মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিন জামায়াত নেতার রায় আগামী সেপ্টেম্বরে কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সম্ভাব্য এই তিনজন হচ্ছেন, জামায়াতের নায়েবে আমির আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ও জামায়াত নেতা কামারুজ্জামান। অন্যদিকে, আবুল কালাম আযাদের নাম শীর্ষে থাকলেও পলাতক থাকায় তার ফাঁসি কার্যকর করতে পারবে না সরকার।
পাশাপাশি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে বিএনপির নেতা গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীসহ তদন্ত চলছে ৬ জনের বিরুদ্ধে।
দ্রুততম সময়ে রায় কার্যকর করার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন প্রসিকিউশন বিভাগের প্রধান প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু।
প্রধান প্রসিকিউটর বলেন, “আশা করছি সেপ্টেন্বর মাসে চার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির রায় কার্যকর হয়ে যাবে। ট্রাইব্যুনালের সব মামলার কাজও খুব দ্রুত এগিয়ে চলছে। আগামী দুই মাসের মধ্যে ৪-৫টি রায় হতে পারে বলে মনে করছি।”
প্রায় একই মত প্রকাশ করেছেন ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এমকে রহমান।
তিনি বলেছেন, “এ পর্যন্ত ৬টি মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী সেপ্টেম্বরে এ রায়গুলোর আপিল শুনানি শেষে রায় কার্যকর হতে পারে।”
এমকে রহমান আরো জানান, আপিল বিভাগে কাদের মোল্লার মামলাটি শুনানির ক্ষেত্রে সময় নিচ্ছে। যেহেতু এই মামলাটিতে রায়ের পর সরকার পক্ষের আপিল করার বিধান করা হয়েছে। সে জন্য বেশ কয়েক অ্যামিকাস কিউরির মতামত নেয়া হচ্ছে। অন্যান্য মামলার ক্ষেত্রে তা হবে না। তাই খুব দ্রুতই রায় কার্যকর হবে বলে মনে হচ্ছে।
একইভাবে, দণ্ডপ্রাপ্তদের রায় কার্যকরের বিষয়ে উচ্চ আদালতে দ্রুত আপিল কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট আইনজীবী, প্রসিকিউটর ও সুপ্রিম কোর্ট সূত্র জানিয়েছে।
তদন্ত চলছে ৬ জনের বিরুদ্ধেঃ
যে ছয়জনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্ত চলছে তারা হলেন: বিএনপি নেতা গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী, বিএনপি নেতা জাহিদ হোসেন খোকন, মাওলানা আবদুস সোবাহান, জাতীয় পার্টির ইঞ্জিনিয়ার আবদুল জব্বার, সিরাজুল ইসলাম মাস্টার, রুস্তম আলী ও আমজাদ মিনার।
ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীনঃ
ট্রাইব্যুনালে যে মামলাগুলো বিচারাধীন রয়েছে, তার মধ্যে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী, আবদুল আলীম, আশরাফুজ্জামান খান, চৌধুরী মুঈনুদ্দীন ও মতিউর রহমান নিজামীর মামলা দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। আগস্টের মাঝামাঝি অথবা সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে এই ৫টি মামলার বিচারিক কার্যক্রম শেষে রায় ঘোষণা করা হতে পারে।
ট্রাইব্যুনালে মামলাগুলো দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রসিকিউটর রানা দাশগুপ্ত।
তিনি জানান, আসামিপক্ষ অহেতুক সময় ক্ষেপনের কৌশল অবলম্বন করলেও আগস্টের মাঝামাঝি অথবা সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে ৫টি মামলার বিচারিক কার্যক্রম শেষে রায় ঘোষণা করা হবে।
বর্তমানে ২টি ট্রাইব্যুনালে ১৭টি মামলার কার্যক্রম পরিচালনা হচ্ছে।
অন্যদিকে ট্রাইব্যুনালের দেওয়া দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি কাদের মোল্লার আপিল শুনানি শেষ। অ্যামিকাস কিউরিদের মতামত নেয়া হচ্ছে। খুব শিগগিরই এই মামলার রায় কার্যকর করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সম্প্রতি গোলাম আযমকে দেওয়া ৯০ বছরের সাজার বিরুদ্ধে আপিল করার বিষয়টিও ভাবছে সরকারপক্ষ ।