somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নয়া কূটনীতি! (প্রসঙ্গ ইসরাইল-ফিলিস্তিন নয়া সংকট)

১৩ ই মে, ২০২১ বিকাল ৫:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গভীর রাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে ফোন করলেন-
জোবা: হ্যালো আব্বা! কেমন আছো!
বেনে: খুব একটা ভালো নাই পুত্র!
জোবা: কেন আব্বা? ঘটনা কী খুইলা কও!
বেনে: প্রথম কথা- ২৩ শে মার্চ ২০২১-এর নির্বাচনে আমার লিকুদ পার্টি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় নাই। নেসেটের ১২০ আসনের মধ্যে আমরা পাইছি মাত্র ৩০টা। যদিও আমরা একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দল। কিন্তু সরকার গঠনের জন্য আমাগো আরো ৩১টা আসন লাগবো। আমাগো দলীয় প্রেসিডেন্ট রিউভেন রিভলিন ৫ এপ্রিল নির্বাচনে আসন জেতা মোট ১৩টা রাজনৈতিক দলকে ডাইকা কইলেন- শোনো মিঞারা, তোমরা নিজেরা নিজেরা বইসা ঠিক করো- কারা সরকারি দল হইবা আর কারা বিরোধীদলে বসবা? তারপর সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা হিসেবে ৬ এপ্রিল আমাকে সরকার গঠনের জন্য প্রস্তাব দিলেন। আর কইলেন- তুমি মিঞা ৪ মে'র মধ্যে সরকার গঠন করতে ব্যর্থ হইলে আমি দ্বিতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ দল ইয়েশ আতিদ-এর নেতা জায়ার লাপিডকে সরকার গঠনের দায়িত্ব দেব।
কিন্তু দুঃখের কথা হইলো- ডানপন্থী ৭টা দলকে কয়েকটা মিনিস্টার পদ ছাইড়া দেওয়ার কথা কইয়া একটা ৫৬ আসনের জোট করলাম। তাও ৬১ আসন পূরণ হয় না। ৫টা আসন শর্ট পড়ে। এইখানে আকামডা করছে ইয়ামিনা দলের নেতা নাফতালি বেনেট। ওই হালায় একটা আস্তো নাপিত! আর তার লগে তাল মিলাইছে ইউনাইটেড আরব লিস্ট দলের নেতা মনসুর আব্বাস। ইয়ামিনা দলের হালার পুত তলে তলে প্রধানমন্ত্রী হইতে চায়। ওরা আসন পাইছে মোটে ৭টা। আর হাউগার পো'র সহযোগী মনসুর আব্বাসরা পাইছে ৪টা আসন।
আমি তাও একটা চেষ্টা করতে আছিলাম। এরমধ্যে মাউন্ট মরণ আমার কপালডা পোড়াইলো। ওই উৎসবে (৩০ এপ্রিল) আমি পারমিশান দিছিলাম মাত্র দশ হাজার লোককে যাওয়ার জন্য। গতবছর করোনা মারানির জন্য ওই উৎসব বন্ধ রাখছিলাম। এবার সুযোগ পাইয়া হালার পাবলিক লাফাইতে লাফাইতে এক লাখের উপর গিয়া হাজির হইছে। তারপর সেই দুর্ঘটনা সামাল দিতে গিয়া আমার অবস্থা যখন কেরোসিন, তখন আমার জোট থেকে কয়েকটা দল ভাইগা গেল। হেতিরা গিয়া ব্লু অ্যান্ড হোয়াইট দলগো একসাথ কইরা সরকার গঠন করতে চায়। হালার পুতগো কোয়ালিশান হইলো ৫৫ আসনের। আমি যখন মাউন্ট মরণ-এর দুর্ঘটনা নিয়া ব্যস্ত, সেই সুযোগে খানকির পোলারা তলে তলে জোট পাকাইছে। ফলে আমি ৪ঠা মে'র মধ্যে নেসেট-এ সংখ্যাগরিষ্ঠতা দেখাইতে পারি নাই। মাঝে মাঝে মনে হয় নিজের মাথায় পিস্তল ঠেকাইয়া ফুটাইয়া দি! হালার বুইড়া বয়সে রাজনীতিতে এমন পরাজয় কী সহ্য হয়, পুত্র তুমি কও?
জোবা: শোনেন আব্বা হুজুর! আমি নিজে বুড়া বয়সে যে খেলা দেখাইছি, হেইডা কী আপনার মনে নাই?
বেনে: মনে থাকবো না কেন? হেইডা মনে রাইখাইতো আমি বেথেলহেমে ক্যাওয়াজটা লাগাই দিছি! আমি যেহেতু ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী। জরুরি যে কোনো কামে আমার হুকুম তালিম করতে সবাই বাধ্য! কিন্তু দেখার বিষয় ওই হালারপুতরা যদি ২১শে মে'র মধ্যে নেসেট-এ ৬১ আসন দেখাতে ব্যর্থ হয়, তাইলে আবার ইলেকশন হইব! আমার সোজা সাপটা কথা বাপু- দুই বছরের মধ্যে আবার ইলেকশন হইলে গোটা বিশ্বের মানুষ আমাগো আবালচোদা মনে করবে। নতুন কইরা ইলেকশন যাতে না করা লাগে তাই আমি একটা প্রস্তাব দিছি- মিড-টার্ম ইলেকশনের আগে প্রধানমন্ত্রীত্ব ভাগাভাগি করার। হাউগার পুতরা তাও মানতে চায় না। তো আমি কী বইসা থাকুম? হুকুম দিলাম গাজায় কয়ডা মিসাইল মাইরা গোটা বিশ্বের চোখ ওইদিকে ঘুরাই দাও!
জোবা: কামের কাম করছেন আব্বা হুজুর! কিন্তু প্যালেস্টাইনরা কী সত্যি সত্যি তীর (রকেট) ছুড়ছিলো?
বেনে: ওই হালারপুত গো ছোড়ার আগেই আমি সারা বিশ্বের মিডিয়ায় প্রমাণ করেছি যে ওই হালারা আগে তীর (রকেট) ছুড়ছে, তারপর আমরা আত্মরক্ষা করতে মিসাইল ছুড়ছি। প্রয়োজনে আরো ছুড়বো! কোন বাপের পুতেরা ঠেকাইবো?
জোবা: আব্বা হুজুর একটা কথা শোনেন মন দিয়া। আপনি একা কইলে অনেকে এই কথা বিশ্বাস করবে না। হামাসগো অস্ত্র সাপ্লাই দেয় ইরান। ওই সাপ্লাই বন্ধ করার জন্য আমি একটা অ্যাকশানে যাইতে পারি। এইটা টপ সিক্রেট রাইখেন! আর আমি আমার পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনকে কইতাছি- জলদি প্যালেস্টাইন প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের লগে কথা কইতে।
বেনে: মাহমুদ আব্বাস হারামজাদা তো আমার কথাও রাখে নাই! তলে তলে হেতি হামাসগো উসকানি দিসে আমাগো উপর রকেট হামলা করার জন্য! তয় ওই রকেট একটাও ইসরাইলের মাটিতে পরতে দেই নাই। তার আগে কও আমারে- অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন মাহমুদ আব্বাসকে কী কথা কইবো?
জোবা: হেতি কইব যদি হামাস রকেট হামলা বন্ধ করে তাইলে ইসরাইল মিসাইল হামলা বন্ধ করবে। ওয়েস্ট ব্যাংক আর গজায় আর কোনো সহিংস ঘটনা ঘটবে না। আর ঘটনার জন্য আমরা দুঃখ প্রকাশ করব। এজন্য আমি নিজে সৌদি আরব, মিসর আর সংযুক্ত আরব আমিরাতের লগেও কথা কমু। আপনি কোনো টেনশন নিয়েন না আব্বা!
বেনে: এই কথা তো বুঝলাম। কিন্তু দ্বিতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ দল ইয়েশ আতিদ পাইছে মাত্র ১৭টা আসন। ওদের নেতা জায়ার লাপিড যদি প্রধানমন্ত্রী হইতে চায়, তাইলেও আমার তেমন আপত্তি নাই। কারণ মিড-টার্ম ইলেকশনের পর আমি তাইলে আবার প্রধানমন্ত্রী হইতে পারুম। কিন্তু ব্লু অ্যান্ড হোয়াই পার্টি ওরা পাইছে মাত্র ৮টা আসন। ওই দলের নেতা বেনি গাটজ একটা আসল চুতিয়া। ওই হালারপুত নেসেট-এ একটা নতুন বিল আনতে চায়। দুই বারের বেশি কেউ ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী হইতে পারবে না। ওই চুতিয়ারে অহোন কেমনে সামাল দেবো, কও পুত্র?
জোবা: আব্বা হুজুর সমস্যা তো দেহি অনেক! ওই শালারে কী হোয়াইট হাউজে ডাইকা কিছু কমু?
বেনে: ওই চুতমারানি আমার লগে পর্যন্ত চোখ রাঙায়ে কথা কয়! আমি চেষ্টা করতেছি জয়েন্ট লিস্ট দলের নেতা আয়মান ওদেহ আর নিউ হোপ দলের নেতা জিদিওন মোশে সা'আর-এর লগে দুইডা গোপন বৈঠক করতে। ওরা প্রত্যেকে ৬টা কইরা আসন পাইছে। ওই দুই হালায়রে আমার জোটে ভাগাইতে পারলে লাপিড বা বেনেট কেউ আর প্রধানমন্ত্রী হইতে পারবে না। তুমি বাছা ওই হালার লগে পারলে একটু কথা কও!
জোবা: যদি ওরা কথা না শোনে তহোন কী হইবো আব্বা হুজুর?
বেনে: তাইলে লাগাতার মিসাইল হামলা চলবে। বিশ্ববাসী জানবে হামাসের উসকানিতে ইসরাইল প্রতিরক্ষার জন্য হামলা করতেছে। ২রা জুনের আগে যদি আমাগো সরকার গঠন ঠিকঠাক না করা যায়, তাইলে মিসাইল মাইরা আমি আমার রাগ পোষামু। নইলে নিজের মাথায় পিস্তল ঠেকাইয়া ফুটামু!
জোবা: আপনি এত টেনশন নিয়েন না আব্বা হুজুর! আমি সৌদি বাদশাহ'র লগে কথা কই। তারপর আপনারে আবার ফোন করমুনে! ভালো থাইকেন। আর মাথা গরম কইরা নিজের মাথায় গুলি ফুটাইতে যাইয়েন না। তাইলে আমাগো ইজ্জ্বত নিয়া সবাই হাসাহাসি করবো।
বেনে: ওকে পুত্র! তুমি আমার জন্য দোয়া কইরো। আমি যদি সরকার গঠন করতে না পারি তাইলে কিন্তু ইউনাইটেড আরব লিস্টের মনসুর আব্বাসরে ছাড়ুম না। ওই খানকির পোলাই আসল প্যাচটা লাগাইছে। হালারপুতের লগে মাহমুদ আব্বাসেরও অনেক খাতির!
জোবা: হ্যালো আব্বা হুজুর... হ্যালো!....
ওপাশে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ঠাস কইরা টেলিফোন রাইখা দিছেন! তারপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তার পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনকে বলেন- শিগগির ফিলিস্তিন প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসকে ফোন লাগাও। আব্বা হুজুরের মাথা পুরা গরম। কখন কী ঘটায় বোঝা যাচ্ছে না।
.......................
১৩ আগস্ট ২০২১
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই মে, ২০২১ বিকাল ৫:১৯
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

প্রতি মাসে সামু-ব্লগে ভিজিটর কত? মার্চ ২০২৪ Update

লিখেছেন জে.এস. সাব্বির, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৮

মার্চ ২০২৪ সালে আমাদের প্রিয় সামু ব্লগে ভিজিটর সংখ্যা কত ছিল? জানতে হলে চোখ রাখুন-

গত ৬ মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভিউ ছিল জানুয়ারি মাসে। ওই মাসে সর্বমোট ভিজিট ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রোএক্টিভিটি এবং কম্পাউন্ড ইফেক্ট: আমার গুরুত্বপূর্ণ দুইটি শিক্ষা

লিখেছেন মাহদী হাসান শিহাব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১১



আমার গুরুত্বপূর্ন দুইটা লার্নিং শেয়ার করি। এই দুইটা টুল মাথায় রাখলে দৈনন্দিন কাজ করা অনেক সহজ হয়। টুল দুইটা কাজ করতে ও কাজ শেষ করতে ম্যাজিক হিসাবে কাজ করে।

এক.

স্টিফেন কোভের... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রসঙ্গ রূপান্তরঃ ট্রান্সজেন্ডার, সমকামিতা এবং যৌনতা বিষয়ক কিছু আবশ্যিক আলাপ

লিখেছেন সায়েমার ব্লগ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৩

প্রসঙ্গ রূপান্তরঃ
ট্রান্সজেন্ডার, সমকামিতা এবং যৌনতা বিষয়ক কিছু আবশ্যিক আলাপ

১।
যৌন প্রাকৃতিক, জেন্ডার নয়।জেন্ডার মানুষের সৃষ্টি (social, cultural construction)। যৌনকে বিভিন্ন সমাজ বিভিন্ন সময়ে যেভাবে ডিল করে, তাঁকে ঘিরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্মৃতির ঝলক: প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অনুভূতি এবং মনের শান্তির খোঁজে

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০১



সরল প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সংমিশ্রণে একটি ঘূর্ণায়মান পথ জুড়ে ঘুরে বেড়ানোর অবস্থানে আমি খুব শান্তি অনুভব করি। নদীর জল ছুঁয়ে পথ ধরে হাঁটতে হাঁটতে নৈসর্গিক সৌন্দর্যের সঙ্গে এক আন্তরিক সংযোগ অনুভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×