somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শিশুকিশোর আন্দোলন প্রসঙ্গ ও সড়ক আইন

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৩:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শিশুরা সকল সময়ই দেবতূল্য। তারা যত দুষ্টামিই করুক না কেন তাঁরা যে কাজটি করে বা করতে চায় আমরা ভাল দিকটাই গ্রহণ করি এবং তাই করা উচিত। আমরা কি সবসময়ই তা করি? করি না। যদি তাই ই করতাম বিগত দু দিন তাদের সাথে বড় হয়ে রাস্ট্রের দায়িত্বে নিয়োজিত পুলিশ বা মন্ত্রী হয়ে রূঢ় আচরণটুকু করতাম না। যেহেতু তাদেরি সহপাঠীদের মৃত্য এদের প্রবলভাবে নাড়া দিয়েছিলো। বিনা উষ্কানীতেই তাঁরা আন্তরিক অনুভূতি থেকে নেমে এসেছিলো রাজপথে। তাঁরা অনুভব করতে পেরেছিলো এই বেপরোয়া পরিবহনের কর্মীদের থামাতে হলে কঠিন আইন লাগবে। যা আমরা স্বাধীনতার পর ৪৫ বছরে অনুভব করতে পারিনি যে কারণে কতশত প্রাণ ঝরে গেছে। এজন্যও পুলিশই দায়ী। দেশে বলবৎ আইন থাকলেও তারা প্রয়োগ যথাযথ করতে পারেনা। রাস্ট্র তাদের উচ্চমূল্যে বেতন দেবার পরও স্পীড মানি ইনকামে ব্যস্ত থাকে যে কারণে আইনের যথাপ্রয়োগ হয় না। দেখা গেছে একদিকে এক পুলিশ যদি ট্রাফিকের কাজ বাস্তবায়ন করতে ব্যস্ত অন্যপাশে হলুদ জার্সি পরিহিত অফিসার ব্যস্ত ড্রাইভিং লাইসেন্স চেকিং করে মুঠিভর্তি টাকা গ্রহণে। পেছনে ততক্ষণে জমে যায় বিশাল জ্যাম। সেদিকে ভ্রক্ষেপ থাকে না কারো। এ চিত্রটি আপনি সায়েদাবাদ এলাকায় দশমিনিট দাড়ালে হরহামেশাই দেখতে পাবেন। যাক সে কথা আমরা তাদের দাবীগুলোর যৌক্তিকতা না দেখেই তাদের সাথে যে রূঢ় আচরণ করেছি তা খুব মর্মান্তিক। পিটিয়েছি তাদের টুটি চেপে ধরেছি। যা কখনও কাম্যছিলো না। যদি দূরদর্শিতা থাকতো। তাদের কাছে শিক্ষামন্ত্রী যেতে পারতেন। দাবীদাওয়া গুলো সংরক্ষণ করতে পারতেন। তাহলে আর এমন হতো না। অথবা ওই এলাকার পরিচিত কোন জনপ্রতিনিধি। পাঠালেন পুলিশ। যা ছিলো ভুল। যাক দেরিতে ভুল সংশোধন হয়েছে এটাই খুশির খবর্।

কোমলমতি শিশুদের সাথে কোমল ব্যবহার করতে হয়। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতকে বাদ দিলে বিশ্বে একমাত্র আমাদের দেশেই শিশুমৃত্যুর হার প্রবল। যা কারও কাম্য নয়। শিশুরাই আগামীদিনে রাজনীতির হাল ধরবে ডাক্তার হবে ইঞ্জিনিয়ার হবে দেশের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি হবে এটাই স্বাভাবিক এবং মনে রাখতে হবে। আমাদের দেশ বাংলাদেশেই কেবল শিশুদের গুরুত্ব দেয়া হয় না। যা কখনোই মানা যায় না।

আপনি যদি কানাডা আমেরিকার মতো ব্যস্ত রাস্তাসমেত দেশগুলোর দিকে তাকান দেখতে পাবেন শিশুদের কি পরিমান গুরুত্ব দেয়া হয়। কি পরিমান নিরাপত্তা দেয়া হয়। কি পরিমান চিন্তা তাদের নিয়ে করা হয়।

আমেরিকা প্রবাসী বিশিষ্ট বিজ্ঞানী কবি ও ছড়াকার আতাউল করিম ছবিসহ তার ফেসবুক ওয়ালে আমেরিকার এক বাস্তব চিত্র তোলে ধরেছেন। আমেরিকার টরেন্টোতে তিনি ব্যস্ত রাস্তায় জ্যামে আটকে আছেন। চারিপাশ গাড়ি বন্ধ কারণ একজন ক্ষুদে ভিআইপি গাড়ি থেকে নামবেন। সে ভিআইপি আর কেউ নয় একজন স্কুলগামী শিশু।

শুধু আতাউল করিমদের গাড়ীই নয়। এর আগে ওবামা হিলারি ক্লিনটন বিলক্লিনটনও এভাবে আটকে ছিলেন।
মন্ত্রী প্রেসিডেন্ট হয়েও শিশু আইনের কাছে ছিলেন তারা দায়বদ্ধ। কারণ শিশুটি যে পাশে বাড়ি সেপাশে নামলেও বিপরীত দিকের গাড়িগুলো অবশ্যই থামতে হবে কারণ কোমলমতি শিশুটি দৌড়ে বা অন্যপাশে চলে যেতে পারে এটাই আইন।এই আইনের কাছে ক্ষমতাসীন ব্যক্তিত্বরাও নতি স্বীকার করেন।


যদি সেসব দেশের স্কুলগামী বাসের দিকে তাকান দেখতে পাবেন –বাসগুলো নিজেরাই ট্রাফিক সিগন্যাল। এদের বিশেষভাবে তৈরি করা হয়। চারিদিকে স্টপ কথাটি লেখা থাকে। বাসগুলো যখন দাড়ায় তখন এই প্লেকার্ডগুলো অটো বেরিয়ে আসে। গাড়ির চারিদিকে লালবাতি জ্বলতে থাকে। যাতে একটি শিশুর ক্ষতি অন্যকেহ না করতে পারে। সেসব দেশে জীবনের মূল্য সময়ের চেয়ে বেশি। তাই প্রত্যেক আমলা মন্ত্রী নিজ থেকে দায়িত্ব পালন করেন।

আর আমাদের দেশের স্কুলবাসগুলো কীভাবে তৈরি তা একটু চোখ রাখলেই বুঝা যায় কত জীর্ণ শীর্ণ। মারাত্মক দূর্ঘটনা ঘটার জন্য কত উপযুক্ত।

অথচ আমাদের দেশে শুধু আইনের প্রয়োগের কারণে অহরহ রাস্তাঘাটে শিশুমৃত্য ঘটছে।

আইনের যথাযথ প্রয়োগ ও ব্যবহার না জলে চিরসমস্যা থেকেই যাবে। শিশুরা যে সাতদফা দাবী দিয়েছে তা দ্রুত বাস্তবায়ন হলে এবং তা যদি আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কঠোর প্রয়োগ করে তাহলে দেশের জন্য মঙ্গল।

আর শিশুরা যতো অন্যায় করুক সহনশীল হতে হবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শিশুদের প্রতি ছিলেন খুব নরম ও মায়াময়। যারা শিশুদের সাথে বাজে আচরণ করেছেন তারা কিন্তু ভাল করেননি। বঙ্গবন্ধুর জীবনী তাদের পড়তে হবে।

আমরা চাই প্রতিদিন গড়ে যে ৬৪ জন মানুষ সড়ক দূর্ঘটনায় মারা যায় তার সংখ্যা কমে শূন্যের কোঠায় নেমে আসুক।

এই শিশু প্রদত্ব সাত ধারার সাথে আরেকটি নিয়ম করা যায় তা হলোঃ প্রতিটি ড্রাইভিং লাইসেন্সে তিনটি করে ঘর রাখা হোক। ড্রাইভার যদি দূর্ঘটনা ঘটায় তাহলে প্রতিবার ঐ ঘর পুরন করে দেয়া হবে। তিনবার ঘটালে লাইসেন্স বাতিল করে একঘর বিশিষ্ট নতুন লাইসেন্স দেয়া হবে। সে যদি চতুর্থ বারের মত দূর্ঘটনা ঘটায় তাকে সড়কে চিরতরে নিষিদ্ধ করা হবে। তাহলে আরো বেশি উপকৃত হবে বলে আমার বিশ্বাস।

মনে রাখতে হবে আপনার আমার শিশু ভাই বোন বাবা মা ও আপনি নিজে রাস্তায় চলাচল করে বা করেন। একটি দূর্ঘটনা সারাজীবনের ক্ষতি। একটি পরিবার ধ্বংস করে দেয়।

আসুন মানুষ মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হই। জীবন জীবনের জন্য। জীবন অনেক মূল্যবান। আসুন জীবন বাচাই সুখে থাকি। সুন্দর হোক আমাদের জীবন।
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×