লেখালেখিতে আমি একদমই কাচা। তাও আবার প্রেমের গল্প!! আসলেই আশ্চর্য জনক একটা ব্যপার। কিন্তু কি আর করা লিখতে যখন বাধ্য। আসল ব্যাপারটা খুলেই বলি। গত ৬ষ্ঠ সেমিস্টারের ভ্যালু এডুকেশন কোর্সের আওতায় ৫ নাম্বারে একটা এ্যসাইনমেন্ট ছিল প্রেমের উত্তাল বর্ণনা: মনীষি বনাম আই.ই.আর-এর শিক্ষার্থী। যাক কি আর করা এ্যাসাইনমেন্ট যখন দিয়েছে তখনতো লিখতেই হয়। এরপর অনেক কষ্টে একটু একটু করে এখান-ওখান থেকে ধার-খয়রাত, চুরি-চামারি শেষ পর্যন্ত যেটা দাড় করালাম তাই আপনাদের সাথে শেয়ার করছি।
বি:দ্র: আমার এই অপচেষ্ট আশা করি সকলেই ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আর একটু বলি, তা হল ইশতিয়াক আমেদের নেইল কাটার বই থেকে ৪/৫ লাইন চুরি করা মেটেরিয়াল আছে। ব্লগে ইশতিয়াক ভাই থাকলে ক্ষমাপ্রার্থী না বলে চুরির জন্য। আর না থাকলে আমার পক্ষ থেকে কেউ কষ্ট করে জানায় দিলে কৃতজ্ঞ হই। তবে এটার নিশ্চয়তা দিচ্ছি যে এ ছাড়া গল্পটাতে আর কোন চুরি করা উপাদেন নাই।
১
টি.এস.সি-র সামনে, মোবাইলটা হাতে নিয়ে দাড়িয়ে আছি। কল করব নুপুরের কাছে। যা হবার হবে, আজ সব কিছু চুকিয়ে ফেলতে চাই। এভাবে আর একটা সম্পর্ক টেকানো সম্ভব না। সেই যে প্রায় ১৭ দিন আগে সামান্য একটা ব্যপার নিয়ে আমার সাথে কি তুলকালাম কান্ডটাই না করল। আমার দোষ ছিল কোথায় তাই তো জানতে পারলাম না। তবে আগ বাড়িয়ে আমি কেন রাগ ভাঙ্গাতে যাব। ভালবাসা থাকলে এই ১৭ দিনে একটি বারের জন্য হলেও তো ফোন করত। যে থাকতে চায়না তাকে তো আর জোর করে রাখা যা্য়না। ফোনটা হাতে নিয়ে ভাবছি ফোন করে কী কী বলব। হঠাৎ মোবাইলটা বেজে উঠল। বেশ বিরক্ত হয়েই স্ক্রিনের দিকে তাকালাম। স্ক্রিনে নাম দেখে আমার মেজাজতো আরো তুঙ্গে। নুপুরের ফোন। ফোনটা রিসিভ করেই ঝগড়া শুরু করে দিলাম।
- কি এতো দিন ফোন দাওনি কেন? আমার কথা কি একবারও মনে পড়ে নি, না কি অন্য কিছু?
- সে প্রশ্নতো আমারও।
- আমি কেন ফোন দিব, দোষতো আর আমার ছিল না। এভাবেই ঝগড়া চলতে থাকল প্রায় ১০ মিনিট। শেষে ঝগড়ার এক পর্যায়ে এসে নুপুরই বলল, বাদ দাওতো এসব। এখন বল, কেমন আছ?
আমিও সব ভুলে গে্লাম। হলনা আর প্রেমের ইতি টানা। প্রেয়সীর প্রতিটি কথাই এখন কানে মধুবর্ষন করছে। এভাবেই এগিয়ে যায় দিন আরেকটি ঝগড়ার প্রতিক্ষায়। আর মাঝের সময়টুকু যেন প্রেমের এক উত্তাল জোয়ার।
২
দীর্ঘ্য তিন বছরের ভালবাসা আমাদের। নুপুরকে ভালবাসার প্রস্তাব দেয়াটাও ছিল অনেকটা নাটুকে। বন্ধুদের মাঝে আমি “মেয়ে ভীতু” নামে পরিচিত। এইচ, এস, সি পরীক্ষা শেষ। সবাই মোটামুটি বেশ রিল্যাক্স মুডেই আছি। বন্ধুরা অনেকেই জম্পেস প্রেম করে বেড়াচ্ছে। কিন্তু আমি তেমন কিছুই করতে পারছিনা। তাই নিয়ে আমার অবশ্য আক্ষেপও নেই। বন্ধুদের সাথে আড্ডামেরে, চ্যাটিং করে আর গল্পের বই পড়েই সময়টা বেশ পার হয়ে যেতে লাগল। প্রতি দিনকার মত সে দিনও সকালের নাস্তা সেরে একটা গল্পের বই নিয়ে বসেছি। উপন্যাসে এতই মগ্ন ছিলাম যে, আমি নিজেকে উপন্যাসের একজন চরিত্র হিসেবে কল্পনা করতে লাগলাম। হঠাৎ পড়ায় ছেদ পড়ল সুরেলা কন্ঠের এক রবীন্দ্র সঙ্গীতের সুর মুর্ছনায়। শুনছি মধুর কন্ঠে গাইছে
হে ক্ষণিকের অতিথি, এলে প্রভাতে তারে চাহিয়া
ঝরা শেফালী পথ বাহিয়া।
…………………………………
উৎস খুজতে গিয়ে আস্তে জানালার পর্দা সরিয়ে উঁকি দিতেই আবিষ্কার করলাম আমার জানালার ঠিক উল্টো পাশের ফ্লাটেই একটি মেয়ে গান গাইছে। বুঝলাম এরা ফ্লাটে নতুন এসেছে। কারণ ফ্লাটটা গত মাসে খালি ছিল। জানালা দিয়ে অগোছালো আসবাব পত্রও দেখা যাচ্ছে। এভাবেই প্রায় সপ্তাহ খানেক কেটে গেল। এই কয়েক দিনে আমি যা আবিষ্কার করলাম তা হল…… মেয়েটি প্রচন্ডভাবে রবীন্দ্র সঙ্গীত ভক্ত, পড়াশোনা করে কাছের একটা কলেজের ফার্স্ট ইয়ারে, গানের কণ্ঠ খুব সুন্দর। আর সবচেয়ে বড় যে জিনিসটি আবিষ্কার করলাম তা হল, আমি কেমন যেন তার প্রতি আকর্ষণ বোধ করছি। এ আকর্ষন অকৃত্রিম, এ ভাললাগা স্বর্গীয়। এতে কোন খাদ নেই, নেই কোন পাপ-কালিমার আশ্রয়।
বিষয়টি নিয়ে বন্ধুদের সাথে আলোচনা করলাম। ওরা বেশ সাপোর্ট দিল। এক বন্ধুর সহায়তায় নুপুরের মোবাইলটাও যোগাড় করে ফেললাম। আমি বেশ উচ্ছসিত। মনের ভেতর যেন কাল বোশেখী ঝড় বইছে। কিন্তু এ আবেগের ঝড় কি আর সবকিছুর সমাধান দিতে পারে? বন্ধু মহলে মেয়ে ভীতু নামে পরিচিত আমার পক্ষে ফোন করে মনের কথা জানানো তো এত সহজ নয়। তারপরও সাহস সঞ্চয় করে, বন্ধুদের সহযোগীতায় একটা স্ক্রিপ্ট দাড় করালাম, ফোন করে কি বলব তাই লিখে। রিহার্সেল চলল বেশ কয়েক দিন। বন্ধুরা বেশ উৎসাহের সাথেই আমাকে রিহার্সেল করাতে লাগল। রিহার্সেল মোটামুটি সফলতার পর্যায়ে আসার পর একদিন ফোন করলাম বেশ সাহস নিয়েই। কিন্তু নুপুরের কন্ঠ শোনা মাত্রই আমার সব কিছু গুবলেট হয়ে গেল। তাল-গোল পাকিয়ে ফেললাম সাজানো গুছানো সব কথা। কিছুই বলতে পারলাম না আমি। কিছুই বেরুল না মুখ ফুটে। শেষে একটা দীর্ঘ্ শ্বাস ফেলে লাইনটা কেটে দিলাম। এরপর কত বার যে আমি নুপুরকে ফোন দিয়েছি তার কোন ইয়ত্তা নেই।
৩
আমার ফোন রিসিভ করতে করতে নুপুর তখন ত্যাক্ত বিরক্ত। নুপুরের বিরক্তি তখন চরমে পৌঁছেছে। সাহস সঞ্চয় করে আবারও ফোন দিলাম। সেদিন ফোনটা ধরেই রাজ্যের বিরক্তি নিয়ে বলল,
- অ্যাই যে শোনেন, ফোন রাখবেন না। একটা কথা বলি। আমি চুপ।
নুপুর বলেই চলছে, যদি কথা বলার সাহস না থাকে তা হলে ফোন করেন কেন?
আমি আবার সাহস হারাই। আবার দীর্ঘ শ্বাস, লাইন কেটে দেয়া
পুরো গল্পটা আমার নতুন খোলা ব্লগ সাইটে দেয়া আছে। একদিনে দুইটা পোস্ট প্রথম পাতায় আসেনাতো তাই দ্বিতীয়টা দেইনি। আমার সাইটের ঠিকানা। ঝানু ব্লগারদের পরামর্শ কামনা করছি।