মেয়েটা ঘরের সব আলো নিভিয়ে দিয়ে বালিশে মাথা গুঁজে কাঁদছে।কাঁন্নার কোন আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছেনা।নিরবে কাঁদা হয়তো একেই বলে।সব কষ্ট গুলো অশ্রু হয়ে বেঁয়ে যেতে চায় কিন্তু কষ্টতো অপরিসীম যাকে বলে ইনফিনিটি।এদিকে একমাত্র মেয়ের ঘরে সেই বিকেল থেকে কোনো সাড়া শব্দ নেই। তাই রাহেলা বেগম মেয়ের ঘরের সামনে গিয়ে দরজায় টোকা দিলেন কিন্তু কোনো সাড়া শব্দ নেই দেখে ভাবলেন মেয়ে হয়তো ঘুমিয়ে গেছে।
…..গতরাতের রিদিমের কথাগুলো মনে পড়ে গেল তানজিনার।কিভাবে ছেলেটা এতোগুলো কথা বলে গেল... তানজিনা ভাবছে।তার কি আদৌ কোন দোষ ছিল।রিদিম এতোগুলো পঁচা কথা কিভাবে বলল?
---কথাগুলো ভাবতেই আবার কেঁদে ফেলল।কি হইছে ছেলেটার?এমন করছে কেন? কথা গুলো ভাবতে ভাবতেই আবার ঘুমিয়ে গেল।
..সকালে আম্মুর ডাকে তার ঘুম ভাঙল।মাথাটা খুব ব্যাথা করছে।কেউ যেন ভিতর থেকে খেয়ে ফেলছে।ফোনের দিকে চোখ পড়তেই রিদিমের কথা মনে পড়ে গেল।ডায়াল লিষ্ট থেকে রিদিমের নাম্বারটা বের করেই সবুজ বাটন টায় চাপ দিল তানজিনা।না কোনো সাড়া শব্দ নেই।কিছুক্ষণ বাদে বেরশিক একটা কন্ঠ জানান দিল যে নাম্বারটা বন্ধ।
চোখ দুটো একটু জ্বলছে সারাদিন কাঁদার জন্য হয়তো। রিদিমের সাথে জড়ানো মধুর স্মৃতি গুলো চোখের সামনে ভেসে উঠল।
--তাদের পরিচয়টা হয়েছিল ফেসবুকে। রিদিমের সাথে কথায় কথায় তানজিনা জানতে পারে যে ছেলেটা তার এক বছর জুনিয়র।তারপর অনেক কথা হয়।এক সময় ফোন নাম্বার চেয়ে নেয় রিদিম।রাত জেগে তাদের কথা হয়।এর মাঝে রিদিম হঠাত্ করে একদিন প্রোপোজ করে বসে।তানজিনা রিদিমের কথাটা হেসেই উড়িয়ে দেয় কারণ ছেলেটা তার এক বছর জুনিয়র।এরপরও তাদের কথা চলে শুধু বন্ধুর মতন।২৩ ফেব্রুয়ারী ছিল তানজিনার জন্মদিন।সবাই তাকে উইশ করলো কিন্তু তানজিনার মন কোথায় যেন আটকে আছে। সবাই তাকে উইশ করল কিন্তু রিদিম তাকে এখনও উইশ করেনি।তাই একটু অভিমান নিয়েই রিদিমকে ফোন করে তানজিনা।কিন্তু মনটা আরোও বেশি খারাপ হয়ে গেল।ছেলেটার ফোন বন্ধ।তানজিনা ভাবছে যে ছেলেটার ফোন তো কখনোও বন্ধ থাকেনা..কিছু হয়নিতো !!
এইটুকু ভাবতেই থমকে গেল সে। এরপর আকাশের কাঁন্না যেন আজ থামছেই না।তাদের বাড়ি একই শহরে হওয়া সত্ত্বেও তাদের একবার ঈদে ছাড়া আর দেখা হয়নি। হাঠাত্ চোখ পড়লো ফোনের স্ক্রিনে।একটা মেসেজ দেখেই দৌঁড়ে বেলকুনিতে চলে আসলো।রাস্তায় চোখ পড়তেই দেখে যে একটা ছেলে হাতে অনেক গুলো ফুল হাতে নিয়ে কাকভেজা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ।এইটুকু দেখেই দৌঁড়ে দোতালা থেকে নেমে রাস্তায় চলে আসলো তানজিনা। সে এতটা খুশি হয়েছিলো যে তার কোনো কিছুই মাথায় আসলো না।সবকিছুই পাশ কাটিয়ে রিদিমকে জড়িয়ে ধরে বুকে মাথা রেখে কেঁদে উঠল।আনন্দ অশ্রু নাকি দুঃখের সেটা রিদিমের বোধগম্য হলোনা কিছুতেই। তারপর শুরু হলো তাদের ভালোবাসা।দুজনের ছোট বড় খুনসুটি,হাতে হাত রেখে নদীর পাড়ে হাঁটা,কাঁধে মাথা রেখে বসে থাকা,রাত জেগে কথা বলা,একটু রাগ-একটু অভিমান।
...কথাগুলো মনে হতেই মুখটা হাসি হাসি হয়ে গেল তানজিনার।সে আর বেশি কিছু ভাবতে চায়না।আবার ফোন দিল রিদিম কে কিন্তু ফোনটা এখনও বন্ধ।
........................................< অসম্পূর্ণ >..................................