*নি ফয়সালের পরিচয় করিয়ে দেন। সেই সময় হাদিকে আশ্বস্ত করা হয়—নির্বাচন পরিচালনা ও ক্যাম্পেইনে তারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

দিপুকে হত্যা ও পোড়ানো বনাম তৌহিদী জনতা!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫


পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড (Pioneer Knitwears (BD) Ltd.) হলো বাদশা গ্রুপের (Badsha Group) একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। বাদশা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কর্ণধার হলেন জনাব বাদশা মিয়া, যিনি একইসাথে এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×