somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চট্টগ্রাম টেস্টের চালকের আসনে এখনো বৃষ্টি !!!

২৩ শে জুলাই, ২০১৫ রাত ১:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মাত্র পাঁচ বলের আফসোসটা হয়তো মাহমুদউল্লাহকে দীর্ঘ সময় পিড়ন দেবে। দেবার কথাও। ওই মাত্র পাঁচটি বল ক্রিজে কাটিয়ে দিতে পারলেই আগামীকাল মাহমুদউল্লাহ সেঞ্চুরির প্রত্যাশায় নামতে পারতেন। বাংলাদেশও এগিয়ে থাকতো ম্যাচের নিয়ন্ত্রণে। এখন টাইগার্সদের ৪ উইকেট পড়ে যাওয়ায় ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ কিছুটা হলেও দক্ষিণ আফ্রিকার দিকে ঝুঁকে গেছে। কারণ টাইগার্সদের এখন ক্রিজে আছে মুশফিক ১৬ রানে আর শাকিব ১ রানে অপরাজিত। টাইগার্সদের হাতে এছাড়া স্বীকৃত ব্যাটসম্যান আছে শুধু লিটন দাস। এরপর জুবায়ের, তাইজুল, শহীদ ও মুস্তাফিজ সবাই বোলার।
আগামীকাল সকালে প্রথম সেশনটা মুশফিক ও শাকিবদের জন্য একটা কঠিন লড়াই। প্রধম সেশনটা অপরাজিত দুই ব্যাটসম্যান কাটিয়ে দিতে পারলেই বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে লিড পাবে। আর যদি সকালের প্রথম সেশনে দক্ষিণ আফ্রিকার বোলাররা ভয়ংকর হয়ে ওঠে, তাহলে হয়তো দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস টাপকানো বাংলাদেশের জন্য কঠিন হয়ে যেতে পারে। মুশফিক-শাকিবদের প্রথম দায়িত্ব হবে উইকেট ধরে থেকে ক্রিজ আগলে পড়ে থাকা।
দক্ষিণ আফ্রিকার স্বল্প পুঁজির ২৪৮ রানও টাইগার্সরা দ্বিতীয় দিনেও ক্রোস করতে পারেনি, এটাই দক্ষিণ আফ্রিকাকে দ্বিতীয় দিন শেষে আমার মতে এগিয়ে রাখছে। সংবাদ সম্মেলনে মাহমুদউল্লাহ অবশ্যই দাবি করেছেন বাংলাদেশ এখনো ম্যাচের ৬৫ ভাগ এগিয়ে আছে। কিন্তু এটা আমি পুরোপুরি মানতে রাজি নই। কারণ বাংলাদেশের কার্যত হাতে ব্যাট করার মত উইকেট আছে মাত্র ৩টি। দক্ষিণ আফ্রিকা সেই ত উইকেট তুলে নিতে পারলেই বাকি ৪ উইকেট প্রোট্রিয়াসদের জন্য কোনো মঅতা ব্যথা নয়।
দ্বিতীয় দিনে এক পর্যায়ে ৫৫ রানে বাংলাদেশের ২ উইকেট পড়ে যাওয়ায় অনেকটাই চাপে পড়ে টাইগার্সরা। সেখান থেকে তামিম মাহমুদউল্লাহ জুটি ৮৯ রানের পার্টনারশিপ করে দলকে বিপদ থেকে রক্ষা করেন। কিন্তু হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করার পর তামিম এবং মাহমুদউল্লাহ আউট দুটো বাংলাদেশকে আবারো ম্যাচে চাপে ফেলেছে। এখনো দক্ষিণ আফ্রিকার চেয়ে বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে ৬৯ রানে পিছিয়ে। ওই ৬৯ রান না টপকানো পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচে এগিয়ে থাকবে।
তবে আজ যেমন বৃষ্টি মাত্র ৬৭ ওভার খেলার সুযোগ দিয়েছে, যা আগামীকাল কনটিনিউ হলে এই টেস্টে বৃষ্টি হবে ভাইটাল নিয়ন্ত্রক। সেক্ষেত্র চট্টগ্রাম টেস্ট নিস্প্রাণ ড্র'র দিকে গড়াচ্ছে। আর যদি কাল ও পরসু বৃষ্টি না হয়, আর বাংলাদেশ ভালো একটা লিড নিতে না পারে, তাহলে দক্ষিণ আফ্রিকার এখনো এই টেস্টে রেজাল্ট বের করার সম্ভাবনা রয়েছে।
আমাদের যে বিষয়টি মনে রাখতে হবে, দক্ষিণ আফ্রিকা এই মুহূর্তে বিশ্বের এক নম্বর টেস্ট প্লেয়িং দল। আর আমরা নবম। তাই এক নম্বর দলটি যে কোনো মুহূর্তে টেস্ট খেলাটি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেবার মত সামর্থ্য রাখে বলে আমি এখনো বিশ্বাস করি। আগামী সকালে ডেইল স্টেইন ও মরকেলের একটি স্পেলই গোটা ম্যাচে প্রোট্রিয়াসদের কঠিনভাবে ম্যাচে ফিরিয়ে আনতে পারে।
বাংলাদেশ দলের প্রধান দুর্বলতা হল উইকেটে দীর্ঘক্ষণ পড়ে থাকার মত ধৈর্য্য ব্যাটসম্যানদের নেই। আর পাঁচটি বল মোকাবেলা করার মত ধৈর্য্য যেমন মাহমুদউল্লাহ দেখালেন না। তামিম যেমন হাফ সেঞ্চুরি করার পর ধৈর্য্য রাখতে পারলেন না। অনেক ভালো সম্ভাবনা জাগিয়ে তীরে এসে নৌকা ডুবানোর মত অভ্যাস এখনো বাংলাদেশ টেস্ট দলের আছে। তাই পুরোপুরি এখনো রায় দেওয়া যাচ্ছে না যে টাইগার্সরা সত্যি সত্যিই এই টেস্টে এখনো চালকের আসনে। এই টেস্টে এখনো বরং চালকের আসনে বৃষ্টি।
ম্যাচের এখনো যেটা দুর্ভাবনার জায়গা সেটা হল দক্ষিণ আফ্রিকার অনিয়মিতক বোলাররা উইকেট নিয়েছেন। নিয়মিত বোলাররা এখনো উইকেট পাননি। যেটা যে কোনো সময় বিপদের কারণ হতে পারে। তাই সকালে মুশফিক শাকিবদের প্রতিটা বলই দেখে বুঝে বিচার করেই খেলতে হবে। কোনো মতেই টিটুয়েন্টি স্টাইলে ব্যাট চালানো যাবে না। এমন কি মুশফিক শাকিবদের হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ হবার পরেও ধৈর্য্য হারানো চলবে না।
সবকিছু বিবেচনায় আগামী কাল সকালের প্রথম সেশনের খেলার ধরনই বলে দেবে এই টেস্টে কি রেজাল্ট হতে যাচ্ছে। এমনিতে বৃষ্টি আর খেলার বর্তমান হাল বলছে এই টেস্ট ড্র'র দিকেই যাচ্ছে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

দক্ষিণ আফ্রিকা: ৮৩.৪ ওভারে ২৪৮ (এলগার ৪৭, ফন জিল ৩৪, দু প্লেসি ৪৮, আমলা ১৩, বাভুমা ৫৪, দুমিনি ০, ডি কক ০, ফিল্যান্ডার ২৪,হারমার ৯, স্টেইন ২, মরকেল ৩*; মুস্তাফিজ ৪/৩৭, জুবায়ের ৩/৫৩,মাহমুদউল্লাহ ১/৯, সাকিব ১/৪৫, তাইজুল ১/৫৭)

বাংলাদেশ: ৬৭ ওভারে ১৭৯/৪ (তামিম ৫৭, ইমরুল ২৬, মুমিনুল ৬, মাহমুদউল্লাহ ৬৭, মুশফিকুর ১৬*, সাকিব ১*; এলগার ১/৬, ফন জিল ১/১৩, ফিল্যান্ডার ১/২২, হারমার ১/৫৯)

......................................
২২ জুলাই ২০১৫
ঢাকা

সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জুলাই, ২০১৫ রাত ১:৩২
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কাঁচা আম পাড়ার অভিযান

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৩ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২



গাজীপুর জেলার জয়দেবপুরের বাড়ীয়া ইউনিয়নের দেউলিয়া গ্রামে আমার প্রায় ৫২ শতাংশ জমি কেনা আছে। সেখানে ছোট একটি ডোবা পুকুর, অল্প কিছু ধানের জমি আর বাকিটা উঁচু ভিটা জমি। বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×