সবুজের বুকচেরা মেঠো পথে হাঁটছিলেন বঙ্গবন্ধু
হাঁটছিলো -৭১
হাঁটছিলো সমতট, হরিকেল, গৌড়, বঙ্গের বাংলা
হাঁটছিলো হাজার বছরের বাংলা, শামসউদ্দিনের বাংলা
লক্ষণ সেনের বাংলা, সিরাজউদ্দৌলার বাংলা
হাঁটছিলো আলাওল, রবীন্দ্রনাথ, ঈশ্বরগুপ্তের বাংলা
জীবনানন্দ নজরুল আর রামমোহনের বাংলা
হঠাৎ বজ্রপাত !----নীল আকাশে বিদীর্ণ বেদনার শব
সমস্ত মানচিত্র জুড়ে ফোটা ফুল-অসহায় ঝরে গেলো
অতঃপর কথা- কাহিনী- গল্প
অতঃপর রক্তাক্ত ইতিহাস।
অতঃপর দক্ষযজ্ঞ শুরু হলো----
কালের কলসের তলে মেডুসার আক্রমণে সবাই পাথর
উটের গ্রীবার মতো -মৃত্যু আর ধ্বংস এসে হানা দিলো, করাল দন্তরাজি
দ্রংষ্টে ক্ষত বিক্ষত করে দিলো সবুজ চাদর
লাল রক্তে ভেসে গেলো সমস্ত প্রান্তর!
হৃ দয়ে ধ্বংস -৭১
হৃদয়ে ধ্বংস পতাকা লাল সবুজের প্রান্তর।
বিনষ্টের ঘুণ-গানে কৃষ্ণ পক্ষ প্রবল কুয়াশায়
আচ্ছন্ন করে ফেললো সমস্ত স্বদেশ
অশনি পাতালচারী মায়ামোহমন্ত্রজালে করে ফেললো চেতনা নিথর
অগনন সূর্যপাতে রক্তহীন শবগন্ধী বাওকুমটা বাতাসে ঘোরে ভৌতিক ছায়ার আছর।
তখনো এ উদভ্রান্ত সংসারে শোনা যায়-------
শোনা যায় মুজিবের গান----
অদৃষ্টকে ধৃষ্টতায় পরাজিত করে ফেরে
দৃপ্ত কন্ঠে ফেরাতে চায় পরাক্রান্ত কাল
ক্রমঃ ব্যর্থ অধিনেতা টপকে যায় রক্তবীজ স্রোত
উত্তাল অগ্নুৎপাতে এই মাটি আবার সবুজ।
তখনো বঙ্গবন্ধু বিন্দুতে বসে
বৃত্তকে বাজিয়ে চলেন-- ফিরে পান পুরোনো সে সুর---
বেলালের আযানের সুরে ক্রন্দন রত দৃকপাতহীণ মদিনাবাসীর মতো
ঘর ছেড়ে উদভ্রান্ত আয়োজনে বের হওয়া লক্ষ বাঙালীর দেহে
শিরায় শিরায় জ্বলে হৃৎ -ডায়নামোর শব্দ ----গলিত তড়িৎ
হাজার প্রান্তরের বাংলা আবার এক সুবেহ-সাদেকে তোলে
অগণিত প্রাণের স্পন্দন।
আমার বঙ্গবন্ধু
স্বয়ং প্রকাশ সূর্যের
স্বয়ং সূর্যোদয়---- স্বয়ং ফিনিক্স
সবুজের বুকচেরা বাংলার মেঠোপথে এখনো তিনিই হেঁটে যান
যারা সূর্যোদয়ের দিকে ক্লান্তিহীণ হেঁটে চলে
তাদের ছায়ার সাথে অনন্ত দিন রাত্রি তিনিই একমাত্র বহমান।