somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আল-কুরআনের ভবিষ্যত বানী, যেগুলো ঘটেছে

০৯ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আল কুরআনের অনেক ভবিষ্যৎ আছে, আজকে ৩ টি দেওয়া হলো-

পারস্যের উপর রোমানদের বিজয়ঃ
রোমকরা পরাজিত হয়েছে নিকটবর্তী এলাকায় এবং তারা তাদের পরাজয়ের পর অতিসত্বর বিজয়ী হবে, কয়েক বছরের মধ্যে। অগ্র-পশ্চাতের কাজ আল্লাহর হাতেই। সেদিনমুমিনগণ আনন্দিত হবে। [সূরা রুম ২-৩]

পারস্য ও রোমানদের মধ্যে তখন বিবাদ চলছিলো। মক্কার কুরাইশদের মত পারস্যবাসীর কাছেও কোন কিতাব ছিল না। উভয়েই পরকালে অবিশ্বাসী ছিল। অন্যদিকে মক্কার মুসলিমদের সাথে রোমান খ্রিস্টানদের মিল ছিল এদুটো দিকে। প্রথমত মুসলিম ও খ্রিস্টান উভয় জাতিই আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাসী। ঈসা, মূসা, ইব্রাহিমসহ পূর্ববর্তী নবীদের সবাইকেই উভয় জাতিই নবী হিসেবে মানে। সে হিসেবে মক্কার মুসলিমরা চাইতো যাতে রোমানরা বিজয়ী হয়। কুরাইশরা চাইতো পারস্যবাসীর বিজয়। এরই মাঝে রোমানরা শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়। রোমানদের নেতা পালিয়ে যায় অন্যত্র। এতে করে মুসলিমরা খুবই আশাহত হয়, আর মক্কার মুশরিকেরা দাম্ভিকতা দেখাতে শুরু করে। রাসুলুল্লাহ (সা)কে বিষয়টি জানানো হলে তিনি বলেন যে শীঘ্রই রোমানরা পারস্যকে পরাজিত করবে। রোমানদের ঠিক ঐ মূহুর্তে যে অবস্থা ছিল তাতে কয়েক বছরের মধ্যে পারস্য জয়ের বিষয়টা একদমই কল্পনার অতীত। মক্কার মুশরিকরা এ নিয়ে উপহাস করতে লাগে মুসলিমদেরকে।এই আয়াতগুলো নাযিল হয় ৬২০ সনে। এই আয়াত নাজিল হওয়ার ঠিক ৭ বছর পর ৬২৭ সনে রোমানরা অবিশ্বাস্যভাবে পারস্যকে পরাজিত করে। কোরআনের ভবিষ্যদ্বাণী সত্য প্রমাণিত হয়।আরও একটি বিষয় খুবই চাঞ্চল্যকর। এই আয়াতের আরেকটি অর্থ হয়, “রোমানরা পরাজিত হয়েছে, সবচেয়ে নিচু জায়গায় (আদনা-আল আরদঃ পৃথিবীর নিম্নতম স্থান)। – রোমানরা
ইরানীদের কাছে যে জায়গায় পরাজিত হয় সেটা হল ডেড সি বেসিন। অবাক করা বিষয় হচ্ছে আজকে বিজ্ঞান প্রমাণ করেছে যে, পৃথিবীর নিম্নতম স্থান হল ডেড সি বেসিন, এই স্থানটি সমুদ্রতল থেকে প্রায় ৪২৩ মিটার নিচে অবস্থিত।

ইরাম শহর এর রহস্যঃ
সূরা আল ফজর, আয়াত নং ৭ এখানে ইরাম নামক একটি শহরের ধ্বংস এর কথা বলা হয়েছে। কিন্তু ইরাম নামক কোন শহর এর নাম পৃথিবীর ইতিহাসে খুঁজে পাওয়া যায় না। এজন্য ঐতিহাসিক ও তাফসিরকারকগণ ঐ শহরটির সম্বন্ধে কোন ব্যাখ্যা দিতে পারতেন না। বহুদিন ধরেই বেশ রহস্য তৈরী করে রেখেছিল কুরআন। ১৯৭৩ সালে সিরিয়ার এরলুস নামক একটি প্রাচীন শহর খননের সময় কিছু শিলালিপি পাওয়া যায়। এ সমস্ত লিপি পর্যবেক্ষন করে সেখানে ৪০০০ বছরের পুরনো একটি সভ্যতার নিদর্শন পাওয়া যায়। শিলালিপিগুলোতে উল্লেখ্য পাওয়া যায় ইরাম নামক একটি শহরের নাম, যে শহরের সাথে তৎকালীনএরলুস শহরের লোকজন ব্যবসা-বানিজ্য করতো। এই সত্যটা অবিস্কার হলো মাত্র সেদিন, ১৯৭৩ সালে। এর আগে কেউ এই শহরের রহস্য৷জানতোনা। অথচ কোরআন শহরটির কথা বলে গিয়েছে ১৪০০ বছর আগে।

ফেরাউনের লাশ সংরক্ষণঃ
ফেরাউন ডুবে মারা গেছে আর মৃত্যুর পরও তার শরীর অক্ষত রাখা হবে, পরবর্তী সীমালংঘনকারীদের জন্য সতর্কবার্তা হিসেবে।আর বনী-ইসরাঈলকে আমি পার করে দিয়েছি নদী। তারপর তাদের পশ্চাদ্ধাবন করেছে ফেরাউন ও তার সেনাবাহিনী, দুরাচার ও বাড়াবাড়ির উদ্দেশে। এমনকি যখন তারা ডুবতে আরম্ভ করল, তখন বলল, এবার বিশ্বাস করে নিচ্ছি যে, কোন মা’বুদ নেই তাঁকে ছাড়া যাঁর উপর ঈমান এনেছে বনী-ইসরাঈলরা। বস্তুতঃ আমিও তাঁরই অনুগতদের অন্তর্ভুক্ত। এখন একথা বলছ! অথচ তুমি ইতিপূর্বে না-ফরমানী করছিলে। এবং পথভ্রষ্টদেরই অন্তর্ভুক্ত ছিলে। অতএব আজকের দিনে বাঁচিয়ে দিচ্ছি আমি তোমার দেহকে যাতে তোমার পশ্চাদবর্তীদের জন্য নিদর্শন হতে পারে। আর নিঃসন্দেহে বহু লোক আমার মহাশক্তির প্রতি লক্ষ্য করে না। [সূরা ইউনুস ( ৯০-৯২)।
১৮৯৮ সালে এক ফেরাউনের লাশ উদ্ধার হয়। ধারনা করা হয় এটিই কুরআনে বর্ণিত সেই ফিরআউন। লাশটি বর্তমানে মিশরের কায়রোতে দ্যা রয়েল মমী হলে একটি কাচের সিন্দুকের মধ্যে রয়েছে। এর দৈর্ঘ্য ২০২ সেন্টিমিটার। ৩১১৬ বছর পানির নীচে থাকা সত্ত্বেও তার লাশে কোন পচন ধরে নি। এটা কি মোটেও যৌক্তিক? মুহাম্মদ (সঃ) এর যুগের আরব জাতি ও অন্যরা মিশরীয়দের মধ্যে, ফেরাউনের পানিতে ডুবে মারা যাওয়া কিংবা তার লাশ যে সংরক্ষিত হবে এরকম ভবিষ্যতবানী করা এবং তা মিলে যাওয়া এক কথায় অসম্ভব।

সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই এপ্রিল, ২০২০ ভোর ৪:৪৯
১১টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×