দুপুর তখন পৌনে একটা। চারিদিকে চৈত্রের খা খা রৌদ্দুর। শারীরিক ভাবে অক্ষম একজন ব্যক্তিকে নিয়ে রাজধানীর আসাদগেট পার হচ্ছিল একটি রিক্সা। এমন সময় হুংকার দিয়ে ছুটে আসলেন একজন ট্রাফিক সার্জেন্ট। রিক্সাওয়ালাকে উদ্দেশ্য করে বললেন, এই কোথায় যাস? কেন যা? রিক্সাওয়ালা বিনয়ের সঙ্গে উত্তর দিলো, সংসদ ভবন। অসুস্থ লোক তাই নিয়ে যাচ্ছি। এরপর ট্রাফিক সার্জেন্ট বললেন, ১০টাকা দে। রিক্সাওয়ালা কেন স্যার বলতেই সার্জেন্ট রিক্সার ডান চাকার হওয়া ছেড়ে দিলেন।
সোমবার ট্রাফিক সার্জেন্ট মহিদুল যখন এই অমানবিক ঘটনাটা ঘটাচ্ছিলেন তখন রিক্সা যাত্রী ও রিক্সাওয়ালা দু’জনেই বারবার অনুরোধ করেও তাকে নিবৃত্ত করতে পারননি। এরপর সার্জেন্ট রিক্সাওয়ালাকে গালিগালাজ করতে করতে গিয়ে দাড়ালেন আসাদ গেটের আইল্যান্ডের উপর। রিক্সা থেকে নেমে ওই যাত্রী লাঠিতে ভর দিয়ে কৃত্রিম পায়ে খোড়াতে খোড়াতে গিয়ে দাড়ালেন ট্রাফিক সার্জেন্টের সামনে। নিজের পরিচয় দিয়ে জানতে চাইলেন, এমন করলেন কেন? সার্জেন্ট উত্তর দিলেন যা করেছি, ভালো করেছি। যাত্রী বললো, একটু অমানবিক হয়ে গেলো না? সাজেন্ট উত্তর দিলো, আমি আমার দায়িত্ব পালন করেছি। এই রাস্তায় রিক্সা চলে না। এতে অমানবিকতার কি? যাত্রী বললো, আমি তো দূর্ঘটনার শিকার হওয়ার পর থেকে গত দুই বছর একই ভাবে মোহাম্মদপুর থেকে সংসদ ভবনে যাওয়া-আসা করছি। সার্জেন্ট ক্ষেপে গিয়ে বললেন, সেটা আমার দেখার বিষয় না। উপরের নির্দেশ আছে। অফিসাররা কোন কথা শুনতে চান না। আপনি সংসদে যাবেন, কি যাবেন না, সেটা আমার দেখার বিষয় নয়।
অসহায় ব্যক্তিটি কিছুক্ষণ তার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকলেন। তারপর রিক্সাওয়ালাকে ভাড়া মিটেয়ে অন্যান্য পথচারীদের সহায়তায় রাস্তা পারহচ্ছিলেন। এমন সময় পিছন দিক থেকে সার্জেন্ট টিপ্পনী কাটলেন, ‘পা নেই তো রাস্তায় বের হইছিস কেন?’ এরপর সবাই হতবাক। বলে কি ওই পুলিশ! অবশ্য ওই যাত্রী শুনেও না শোনার ভান করে সংসদ ভবনের দিকে হাটতে থাকলেন। আর রিক্সাওয়ালা জব্বার আলী ফিরে গেলেন মোহাম্মদপুর টাউন হলের দিকে
Click This Link