রাহী হাসানের হাত ধরে আছে।হাসান অন্য সময় না করতো আজ করছে না,শেষবারের মত মেয়েটা হাত ধরছে ধরুক না।আর কখনও তো হাত ধরার বাহান খুঁজবে না।
এই হাত ধরাধরির আসলে কোন অর্থ নেই,দু'জনেই বিশ্রীধরণের একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছে গেছে।রাহী তার বাবা মার পছন্দ করা ছেলেটাকেই বিয়ে করছে ।এক্ষেত্রে হাসানের মত সে এখন বিয়ে করার মত অবস্থায় নেই দুই সে রাহীকে আগের মত ভালোবাসে না তাই বিয়ে করার প্রশ্নই আসে না।রাহীর মতামত সে হাসানের ওপর কখনও কথা বলে না।সে প্রস্তাব মেনে নিয়েছে। (পাঠক গল্পের ক্লাইম্যাক্স বলতে গেলে এখানেই শেষ।প্রেমিক বিয়ে করতে চাইবে না আর প্রেমিকা ঘ্যান ঘ্যান করবে এটাই তো স্বাভাবিক।বাস্তব জীবনে,গল্পে নাটকে এমনই তো হয়।এখানে হবে না,নিজের সস্তা মেন্টালিটির পরিচয় দিচ্ছি)।
-হাসান।
-বল।
-আমাকে ভালবাসতে হবে না,শুধু বিয়েটা কর।আমি সারাজীবন তোমার পাশে পাশে থাকবো আর কিছু লাগবে না।
-আমি তোমাকে প্রচন্ড ভালোবাসি কিন্তু আমি তোমাকে বিয়ে করবো না।
-কেন?
-বিয়ে করলেই তো সব শেষ।আমরা বিয়ের পর এক বিছানায় শোবো আর আমাদের মানসিক ভালোবাসা পরিণত হবে শারীরিক ভালোবাসায়।আমি সেটা হতে দেবো না।তুমি বিয়ে করবে অন্য একজন মানুষকে,তার সাথে তোমার বাসর হবে।সেই রাতে আমি কানে হেডফোন লাগিয়ে রাস্তায় নামবো।আমার কানে বাজবে "আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রানে"।আমি এই অনূভতি থেকে নিজেকে বঞ্চিত করবো না কখনও।
-হাসান তুমি কি জানো তুমি মানসিক ভাবে কতটা অসুস্থ একজন মানুষ?
-জানি।
রাহী উঠে চলে যাচ্ছে পেছন থেকে হাসানের গলায় প্রিয় গানের অন্তরা।
"আঁধারের গায়ে গায়ে পরশ তব
সারারাত ফোটাক তারা নব নব।"
রাহী বউ সেজে বসে আছে।একজন অপরিচিত লোক ঘরে প্রবেশ করেছে তার মুখ হাসি হাসি।রাহীও হাসছে আবার কাঁদছে।
মাঝরাতে রাহীর শরীর জেগে ওঠে,সে পূর্ণ মমতা দিয়ে আলিঙ্গন করে একদম নতুন একটা মানুষকে যার সাথে বাকী জীবন সে কাটাবে।
হাসান মহাসড়ক ধরে হেটে যাচ্ছে,তার কানে হেডফোন।হেডফোনে সুর লেগেছে।
"নয়নের দৃষ্টি হতে ঘুচবে কালো,
যেখানে পড়বে সেথায় দেখবে আলো
ব্যথা মোর উঠবে জ্বলে ঊধর্ব-পানে।।
আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে
এ জীবন পুণ্য করো দহন-দানে।"
হাসান পাঞ্জাবীর হাতা দিয়ে চোখ মুছে আকাশের দিকে তাকায়।আকাশ তাঁরা শূন্য!