ছোটবেলা থেকেই আমি হুজুরদের সম্মান করি।
হুজুররা সাধারন মানুষের মতো নয়। এরা নামাজি। মাথায় টুপি, মুখে দাড়ি। কেউ কেউ নামাজ পড়তে পড়তে কপালে স্থায়ী দাগ করে ফেলেছেন। ছোটবেলা থেকেই আমি মোল্লাদের শ্রদ্ধার চোখে দেখি। তাদের ছাড়া আমাদের উপায় নেই। মসজিদে হুজুর নামাজ পড়ান। একটা দোকান উদ্বোধন করতে হলেও হুজুর লাগে। মানুষ মরে গেলেও হুজুর লাগে। বাচ্চাদের কায়দা, আমপারা আর কোরআন শেখানোর জন্য হুজুর লাগে। সহজ সরল সত্য কথা হলো- সব মিলিয়ে জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত হুজুর ছাড়া আমাদের গতি নেই। আমি নিজে মসজিদে গিয়ে কায়দা পড়েছি। বাসায় হুজুর এসে আরবী পড়িয়েছেন। আমি বিশ্বাস করি হুজুররা সাধারন মানুষের চেয়ে আলাদা। কিন্তু হুজুররা বারবার আমার বিশ্বাস ভঙ্গ করেছেন।
শাপলা চত্ত্বরে হুজুরদের হিংস্রতা দেখেছি।
হুজুরদের হিংস্রতা দেখে আমার কলিজা কেঁপে উঠেছিলো। এই বাংলায় হুজুরদের সংখ্যা তো কম নয়। পুরো বাংলাদেশে এমন কোনো এলাকা বাদ নেই যেখানে মাদ্রাসা নেই। স্কুল কলেজের হিসাব আছে কিন্তু মাদ্রাসার হিসাব নেই। এই সমস্ত মাদ্রাসাতে কত ছাত্র আছে তার হিসাব নেই। মাদ্রাসাতে কি শেখানো হয়? ওজুর নিয়ম শেখানো হয়, সালাম দেওয়ার নিয়ম শেখানো হয়, গরু জবাই করার নিয়ম শেখানো হয়, বিধর্মীদের কি করে ঘৃনা করতে হয়- সেটা শেখানো হয়। কোন সূরা বা আমল করলে ঘরের অভাব দূর হবে- সেটা শেখানো হয়, কোনো সূরা পড়লে কবরের আযাব থেকে বাঁচা যাবে সেটা শেখানো হয়। বাথরুমে যাওয়ার দোয়া শিখানো হয়। মাদ্রাসায় অপ্রয়োজনীয় জিনিস শেখানো হয়। আজকের যুগে মাদ্রাসার শিক্ষা অচল।
যারা মাদ্রাসায় লেখাপড়া করে-
তাদের বেশির ভাগই মানবেতর জীবনযাপন করতে হয়। অভাবে অভাবে তাদের জীবন পার হয়। মাদ্রাসার শিক্ষা দিয়ে ভালো চাকরি পাওয়া যায় না। হুজুরদের সবচেয়ে খারাপ দিক হচ্ছে এরা মাদ্রাসায় কিশোরদের 'বলাৎকার' করে। আগ্রহ নিয়ে করে। এজন্য হুজুররা একটুও লজ্জিত নয়। যেন মাদ্রাসায় পড়তে আসলে বাচ্চাদের বলাৎকার করতে হবে, এটা নিপাতনে সিদ্ধ। হুজুররা মন্দ কাজ করলে আমার ভীষন কষ্ট হয়। হুজুরদের আমি অনন্য উচ্চতায় দেখতে চাই। আমি মনে করি- সাধারন মানুষ থেকে হুজুররা আলাদা। তারা নামাজি। তারা ধর্মকর্ম নিয়ে থাকেন। তারা আমাদের ইসলামের সঠিক পথ দেখাবেন। আমাদের সত্যের পথে নেবেন। আমাদের বেহেশতে নিবেন। অথচ হুজুররা নেশাও করে। মাদ্রাসার ছাদে বসে নেশা করে।
আমি ছোটবেলায় দেখেছি-
বাচ্চা বিছানায় পিসাব (প্রস্বাব) করে। বাবা মা হুজুরের কাছে বাচ্চাকে নিয়ে যান। হুজুর দোয়া পড়ে মাথায় ফু দিয়ে দেন। পানিপড়াও দেন। বাচ্চারা খেতে চায়, বাচ্চা ঘুমায় না- হুজুর দোয়া পড়ে ফু দিয়ে দেন, তাবিজ দেন, তেলপড়া দেন, পানিপড়া দেন, দেন কাইতন। সেই কাইতন কোমরে বেঁধে রাখা হয়। যদিও এখন তেলপড়া, পানিপড়ার বেল নেই। বিজ্ঞানের নতুন নতুন আবিস্কার ধর্মগুলোকে কোনঠাসা করে ফেলেছে। ফু দেওয়া, তেলপড়া, পানিপড়ায় মানুষের কোনো আস্থা নেই। এখন কোনো সমস্যা হলেই- মানুষ ডাক্তারের কাছে ছোটে। যারা ডাক্তারের কাছে যায় না, শুধু দোয়া পড়ে ফু দেয় আর প্রার্থনা করে তারা রোগে ভূগে মরে। এক হুজুর আমাকে বলেছেন, আমি প্রতিদিন দুবার করে masturbation করি। এটা আমার দীর্ঘদিনের অভ্যাস। বিয়ে করেছি। বাচ্চা কাচ্চা আছে। তবুও masturbation করি। বললাম না, দীর্ঘদিনের অভ্যাস। আমি বললাম, আপনি পাচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন, নামাজ আপনাকে মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখতে পারলো না!
আমার এক বন্ধু, রফিক নাম।
এখন সে কুয়েত থাকে। টানা ২৫ বছর তার সাথে যোগাযোগ ছিলো না। এখন যোগাযোগ হয়েছে। কুয়েত থেকে রফিক প্রায়ই ফোন দেয়। আমি পারতপক্ষে তার সাথে কথা বলি না। কারন সে অতি ধার্মিক। এবং কিছুটা গাধা। গাধা হলেও কুয়েত থেকে অনেক টাকা পয়সার মালিক হয়েছে। দেশে জমি করেছে অনেক। নারায়নগঞ্জে দুটা ফ্লাট কিনেছে। রফিকের এক ছেলে, এক মেয়ে। রফিক চায় তার ছেলে আল্লাহর পথে যাক। এজন্য সে তার ছেলেকে মাদ্রাসায় দিয়েছে। এই মাদ্রাসা আবার আমার বাসার কাছে। রফিক ফোন করে আমাকে বলে, কমপক্ষে একবার যেন আমি তার ছেলেকে মাদ্রাসায় দেখতে যাই। আমি রফিককে খুব করে বুঝালাম- তার টাকা পয়সা আছে। সে যেন তার ছেলেকে একটা ভালো স্কুলে দেয়। মাদ্রাসা ভালো নয়। মাদ্রাসা শিক্ষা দিয়ে উন্নত জীবন পাওয়া যাবে না। ভালো চাকরি পাওয়া যাবে না। টানা এক ঘন্টা বুঝানোর পর ছাগল রফিক বলে, ছেলেকে আল্লাহর রাস্তায় না দিলে আল্লাহ আমাকে শাস্তি দেবেন। জান্নাত দিবেন না। শুধু সন্তান জন্ম দিলেই হয় না। এই ছেলের জন্য আমি জাহান্নামেও যেতে পারি। এজন্য আমি আমার ছেলেকে আল্লাহর রাস্তায় দিয়েছি। ছেলেটা ছোট। মাদ্রাসায় যেতে চায় না। কান্না করে।
এতক্ষন আমি অযথাই বক বক করেছি।
এখন আমি আমার মুল বক্তব্য পেশ করিব। লোকাল বাসে চড়ার অভ্যাস আমার আছে। মেট্রোরেল থাকা স্বত্বেও আমি বাসে উঠি। নোংরা বাস। যাইহোক, গত তিন মাসে একই ঘটনা বারবার ঘটছে আমার চোখের সামনে! বাসে একটা মেয়ে চিৎকার করে উঠেছে। কারন, পেছন থেকে একলোক মেয়েটার গায়ে হাত দিয়েছে। যে লোক হাত দিয়েছে, সে একজন হুজুর। মুখে দাড়ি। দাড়িতে আবার লাল রঙ করেছে। পাঞ্জাবি পরা। মাথায় টুপি। অর্থ্যাত হুজুর। কপালে কালো দাগ। তার বয়স আনুমানিক ৫৫ থেকে ৬০ হবে। একজন বয়স্ক মানুষ তার কন্যার বয়সী মেয়ের গায়ে হাত কেন দিবে? লোকটা কি জানে না, বুঝে না- মেয়েটার গায়ে হাত দিলেই মেয়েটা টের পাবে। চিৎকার চ্যাচামেচি করবে। তার মানসম্মান যাবে? চড় থাপ্পড়ও খেতে পারে? তবু কেন বাসের মধ্যে এরা এরকম করে? গত কয়েকদিন এমন ঘটনা আমার চোখে খুব বেশি পড়ছে। আমি ঠিক করেছি, এরপর যদি কোনো হুজুর মেয়েদের গায়ে হাত দেয়, তাহলে সেই হুজুরকে জুতা পিটা করিব। বয়স বেশি হলেও ছাড় নাই।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জুলাই, ২০২৫ দুপুর ১:০২