somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কবি মুঈন হুদা ও তাঁর আধুনিক কবিতা প্রসঙ্গ--------রিয়েল আবদুল্লাহ

১৮ ই জুলাই, ২০১৭ সকাল ১০:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আধুনিক কবিতায় কবি মুঈনহুদা ও তাঁর কবিতা প্রসঙ্গ
------------------------------------রিয়েল আবদুল্লাহ

মেধা,মনন,প্রতিভা ও চিন্তা চেতনার ভেতর নিজেকে নিবদ্ধ রেখে যে কজন কবি এই ময়মনসিংহ শহরে আলোড়ন তোলেছেন তাঁদের মধ্যে কবি মুঈন হুদা অন্যতম। প্রফেশনে তিনি মূলত পদার্থবিদ হলেও তাঁর কবিতা যেন সেদিকে যায় না। আসে তাঁর অন্তরের অন্তস্তল থেকে। একজন সুচিন্তক কবি তাঁর চিন্তার ব্যাপ্তিটা কতটা সদূর-প্রসারী তা তাঁর কবিতা না পড়লে বুঝা যায় না ।

কবির কথায়ই বলি-“কবি কখনও মরে না/ কেননা কবি ও কবিতার কখনও মৃত্যু নেই/নক্ষত্রের মত এরা জাগ্রত থাকে
স্ববিষ্ময়ে/ জন্মকালে নিয়ে আসা দ্বিতীয় আত্মা তাঁকে পূণর্জন্ম দেয়/মানুষের ভেতর জগতের ভেতর সে জেগে থাকে জনম জনম।”

হ্যাঁ কবি কখনও মরে না-কবি ও কবিতার মৃত্যু নেই । কেননা কবি সমাজের দর্পণ আর কবিতা হলো সে দর্পণে কবিরই আত্মসৃষ্ট প্রতিবিম্ব । প্রথমেই বলবো একজন কবি একজন দার্শনিক ও সমাজের সু-সচেতন ব্যক্তি। এই যে জাল দিয়ে মৎস শিকারি যেমন করে গভীর জল ছেঁকে মাছ তুলে আনেন, তেমন করে কবি শুধু ভালোবাসাই নয়, দেশ ও রাষ্ট্রের ভেতর-বাহিরে যতো সঙ্গতি অ-সঙ্গতি আছে সব ছেঁকে তুলে আনেন যা চিরন্তন সত্য । আর সে সত্যকেই নিদৃষ্ট ভাষার কারুকার্যে -ছন্দ মিলে ব্যকরণের মাধূর্য্যতায় ভাষার গভীরতায় কাব্য করে পঠনযোগ্য রূপ দেন বইয়ে কিংবা ভাঁজপত্রে কিংবা পত্রিকার পাতায় । মোটকথা পাঠকের দৃষ্টিগোচরে আনতে চলমান মাধ্যমগুলোতে ।

কবিতার ইশ্বর কবি। কারণ কবি সৃষ্টি করেন। তবে কবি কেবল নিজের জন্য তাঁর সৃষ্টি করেন না-তিনি সৃষ্টি করেন সবার জন্য । কবি সবার। আর তাই তাঁর কাব্য ও যে কোন সৃষ্টি চিরধ্রুবক ও সবার। কবি জন্ম দেন-তাঁর ভেতরের চেতনা কে তিনি লালন করেন প্রতিরূপ সৃষ্টির কাজে। আর তাঁর সৃষ্টির ভেতরেই তাঁর সে প্রতিচ্ছবি দেখা যায়। যা চিরন্তন চিরকালীন সমকালীন ।

কবি মুঈন হুদা তাঁর জীবনের খন্ড-বিখন্ড অভিজ্ঞতা-জ্ঞান ও গবেষণা জীবন দর্শনের আলোকে অনবরত লিখে যান। তাঁর সৃষ্টিতে থাকে প্রেম-প্রীতি-ভালোবাসা- দ্রোহ-বিদ্রোহ নানা প্রকার মেসেজ। যা পাঠকের প্রাণকে তথা ইন্দ্রিয়কে করে সচেতন । সন্ধিগ্ধ পাঠক মাত্রই এই সকল বিষয়াবলী আত্মস্থ করেন এবং তা জীবনের প্রতি পদে কাজে লাগান। পক্ষান্তরে তিনি একজন সু-পাঠকও হন। একজন সুপাঠক যখন কবি হন তখন তাঁর বিষয়টা আলাদা মাত্রা পায়।

রাজনীতির মাঠে একেবারে রুট লেভেল থেকে উঠে আসা একজন দক্ষ রাজনীতিবিদের মতন তাঁর কাব্যের মধ্যকার অন্ত-আলোড়নকে তিনি যেভাবে ফুটিয়ে তোলেন, তা অন্যকোথাও অন্যকোন কবির কবিতায় তা পাওয়া যায় না।

একজন কবিকে সর্বস্তরের মানুষের সাথে মেলার প্রবণতা থাকতে হয়। তাহলেই তিনি মানুষের দুঃখগুলো বুঝতে পারেন। দেশ ও দশের কথা বুঝতে পারেন। রাষ্ট্রের ভেতর বাহিরের কান্না সুখানুভূতিগুলো তিনি ফুটিয়ে তুলতে পারেন। আর খুব সহজে সহজিয়া সুরে ফুটিয়ে তুলতে পারেন তেমনই একজন মানুষ হলেন কবি ও কথা সাহিত্যিক মুঈন হুদা।

জীবনের চোরাবালিতে আটকে গিয়ে যিনি লিখেছেন যাপিত জীবনের সুখ-দুঃখ,আনন্দ-বেদনার এক অনন্য সাধারণ কাব্যগ্রন্থ হচ্ছে সময়ের চোরাবালি। যা আমাকে কবি সম্বন্ধে তাঁর বোধ ও কবি আচরণ এবং তাঁর কবিতা সম্বন্ধে লিখতে উৎসাহ যোগায়। কবির অন্যান্য কবিতাবলীও বেশ সুপঠনযোগ্য ।

কবির জীবনের পলে পলে উত্থান পতনের বিচ্ছিন্ন একচিত্র খুঁজে পাওয়া যায়। যা কবির শুদ্ধ মনের- শুদ্ধ আত্মার দ্রোহের প্রকাশ- প্রেমের ও ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ। সমাজ ও জীবনের দহন কবিকে আরোও বেশি দগ্ধ করে।

কবির নানা রঙিন দ্রোহের সম্মিলন তার মধ্যে খন্ড দ্রোহ যেন ভেসে উঠে তার কবিতায়। তিনি বলেন –“সময় যেনো উড়ন্ত শকুন/একএক করে নিয়েছে সব/এখন হাতে শোভে খবরের কাগজ/মুখে ফোটে রাজনীতির বোল।”

এ যেনো কবির চক্ষুস্নাত কোন কাহিনীর অপূর্ব বিবরণ। কবি কথার কারুকাজে সমাজ জীবনের প্রতিচ্ছবি খুব সহজে ফুটিয়ে তোলেন। বলেন-
“কলমুদ্দিনের বয়স হয়েছে/আমারও কম নয়/হয়তো আবার বদলে যাবো/তোমায় নিয়ে চারুঘর বাঁধবো/হাসবো খেলবো,জিসান থাকবে কোলে/আসবে মন্বন্তর,পুড়বে কপাল আমার।”

কবি উপরের অংশে সুক্ষভাবে খুব কাছের মানুষের কথাটিও বলেছেন। জিসান তাঁর প্রিয়র চাইতে বেশী প্রিয় একজন। এ যেন কবির একান্ত সত্যাভিজ্ঞতা। কবি হৃদয়ের কান্নাকে অতিক্রম করতে চান। সাথে চান দুঃখকেও প্রতিহত করতে আর সেজন্য কবি অনায়াসেই লেখেন-
‘‘ ফের যদি আসে/তবে নিশ্চিত জেনে রাখো/আদিম হিংস্রতায় মেতে উঠে/দফার রফা করে/নেতা দিয়ে ঝোল খাবো/
তত্ত্বের ভর্তা খাবো/তারপর কবর হবো/আঁকবো নিজের মানচিত্র।”

গতানুগতিক জীবনধারার বাইরেও মানুষের জীবন থাকে-আধুনিকতায় কেউ কেউ গা ভাসিয়ে দেন। অতি সহজে স্বাভাবিক জীবন ভুলে হালের ফ্যাশনে নিমগ্ন হন। তখন কবি বলে উঠেন-
“সহাসাই আনন্দ বালিকারা হেসে উঠে হাততালি দেয়/আর তুমি! পশ্চিমে চেয়ে থেকে বিমর্ষ যেনো/পলকেই পড়ে নাও হালের ফ্যাশন।”

হালের ফ্যাশানে যে যেভাবেই গা ভাসিয়ে চলুক না কেন কবি তার আগের স্থানেই থেকে যান। তাঁর স্মৃতিচারণ,আর তাঁর সত্য উচ্চারণ যেনো বলে দ্যায় তিনি কেবল ভাবুক কবি নন,তাঁর আছে নিজস্বতা-আর নিজস্ব ভূবন । চিরচেনা ভালোবাসা এই জনপদের প্রতি।

“সান্ধ্য নেমে এলেই গোলাপ সুবাস/ইশারায় ডাক দেয়,স্মৃতিপটে ভেসে যায়/ব্রহ্মপুত্রের পাড়; বোটানিকেল গার্ডেন/
নিয়ন আলোয় মোড়া চীন-বাংলা মৈত্রী সেতু।

কবি মাটির সুধা বুকে গন্ধমেখে নিজের স্থানিক পরিবর্তন করেন না। সবাই রঙিন চোখে রঙিন কিছু দ্যাখতে যখন ব্যস্ত থাকেন তখন কবি তাঁর স্মৃতিবিড়জিত নষ্টালজিক স্থানগুলো ভুলে যান না বলে তাঁর মনন জুড়ে ফিরে ফিরে আসে প্রাণের ব্রহ্মপুত্র-কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আর রাতের আলোময় জ্বলজ্বলে ব্রীজ।

এত কষ্ট ও বেদনার ভেতরেও কবি প্রেমিক এক পুরুষ। কিছু পাবার জন্য কবি কাউকে ভালোবাসেন না। কেবল ভালোবাসেন নিঃস্বার্থভাবে। জনারণ্যে দাঁড়িয়ে প্রেমিকার কপালে চুমো খেতে তাঁর আপত্তি নেই। কবি বলেন-“জন অরণ্যে দাঁড়িয়ে যদি বলো-/ঝাপটে ধরে কপালে চুমো খেলে খুশি হবো আপত্তি করবো না। ”

তাঁর বিনিময়ে কবি ফুলের তোড়া, প্রেমিক আশ্বাস, শেষ রাতের তারা-নিদাঘ দুপুরে উষ্ণ সান্নিধ্য দিলেও কবি নেবেন না-কারণ তিনি শুধু প্রেয়সীকে ভালোবাসেন-কোন বিনিময় থেকে নয়।

মূলতঃ তিনি বুঝাতে চেয়েছেন যে ভালোবাসলে কোন বিনিময়ে নয় বরং বিনিময় নেবার চেয়ে বারবণিতার দালাল হওয়া ভাল। ভালোবাসা নিঃস্বার্থ চিরন্তন অম্লান অক্ষয় অমৃত চিরসুন্দর।

“আমি তোমাকে শুধু তোমাকেই ভালোবাসি বলে/আমিত্ব বিকিয়ে বারবণিতার দালাল গোছল সাবান/বিনিময়ে কী দেবে? কী ইবা দিতে পারো/কিছু পাবার জন্য তো আমি ভালোবাসি না।

আবার ”বিষমতা”কবিতায় কবি বলেন-“ভালোবাসা সেতো প্রিয় শখ/আজন্ম যা অকাতর হয়েছে দেয়া নেয়া/কিন্তু যখন হাসির ক্যানভাসে থাকে কালোমেঘ/গোপণ অভিধানে মূদ্রিত নীলবিষ/তখন মুহূর্তেই সব এলোমেলো হয়ে যায়।”এ যেনো কবির চিরসত্য এক দার্শনিকতা। কবি মুঈন হুদার কবিতায় দেখতে পাওয়া যায় তাঁর প্রতিটি কথার মূল্য অসাধারণ এবং ওজনদার ।

কবি সত্যই বলেন যদি ভালোবাসার আড়ালে বেদনার বিষ লুকিয়ে থাকে তখন তা আর ভালোবাসা থাকে না। হয় সর্বনাশের কারণ। ঠিক এমন-“ইচ্ছেগুলো যখন শুকনো পাতা বাতাস ও আগুন দুইই সমান/একে হয় স্থানচ্যুতি অন্যে হয় ছাই।”

কষ্ট যেনো চিরন্তন। কষ্টের সাথে কবির পেড়ে উঠা হয় না। আর কাছের কারো কাছ থেকে কষ্ট বেশি পেলে তা আর কষ্ট থাকে না। তখন তাঁর প্রেমিকাকে নিয়ে ভাববার আর কিছুই থাকে না। বিষাদাচ্ছন্ন কবি বলেন-“কষ্টেরা যখন মশারি হয়ে যায়/তোমায় নিয়ে আর কি তেমন/ভাবার থাক বলো।”


কবি ‘‘হিসেব’’ কবিতায় জীবনের হিসাব মিলান পাওয়া না পাওয়ার হিসাবে । নদীকে প্রেমিকার মতো করে বলেন-
“এতোকাল ছিলে সাগর উন্মুখ/আকাশ দিন রাত পাহাড়ায় কাটিয়েছো সময়/শীতের বাতাস মেঘহীন আজ/ভিতর সত্ত্বায় হাহাকার গভীর/প্রয়োজন এখন জলের/নদী পাওয়া না পাওয়ার হিসেব/তা তোমাকে শুধু তোমাকেই মানায়।”

নদীকে কবি প্রচন্ডরকমভাবে ভালোবাসেন । তাই নদীর সুতোয় নিজের সূত্র খুঁজে বেড়ান । অনেকগুলো কবিতা লিখেছেন নদীকে নিয়ে । কবির কাছে বারবার নদী চলে আসে প্রেমিকার মতো। নদী কবিকে স্থির হতে দেয় না । উপলব্দির গভীরতায় তাঁর মধ্যে জেগে উঠে কবিতার অস্থির শব্দাবলী । তিনি তখন নদীকে ভালোবেসে বলেন,“নদী তোমার অশরীরী উপস্থিতি/জানি স্থির হতে দেবে না আমায়/একলা থাকলেই তুমি নিজের মূদ্রায়/যেনো শরাবের পেয়ালা/নেশামত্ত মাতাল সবকিছু ঠায় দাঁড়িয়ে ।”



অন্যদিকে “নদী নয় বসন্ত” নামক কবিতায় কবিকে পাওয়া যায় পুরোপুরি ভিন্ন চেহারায় । কবি এই কবিতায় বলেন-
“দিনভর উদাস বাউল বাতাস/অনিচ্ছায় কেবলই প্রসঙ্গ;/মাঝে মধ্যে সুঁই ছিদ্র-/তারপর সূতায় নিপুণ কারুকাজ/যেনো আমার স্নেহময়ী হিসেবী মা।”

ব্রহ্মপুত্রকে নিয়ে অনেকে অনেক কবিতা লিখেছেন কিন্ত কবি মুঈন হুদার কবিতা যেনো আলাদা মাত্রা পেয়েছে। ব্রহ্মপুত্রকে নিয়ে এমন সুন্দর লেখা আমি খুব কমই পেয়েছি। ব্রহ্মপুত্রের জন্য কবির আত্মিক কান্না যেনো । অসাধারণ কথামালা আর বাণী বন্দনার সংমিশ্রণে গঠিত এই কবিতা যেনো,‘‘সময়ের চোরাবালি”র আত্মজা । কবি তাঁর কবিতায় বলেন-“ব্রহ্মপুত্রের শুকনো বুকে/বিনোদিনী উৎসব ছিলো কাল/শিয়াল শকুন আর পাখিদের/মিতালীতে কেটে গেছে ভরদিন।
অথবা
“জলহীন নদে ফসিল আটকে পড়া মাছেদের/ক্ষয়ে যাওয়া হাড়ে আগুন জ্বেলে/একমুঠো ছাই;কর্ষিত অনুর্বর জমিতে
হাইব্রীড ভালোবাসার অনন্য চাষাবাদ।

“আমার অস্তিত্ব” কবিতায় কবি প্রেমিকার অস্তিত্ব খুঁজে পান। খুঁজে পান নিজের মধ্যে নিজেকে। কবি বলেন-“ভীষন অন্ধকারে/যখন চেতনায় কৃষ্ণপক্ষ/ক্রম স্ফীত হয়;/চাষাবাদে পূর্ণ হয় কষ্টনদী;/বুকের মাঝখানে হাত দিও/টের পাবে আমার অস্তিত্ব”/

কারণ বুকের বামপাশে থাকে হৃদয় এবং তা ক্রমাগত উঠানামায় ব্যস্ত থাকে। বেঁচে থাকার যন্ত্র বলি একে। আর কবি তাঁর কবিতায় কিভাবে অস্তিত্বের টের পাওয়া যাবে তা বলে দেন এভাবে,“খুব দূরে তা নয়/গহীন হৃদয়ের বামপাশে থাকা/গোপনতমুখ সেলে যখন শূন্যতার ঝর উঠে/ভাঙে পিনপতন শব্দে/নিস্তব্ধতার কংক্রিট দেয়াল/সেখানে নির্লজ্জ বসবাস আমার।”

কবি কারও ভালোবাসার রাজপথ দিয়ে হাঁটতে থাকেন-ভালোবাসা পেয়ে হাসেন-কাঁদেন- প্রেমিকার হাত ধরে সিঁড়ি বেয়ে চলে যান স্বপ্নরাজ্যে। সেখানে গিয়ে দেখেন অন্ধকার কোন পদচিহ্ন নেই। কেবলি অন্ধকার ।

“এ কেমন রাজপথ ” কবিতায় কবি বলেন-“সবশেষে তোমার ভালোবাসা/কাঁদালে কাঁদলে, হাসলে হাসালে/সিঁড়ি দিয়ে স্বপ্নরাজ্যে হাত ধরে নিয়ে গেলে/তারপর পদচিহ্নহীন অন্ধকারে /একেমন রাজপথের জন্ম হলো/কষ্টের ছানিপড়া জীবন বড়বেশী দুঃসহ ও গঞ্জনাময়।”

ভালোবাসা সকল সময় পূর্ণতা পায় না। দুঃখও আসে। যখন প্রেমিকা অপবাদ দিয়ে প্রেমিককে দূরে ঠেলে দেয় তখন প্রেমিক প্রেমিকাকে অভিশাপ না দিলেও পাপ তাকে ছাড়ে না তার জন্যও দুঃখও অনিবার্য হয়ে উঠে।

সম্ভবত সে কারণেই কবি মুঈন হুদার “মনে পড়বে” কবিতার গাত্র জুড়ো আছে দহনের খরতাপ। যা পড়ে দেয় যাপিত জীবনের দিনলিপি-তাইতো কবি বলেন,“আলোর ঝলকানিতে একদিন/থাবা বসাবে অন্ধকার/দেখবে কেউ নেই পাশ।”
অথবা
“হয়তো তখন মনে পড়বে/একদিন অপবাদে যাকে দিয়েছিলে/গভীর আলিঙ্গন থেকে দূরে ঠেলে।”

‘‘অন্তিম যাত্রা” কবিতায় কবি তাঁর মনের কথা বলার সাথে সবার কথাটি বলে দেন। এই সমাজে কতো মানুষ আসে আর যায়। বিগত সময়ে পিতাপিতামহ যেভাবে গত হয়েছেন সেভাবে সবার একদিন বিদায় নিতে হবে। “এ পৃথিবী যেমন আছে তেমনই ঠিক রবে, সুন্দর এ পৃথিবী ছেড়ে একদিন চলে যেতে হবে রে মন ছেড়ে যেতে হবে” গানের মতন করে কবি বলেন-
“আমাদেরও যেতে হবে-/রিক্ত শুন্য হয়ে;স¤পুর্ন একা চলে যাবো/কিছুইতো যাবে না সাথে।/পেছনে শুধুই থাকবে পড়ে-/ফসলের বিস্তীর্ণ মাঠ,বিরাণ মরুভূমি/আর বংশ পরম্পরায় স্মৃতি হয়ে থাকবে/যাপিত জীবনের সার্বজনীন ভাবনাগুলি।”

কবি মুঈন হুদার আত্মনিবেদিত কথাগুলো তাঁর লেখার স্বাতন্ত্রতা নিয়ে আসে। “স্বপ্নহীন তবু বেঁচে আছি” কবিতায় তাঁর সাক্ষর তিনি রেখেছেন। মনের কষ্টগুলো কত সহজ সুরে তিনি বলে উঠেন তা উদাহরন না টানলে বুঝা যাবে না। পিতা হারানো,পিতাকে খূঁজে পাওয়া আবার মাতা হারানো, আবার মাতাকে খূঁজে পাওয়া যেন জীবনযুদ্ধে সচেতন কবির জিতে যাওয়ার এক ভিন্ন বার্তা বহন করে।
কবি বলেন-“ভীষণ ক্লান্ত অথচ দারুন আপ্লুত আমি/হাত দিয়ে উন্মুক্ত মাঠের ঘাস ছুঁয়ে/অনুভব করে নিতাম আমার জন্মদাতা পিতাকে;/যিনি কোন এক পড়ন্ত বিকেলে/সবকিছু ফেলে রেখে স্বর্গে গেছেন চলে।/মাকেও পেতাম অনুভবে/ঘাসেদের শিশির কনায় ভিজে;/মাটির সোঁদা গন্ধে খুঁজে পেতাম/গত হয়ে যাওয়া পূর্ব পুরুষের অস্তিত্ব।’’

আবার কবি যখন বন্ধুর কথা বলেন,প্রেমের কথা বলেন,ভালোবাসার কথা বলেন তাঁকে চেনা যায় অন্যভাবে।এ যেন একটু আগে যে কবিতাগুলোর কথা বললাম তার সাথে কোন মিল নেই। এই কবি এক ভিন্ন তরুণ কবি যার বুকে আছে বিশবছরের যুবকের মত উথাল-পাতাল প্রেম। মনের কথাগুলো প্রকাশ করতে গিয়ে কবি তাইতো বলেন-‘‘তুমি যদি অশ্রু হবে /রুমাল হবো হাতে;/ মুছিয়ে দেবো অশ্রু তোমার /কাঁদবো পাবার সুখে।/ বন্ধুর মত বন্ধু হলে/ছায়া হবো পাশে;/অভিমানে থাকলে দূরে টেনে নেবো বুকে।”

আবার কবির প্রত্যাশা যেন সবার প্রত্যাশা হয়ে দাঁড়ায়। সার্বজনীন এ প্রত্যাশা সবাইকে স্বপ্নের পথ দেখায়। বাঁচার মন্ত্রণা শেখায়। তিনি বলেন-আমার আমাদের নিশ্চিত সুদিন আসবে/কষ্টের কালো দাগ সব মুছে যাবে;/ভোরের সূর্যের মতো/শান্তির বার্তা নিয়ে ফুটে ওঠবে প্রসন্ন অর্কিড।

কবি মুঈন হুদাকে যদি নিভৃতচারি কবি বলি তা হয় ভুল বলা। কারণ কাব্যাকাশে তিনি কখনোই নিভৃতচারি ছিলেন না।তিনি অনবরত লিখে গেছেন। আমি যখন তাকে আমার শিক্ষক হিসাবে পাই আমি জানতাম না তিনি একজন কবি। হঠাৎই তাকে দেখলাম তিনি ময়মনসিংহ লেখক কল্যাণ সমিতির নির্ধ্যূত পাঠচক্রে এসে হাজির। সে সময় মান্যবর কবি আসাদুল্লাহ এবং কবি ও কথাসাহিত্যিক আবু সাঈদ কামাল এর সাথে অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত ছিলেন। আমি সে আসরে নিয়মিত যেতাম। পাঠচক্রের নামটিও আমার প্রস্তাবনা ছিলো। যা মান্যবর কবি আসাদুল্লাহ সহ সকলে গ্রহণ করেছিলেন। তার কোন এক আসরে সবার সামনে কবি মুঈন হুদা তাঁর জ্ঞানগর্ব বক্তৃতা করেন যা আমাকে মোহিত করে আর তিনি হয়ে যান আমার প্রিয় লেখকদের একজন। সে সম্ভবত ২০০২-০৩ এর কথা । অবশ্য তাঁর ছাত্র হিসাবে যে আমিও লেখি তিনিও তা প্রথম জানতে পারেন। আস্তে আস্তে কৌতুহল বশতঃ তাঁকে নিয়ে পড়াশুনা আর তাঁকে পদার্থবিজ্ঞানের শিক্ষক নয় একজন কবি হিসাবে চেনা। আর একটা জিনিস না বললেই নয় পদার্থবিদ্যার একজন ছাত্র হিসেবে আমি অন্যান্য স্যারদের ক্লাসের চাইতে উনার ক্লাসকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। কারণ তিনি প্রতিটি ক্লাসে পাঠ্য পড়ার শেষে প্রাসঙ্গিক বিষয়ে যে দার্শনিক চিন্তা ভাবনার বহিঃপ্রকাশ করতেন তা প্রতিটি ছাত্রের জন্য অত্যন্ত জরুরী ছিলো। আর সবার থেকে আলাদা হাসিহাসি মুখের ক্লাসগুলো মনে থাকতো বেশি। আমি তখন সামান্য রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলাম। যা আমার পড়ালেখায় প্রভাব ফেললেও উনার সাবজেক্টটি সবার আগে পাশ দিয়েছিলাম। উনার মাঝে আছে শিক্ষকতার মহৎগুন পাশাপাশি দার্শনিকতা। যার পুরো প্রভাব পড়েছে উনার কবিতাগুলোতে। তাঁর কবিতা বিশ্লেষান করলে শুধূ এটুকুই জানতে পারা যায় যে, কবির কবিতায় আছে ব্যক্তিগত জীবন,সমাজ জীবন,ইতিহাস,ব্যক্তিগত এলিজি,দর্শন,বিজ্ঞান,নিজস্ব আলোচনা,মতামত,সাম্প্রতিক প্রেক্ষিত, প্রাসঙ্গিক প্রেক্ষিত, প্রেম-ভালোবাসা সবকিছুই। তাছাড়াও রাজনৈতিক, সামাজিক সমসাময়িক বিষয়াবলীও মূখ্য হয়ে উঠে।

তিনি যে সকল কবিতা লিখেছেন বা বর্তমানে ফেইসবুকে লিখে যাচ্ছেন প্রতিটি কবিতায় শুধু আবেগ নয় ফুটে উঠেছে কবিতার ভেতরগত অসাধারণ চিত্রকল্প। কবিতার বিষয় হয়ে উঠছে আকর্ষনীয় যার জন্য কবিতা পড়লে তা নিয়ে একটি মন্তব্য না করে পারা যায় না।

তিনি যখন নদীকে নিয়ে লেখেন, দেখা গেছে তিনি হয় ভাবের গভীরতায় এমন ভাবে প্রবেশ করেছেন যখন বেরিয়ে এসেছেন স¤পূর্ণ নতুন চিত্রকল্প নিয়ে স্বমহিমায়। জীবনের গাঁঢ়তম ¯পন্দন আর অন্তর্গত হাহাকার নিয়ে অবিশ্বাস্য সংগ্রামে কাঁচাসোনা রোদে পুড়ে খাঁটি হওয়া এক বিজ্ঞ কবিসত্ত্বা। মাথার উপর নানা কর্মব্যস্ততা নিয়ে কাব্যচর্চা করতে গিয়ে তিনি হয়ে যান বোহেমিয়ান। কিন্তু পরক্ষণেই আবার সংবিৎ ফিরে পান প্রাণের গভীর থেকে তোলেন প্রেমের ঢেউ-আর সে ঢেউয়ের শীতল ¯পর্শে শব্দবন্দনায় মোহিত হন পাঠককুল। কবি মুঈন হুদার কবিতায় কবির নানা বহুমাত্রিকতা তাঁকে এনে দিয়েছে বাড়তি দীপ্তি। যে দীপ্তির আলোয় উদ্ভাসিত কবি আলোকিত করেন চারিপাশ। কী এক মায়াময় মোহ ব্যাঞ্জনা কবিতায় এনে দেয় ইন্দ্ররস।

অপূর্ণতা কবিতায় কবি সে সাক্ষর রাখেন এভাবে-‘‘অবশেষে পদ্মাতে কাঙ্খিত জলপ্রবাহ/বুকের জমিনে উর্ধ্বশ্বাসে ছুটে চলা সাদা পালের নৌকো;/ঐক্যের সেতু এপার-ওপার।/ আমার আমিত্বে বুকের বামপকেটে / মোলায়েম অথচ উষ্ণ স্রোতস্বিনী সঞ্জীবণী নদী,/তবু ক্রমবর্ধিষ্ণু চর;ধূসর হাহাকারে/জলপাই সবুজ যেনো বাদূরের দিবা স্বপ্ন।”

আবার একই কবিতায় কবি একটু ভিন্ন ভাবে ব্যাঞ্জনা প্রকাশ করে বলেন-কী অদ্ভুত প্রাপ্তিহীন প্রতীক্ষা আমার/লাল,নীল,সবুজ কোনটাই নয়;/একেবারেই জৌলুসহীন স্রেফ সাদা,আদি অন্ত খাঁটি সাদা।” কী অসাধারণ কথামালার সংমিশ্রণ। চারু শব্দাবলীর ব্যবহার আমাদের মোহিত করে।

কবি দেশকে ভালোবাসেন আর দ্রোহের সাথে তিনি সামাজিক পারিপার্শ্বিক বিষয়কে গুরুত্ব সহকারে দেখেন। সমকালীন প্রসঙ্গকেও তিনি তাঁর কথায় কাব্যে তুলে আনেন তিনি “অপেক্ষা” কবিতায় আর্ত-চিৎকার করে বলেন-‘‘ কেনো তবে অকারণ ভয় কেনো এতো সংসয় আজি ?/ ঝেড়ে ফেলে ভয় অহেতুক সংশয়/ ভেঙ্গে দিয়ে জরাজীর্ণ পূরাতন সব;স্বদেশ প্রেমের ঝান্ডা হাতে মুছে দিতে হবে /ক্ষুধা দারিদ্রতা দূর্ণীতির যতো অপবাদ আছে;।”

আবার “কবি প্রেমের স্বরূপ” কবিতায় কবি মনের ভালোবাসার কথা তুলে ধরেন। আসলে কবি কিভাবে কবিতা লেখেন বিশেষ করে ভালোবাসার কবিতা। তাঁর কবিতার এই কটি লাইন আমাদের জানান দেয় কবি মনের বা হৃদয়ানুভূতির বিষয়।“সত্যিই পারো বটে তুমি(তুমি মানে নারী)/স্বপ্নের ভাঙ্গা অট্রালিকায় ফেরোমন চুনকাম।/এই না হলে কী আর প্রাজ্ঞ!/কবি প্রেম সে শুধুই হৃদয়ানুভূতি/মিছেমিছি মঙ্গলে বাসরঘর;বৃহ¯পতিতে হানিমুন।/তার চেয়ে এই ঢের ভালো/ উপমাবিহীন সত্যের মুখে কারুকাজ নিপুণ।”

“বুনোফুল” কবিতায় কবি কবিমনের বিরহ আকুতি অতি সাবলীলভাবে প্রকাশ করেছেন। কবি বলেন-‘‘রূপোলী ইলিশ ভীড় করে হৃদয়ের বন্দরে;/অগণন নোনা স্রোতে ভেসে থেকে জেনে নিতে চায়;/প্রজনন সময়ে নিরাপদ স্থান পেতে যাবে কোথায়?”

আবার বলেছেন,‘‘আদিম ভাবনায় সহসা বুঁদ হয়ে মন্দার ছায়ায়,আঙুলের ফাঁকে হাতের রেখায় ;/সুখী হৃদয়ের সুর খূঁজে ফিরি।’’

কবি ভালোবাসা খুঁজে বেড়ান। ভালোবাসার আগুনে পোড়া মন তবুও ভালোবাসার অনন্য বহিঃপ্রকাশ। কবি বলেন-‘‘তুমি প্রস্ফুটিত গোলাপ হও-হাসি খুশি লাল গোলাপ/ তুমি হাসি খুশি প্রস্ফুটিত গোলাপ হলে/আমার কেবলই ভ্রমর হতে ইচ্ছে করে।(তুমি যখন হাসলে)’’ কবি আবার বলেন,‘‘আমার হৃদয়ের সব বেদনায় পান্ডুর হয়ে গেছে;/শাঁইশাঁই করে উড়ে গেছে শান্তির কপোত;/ যেনো হৃদপিন্ড কামড়ে ধরেছে এক ক্ষুধার্ত শিয়াল।(দুঃস্বপ্ন)”

একই কবিতায় কবি বলেন,‘‘আমি অচেনা এক আক্রোশে ফেটে পড়ি, ভেঙ্গে দিতে ইচ্ছে করে শাহজাহানের তাজমহল। (দুঃস্বপ্ন)”

আবার বুকের হাহাকারকে উদগীরণ করে বলেন,”হৃদয় জুড়ে শুধুই হাহাকার,কিছুই তো নেই এতে/অঙ্গার,ভষ্ম আর দুঃস্বপ্নের দগ্ধ ত্বক ছাড়া।(দুঃস্বপ্ন)”

কবি বলেন, ‘‘বেদনা তাঁর বোনের মতো। বেদনায় জলসানো হৃদয়কে বুকে আকড়ে ধরে কবি বলেন,‘‘বেদনা আমার বোনের মতো।’’ “ বদান্যতা” কবিতায় কবি দ্বিধা ভেঙ্গে উচ্ছাসিত স্বরে বলে উঠেন,”কতো কিছু ভুলে যাই,মনে রেখেও অনেক ভুলে যাই/কত কিছু দেখি দেখেও যে না দেখার ভান করি”।

আসলেই তাই বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় নীতি নৈতিকতা সকলি বিবর্জিত। তাঁরপরেও এরই মাঝে বেঁচে থাকা। অথবা মরতে মরতেই বেঁচে থাকা। তবুও কবি আশার বীজ বুনেন। বেদনায় ব্যথিত কবি বলেন,-তবুও কী অদ্ভুত চলে যাচ্ছে সময়/অথচ ভেতরে আমার তীব্র বিষের দহন।’’

কবির উৎসর্গীকৃত বা তসলীমা নাসরিনের কবিতা ১৫০০ সাল কবিতা পড়ে প্রতিক্রিয়ায় লিখিত ১৫০০ সাল কবিতায় কবি সমকালীন চিন্তা সমকালীন কথার ফুলঝুরি ছুটিয়ে সন্ধিগ্ধ সত্য কথার বিস্ফোরন ঘটিয়ে বলেন,‘‘স্বপ্নহীন মানুষের ভিড় কেবলই বাড়ে/দলে দলে লোকালয়ে আসে/মানুষের অবয়বে হিংস্র জানোয়ার।’’

কবির মধ্যে দ্রোহের আগুন দীপ্যমান। নিরন্তর চলছে কবির কলম। বিভিন্ন অবয়বে গড়ে তুলছেন কবিতার শরীর। মায়া কায়ায় হাতের নিবিড় ছোঁয়া আর মনের তুলিতে নিখুঁত কালিতে এঁকে যান কবিতার মোহময় স্টাকচার-যাঁর মাধ্যমে জীবনের কথা, স্বপ্নের কথা, প্রেমের কথা , ভালোবাসার কথা ,মগ্নতার কথা , ধ্যানের কথা অতি সাবলীল ভাবে ফুটে উঠে।
কবির কবিতায় কোন দ্বান্দ্বিকতা নেই,আছে সহজাত কাব্যপঙতি। কবি সহজাত বিন্যস্ততায় তাঁর শব্দকল্পকে কাজে লাগিয়ে কবিতায় রূপ দেন। উনার কবিতায় আছে বিশাল এক সংবেদনশীলতা যা আমাদের খুব দ্রুত কবির কাছে টেনে নেয়। কিন্তু কবি হয়তো তা শেলির মত নিজেই জানেননা। কবি শেলি বলেছিলেন,- Poetry is indeed something devine, তেমনি কবির কাব্যগুন পাঠক হৃদয়কে সহজাত ভঙ্গীতেই হাতছানি দিয়ে ডাকে। আমাকেও। তাই তো তাঁর কবিতায় খুঁজে পাই আলাদা স্বাদ ও ছন্দ। বর্তমানে তিনি যা লিখে যাচ্ছেন তা যেন আরো আরও ¯স্নিগ্ধ এবং সুন্দর।

কবি কেবল সময়ের চোরাবালিতে নন স্নিগ্ধ এবং সুন্দর কবি মুঈন হুদাও আমাদের মাঝে যুগযুগ জনমভর বেঁচে থাকুন এই প্রত্যাশা।


ঋণস্বীকার ঃ ১। কবির কবিতার বইসমূহ
২। উনার ফেসবুক আইডি
৩। সংগৃহীত বিভিন্ন সময়ের লিখিত কবিতা
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা মার্চ, ২০১৮ রাত ৮:৫৮
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×