সংসদীয় ইতিহাসে কলঙ্কজনক ঘটনা ছিল ইউক্রেনের পার্লামেন্ট অধিবেশন চলাকালে সংসদ সদস্যদের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হলে সেখানে ধোয়া বোমা নিক্ষেপ। ইউক্রেনের সংসদ বিষয়ক খবরটি ছিল এরকম পার্লামেন্ট অধিবেশন চলাকালে রাশিয়ার সঙ্গে একটি প্রধান নৌঘাটি ইজারার সময় বৃদ্ধির চুক্তি স্বাক্ষর নিয়ে চলতি বছরের ১৩ এপ্রিল বিতর্কের এক পর্যায়ে হাতাহাতি শুরু হয়ে যায় এবং ধোঁয়া বোমা নিক্ষেপ করা হয়।স্পিকার ভোলো দিমার লাটভিনকে লক্ষ্য করে ডিম ছুড়ে মারার পর পার্লামেন্টে হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়। তিনি সে সময় দুটো কালো ছাতার পিছনে আশ্রয় নেন। ধোয়া বোমাটি অজ্ঞাত স্থান থেকে নিক্ষেপ করা হয়। বোমা বিস্ফোরণের পর পুরো ভবনটি ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যাওয়ায় পার্লামেন্টের কার্য প্রণালী পরিচালনা করা দুরূহ হয়ে পড়ে। কয়েকজন পার্লামেন্ট সদস্য তাদের নাসিকা রুমাল দিয়ে চেপে ধরেন এবং বোমার শব্দে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। কিছুক্ষণ পর দ্বিতীয় ধোঁয়া বোমাটি বিস্ফোরিত হয়ে পুরো পার্লামেন্ট ভবন আচ্ছন্ন না হয়ে যাওয়া পর্যন্তশিষ্টাচার বহির্ভূত বিতর্ক চলতে থাকে। পার্লামেন্ট সদস্যরা ইউক্রেনের ব ্যাক সী ফ্লিট নৌঘাঁটিটি রাশিয়ার নিকট ২০৪২ সাল পর্যন্ত ইজারাদানের সময় সীমা বৃদ্ধি করার বিষয়ে এক বিতর্ক চলাকালে সংসদীয় ইতিহাসে এ কলঙ্কজনক ঘটনার সূত্রপাত হয়।
যা হোক, একটু আগে সংসদ ভবনের পাশ দিয়ে মানিক মিয়া এভিনিউ হয়ে অফিসে আসছিলাম। খেয়াল করলাম সংসদ ভবনটি দেখা যাচ্ছে না। প্রথমে মনে করলাম প্রচুর পরিমানে বৃষ্টির জন্য হয়ত সবকিছু সাদা দেখাচ্ছে কিন্তু ভাল করে খেয়াল করে দেখলাম বৃষ্টি নয় সাদা ধোয়ার জন্যই এ অবস্থা হয়েছে। এটা দেখার পর মনে করলাম বাংলাদেশে কি ইউক্রেনের মত কোন ঘটনা ঘটল নাকি? নাকি সংসদে মশার উপদ্রব হয়েছে যে সংসদ অধিবেশন চলাকালে সংসদ সদস্যরা মশার অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে এই পদ্ধতি গ্রহণ করেছে। অথবা ব্যবসায়ীরা দোকান বা ব্যবস্যা প্রতিষ্টানে সকালে আগরবাতি, ধুপবাতি প্রভৃতি জ্বালিয়ে ব্যবসা শুরু করে। বিএনপি সংসদে না যাওয়ার খবরে সরকার নিজেরাই সংসদে একক আধিপত্য করার জন্য জন্য সংসদকে পবিত্র করে নিচ্ছে কিনা ভেবে কূল কিনারা পেলাম না। এছাড়া বাংলাদেশে বিড়ি সিগারেট খাওয়ার বিষয়ে একটি কথা প্রচলিত আছে 'বুদ্ধির গোড়ায় ধোঁয়া দেয়া'। এরকম কোন বিষয় ঘটল কিনা তাও বুঝলাম না। কারণ সংসদে আইন প্রনয়ন মূল কাজ কাজ হলেও। সংবাদপত্র সহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। এটা বুদ্ধিমানের (বুদ্ধিমতিও হতে পারে) লক্ষন। অবসর সময়ে বুদ্ধির গোড়ায় ধোয়া দেয়া হচ্ছে কিনা ভাল বোঝা গেলনা। তো যাহোক বৃষ্টির কারনে ধোয়া একটু কম হলে দেখলাম সংসদ ভবনের আশপাশের (বাউন্ডারির মধ্যে) ময়লা আবর্জনার ছোট ছোট স্তুপগুলোতে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়েছে। ভিজা আবহাওয়া ও গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির কারণে সেগুলো পুড়ে না যেয়ে প্রচুর ধোঁয়া উৎপাদিত হচ্ছে। এতে একদিকে যেমন মানুষের শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। তেমনিভাবে বেশিদুর দেখা না যাওয়ায় গুরুত্বপূর্ণ সড়কে দূর্ঘটনার আশংকা থেকেই যায়। এই আবর্জনা এখান থেকে অপসারণ করে অন্য জায়গায় নিয়ে গেলে আমারমত লোকজনকে এমন কনফিউশনে পড়তে হত, মানুষের শ্বাসকষ্ট হত না বা দূর্ঘটনার ঝুকিও থাকত না। বাংলাদেশের আইনসভার মত গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় এ পদ্ধতিতে আবর্জনা পরিস্কারের পদ্ধতি দেখে আমার মনে প্রশ্ন জাগল বাংলাদেশ সরকার যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে তা কি পূরণ করতে পারবে। অর্থাৎ বাংলাদেশ কি আদৌ ডিজিটাল বাংলাদেশ হবে? দেশের সকল ক্ষেত্রেই এরকম অবস্থা সবাই শর্টকাট পদ্ধতি অবলম্বনে ব্যস্ত।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।





