আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে গবেষণার জন্য নেই যথেষ্ট সুযোগ। শিক্ষকদের নাই কোন সুযোগ সুবিধা, গবেষণার জন্য নেই উপযুক্ত পরিবেশ। স্যার দেশের বাইরে যান গবেষণা করার কাজে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক ডিপার্টমেন্টে হয় শিক্ষক সঙ্কট। শিক্ষার্থীরা পরে বিপদে। অনভিজ্ঞ স্যার নেই ক্লাশ, ছাত্র-ছাত্রী হয় বিরক্ত, ক্লাশে ঘুমায়, না হয় ফাঁকি দেয়।
অভিজ্ঞ শিক্ষক নাই তো নাই, আবার নাই যথেষ্ট শিক্ষক, তাতে আবার শুরু হয়েছে নতুন নতুন ডিপার্টমেন্ট খুলার হুড়াহুড়ি।
ইলেকট্রনিক্স এন্ড টেলিকমিউনিকেশন এর মত ডিপার্টমেন্ট নাকি শুধু মাত্র ৪ (চার) জন শিক্ষক আছে।
এই ৪ (চার) জনের মধ্যে কেউ থাকেন আবার সদ্য পাশ করা শিক্ষক। যাদের নিজেদের অভিজ্ঞতায় শূণ্যতা, তারা ছাত্র-ছাত্রীদের কি দিবে?
শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে আছে একটা বিরক্তিকর নিয়ম: শুধুমাত্র ক্লাশের বেশি সিজিপিএ পাওয়া শিক্ষার্থী শিক্ষক হওয়ার যোগ্যতা রাখে, সে যেমনই হউক না কেন, পড়া বুঝাইতে পারুক আর না পারুক ভালো রেজাল্ট মানে শিক্ষক। এদের আবার আরেকটা স্বপ্ন থাকে, দেশের বাইরে গিয়ে মাস্টার্স করবে, পিএইচডি করবে। তাই সেদিকে থাকে তাদের মনযোগ। শিক্ষার্থীদের দিকে খুব একটা মনযোগ দিতে পারে না। মাঝখান থেকে ভুক্তভোগী হয় শিক্ষার্থীরা। হতাশার দিকে ঠেলে দেওয়া হয় শিক্ষার্থীদের।
আমরা প্রায় দেখি ক্লাশের ৩-৪-৫-৬-৭ পজিশনে থাকা শিক্ষর্থীরা ফার্স্ট বয়/গার্লের চেয়ে বেশি বুঝাইতে পারে, বেসিক ভালো থাকে। তারা দেশের বিভিন্ন কোম্পানিতে শিক্ষিত দাস বা সরকারী চাকুরীতে সরকারি দাস হিসেবে চাকুরী করে। অনেক সময় ভাগ্য ভালো থাকলে কোন না কোন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হওয়ার সুযোগ মিলে।
আমরা সেইসব শিক্ষার্থীর মেধাকে কাজে লাগাইতে পারি না। আমাদের সিস্টেম আমাদেরকে অগ্রসর হতে দিতে পারছেনা।
ছোটভাই চাচ্ছে যে বিষয়ের উপর প্রজেক্ট করতে, শিক্ষক নাই বলে করতে পারছে না, যে বিষয়ে অভিজ্ঞ শিক্ষক আছে সেটার উপর প্রজেক্ট করতে হবে। শিক্ষক সঙ্কটের কারণে একজন শিক্ষার্থী তার ইচ্ছানুযায়ী প্রজেক্ট করতে পারছেনা, ইচ্ছার বিরুদ্ধে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
এই হল আমাদের উচ্চ শিক্ষার হাল।
এখন আসি প্রাথমিক দিকে,
প্রাইমারী তে প্রশ্ন ফাঁসের কথা শুনি, জিএসসিতে প্রশ্ন ফাঁসের কথা শুনি, এসএসসিতে, এইচএসসিতে শুনি। এখন ভর্তি পরীক্ষার কথাও শুনি।
এখন আমরা যদি প্রাথমিক পর্যায়ে সঠিকভাবে মেধাবীদের বাছাই না করতে পারি, তাহলে এই হতাশাজনক শিক্ষা ব্যবস্থা এই দেশকে কোথায় নিয়ে যাবে সেটাই এখন বিরাট প্রশ্ন।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:০৬