somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভারতের বিশ্বকাপ ক্রিকেট অভিযান !!! প্রথম পর্ব !!!

২৭ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ১:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এবার আসুন বিশ্বকাপ ক্রিকেটের এগারোটি আসরে ভারত কখন কিভাবে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিয়েছিল, তার একটি নিরপেক্ষ খতিয়ান বিশ্লেষন করা যাক। ১৯৭৫ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত প্রথম বিশ্বকাপে মোট ৮টি দল অংশ নিয়েছিল। চারটি করে দল নিয়ে দুইটি গ্রুপ করা হয়েছিল। বি-গ্রুপে ভারতের সেবার প্রতিপক্ষ ছিল আয়োজক ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড এবং পূর্ব আফ্রিকা। তখন ওয়ান ডে ক্রিকেট ছিল ৬০ ওভারের খেলা। ভারত প্রথম খেলায় লর্ডসে ইল্যাংন্ডের কাছে মাত্র ২০২ রানে হেরেছিল। কিভাবে? প্রথমে ইংল্যান্ড ব্যাট করে তুলেছিল ৩৩৪ রান। ৩৩৫ রানের জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ভারত নির্ধারিত ৬০ ওভারে মাত্র ৩ উইকেট হারিয়ে তুলেছিল ১৩২ রান। সুনীল গাভাস্কার ওপেনিংয়ে ব্যাট করতে নেমে শেষ পর্যন্ত ৩৬ রানে অপরাজিত ছিলেন। গাভাস্কারের সেই ৩৬ রানে মাত্র একটি চারের মার ছিল। তো খেলা শেষে সবার কৌতুহল গাভাস্কারকে কেউ কেন মনে করিয়ে দিল না এটা টেস্ট ম্যাচ না, এটা ওয়ান ডে ম্যাচ। খেলা শেষে গাভাস্কার বলেছিলেন তিনি নাকি ফর্মে নাই তাই এভাবে খেলেছেন।
আসরের দ্বিতীয় খেলায় লীডসের হেডেলিংতে পূর্ব আফ্রিকা ভারতের মদন লালের তোপের মুখে ১২০ রানে অলআইট হয়েছিল। মদনলাল ১৫ রানে পেয়েছিলেন ৩ উইকেট। ১২১ রানের জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে গাভাস্কার আর ফারুখ ইঞ্জিনিয়ারের জোড়া হাফ সেঞ্চুরিতে ভারত কোনো উইকেট না হারিয়ে জয় ১০ উইকেটের জয় তুলে নিয়েছিল। গাভাস্কার করেছিলেন ৮৬ বলে অপরাজিত ৬৫ রান আর ফারুখ ইঞ্জিনিয়ার করেছিলেন ৯৩ বলে অপরাজিত ৫৪ রানের ইনিংস।
গ্রুপের তৃতীয় ও শেষ খেলায় ম্যানচেস্টারের ওল্ড ট্রাফোর্ডে ভারতের প্রতিপক্ষ ছিল নিউজিল্যান্ড। সেই ম্যাচে ভারত প্রথমে ব্যাট করে তুলেছিল ২৩০ রান। ভারতের টপঅর্ডারের ব্যর্থতায় ভারত বড় রানের স্কার গড়তে ব্যর্থ হয়েছিল। একমাত্র সৈয়দ আবিদ আলী ৯৮ বলে ৭০ রানের একটি ইনিংস খেলেছিলেন। জবাবে নিউজিল্যান্ডের ওপেনার গ্লেন টার্নারের অপরাজিত ১১৪ রানের সেঞ্চুরির উপর ভর করে ৬ উইকেট হারিয়ে নিউজিল্যান্ড ম্যাচ জিতেছিল ৪ উইকেটে।
সেবার দুটি গ্রুপের বেস্ট দুটি দল সরাসরি সেমি-ফাইনালে যাবার যোগ্যতা অর্জন করেছিল। তিন খেলার একটিতে জিতে এবং দুটিতে হেরে গ্রুপের তৃতীয় হয়ে ভারত গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিয়েছিল। সেবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর রানার আপ হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্লাইভ লয়েড সেঞ্চুরি করেছিলেন।
১৯৭৯ সালে দ্বিতীয় বিশ্বকাপ ক্রিকেট আসর বসেছিল আবারো ইংল্যান্ডে। সেবারও ৬০ ওভারের খেলা ছিল। ৮ টি দল অংশ নিয়েছিল। সেবার বি-গ্রুপে ভারতের প্রতিপক্ষ ছিল বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ, নিউজিল্যান্ড ও নন-টেস্ট প্লেয়িং দল শ্রীলংকা। প্রথম খেলায় বার্মংহামের এজবাস্টটনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ফাস্ট বোলার মাইকেল হোল্ডিং ও এন্ডি রবার্টসের তোপের মুখে ৫৪ ওভারে ভারত ১৯০ রানে অলআউট হয়েছিল। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওপেনার গর্ডন গ্রিনিজের অপরাজিত সেঞ্চুরিতে মাত্র একটি উইকেট হারিয়ে ৯ উইকেটে জয় ছিনিয়ে নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। হোল্ডিং পেয়েছিলেন ৩৩ রানে ৪ উইকেট আর রবার্টস পেয়েছিলেন ৩২ রানে ২ উইকেট।
দ্বিতীয় খেলায় লীডসের হেডেলিংতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ব্যাট করতে নেমে ভারত অলআউট হয় ১৮২ রানে। গাভাস্কার করেছিলেন ১৪৪ বলে ৫৫ রানের একমাত্র হাফ সেঞ্চুরি। জবাবে নিউজিল্যান্ড ২ উইকেট হারিয়ে ৩ ওভার বাকি থাকতে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায়। নিউজিল্যান্ড ম্যাজ জেতে ৮ উইকেট। কিউই ওপেনার ব্রুস এডগার করেছিলেন ৮৪ রান। তৃতীয় খেলায় ম্যানচেস্টারের ওল্ড ট্রাফোর্ডে শ্রীলংকা নির্ধারিত ৬০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে তুলেছিল ২৩৮ রান। জবাবে ভারত ব্যাট করতে নেমে ৫৪.১ ওভারে ১৯১ অলআউট হয়েছিল। নন-টেস্ট প্লেয়িং শ্রীলংকার কাছে ভারত হেরেছিল ৪৭ রানের এক লজ্বাজনত হার। বি-গ্রুপে সবকটি ম্যাচ হেরে চতুর্থ হয়ে ভারতের বিশ্বকাপ মিশন শেষ হয়েছিল। সেবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আর রানারআপ হয়েছিল ইংল্যান্ড। ফাইনালে ভিভিয়াম রিচার্ডসের সেঞ্চুরিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ করেছিল ৯ উইকেট ২৮৬ রান। জবাবে ইংল্যান্ড ৫১ ওভারে ১৯১ রানে অলআউট হয়েছিল। ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিজয়ী হয়েছিল ৯২ রানে।
১৯৮৩ সালে বিশ্বকাপের তৃতীয় আসর বসেছিল ইংল্যান্ডে। ৮ টি দল অংশ নিয়েছিল। সেবারও ৬০ ওভারের খেলা ছিল। কিন্তু নতুন নিয়ম করা হয়েছিল প্রতিটি দল গ্রুপ পর্বে প্রতিপক্ষের সঙ্গে দুইবার করে খেলবে। তারপর সেরা দুটি দল সেমি-ফাইনালে যাবে। বি-গ্রুপে ভারতের প্রতিপক্ষ ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ, অস্ট্রেলিয়া ও নবাগত জিম্বাবুয়ে। ভারত প্রথম ম্যাচে ম্যানচেস্টারের ওল্ড ট্রাফোর্ডে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ভারত ৮ উইকেটে ২৬২ রান করে। জবাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২২৮ রানে অলআউট হয়। ভারত ৩৪ রানে জয়লাভ করে।
দ্বিতীয় খেলায় লাইচেস্টারে জিম্বাবুয়ে ১৫৫ রানে অলআউট হয়। জবাবে ভারত ৫ উইকেট হারিয়ে ১৫৭ রান তুলে নিয়ে ৫ উইকেটের জয় পায়। তৃতীয় খেলায় নাটিংহামে অস্ট্রেলিয়া ৯ উইকেট হারিয়ে তোলে ৩২০ রান। জবাবে ভারত মাত্র ১৫৮ রানে অলআউট হয়েছিল। অস্ট্রেলিয়া জিতেছিল ১৬২ রানে। চতুর্থ খেলায় আবার ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথমে ব্যাট করে ৯ উইকেটে ২৮২ রান করে। জবাবে ভারত ২১৬ রানে অলআউট হয়। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৬৬ রানে জয়লাভ করে। পঞ্চম খেলায় টানব্রিজ ওয়েলসে ভারত প্রথমে ব্যাট করে তোলে ৮ উইকেট ২৬৬ রান। শুরুতে ৭৮ রানে ভারতের ৭ উইকেট পড়ে গেলে অধিনায়ক কপিল দেব ১৩৮ বলে ১৭৫ রানে অপরাজিত এক অতি দানবীয় ইনিংস খেলে দলীয় ২৬৬ রান তোলেন। জবাবে জিম্বাবুয়ে ২৩৫ রানে অলআউট হয়। ভারত ৩১ রানে জয়লাভ করে।
ষষ্ঠ খেলায় চেলমসফোর্ডে ভারত প্রথমে ব্যাট করে ২৪৭ রানে অলআউট হয়। জবাবে অস্ট্রেলিয়া ১২৯ রানে অলআউট হয়। ভারত ১১৮ রানের জয় পায়। বি-গ্রুপে রানারআপ হয়ে ভারত সেমিফাইনালে পৌঁছায়।
সেমিফাইনালে ম্যানচেস্টারে ইংল্যান্ড প্রথমে ব্যাট করে ২১৩ রানে অলআউট হয়। জবাবে ভারত ৪ উইকেট হারিয়ে ২১৭ রান তোলে। ভারত জয় পায় ৬ উইকেটের। ভারত ফাইনালে ওঠে। অপর সেমি-ফাইনালে পাকিস্তানকে ৮ উইকেটে হারিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ফাইনালে ওঠে। ফাইনালে লর্ডসে ভারত প্রথমে ব্যাট করে ৫৪.৪ ওভারে অলআউট হয় ১৮৩ রানে। কৃষ্ণমাচারি শ্রীকান্ত করেন দলীয় সর্বোচ্চ ৩৮ রান। গার্নার ৩২ রানে ৩টি ও মার্শাল ২৪ রানে ২টি উইকেট নেন। জবাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৫২ ওভারে ১৪০ রানে অলআউট হয়। ভারত ৪৩ রানে জয়লাভ করে। দলীয় সর্বোচ্চ ৩৩ রান করেন ভিভিয়াম রিচার্ডস। ভারতের মহেন্দার অমরনাথ ১২ রানে ৩টি ও মদনলাল ৩১ রানে ৩টি উইকেট নেন। মহেন্দার অমরনাথ ব্যাটে ২৬ রান ও ৩টি উইকেট নিয়ে হন ম্যান অব দ্য ম্যাচ। ভারত প্রথমবারের মত কপিল দেবের নেতৃত্বে বিশ্বকাপ জয় করে।
১৯৮৭ সালে চতুর্থ বিশ্বকাপের আসর বসে যৌথভাবে ভারত ও পাকিস্তানে। এই আসর থেকেই বিশ্বকাপ ৫০ ওভারে সীমিত হয়। ৮টি দল সেবার অংশ নেয়। এ-গ্রুপে ভারতের প্রতিপক্ষ ছিল অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও জিম্বাবুয়ে। প্রথম খেলায় চেন্নাইতে অস্ট্রেলিয়া প্রথমে ব্যাট করে মার্শের সেঞ্চুরিতে ভর করে তোলে ৬ উইকেট হারিয়ে ২৭০ রান। জবাবে ভারত এক বল বাকি থাকতে ২৬৯ রানে অলআউট হয়। অস্ট্রেলিয়া ১ রানে জয়লাভ করে। দ্বিতীয় খেলায় ব্যাঙ্গালোরে ভারত প্রথমে ব্যাট করে ৭ উইকেটে করে ২৫২ রান। জবাবে নিউজিল্যান্ড ৮ উইকেট হারিয়ে তোলে ২৩৬ রান। ভারত ১৬ রানে জয়লাভ করে। তৃতীয় খেলায় মুম্বাইতে জিম্বাবুয়ে ১৩৫ রানে অলআউট হয়। জবাবে ভারত ২ উইকেট হারিয়ে করে ২৩৬ রান। ভারত ৮ উইকেটে জয়লাভ করে। ফিরতি লিগে ভারত চতুর্থ ম্যাচে দিল্লীতে প্রথমে ব্যাট করে ৬ উইকেটে করে ২৮৯ রান। জবাবে অস্ট্রেলিয়া ২৩৩ রানে অলআউট হয়। ভারত ৫৬ রানে জয়লাভ করে। পঞ্চম খেলায় আহমেদাবাদে জিম্বাবুয়ে প্রথমে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ১৯১ রান করে। জবাবে ভারত ৩ উইকেট হারিয়ে ১৯৪ রান তুলে ৭ উইকেটে জয় পায়। ষষ্ঠ খেলায় নাগপুরে নিউজিল্যান্ড প্রথমে ব্যাট করে ৯ উইকেটে ২২১ রান করে। জবাবে ভারত ১ উইকেট হারিয়ে ২২৪ রান তুলে ৯ উইকেটের জয় পায়।
গ্রুপ পর্বে ছয় খেলায় ৫টিতে জিতে ভারত এ-গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমি-ফাইনালে যায়। সেমিফাইনালে মুম্বাইতে ইংল্যান্ড প্রথমে ব্যাট করে ৬ উইকেট হারিয়ে তোলে ২৫৪ রান। জবাবে ভারত ৪৫.৩ ওভারে ২১৯ রানে অলআউট হয়। ইংল্যান্ড ৩৫ রানে জিতে ফাইনালে যায়। সেমিফাইনাল থেকে নিজের দেশে বিদায় নেয় ভারত। অপর সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়া প্রথমে ব্যাট করে ৮ উইকেট হারিয়ে তোলে ২৬৭ রান। জবাবে বি-গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তান ৪৯ ওভারে ২৪৯ রানে অলআউট হয়। অস্ট্রেলিয়া ১৮ রানে জিতে ফাইনালে যায়। ফাইনালে কলকাতার ইডেন গার্ডেনে অষ্ট্রেলিয়া প্রথমে ব্যাট করে ৫ উইকেট ২৫৩ রান তোলে। জবাবে ইংল্যান্ড ৮ উইকেটে ২৪৬ রান তুলতে সক্ষম হয়। অস্ট্রেলিয়া ৭ রানে জিতে প্রথমবারের মত বিশ্বকাপ জয় করে। চতুর্থ বিশ্বকাপ শেষে সুনীল গাভাস্কার ক্রিকেটের সকল ফরমেট থেকে অবসর গ্রহন করেন।
১৯৯২ সালে বিশ্বকাপের পঞ্চম আসর বসে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে। সেবার প্রথম বিশ্বকাপে রাউন্ড রবিন লিগে খেলা হয়। এবং ৮ টি দলের মধ্যে রাউন্ড রবিন লিগে সেরা চারটি দল সেমিফাইনালে যাবার সিদ্ধান্ত হয়। ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপেই প্রথম ডে-নাইট ম্যাচ ও কালার জার্সি পড়ে খেলার প্রচলন শুরু হয়।
রাউন্ড রবিন লীগের ভারতের প্রথম খেলায় পার্থে ইংল্যান্ড প্রথমে ব্যাট করে ৯ উইকেটে ২৩৬ রান করে। জবাবে ভারত ৪ বল বাকি থাকতে ২২৭ রানে অলআউট হয়। ইংল্যান্ড ৯ রানে জয়লাভ করে। ভারতের দ্বিতীয় খেলায় মাকেতে শ্রীলংকা ও ভারতের খেলাটি বৃষ্টির কারণে পরিত্যাক্ত হয়। ভারত দুই বল খেলে ১ রান করার পর সেই বৃষ্টি শুরু হয়। শ্রীলংকা ও ভারত পয়েন্ট ভাগাভাগি করে। ভারতের তৃতীয় খেলায় ব্রিজব্রেনে অস্ট্রেলিয়া প্রথমে ব্যাট করে ৯ উইকেট হারিয়ে তোলে ২৩৭ রান। বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচ ৩ ওভার কার্টেল করা হয়। ৪৭ ওভারে ভারতের জয়ের লক্ষ্য ধরা হয় ২৩৬ রান। ভারত ৪৭ ওভারে ২৩৪ রানে অলআউট হয়। মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন ৯৩ রান করেন। ভারত ১ রানে সেই ম্যাচ হেরে যায়। ভারতের চতুর্থ খেলায় সিডনিতে প্রথমে ব্যাট করে বৃষ্টিবিঘ্নিত খেলায় ওভার কার্টেলের ফলে ৪৯ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে তোলে ২১৬ রান। জবাবে পাকিস্তান ৫ বল বাকি থাকতে ১৭৩ রানে অলআউট হয়। সচিন টেন্ডুলকার দলীয় সর্বোচ্চ ৬২ বলে ৫৪ রান। ভারত ৪৩ রানে জয়লাভ করে।
অস্ট্রেলিয়ায় ভারত চার ম্যাচ খেলার পর নিউজিল্যান্ডে যায়। পঞ্চম ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের হ্যামিলটনে বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে ভারত ৩২ ওভারের ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে ৭ উইকেট হারিয়ে তোলে ২০৩ রান। টল্ডুলকার করেন ৭৭ বলে ৮১ রান। আবারো বৃষ্টি হলে জিম্বাবুয়ের জয়ের লক্ষ্য ধরা হয় ১৯ ওভারে ১৫৯ রান। কিন্তু জিম্বাবুয়ে ১৯ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে মাত্র ১০৪ রান করতে সক্ষম হয়। ভারত ৫৫ রানে জয়লাভ করে। বিশ্বকাপে টেন্ডুলকার প্রথম ম্যান অব দ্য ম্যাচ হন।
ভারতের ষষ্ঠ ম্যাচে ওয়েলিংটনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথমে ব্যাট করে ১৯৭ রানে অলআউট হয়। বৃষ্টির কারণে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয়ের লক্ষ্য ধরা হয় ৪৬ ওভারে ১৯৫ রান। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৪০.২ ওভারে ৫ উইকেটে ১৯৫ রান তুলে ৫ উইকেটে জয়ী হয়। সপ্তম খেলায় এডিলেডে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে ভারত ৩০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে তোলে ১৮০ রান। জবাবে ৫ বল বাকি থাকতে দক্ষিণ আফ্রিকা ৪ উইকেট হারিয়ে ১৮১ রান তুলে নিয়ে ৬ উইকেটের জয় পায়। রাউন্ড রবিন লিগে ভারত সপ্তম স্থানে থেকে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠতে ব্যর্থ হয়।
প্রথম সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ড প্রথমে ব্যাট করে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৬২ রান করে। জবাবে পাকিস্তান এক ওভার বাকি থাকতে ৬ উইকেট হারিয়ে ২৬৪ রান তুলে ৪ উইকেটে জয়লাভ করে ফাইনালে পৌঁছায়। অপর সেমিফাইনালে বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে ৪৫ ওভারে ইংল্যান্ড প্রথমে ব্যাট করে ৬ উইকেট হারিয়ে তোলে ২৫২ রান। জবাবে দক্ষিণ আফ্রিকা ৪২.৫ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ২৩১ রান তোলার পর আবার বৃষ্টি শুরু হয়। তখন দক্ষিণ আফ্রিকার জয়ের জন্য প্রয়োজন ১৩ বলে ২২ রান। কিন্তু ডাকওয়ার্থস-লুইস পদ্ধতিতে তখন প্রথমে সাত বলে ২২ রান দক্ষিণ অফ্রিকার জয়ের লক্ষ্য ধরা হয়। কিন্তু একটু পরে আবার বলা হয় ১ বলে ২২ রান জয়ের লক্ষ্য। ইংল্যান্ড সেই বিতর্কিত ম্যাচে ১৯ রানে জয়ী হয়ে ফাইনালে যায়।
ফাইনালে মেলবোর্নে পাকিস্তান প্রথমে ব্যাট করে ৬ উইকেট হারিয়ে ২৪৯ রান করে। জবাবে ইংল্যান্ড ৪ বল বাকি থাকতে ২২৭ রানে অলআউট হয়। পাকিস্তান ২২ রানে জয়ী হয়ে ইমরান খানের নেতৃত্বে প্রথম বিশ্বকাপ জয়ের গৌরব অর্জন করে। ওয়াশিম আকরাম ব্যাটে ৩৩ রান এবং বোলিংয়ে ৪৯ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যান অব দ্য ম্যাচ হন।

........................................
ঢাকা
২৭ মার্চ ২০১৫
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মানুষের জন্য নিয়ম নয়, নিয়মের জন্য মানুষ?

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৪৭



কুমিল্লা থেকে বাসযোগে (রূপান্তর পরিবহণ) ঢাকায় আসছিলাম। সাইনবোর্ড এলাকায় আসার পর ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি আটকালেন। ঘটনা কী জানতে চাইলে বললেন, আপনাদের অন্য গাড়িতে তুলে দেওয়া হবে। আপনারা নামুন।

এটা তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

একটা গাছ কাঠ হলো, কার কী তাতে আসে গেলো!

লিখেছেন নয়ন বড়ুয়া, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:০৬



ছবিঃ একটি ফেসবুক পেইজ থেকে

একটা গাছ আমাকে যতটা আগলে রাখতে চাই, ভালো রাখতে চাই, আমি ততটা সেই গাছের জন্য কিছুই করতে পারিনা...
তাকে কেউ হত্যা করতে চাইলে বাঁধাও দিতে পারিনা...
অথচ... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। কালবৈশাখী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:২৪



গত পরশু এমনটি ঘটেছিল , আজও ঘটলো । ৩৮ / ৩৯ সে, গরমে পুড়ে বিকেলে হটাৎ কালবৈশাখী রুদ্র বেশে হানা দিল । খুশি হলাম বেদম । রূপনগর... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন খাঁটি ব্যবসায়ী ও তার গ্রাহক ভিক্ষুকের গল্প!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৪


ভারতের রাজস্থানী ও মাড়ওয়ার সম্প্রদায়ের লোকজনকে মূলত মাড়ওয়ারি বলে আমরা জানি। এরা মূলত ভারতবর্ষের সবচাইতে সফল ব্যবসায়িক সম্প্রদায়- মাড়ওয়ারি ব্যবসায়ীরা ঐতিহাসিকভাবে অভ্যাসগতভাবে পরিযায়ী। বাংলাদেশ-ভারত নেপাল পাকিস্তান থেকে শুরু করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×