ভারতের Citizenship Amendment Act (CAA) এর উদ্দেশ্য আফগানিস্তান, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান থেকে আগত হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পারসি এবং খ্রিষ্টান এই ছয় ধর্মাবলম্বী অভিবাসীদের ভারতীয় নাগরকিত্ব দেয়া। কিন্তু প্রশ্ন হলো- মুসলিমদের কেন বাদ দেয়া হলো? কারণ চরম হিন্দুত্ববাদী উগ্র মোদি সরকার শুধুই মুসলিমদের দেশছাড়া করার পায়তারা করছে। সাংবিধানিকভাবে ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র হয়েও ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিক নির্ধারণ করে বিজিবি সরকার তার সাম্প্রদায়িক পরিচয় স্পষ্ট করেছে বিশ্বের কাছে।
ভারতের নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে হলে পরিবারের একজন অবিভাবকের ১৯৭১ সালের আগে ভারতে আসার প্রমাণ দিতে হবে। এটাই হলো সেই বিতর্কিত National Register of Citizens (NRC)। কাগজপত্র বা নথি দেখাতে না পারলে অনুপ্রবেশকারী হিসাবে চিহ্নিত করে ভারত থেকে বহিষ্কার করে দেবে। এখন প্রশ্ন হলো- ৭১ এ ভারতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিল কারা? নিশ্চয় বাংলাদেশিরা; তাদের মধ্যে হিন্দু মুসলমান বা অন্য ধর্মের অনেকেই আছেন। হিন্দু কিংবা অন্য ধর্মের মানুষেরা বেঁচে যাবেন কারন CAA মাধ্যমে তারা নাগরিকত্ব পেয়ে যাবেন। কিন্তু বাঁচতে পারবেনা শুধুই মুসলিমরা। অর্ধশত বছর ভারতের নাগরিক হিসেবে বসবাসের পরেও কেবল মুসলিমরা হবেন ভূমিহীন ও দেশহীন।
NPR/NCR/CAB এগুলো পড়ে প্রথমে হয়তো ভালই মনেহবে কিন্তু এতে যে সুক্ষ পরিকল্পনার মাধ্যমে মুসলমানদের দেশহীন করার হিংসা লুকিয়ে আছে তা বুঝার উপায় নাই। কারন আইনের কোথাও মুসলমান এই শব্দটা পর্যন্ত ব্যবহার করা হয় নাই। সেই পরিকল্পনা মাফিক চলছে দমন, পীড়ন, নির্যাতন, মানুষ হত্যা, বাড়িতে আগুন দেয়া, মসজিদ ভাঙ্গা। এই অত্যাচারের পরিমাণ এতটাই বেড়েছে যে তার ছবি ও ভিডিও দেখতে না চাইলেও ইন্টারনেটে বারবার আপনার আমার চোখে পড়ছে।
কিন্তু আমাদের কিই বা করার আছে? অবশ্যই আছে প্রতিবাদ করতে পারি যে যার যায়গা থেকে। আসছে মুজিব বর্ষ উপলক্ষে সাম্প্রদায়িক মোদিকে মূলবক্তা হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে অথচ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ছিলেন একজন অসাম্প্রদায়িক অবিসংবাদিত নেতা। যেখনে মুজিব মানে স্বাধীনতা আর মোদি মানে পরাধীনতা, যেখানে মুজিব মানে ন্যায়বিচার আর মোদি মানে ভীষণ অত্যাচার। সেখানে মুজিব বর্ষে সাম্প্রদায়িক মোদিকে মোটেও মানায় না। আমরা চাই না- মোদি বাংলাদেশে এসে মুজিব বর্ষকে কলঙ্কিত করুক। ৯৫ ভাগ মুসলমানের দেশে মোদি এসে ভেটকি মাছের মত পানিতে সাঁতার কাটবে তা হয় না। কারণ এদেশে জলের বড়ই অভাব তাই মোদিকে এদেশে সাঁতার কাটতে দেয়া হবে না। সময়ের বিবেচনায় প্রতিবাদি জনমানুষের জন্য মোদিকে এই বাংলায় আসতে না দেওয়েই হচ্ছে সবচেয়ে যৌক্তিক প্রতিবাদ।