রমা চৌধুরী একজন একাত্তরের বীরাঙ্গনা। মুক্তিযুদ্ধের ঝাপটায় ঘরবাড়ি, তিন শিশু সন্তান, স্বামী হারিয়ে এখন রাস্তার বই ফেরিওয়ালা। রমা চৌধুরী মুক্তিযুদ্ধে শুধু নিজের সম্ভ্রমই হারাননি, সামাজিক গঞ্জণা, বঞ্চনা, টিটকিরি শুনতে শুনতে এখন তিনি পাগল প্রায়। রমা চৌধুরী'র দুই সন্তান মুক্তিযুদ্ধের চরম অসময়ের বলি। রমা চৌধুরী'র মত অসংখ্য মায়েদের মহান আত্মত্যাগেই একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বরে আমাদের মহান স্বাধীনতা এসেছিল। স্বাধীনতার ৪২ বছর পরেও রমা চৌধুরীদের পথে পথে ঘুরে বেড়াতে হয়। ১৯৬১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে মাস্টার্স করা রমা চৌধুরী পেশায় ছিলেন স্কুল শিক্ষিকা। গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রাম জেলার বোয়ালখালী উপজেলার পোপাদিয়ায়। মুক্তিযুদ্ধের সময়ে একাত্তরের ১৩ মে তিন শিশু সন্তান নিয়ে পোপাদিয়ায় গ্রামের বাড়িতেই ছিলেন রমা চৌধুরী। আর স্বামী ছিলেন তখন ভারতে। ওইদিন সেই এলাকার পাকিস্তানি দালালদের সহযোগিতায় হানাদার বাহিনীর লোকজন রমা চৌধুরীদের বাড়িতে হানা দেয়। নিজের মা, পাঁচ বছর ৯ মাস বয়সি ছেলে সাগর ও তিন বছর বয়সি ছেলে টগরের সামনেই তাকে ধর্ষণ করে এক পাকিস্তানি খানসেনা। পাকসেনারা রমা চৌধুরীকে শুধু ধর্ষণেই ক্ষান্ত হয়নি, তাদের বাড়িও পুড়িয়ে দেয় তখন। হানাদারদের হাত থেকে কোনমতে মুক্ত হয়ে রমা চৌধুরী পুকুরে ঝোপের আড়ালে লুকিয়ে থাকেন পুনরায় ধর্ষণের ভয়ে। চোখের সামনে গান পাউডার দিয়ে তাদের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয় পাকসেনারা। ঘরের মূল্যবান মালামাল, নিজের লেখা সাহিত্যকর্ম চোখের পলকেই পুড়ে যেতে থাকল। কিন্তু হানাদারের ভয়ে কেউ আগুন নেভাতে সেদিন এগিয়ে যায়নি। এক পর্যায়ে রমা চৌধুরী নিজেই ঝোপের আড়াল থেকে বের হয়ে প্রাণপন চেষ্টা করেন ধ্বংসযজ্ঞ থেকে ছিঁটেফোটা কিছু রক্ষা করার, কিন্তু তিনি ব্যর্থ হন।
তারপর শুরু হয় আরেক লাঞ্চনা আর অপবাদ। সমাজের চোখে সে একজন ধর্ষিতা নারী। পাকিস্তানি হানাদারের হাতে সম্ভ্রম হারানোর পর কেউ কেউ হয়ত সহযোগিতার হাত নিয়ে তার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু নিকটজন সহ সমাজের কাছে শুরু হল তার দ্বিতীয় দফা লাঞ্চিত হবার পালা। পাক-হানাদারদের কাছে নির্যাতিত হবার পর সমাজের লাঞ্চনায় এবং ঘরবাড়ি হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়লেন রমা চৌধুরী। পোড়া দরজা-জানালা বিহীন ঘরে শীতের রাতে বস্রহীন থাকতে হয়েছে মাটিতে। গরম বিছানাপত্র নেই। সব পুড়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। দিনান্তে ভাত জুটে না। অনাহারে, অর্ধহারে ঠান্ডায় দু`সন্তান সাগর আর টগরের অসুখ বেঁধে গেল।
ঠিক বিজয়ের আগের রাতে ১৫ ডিসেম্বর থেকে শ্বাসকষ্ট শুরু হয় সাগরের। ছেলেকে সুস্থ করতে তখন পাগলপ্রায় দশা রমা চৌধুরী'র। গ্রামের এক সাধারণ কক-ডাক্তার চেষ্টা চালালেন। সেই চেষ্টায় কোনো কাজ হল না। ২০ ডিসেম্বর রাতে সাগর মারা গেল। প্রথম সন্তানকে হারিয়ে রমা চৌধুরী তখন প্রায় পাগল হয়ে গেলেন। একই অসুখে আক্রান্ত হল দ্বিতীয় সন্তান টগরও। ১৯৭২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি অর্ধউন্মাদিনী রমা চৌধুরী নিজের ছেলে টগরকে ওষুধ খাওয়াতে গেলেন। নিজের অসাবধানতায় কখন যে ছেলে টগরের শ্বাসরোধ হয়ে গেল, টের পেল না রমা চৌধুরী। এভাবে টগরও মারা গেল।
রমা চৌধুরী'র পরের ইতিহাস আরও বিপর্যয়ের, আরো করুণ। মুক্তিযুদ্ধে নিজের সম্ভ্রম হারানোর পর দু`সন্তান হারানো রমা চৌধুরী তখন অর্ধপাগল। তার মধ্যে সমাজের লাঞ্চনা, গঞ্জনা, অভাব, জীবন সংগ্রাম ইত্যাদি সব মিলিয়ে এক সময় রমা চৌধুরী'র প্রথম সংসারেরও পরিসমাপ্তি ঘটল। পরে দ্বিতীয় সংসার বাঁধতে গিয়ে হলেন প্রতারণার শিকার। দ্বিতীয় সংসারের ছেলে টুনু ১৯৯৮ সালের ১৬ ডিসেম্বর বোয়ালখালীর কানুনগোপাড়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেল। হায় কি দুর্ভাগা কপাল রমা চৌধুরী'র! বাংলাদেশে রমা চৌধুরীদের জীবন এমনই।
রমা চৌধুরী জীবনে আর জুতা পড়েননি। হিন্দু ধর্মীয় রীতিতে শবদেহ পোড়ানোতে বিশ্বাস করেন না রমা চৌধুরী। তাই তিন সন্তানকেই দেয়া হয়েছে মাটিচাপা। প্রথমদিকে মুক্তিযুদ্ধের পর টানা চার বছর জুতো পড়েননি রমা চৌধুরী। এরপর নিকটজনের পীড়াপিড়িতে অনিয়মিতভাবে জুতা পড়া শুরু করলেও তৃতীয় সন্তান মারা যাবার পর আবার ছেড়ে দিয়েছেন পায়ে জুতা পরা। তারপর গত ১৫ বছর ধরেই জুতা ছাড়া খালি পায়েই পথ চলছেন রমা চৌধুরী।
জীবনের সব হারিয়ে রমা চৌধুরী এখন বইয়ের ফেরিওয়ালা। নিজের লেখা বই ফেরি করে বিক্রি করেন। তাকে ভালবাসেন, শ্রদ্ধা করেন এমন কিছু বাঁধা গ্রাহক আছেন তার। তারাই রমা চৌধুরীর বই প্রথমে কিনে নেন। এ পর্যন্ত ১৯টি বই প্রকাশ করেছেন রমা চৌধুরী। যেদিন বই বিক্রি হয় সেদিন তিনি দুমুঠো খান। যেদিন বই বিক্রি নাই সেদিন রমা চৌধুরী উপাস থাকেন। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ রমা চৌধুরীদের মতো অনেকের কাঁধেই ঝোলা দিয়েছে। খালি পায়ে হাঁটা শিখিয়েছে। সম্ভ্রম হারাতে হয়েছে। সন্তান হারাতে হয়েছে। সমাজের লাঞ্চনা, বঞ্চনা সইতে হয়েছে। সত্যিকারের রমা চৌধুরীদের জীবনে কোনো পরিবর্তন হয়নি। অথচ রমা চৌধুরীরা আমাদের একাত্তরের জননী। রমা চৌধুরীরা আমাদের একাত্তরের বীরাঙ্গনা। রমা চৌধুরীরা আমাদের পথের ভিক্ষুক! আর গোলাম আযমরা এখনও প্রিজন সেলেও ভিআইপি সুযোগ সুবিধা পায়। ভিআইপি খাবার পায়। ভিআইপি স্বাস্থ্যসেবা পায়। এই লজ্বা আমরা কোথায় রাখি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী?
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, রমা চৌধুরী'র মতো হাজারো মায়েরা এখনো মুক্তিযুদ্ধের দুঃসহ স্মৃতি নিয়ে বাংলাদেশের সর্বত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। আর গোলাম আযমরা এখনো আপনাদের ভোটের হিসেবের সবচেয়ে বড় হিসাব নিকাশ, আতাঁতের অংশ। এই জন্যই কি সাড়ে সাত কোটি বাঙালি মুক্তিযুদ্ধ করেছিল? মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনার কাছে রমা চৌধুরী'র জন্য একটা কিছু করার দাবী করছি। রমা চৌধুরী ভিক্ষা চায় না। রমা চৌধুরী শিক্ষিত। বাংলায় মাস্টার্স। নিজের লেখা বই বিক্রি করে পেট চালান। রমা চৌধুরী'র কোনো রাষ্ট্রীয় খেতাবও দরকার নাই। দেশের জন্য বীরাঙ্গনা হওয়ার কষ্টই তার সবচেয়ে বড় দুঃখ, বড় পাওনা। স্বাধীনতার ৪২ বছর গেল। রমা চৌধুরী নিজের ওষুধটুকুও কিনতে পারেন না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি রমা চৌধুরী'র অন্তঃত একটু সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করুন। রমা চৌধুরীদের জন্য এর বেশি আর কোনো দাবী নেই।
বিনীত নিবেদক
রেজা ঘটক
লেখক ও গবেষক
ঢাকা
আপডেট:
চট্টগ্রাম-৭ বোয়ালখালী আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য জনাব মঈনউদ্দিন খান বাদল সাহেবের সঙ্গে আমার এই বিষয়ে কথা হয়েছে। এই লেখাটির একটি কপি বাদল সাহেবকে মেইল করেছি। এছাড়া চট্টগ্রামের লেখক, কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক এবং কালচারাল এক্টিভিস্টদের সঙ্গে আমার কথা হচ্ছে। খুব শীঘ্রই এই বিষয়ে একটি যথাযথ উদ্যোগ সম্মিলিতভাবেই গ্রহন করা হবে।
ইতোমধ্যে একজন স্বনামধন্য প্রকাশক রমা চৌধুরী'র বইগুলো পুনঃপ্রকাশ করাতে আগ্রহ দেখিয়েছেন। উপযুক্ত রয়্যালিটি'র ব্যাপারেও কথা হয়েছে। খুব শীঘ্রই সে বিষয়ে আরো বিস্তারিত জানাতে পারবো।
এর আগে ১৯৯৭ সালে, ২০০০ সালে ও ২০১৩ সালে রমা চৌধুরীকে নিয়ে মিডিয়ায় কিছু খবর এসেছিল। তখন ব্যক্তি উদ্যোগে কিছু সহায়তা উঠেছিল। কিন্তু সেই সহায়তা নিয়ে একটু ট্যাকনিক্যাল সমস্যা হয়েছিল বলে আমার কাছে খবর আছে। তাই হুট করেই কারো নাম্বারে বা কারো একক উদ্যোগে কোনো সাহায্য করলে আসল কাজটি আগের মতোই মাঠে মারা যাবে। তাই এই বিষয়ে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে মাননীয় সাংসদের পরামর্শ অনুযায়ী আমরা আগাতে চাই।
প্রিয় ব্লগারদের উৎসাহ এবং আগ্রহকে ধন্যবাদ দিয়ে ছোট করতে চাই না। আমরা রমা চৌধুরী'র জন্য স্থায়ী একটি সমাধান বের করতে সক্ষম হলেই আমাদের এই ক্ষুদ্র উদ্যোগটি যথাযথ আলোর মুখ দেখবে বলেই আমি বিশ্বাস করি।
রমা চৌধুরী'র সংক্ষিপ্ত জীবনী:
রমা চৌধুরী ১৯৪১ সালে চট্টগ্রামের বোয়ালখালী থানার পোপাদিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। দক্ষিণ চট্টগ্রামের প্রথম নারী স্নাতকোত্তর (এমএ) তিনি। ১৯৬১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। পরের বছর ১৯৬২ সালে ইংরেজি সাহিত্য স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন রমা চৌধুরী। তখনকার দিনে এটাকে বলতো ডাবল এমএ। ১৯৬২ সালে তিনি কক্সবাজার বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষিকার দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে পূর্ণাঙ্গ কর্মজীবন শুরু করেন। দীর্ঘ ১৬ বছর তিনি দেশের বিভিন্ন উচ্চবিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষিকার দায়িত্ব পালন করেন।
স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ১৯৭১ সালের ১৩ মে সকালবেলা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তার সম্ভ্রম কেড়ে নেয়। এরপর পাকিস্তানি হানাদাররা তাঁর একমাত্র ভিটেটুকু পুড়িয়ে ছারখার করে দেয়। সেই পোড়া ভিটায় রমা চৌধুরী নিজের একক প্রচেষ্টায় ‘দীপঙ্কর স্মৃতি অনাথালয়’ নামে একটি অনাথ আশ্রম গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন।
বিগত ২০ বছর ধরে রমা চৌধুরী লেখাকে পেশা হিসেবে নিয়েছেন। প্রথমে একটি পাক্ষিক পত্রিকায় লিখতেন। বিনিময়ে সম্মানীর বদলে পত্রিকার পঞ্চাশটি কপি পেতেন। সেই পত্রিকা বিক্রি করেই তাঁর জীবনজীবিকা চলতো। পরে নিজেই নিজের লেখা বই প্রকাশ করে, সেই বই ফেরি করে বেড়ান পথে পথে পাঠকের কাছে। সেই পেশা এখনো বর্তমান। রমা চৌধুরী প্রবন্ধ, উপন্যাস ও কবিতা লেখেন। এখ পর্যন্ত প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ১৯টি। উল্লেখযোগ্য আত্মজীবনীমূলক বই 'একাত্তরের জননী'। রমা চৌধুরী'র বর্তমান বয়স ৭২ বছর।
রমা চৌধুরীর বইসমূহঃ
প্রবন্ধ সংকলন (পুনঃ মূদ্রণের অপেক্ষায় আছে):
১) রবীন্দ্র সাহিত্য ভৃত্য
২) নজরুল প্রতিভার সন্ধানে
৩) সপ্তরশ্মি
৪) চট্রগ্রামের লোক সাহিত্যের জীবন দর্শন
৫) অপ্রিয় বচন
৬) যে ছিল মাটির কাছাকাছি
৭) ভাব বৈচিত্রে রবীন্দ্রনাথ (এই বইটি আপাতত পুনঃ মূদ্রণের প্রয়োজন নেই)
৮) নির্বাচিত প্রবন্ধ (মূদ্রণের অপেক্ষায়)
স্মৃতিকথা(পুনঃ মূদ্রণের অপেক্ষায় আছে):
১) সেই সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
২) স্মৃতির বেদন অশ্রু ঝরায়
কাব্যগ্রন্থ (পুনঃ মূদ্রণের অপেক্ষায় আছে):
১) স্বর্গে আমি যাব না
২) শহীদের জিজ্ঞাসা
৩) ১০০১ দিন যাপনের পদ্য (এই বইটি আপাতত পুনঃ মূদ্রণের প্রয়োজন নেই)
পত্র সংকলন (পুনঃ মূদ্রণের অপেক্ষায় আছে):
১) নীল বেদনার খাম
উপন্যাস(পুনঃ মূদ্রণের অপেক্ষায় আছে):
১) একাত্তরের জননী( এই বইটি আপাতত পুনঃ মূদ্রণের প্রয়োজন নেই)
২) লাখ টাকা
৩) হীরকাদুরীয়
গল্প সংকলন( এই বইটি আপাতত পুনঃ মুদ্রনের প্রয়োজন নেই)
১) আগুন রাঙ্গা আগুন ঝরা
২) অশ্রুভেজা একটি দিন
আপডেট:
রমা চৌধুরী একাত্তরে সম্ভ্রম হরানোর পর সামাজিক ভাবে অনেক লাঞ্চিত হয়েছেন। অনেক বঞ্চনার শিকার হয়েছেন। অনেক আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকে মর্মাহত হয়েছেন। তাই কারো কাছ থেকে তিনি সরাসরি কোনো সাহায্য গ্রহন করেন না। তাই বিষয়টি অন্য দশ জনের মতো নয় বলে একটু সাবধানে পরিবল্পনা করেই আগাতে হচ্ছে। আপনাদের সকলের সহানুভূতি এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহায়তায় আশা করছি আমরা রমা চৌধুরীর জন্য কিছু করতে পারবো।
রমা চৌধুরী নিজের একক প্রচেষ্টায় ‘দীপঙ্কর স্মৃতি অনাথালয়’ নামে নিজের সেই পোড়া ভিটায় একটি অনাথ আশ্রম গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন। আমরা সেটাকে মাথায় রেখে সেই পরিকল্পনা করতে চাই। তাহলে হয়তো তিনি সেই সহায়তা মেনে নেবেন। আর প্রধানমন্ত্রী'র কাছে আবেদন করার আসল কারণ হলো, ব্যক্তি উদ্যোগে কিছু করলে তিনি তা গ্রহন করেন না। সম্মিলিত উদ্যোগের বেলায়ও সেই আশংকা রয়েছে। কিন্তু রাষ্ট্রীয় উদ্যোগকে রমা চৌধুরী নিশ্চয়ই সম্মান দেখিয়ে সম্মানের সাথেই গ্রহন করবেন বলে আমি মনে করি।
বিষয়টি আরেকটু সময় সাপেক্ষ ব্যাপারও বটে। প্রধানমন্ত্রী যতোক্ষণ না বিষয়টি নিয়ে নিজে উদ্যোগ না নেবেন, ততোক্ষণ আমাদের সম্মিলিত উদ্যোগটির জন্য অপেক্ষা করাই ভালো বলে আমার নিজের মতামত। তবে সবাই প্রস্তুত থাকেন। শীঘ্রই আমরা সাংসদ মঈনউদ্দিন খান বাদল সাহেবের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী'র সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি। তারপরে আমাদের যেসব পরিকল্পনা আছে তা আমরা বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করব। রমা চৌধুরী কোনো সরাসরি সাহায্য গ্রহন করেন না বলেই বিষয়টি একটু সেনসিটিভ। এটা না পাওয়ার বেদনা জড়িত দীর্ঘ দিনের ক্ষোভের একটি বহিপ্রকাশ।
আর আমরা কি কি করতে পারি, সে বিষয়ে আপনারা খোলা মনে পরামর্শ দিন। যাতে আমরা সেই বিষয়গুলো প্রধানমন্ত্রীকে বলার সুযোগ পাই। সকলকে আমার আন্তিরক ধন্যবাদ রইল।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৩:০২