somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিরোধী দলের সাংসদদের একযোগে পদত্যাগের সম্ভাবনা: হ্যাঁ অথবা না জয়যুক্ত হতে যাচ্ছে!? :|

২৫ শে নভেম্বর, ২০১০ রাত ১০:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


পেপারে শুধু চিত্তাকর্ষক খবরগুলিই থাকে। দিনকাল এমন হয়েছে যে খারাপ খবর না হলে সেটা চিত্তাকর্ষক আর মনে হয় না! আজ সকালে প্রথম আলোর প্রথম হেডলাইন, লাল কালিতে দেয়া, বিরোধী শিবিরের সাংসদরা একযোগে পদত্যাগ করতে পারেন। সর্বাত্নক আন্দোলনের পথে তাদের এই পদক্ষেপ। পাশেই ছোট করে আছে ধর্মভিত্তিক দলগুলোও এই আন্দোলনের সাথে একাত্ততা ঘোষনা করেছে! :|

বাংলাদেশে সংবিধানে (খুব সম্ভবত ৭৯ অনুচ্ছেদে) ফ্লোর ক্রসিংয়ের কোন উপায় রাখা হয় নাই। দলের প্রতি আনুগত্য থাকা এখানে বাধ্যতামূলক। দলের বিপক্ষে সংসদে ভোট দেয়া বা মত প্রকাশ এখানে নিষিদ্ধি! দল যা সিদ্ধান্ত নেবে তাই মেনে নিতে হবে। শুধু বলবেন, হ্যাঁ/না জয়যুক্ত হয়েছে, হ্যাঁ/না জয়যুক্ত হয়েছে! আদতে এটা অগনতান্ত্রিক মনে হলেও বাংলাদেশের বাস্তবতা কিন্তু এর স্বপক্ষে কথা বলে। গত সরকারের আমলে ৩০ এপ্রিলের নাটকে আবদুল জলিল এবং তার এই পরিকল্পনার সঙ্গী যমুনা গ্রুপের বাবুলের ৫০ কোটি টাকা দিয়ে ৫০ জন সাংসদকে কিনে ফেলা এবং তাদের পদত্যাগে প্রভাবিত করার ষড়যন্ত্রের কাহিনী এখন সবাই জানেন ডিবির ফাঁস করে দেয়া রিমান্ডের অডিও টেপের কল্যানে। যে দেশে ১ কোটি টাকার লোভে একজন সাংসদ দলীয় আনুগত্য ছেড়ে পদত্যাগ করতে পারেন, সেদেশে এরচেয়ে কম টাকায় বা ছোট খাটো যে কোন কারনে তিনি ফ্লোরও ক্রস করতে পারেন। আবার আবদুল জলিল আওয়ামী লীগের একজন সিনিয়র নেতা হয়েও তার খেলা যে বন্ধ রেখেছেন তার বিশ্বাস কি? আর এই ফ্লোর ক্রসিংয়ের গনতন্ত্রের দাবীতেই দেখি কিছু বিদেশী রাষ্ট্র উঠে পড়ে লাগে! :-*

যখন থেকে আমরা গনতন্ত্র দেখছি তখন থেকেই বিরোধীদলকে দেখি হরতাল আর মারামারিতে ব্যস্ত। দিনরাত চিন্তা কখন ক্ষমতায় আসব...কখন ক্ষমতায় আসব? :-* গনতন্ত্রের আগেও এই ধারা ছিল। একেবারে ব্রিটিশদের সময় থেকে এরশাদের বিরুদ্ধে পর্যন্ত আমাদের রয়েছে আন্দোলন সংগ্রামের দীর্ঘ ইতিহাস। তবে সেটা ছিল প্রয়োজনীয় আন্দোলন। এখনকার আন্দোলন গুলি কেন হয় ঠিক ধরতে পারি না। সংগ্রামের কেবল একটি রূপই বোধহয় আমাদের মজ্জাগত হয়ে গেছে! ভাঙচূর, জ্বালাও পোড়াও! X((

আন্দোলন সংগ্রামে হরতাল বা অসহযোগ একেবারে চূড়ান্ত পর্যায়ে আসার কথা। তার আগে প্রয়োজন জনমতের। এরশাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন, তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার দাবীতে আন্দোলন, কিংবা গেল নির্বাচনে সুষ্ঠ ভোটের জন্য আন্দোলন সব ক্ষেত্রেই কিন্তু সফলতা এসেছে বিপুল জনমতের কারনে। জনসমর্থনহীন একটি আন্দোলনে হঠাৎ করে আন্দোলন করলে লাভ হয় কি? হয়তো স্কুল-কলেজ, কিছু কারখানা-ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে, গাড়ি বাদ দিয়ে মানুষ রিক্সায় যায়, এই পর্যন্তই তো! জোরদার আন্দোলন হলে তার পিছনে জনমত থাকে আর তখন এমনিতেই দ্রুত ফল পাওয়া যায়। দ্রুত ফল পাওয়া যায় তাই বা বলি কি করে? তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার জন্য আন্দোলনে বা এরশাদ হটাও আন্দোলনে মাসাধিককালের লাগাতর হরতাল দিতে হয়েছিল। এমনটা না হলে পাবলিকের মনোযোগও আকর্ষন করা যায় না, সিদ্ধান্তও পাল্টানো যায় না। দুএকটা বাস না পোড়ালে, কিছু গাড়ী না ভাঙলে হয় নাকি? :|আর দলগুলির মধ্যে কোন পরমতসহিষ্নুতা বা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের মনোভাব তো একেবারে নেই!

বিএনপির সাংসদেরা পদত্যাগ করলে তার বদলে আরও কিছু নতুন মুখ সংসদে আসবে! মেনন-এশাদরা মুখিয়ে আছে সংসদের বিরোধী ফ্লোরটি দখলের জন্য। :| নাকি হবে একটি জাতীয় সরকার?:| জলিল-তোফায়েলরা কি বসে আছে? সরকারীদল থেকেও যে দুএকজন পদত্যাগ করে সরকারের বিরুদ্ধে যাবে না তার কি ভরষা?! সামনে আরও সমস্যা আছে। তত্বাবধায়ক ব্যবস্থার মেয়াদ কিন্তু প্রায় শেষ! এরপরে নির্বাচন কিভাবে হবে? যুদ্ধাপরাধের বিচারের কি হলো? X(জামায়াত ইসলামী নিষিদ্ধ হবে কবে? X((X(

হরতাল বাংলাদেশের গনতান্ত্রিক সংস্কৃতিতে ঢুকে গেছে। প্রত্যেকটি দেশের গনতান্ত্রিক ধারা গুলো কিছুটা অন্যরকম হয়। একটার সাথে অন্যটার মিল নেই, একক কোন সংস্কৃতি নেই গনতন্ত্রের। হরতাল দেয়াটা এখন আর দোষের কিছু না! জনসমর্থন না থাকলে এমনিতেই হরতাল তেমন একটা পালিত হয় না। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে আমরা কি সমাধানের পথে এগুচ্ছি? আর কতদিন এমন ভাসমান গনতন্ত্র দেখতে হবে? গনতন্ত্র আসলে অর্জনের বিষয়। এর কোন ম্যনুয়েল নেই!

আমার এক বন্ধু একবার বলেছিল, (পরীক্ষার মধ্যে লাগাতর হরতাল এবং বিশৃঙ্খলা নিয়ে টেনশনে ছিলাম) আরে বাংলাদেশে কোন ঝামেলাই বেশিক্ষন থাকে না! দু'একদিন যাক দেখবা সব ঠান্ডা হয়ে গেছে! কোন না কোন একটা সমাধান চলে আসে। বাঙালীর ধৈর্য্য কম! স্মৃতিশক্তি আরও কম! ভুল হলেও খুব তাড়াতাড়ি একটা সিদ্ধান্ত আসবেই!;)

সেটাই হয়েছে আমাদের মূল সমস্যা। আমরা স্থায়ী কোন সমাধান করি না। শুধূ জোড়াতালি। জোড়াতালি কিন্তু বেশিদিন টেকে না!

সবকিছু দেখে মনে হয় যায় দিন ভাল আসে দিন খারাপ। সামনে বোধহয় আমাদের জন্য একটা খারাপ সময় অপেক্ষা করছে। /:):|


(পোস্টটি আসলে কোন "লেখা" নয়! একধরনের মন্তব্য বা প্রতিক্রিয়া! আপনারা আপনাদের প্রতিক্রিয়া রেখে যেতে পারেন। পোস্টের মন্তব্যের জবাব দেয়ার প্রয়োজন নেই বোধহয়! ) :)

সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে নভেম্বর, ২০১০ রাত ১২:০৮
৬টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×