somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রিমন০০৭
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি বলেছেন , মনে রেখো যদি কোন মুসলমান কোন অমুসলিম নাগরিকের উপর নিপীড়ন চালায় ,তাদের অধিকার খর্ব করে ,তার কোন বস্তু জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেয় তাহলে কেয়ামতের দিন আমি আল্লাহর আদালতে তার বিরূদ্ধে অমুসলিম নাগরিকদের পক্ষ অবলম্বন করব । (আবু

Twinkle Twinkle Little Star এর ভীড়ে হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের শৈশব

২৪ শে অক্টোবর, ২০১২ রাত ১২:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

Twinkle Twinkle Little Star এর ভীড়ে হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের ছোটবেলায় শোনা ছড়াগুলো। কিছু কিছু ছড়া আছে আমি শুনিনি, আমার আম্মু-খালা তাদের ছোটবেলায় শুনেছেন। এমন দিন হয়ত খুব বেশি দূরে নয় যেদিন হারিয়ে যাবে আমাদের ছোটবেলার ছড়াগুলো। হয়ত অপেক্ষা করতে হবে কোনো ড: সুনিতীকুমার মজুমদারের জন্য, যেমনিভাবে আমাদের ডাক আর খনার বচন উদ্ধার করেছিলেন, তেমনিভাবে হয়ত গ্রাম-গঞ্জে ছড়িয়ে থাকা মানুষের মুখে মুখে প্রচলিত ছড়ার সংকলনের আশায়।

আমার বাচ্চা না হলে হয়ত এসব নিয়ে ভাবতামনা। আজ ওর মা যখন সুর করে করে বিভিন্নরকম ছড়া শুনাচ্ছিল ও কে, আমি হারিয়ে যাচ্ছিলাম আমার অতীতে, আমার ছেলেবেলায়।

হাট্টিমা টিম টিম
তারা মাঠে পাড়ে ডিম
তাদের খাড়া দুটো শিং
তারা হাট্টিমা টিম টিম।


মায়ের শরীরের ঘ্রাণ পাওয়া যায় এই হাট্টিমা টিম টিম ছড়ায়। এমন কে কি আছে যে মায়ের কোলে মুখ গুঁজে এই ছড়া শুনেনি? কিংবা নীচের ছড়াটি-

আয় আয় চাঁদ মামা টিপ দিয়ে যা
চাঁদের কপালে চাঁদ টিপ দিয়ে যা।
ধান ভাংলে কুঁড়ো দিব, মাছ কাটলে মুড়ো দেবো
কালো গাইয়ের দুধ দেবো,
দুধ খাবার বাটি দেবো,
চাঁদের কপালে চাঁদ টিপ দিয়ে যা।


ফিরে যেতে পেরেছেন অতীতে? নস্টালজিয়ায় আক্রান্ত হননি এখনো?

খোকা ঘুমোলো পাড়া জুড়োলো
বর্গি এলো দেশে,
বুলবুলিতে ধান খেয়েছে
খাজনা দিবো কিসে।
ধান খেয়েছে, পান খেয়েছে
খাজনার উপায় কী
আর ক’টা দিন সবুর করো
রসুন বুনেছি।


এসব ছড়া কিন্তু আমাদের মায়েরা বই পড়ে শিখেননি। শত বছর ধরে মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়েছে অনেক ছড়া। ছড়া শোনার বয়সের স্মৃতি মনে করা খুব কষ্টসাধ্য। মা কে বারবার জিজ্ঞাসা করি, আচ্ছা ছড়া যখন বলতে আমি কি করতাম? আমি কি তোমার কোলে মাথে গুঁজে রাখতাম? আম্মু বলে, এখন এসব শুনে কি হবে। এখনতো তুই মেয়ের বাবা। আমি বলি, আমি যেভাবে আমার ছোটবেলাকে এনজয় করেছি আমি চাই আমার সন্তান সেইভাবেই এনজয় করুক, মাটির ঘ্রাণে বড় হোক। যদিও পুরোটা স্বপ্ন সফল করা সম্ভবনা, তবুও চেষ্টা করতে ক্ষতি কি?

আতা গাছে তোতা পাখি
ডালিম গাছে মৌ,
এত ডাকি তবু কথা
কওনা কেন বৌ।


বাচ্চা যখন কথা বলতে শিখবে, আপনি বলবেন, আপনার বাচ্চাও আপনার সাথে সাথে বলবে। কত ভাল লাগবে, ভাবুনতো। আমি ১০০% নিশ্চিত আপনি আপনার শৈশবে হারিয়ে যাবেন।

বাক বাকুম পায়রা
মাথায় দিয়ে টায়রা
বৌ সাজবে কাল কি?
চড়বে সোনার পালকি।


আসুন সবাই আমাদের সন্তানদের সেই শৈশব উপহার দিই, যে শৈশব আমরা উপভোগ করেছি। আর আমাদের যে অপূর্ণতা, আসুন আমাদের সন্তানদের মাধ্যমে তা পূর্ণ করি। তাই বলে ইংরেজি রাইম যে শুনাবেন না, তা নয়। তবে মায়ের ভাষার দাবী সবার আগে। সত্যি করে বলুনতো নীচের কয়টা ছড়া আপনার মুখস্হ।

বি:দ্র- অবিবাহিতরা এখনি ছড়া মুখস্হ করা শুরু করে দিন।
আরো কিছু ছড়া--


তাতীরবাড়ি ব্যাঙের বাসা/কোলাব্যাঙের ছা/খায় দায় গান গায়, তাইরে নাইরে না।

বসিয়া পুকুর পাড়ে কাঁদিতেছে বক/ চোখে তার পানি ঝরে কাঁপে ঠকঠক/কাঁকড়া আসিয়া, কয় -ভয়ে ভয়ে/ওহে বক মশায়/ নিরাপদ ঠাঁয় মোরে নিয়ে চল যায়/ এই বলে এল যেই নিকটে তাহার/ বক তারে মহাসুখে করিল আহার।

নোটন নোটন পায়রা গুলি ঝোটন বেঁধেছে/দুইপাড়ে দুই রুইকাতলা ভেসে উঠেছে/কে দেখেছে কে দেখেছে দাদা দেখেছে/দাদার হাতে কলম ছিল ছুঁড়ে মেরেছে/উহ! বড্ড লেগেছে।

ঘুম পাড়ানি মাসিপিসি/মোদের বাড়ি এস/খাট নেই পালংক নেই/চোখ পেতে বস/বাটা ভরে পান দেব/গাল ভরে খেও/যত ছেলের চোখের ঘুম/খুকুর চোখে দিও।

আম পাতা জোড়া জোড়া/মারবো চাবুক চড়বো ঘোড়া/ওরে বুবু সরে দাঁড়া/আসছে আমার পাগলা ঘোড়া/পাগলা ঘোড়া খেপেছে/চাবুক ছুঁড়ে মেরেছে!

ঐ দেখা যায় তাল গাছ/ঐ আমাদের গাঁ/ঐখানেতে বাস করে/কাঁনাবগির ছাঁ!/ও বগি তুই খাস কী?/পান্তা ভাত চাস কী?/পান্তা আমি খাইনা/পুঁটি মাছ পাইনা/একটা যদি পাই/অমনি ধরে গাপুস গুপুস খাই!

খোকন খোকন ডাক পাড়ি/খোকন গেল কার বাড়ি/আয়রে খোকন ঘরে আয়/দুধমাখা ভাত কাকে খায়

চাঁদ মামা চাঁদ মামা/মোদের বাড়ি এসো,/আকাশ বাড়ি ছেড়ে এবার/মোদের সাথে মেশো ।

ওপেন্টি বায়োস্কোপ/নাইন টেন টেইস্কোপ/চুল টানা বিবি আনা/সাহেব বাবুর বৈঠক খানা/সাহেবে বলেছে যেতে/পান সুপারি খেতে/পানের ভিতর মরিচ বাঁটা/ইস্কাপনের ছবি আঁটা
/যার নাম রেনু বালা/গলায় দিলাম মুক্তার মালা।
১০
ঢোল ঢোল ঢুলুনি/রাংগা মাথায় চিরুনী/বর আসবে এখনি/নিয়ে যাবে তখনি!
১১
চড়ুই পাখি বারোটা/ডিম পেরেছে তেরোটা/একটা ডিম নষ্ট/চড়ুই পাখির কষ্ট!
১২
আদুর বাদুর চালতা বাদুর/কলা বাদুরের বে/টোপর মাথায় দে/দেখতে যাবে কে/চামচিকেতে বাজনা বাঁজায়/ঠ্যাংরা কাঠি দিয়ে।
১৩
আয় বৃষ্টি ঝেঁপে/ধান দেব মেপে/লেবুর পাতা, করমচা/যা বৃষ্টি চলে যা।
১৪
খোকা যাবে শ্বশুড় বাড়ি/সংগে যাবে কে/ঘরে আছে হুলো বেড়াল/কোমড় বেঁধেছে।
১৫
আম পাতা জোড়া জোড়া/মারবো চাবুক চড়বো ঘোড়া/ওরে বুবু সরে দাঁড়া/আসছে আমার পাগলা ঘোড়া/পাগলা ঘোড়া খেপেছে/চাবুক ছুঁড়ে মেরেছে!
১৬
আগডুম বাগডুম ঘোড়াডুম সাজে/ঢাকঢোল ঝাঁঝড় বাজে/বাজতে বাজতে চললো ঢুলি/ঢুলি গেলো কমলাফুলি/কমলাফুলির টিয়েটা/সূর্যিমামার বিয়েটা!
১৭
আতা গাছে তোতা পাখি/ডালিম গাছে মউ/এত ডাকি তবু কথা/কয়না কেন বউ!

১৮
মনারে মনা কোথায় যাস?/বিলের ধারে কাটব ঘাস।/ঘাস কি হবে?/বেচব কাল,/চিকন সুতোর কিনব জাল।/জাল কি হবে?/নদীর বাঁকে/মাছ ধরব ঝাঁকে ঝাঁকে।/মাছ কি হবে?/বেচব হাটে,/কিনব শাড়ি পাটে পাটে।/বোনকে দেব পাটের শড়ি,/মাকে দেব রঙ্গিন হাঁড়ি।
১৯
দাদখানি চাল, মুসুরির ডাল, চিনি-পাতা দৈ,/দু’টা পাকা বেল, সরিষার তেল, ডিমভরা কৈ/পথে হেঁটে চলি, মনে মনে বলি, পাছে হয় ভুল/ভুল যদি হয়, মা তবে নিশ্চয়, ছিঁড়ে দেবে চুল।

সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে অক্টোবর, ২০১২ সকাল ৭:৫৭
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×