
আসসালামু আলাইকুম।
হাউজে কাউসার বলতে একটা নদীকে বুঝায়। যে নদী পৃথিবীতে নেই। আছে বেহেশতে। এই ঝর্না বা নদীর পানি অতি স্বাদ। কেয়ামতের পর শুধু মাত্র মুমিনরা এই সুস্বাদু পানি পান করার সুযোগ পাবেন। এবং আনন্দে সে অভিভূত হয়ে পড়বে। মূলত এই পানি আমাদের নবীজির পক্ষ থেকে উপহার স্বরুপ। নবীজি বলেছেন, এই পানি অতি পরিস্কার। দুধের চেয়েও সাদা। সুগন্ধ যুক্ত পানি। এই পানি একবার খেলে মন ভরে যাবে। বাকি জীবনে আর পিপাসা পাবে না। এই পানি আমার ভাগ্যে কি জুটবে?
নবীজি যখন মেরাজে যান।
তখন নবীজি এই নদীর পাড়ে যান। এবং জিবরাইল (আ) কে জিজ্ঞেস করেন, নদীর পাড় খুব সুন্দর। মনি মুক্তা দিয়ে বাধানো ঘাট! জিবরাইল বললেন, হুজুর এই নদী আপনার। ইহা আল্লাহপাক আপনাকে উপহার হিসেবে দিয়েছেন। যারা নবীজির হাদিস মেনেছেন, তারা কেয়ামতের পর এই সুমিষ্ট পানি পান করতে পারবেন। যারা সুন্নত মানেননি তাদের এই পানি খেতে দেওয়া হবে না। ফেরেশাতারা তাদের তাড়িয়ে দেবেন। কেয়ামতের পর ভয়ে ডরে মানুষের মারাত্মক পিপাসা যাবে। লোকজন পাগলের মতো ছোটাছুটি করবে। তাদের গলা বুক যাবে শুকিয়ে। তারা দূর থেকে এই ঝর্নার জল দেখবে আর হায়- আফসোস করিবে।
হাউজে কাউসার নিয়ে কোরআনে আয়াত আছে।
আল্লাহ ঘোষণা করলেন, নবীজিকে কাউসার দান করা হলো। এই সূরা নাজিলের ইতিহাস এই রকম: একদিন আছরের নামাজ শেষে নবীজি মসজিদের বারান্দায় বসে ছিলেন, হঠাৎ কয়েক মূহুর্ত নবীজি অচৈতন্য হলেন। তারপর নবীজি ঠোঁট চেপে মুচকি হাসি দিলেন। এক সাহাবী প্রশ্ন করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! হে আল্লাহর পাঠানো প্রেরিত পুরুষ- আপনার হাসির কারণ কি? নবীজি বললেন, এই মাত্র আমার উপর একটি সূরা অবতীর্ণ হয়েছে। নবীজি সূরা কাউসার পাঠ করে শোনালেন। সাহাবীরা খুশিতে আত্মহারা। সঙ্গে সঙ্গে সাহাবাগন দুই রাকাত শুকরানা নামাজ আদায় করেন।
কেয়ামতের পর নবীজি হাউজে কাউসারে যাবেন সবার আগে।
অপেক্ষা করবেন, মুমিনদের জন্য। নবীর যেসব উম্মত বিদআত করেছেন তারা এই পানি পান করতে পারিবে না। অথচ তারা নবীজির উম্মত। অবাক ব্যাপার এই ঝর্নার পানি সবার আগে পান করবে সমাজের দরিদ্র শ্রেণীর মানুষ জন। যারা ধনী লোকদের কন্যা বিবাহ করতে পারেন নাই। দামী খাবার খেতে পারেন নাই, ভালো জামা কাপড় পরতে পারেন নাই, তারাই কেয়ামতের পর সবার আগে হাউজে কাউসারের পানি পান করতে পারবে। নবীজি যাদের চিনেন, এমন অনেক লোক এই পানি পান করতে পারবে না।
যাইহোক, জান্নাতের এই পানি পান করতে হলে,
নবীজির প্রতিটি সুন্নত আকড়ে ধরতে হবে। এবং বিদআত, শিরক করা থেকে বিরত থাকতে হবে। হে আল্লাহ, হে ক্ষমাশীল দয়ালু প্রভু আমার। আমাকে দয়া করুন, আমি যেন প্রিয় নবীর একজন ভালো উম্মত হতে পারি। নবীজির আদর্শে জীবন গড়তে পারি। জান্নাতে গিয়ে এই পানি যেন পান করতে পারি। যেহেতু জমজম পানি পান করতে পেরেছি, রোজ কেয়ামতের ময়দানেও নিশ্চয়ই আমি এই ঝর্নার পানি খেতে পারবো। আল্লাহ পাক আমাকে পিপাসায় কষ্ট দেবেন না। তিনি মহান। তিনি পরম দয়ালু। তিনি ক্ষমাশীল। পরম করুনাময়। রোজ হাশরে আল্লা আমার ক'রো না বিচার। বিচার চাহি না তোমার দয়া চাহে এ গুনাহ্গার।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:৩৭

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



