somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মোহাম্মদ মোস্তফা রিপন
ক্রিটিক্যাল থিঙ্কিং এবাউট ওয়ার্ল্ড পলিটিক্স্,স্পেশালি মিনা রিজিয়ন। মেইনস্ট্রিম মিডিয়ার কিছুই বিশ্বাস করি না।

ভেনিজুয়েলা- আমেরিকার বুকে দাঁড়িয়ে থাকা প্রতিবাদী শক্তি

০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ৯:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ইরাক,লিবিয়া,সিরিয়া,ইরান......ভেনিজুয়েলা।
২৩ জানুয়ারী,২০১৯ ইং তারিখে জুয়ান গুয়াইডো নিজেকে ভেনেজুয়েলার "ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি" বলে ঘোষণা করেন। সাথে সাথেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অনির্বাচিত গুয়াইডোকে ভেনিজুয়েলার বৈধ সরকার বলে ঘোষণা করেন। কানাডা সরকার দ্রুত মার্কিন নীতিকে অনুসরণ করেন সাথে ছিল ল্যাটিন আমেরিকার কিছু ডানপন্থী সরকার।ইউরোপীয় ইউনিয়ন নন বাইন্ডিং প্রস্তাব পাস করে গুয়াইডোর পক্ষে।
এত কিছু অর্জন করতে গুয়াইডোকে ভেনিজুয়েলার মানুষের সমর্থন দরকার হয়নি এমনকি নির্বাচনে অংশগ্রহন করতে হয়নি।যেটা দরকার হয়েছে সেটা হল মার্কিন সমর্থন।যদিও গুয়াইডো মার্কিন প্রজেক্ট-২০০৭ এর অউটপুট।
গুয়াইডোর স্ব-ঘোষণার আগের দিন, মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স ভেনেজুয়েলার গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি নিকোলাস মাদুরোকে উৎখাত করার আশায় এত উত্তেজিত ছিলেন যে তিনি নিজেকে ধারণ করতে পারেননি। তিনি ভেনেজুয়েলার বিরোধী দলের সমর্থনের একটি ভিডিও বার্তা রেকর্ড করেন।যেখানে তিনি বলেনঃ
"ভেনেজুয়েলার ভালো মানুষ আগামীকাল আপনার কন্ঠস্বর শুনতে পাচ্ছে, আমেরিকার পক্ষ থেকে বলছি, আমরা তোমাদের সাথে আছি. আমরা তোমাদের সাথে দাঁড়ানো, এবং আমরা তোমাদের সাথে থাকব যতক্ষণ না গণতন্ত্র পুনঃস্থাপিত হয় এবং আপনাদের জন্মগত অধিকার স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার না হয়। "
২০০১ সালে আফগানিস্তানের মার্কিন নেতৃত্বাধীন আগ্রাসনের সাথে শুরু হওয়া যুদ্ধ ও দখলদারিত্বের নতুন যুগে, "মানবাধিকার," "গণতন্ত্র," "স্বাধীনতা"এসব স্লোগান সমস্ত মার্কিন যুদ্ধে মেশিনের গানের বাজনার মধ্যে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। আফগানিস্তান, ইরাক, ফিলিস্তিন, ইয়েমেন, সিরিয়া, লিবিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা জুড়ে লাখ লাখ মানুষকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন যুদ্ধ,ও গোপন সামরিক অভিযানে হত্যা করা হয়েছে। উত্তর কোরিয়া, ইরান,ইরাক ও ভেনিজুয়েলার লোকদের উপর আরোপিত নিষ্ঠুর সাম্রাজ্যবাদী অবরোধের মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ মানুষকে নিরর্থকভাবে দুর্ভিক্ষের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।
গত ১৭ বছর ধরে, যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডার সরকার সহ তাদের সহযোগীরা একত্রিত হয়ে মধ্যপ্রাচ্যে, উত্তর আফ্রিকা, এবং ল্যাটিন আমেরিকাতে তাদের একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তারের জন্য উম্মাদের মত আচরণ করেছে। মার্কিন সরকার এবং অন্যান্য সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলি অর্থনৈতিক সংকটের মুখে,শোষণের জন্য নতুন বাজার, সম্পদ এবং মানুষ কিছুই খুঁজে পাইনি।তাদের নিজস্ব অর্থনৈতিক লাভের জন্য সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করার জন্য, মার্কিন সরকার, স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ জনগণ এবং সরকারগুলিকে ধ্বংস করতে দিতে চাই। এভাবেই গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি নিকোলাস মাদুরো সরকার এবং ভেনিজুয়েলার বিপ্লবী জনগণ তাদের ক্রস-ইন্টারেস্টের মধ্যে চলে এসেছে।
ভেনেজুয়েলাতে মার্কিন নেতৃত্বাধীন যুদ্ধঃ
কোন ধরনের গুলি খরচ ছাড়াই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভেনিজুয়েলার জনগণ এবং তাদের বলিভারিয়ান বিপ্লবী প্রক্রিয়ার সাথে যুদ্ধ করছে। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামরিক হুমকি ও হামলার সমন্বিত সমন্বয়ের মাধ্যমে এটি ভেনিজুয়েলার জনগণের উপর আগ্রাসনের একটি সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধ। যখন মার্কিন সরকার ও তাদের সহযোগীরা ভেনেজুয়েলার "অন্তর্বর্তী রাষ্ট্রপতি" হিসাবে জুয়ান গুয়াডোকে স্বীকৃতি দেয় - তখন ভেনেজুয়েলার গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি নিকোলাস মাদুরোর বিরুদ্ধে এটি একটি কুপিত অভ্যুত্থানের চেয়ে ছোট ছিল না। ভেনেজুয়েলাতে তাদের গণতান্ত্রিক ও অবৈধ হস্তক্ষেপে এটি বৃদ্ধি পেয়েছিল, যার মধ্যে নিষ্ঠুর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা, সামরিক আক্রমনের হুমকি দেওয়া এবং ভেনেজুয়েলার সহিংস বিরোধীদের আর্থিক ও রাজনৈতিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
ভেনিজুয়েলার বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক মার্কিন নেতৃত্বাধীন আগ্রাসন বুঝার জন্য এটি প্রাসঙ্গিক যে ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিজয়ী প্রেসিডেন্ট মাদুরোকে ট্রাম্প মেনে নেয়নি।ঠিক ২০১৩ সালের নির্বাচনে মাদুরো বিজয়ী হলেও ওবামা সেটাও মেনে নেয়নি।এর মানে ভেনিজুয়েলাকে ধ্বংসের পরিকল্পনা তাদের অনেক আগের।
মার্কিন প্রশাসন গুয়াইডোকে ভেনিজুয়েলার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করার পর ওয়াশিংটন পোষ্টে এডিটোরিয়াল লিখেন।ঘৃণা উগড়ে দেওয়া সেই এডিটরিয়ালে গুয়াইডো,মাদুরোকে একজন দখলদার হিসেবে আখ্যায়িত করেন।কারণ তার মতে কোন নির্বাচন ছাড়াই মাদুরো জানুয়ারির ১০ তারিখ আবার প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন।তাহলে যখন ২০১৮ সালের ২০শে মে নির্বাচন হল এবং সেই নির্বাচনে মাদুরো জিতে আসলো তখন কই ছিলেন গুয়াইডো???কোথায় গেল ৯.৩ মিলিয়ন ভেনিজুয়েলিয়ানের ভোট?কেন তাহলে ১৬টি রাজনৈতিক দল প্রেসিডেন্ট প্রার্থী দিয়েছিলও।কেন ৮টি দেশ নির্বাচন পর্যবেক্ষক পাঠিয়েছিল?সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার সেন্টারের মতে ভেনিজুয়েলার নির্বাচন প্রক্রিয়া দুনিয়ার স্বচ্ছ নির্বাচন প্রক্রিয়ার একটা।
২০শে ২০১৮ এর নির্বাচনে প্রায় ৬ মিলিয়ন ভোট পেয়ে দ্বিতীয়বারের মত প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন মাদুরো।তার নিকটবর্তী প্রতিদ্বন্দ্বী হেনরি ফেলকন পেয়েছিলেন প্রায় ২ মিলিয়ন ভোট। এই নির্বাচন ভেনেজুয়েলার জনগণ এবং বলিভিয়ার বিপ্লবী প্রক্রিয়ার জন্য একটি দুর্দান্ত বিজয় ছিল।
২০১৮ সালের এই নির্বাচন পর্যবেক্ষন করেন,আফ্রিকান ইউনিয়ন,লিমা গ্রুপ(ল্যাটিন আমেরিকা),কার্টার সেন্টার,রাশিয়ার বিভিন্ন সংস্থা।তারা সবাই বলেছে এই নির্বাচনে কোন অনিয়ম হয়নি।কিন্তু আমেরিকান প্রচেষ্টায় আমেরিকাপন্থী লোপেজ সেই নির্বাচনে অংশগ্রহন করেনি।
মার্কিন সরকার এবং তার সহযোগী গুয়াইডোর জন্য - "গণতন্ত্র" কেবলমাত্র "গণতন্ত্র" হয় তখন,যখন তাদের নির্বাচিত প্রার্থীরা ক্ষমতা দখল করতে পারে।
প্রকৃতপক্ষে, নির্বাচনের ফলাফলের ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতি মাদুরো রাষ্ট্রপতির বৈধতা যারা তাঁকে উৎখাতের চেষ্টা চালাচ্ছেন তাদের থেকেও অনেক বেশি বৈধ।কারন ভেনেজুয়েলার যোগ্য ভোটারদের ৩১.৭% মাদুরোকে ভোট দিয়েছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্পে ভোট পেয়েছে ২৭.৩% এবং কানাডার ট্রুডো ভোট পেয়েছে ২৬.৮%।
বস্তুত গুয়াইডো সহিংস রাজনৈতিক আন্দোলনের নেতা এবং অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার স্থপতি মারিয়া কোরিনা মাচাদো, লিওপাল্ডো লোপেজ, আন্তোনিও লেডিজমা এবং জুলিও বোর্গেস এর হাতের পুতুল হিসেবে কাজ করছেন।যারা ওভাল অফিসের সাথে সরাসরি যোগাযোগ রাখেন ডানপন্থী মার্কিন সিনেটর মার্কো রুবিওর মাধ্যমে।
ভেনিজুয়েলার বিরুধী জোটের নেতা ছিলেন হেনরি ফেলকন।নির্বাচনের মার্কিন চাপে বিরুধী জোট নির্বাচনে অংশগ্রহন করতে অস্বীকার করলেও ফেলকন নির্বাচনে যেতে রাজি ছিলেন যার কারণে ফেলকনকে জোট থেকে বহিষ্কার করা হয়।মার্কিন চার্জ দ্যা এফেয়ার্স হেনরি রামোস,ম্যানোয়াল রোসালেস এবং হেনরি ফেলকনের সাথে কয়েকবার বৈঠক করেও ফেলকনকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে রাজি করাতে পারেননি।
https://venezuelanalysis.com/news/13728
ভেনিজুয়েলাতে রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্য ইউএসএইডের মাধ্যমে বিরুধী সশস্র গোষ্ঠীগুলুকে অর্থায়ন করেই যাচ্ছে মার্কিন মুলুক।উইকিলিকসের ফাঁসকৃত তথ্য অনুযায়ী ২০০৪ সালেই ৫০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করা হয়েছিল বিরুধিদের পিছনে যাতে তারা চাভেজকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারে।গার্ডিয়ানের ফাসকৃত তথ্য থেকে জানা যায় ২০০২ সালের ব্যার্থ ক্যু চেষ্টা করা হয়েছিল পেন্টাগনে বসেই।
https://www.theguardian.com/world/2002/apr/21/usa.venezuela
কে এই গুয়াইডো???
ভেনিজুয়েলাতে জুয়ান গুয়াইডো উল্লেখযোগ্য বা সুপরিচিত রাজনীতিবিদ ছিলেন না। ২০১৫ সালে তিনি কেবলমাত্র ২৬ % ভোট পেয়ে সংসদে নির্বাচিত হন। ভেনিজুয়েলার জাতীয় পরিষদের সভাপতি হওয়ার একমাত্র কারন হল বিরোধী দলগুলি তাদের মতপার্থক্যগুলি মোকাবিলা করার জন্য একটা চুক্তিতে উপনীত হয়।সেই চুক্তি অনুসারে একটা নির্দিষ্ট সময় পর পর একেক দল জাতীয় পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করবে।আর এভাবেই গুয়াইডো জাতীয় পরিষদের সভাপতি হয়ে ওঠেন, যখন তিনি/তার দল, Voluntad Popular পার্টির সময় আসে। ২০০৭ সালে মার্কিন সরকার প্রজেক্ত-২০০৭ নামে একটা পলিসি হাতে নেন।যার মাধ্যমে কিছু ছাত্র যারা রাজনীতিতে জড়িত ছিল তাদেরকে স্কলারশিপ দিয়ে আমেরিকায় নিয়ে যায়।পরবর্তীতে প্রজেক্ত-২০০৭ এর অউটপুটদের ভেনিজুয়েলাতে ঠেলে দেওয়া হয় তাদের আধিপত্য বজায়ের স্বার্থে।
Voluntad Popular পার্টি ভেনেজুয়েলার একটি সহিংস বিপ্লবী রাজনৈতিক দল।যার নেতৃত্ব ছিল লিওপাল্ডো লোপেজ।২০০২ সালে লিওভাল্ডো লোপেজে হুগো শেভেজের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান চেষ্টায় জড়িত ছিলেন।ভেনিজুয়েলার জনগনের প্রতিরোধের মুখে সেটা ৪৮ ঘণ্টা টিকে ছিল। Voluntad Popular পার্টির সহিংস কর্মকাণ্ড “Guarimbas”নামে পরিচিত।যে সহিংসতায় ২০১৪ সালে প্রান হারিয়েছিল ৪৩ জন আর ২০১৭ সালে প্রান হারিয়েছিল ১২৫ জন।কিন্তু এই পরিস্থিতিতে ভেনিজুয়েলার আরক্ষা বাহিনী যথেষ্ট প্রজ্ঞার পরিচয় দিয়েছে যাতে সাম্রাজ্যবাদীরা মাদুরো সরকারের বিরুদ্ধে কোন ইস্যু দাঁড় করাতে না পারে।
জাতীয় পরিষদের সভাপতি হিসেবে গুয়াইডো সাংবিধানিক অধিকার দাবী করছেন।কিন্তু ২০১৫ সালে নির্বাচনে অনিয়মের কারনে জাতীয় পরিষদ এখনো সাংবিধানিক আদালতের স্বীকৃতিই পাইনি।যার কারনে জাতীয় পরিষদ কোন আইনও পাশ করতে পারেনি।২০১৫ সালের জাতীয় নির্বাচনের বিরুধী দলগুলু সাংবিধানিক আদালতে আমাজন প্রদেশের নির্বাচনের অনিয়ম নিয়ে মামলা করেন।সেই মামলার রায়ে মাদুরোর দলের দুই সদস্য এবং বিরুধী জোট(গুয়াইডোর দলের তিন সদস্যের নির্বাচন বাতিল করা হয়।আদালতের রায়ের পর মাদুরোর দল রায় মেনে নিয়ে দুই সদস্যের জাতীয় পরিষদের সদস্য পদ বাতিল করলেও গুয়াইডোর দল তাদের তিন সদস্যের সদস্য পদ বাতিল করতে অস্বীকার করে।অবস্থা এমন যে ভেনিজুয়েলার আইন,জনগণ যা বলবে তার কোন কিছুই তাদের কাছে গ্রহনযোগ্য নয়।একমাত্র তারা যেটা বলবে সেটাই গ্রহনযোগ্য।
অবরোধ নাকি মানবিক সহায়তা??
সাম্রাজ্যবাদী শক্তি এবং তাদের যুদ্ধবাজ মিডিয়া গত এক দশক ধরে ভেনিজুয়েলা নিয়ে মায়াকান্না করে যাচ্ছে।তাদের মতে দুর্নীতিবাজ সরকারের কারনে ভেনিজুয়েলার খাবার পায় না,ঔষধ পায়না,বেসিক খাবার পায় না।অথচ তারা একথা বলে না যে গত এক দশক ধরে ভেনিজুয়েলার উপর অবরোধ আরোপ করে রেখেছে।তাদের বৈদেশিক মুদ্রার একাউন্ট ব্লক করে দেওয়া হয়েছে।তাদের আমদানি এক প্রকার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।এত কিছুর পরেও সরকার গরিব মানুষদের খাবার এবং ঔষধের রেশনিং বন্ধ করেনি।তারা তাদের মায়াকান্নায় অর্থনৈতিক সংকটের জন্য ভেনিজুয়েলার সরকারকে দায়ী করলেও ভেনিজুয়েলার অর্থনৈতিক সংকটের জন্য তাদের অবরোধের ফলাফল বিষয়ে একদম চুপ থাকে।
উদাহরণস্বরূপ অভ্যুত্থান চেষ্টার সাথে সাথেই ভেনিজুয়েলার রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত তেল কোম্পানি PDVSA এর বিরুদ্ধে নতুন করে অবরোধ আরোপ করেছে।যার মাধ্যমে PDVSA এর ৭ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ জব্দ করা হয়েছে।এবং আগামী অর্থবছরে প্রায় ২৬ বিলিয়ন ডলার ক্ষতির সম্মুখীন হবে।নিউইয়র্ক টাইমসের ভাষ্য অনুযায়ী মাদুরো পদত্যাগ করে আমেরিকার নির্বাচিত!!গুয়াইডোর হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দিলে এই অবরোধ তুলে নেওয়া হবে।
অবরোধের ফলে সংকটময় করে তুলা ভেনিজুয়েলার জন্য তারা এখন মানবিক সহায়তার স্লোগান দিচ্ছে।এর মাধ্যমে তারা ভেনিজুয়েলার মানুষকে অভ্যুত্থানকে উস্কে করে দেওয়ার চেষ্টা করছে।এবং মার্কিন পুতুলকে গুয়াইডো মানবিক সহায়তাকে স্বাগত জানিয়েছে।কিন্তু কেউ অবরোধ তুলে নেওয়ার কথা বলছে না।এর মাধ্যমে তারা তাদের পুতুল গুয়াইডোকে হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডের হিসেবে প্রমাণ করার চেষ্টা করছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিষেধাজ্ঞা ভেনেজুয়েলার কমপক্ষে ২৩ বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়েছে।অথচ যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্যের পরিমান ২০ মিলিয়ন ডলার।এটা ভেনিজুয়েলার ক্ষতির ০.২% এর কম।এর মানে হল মানবিক সহায়তা একটা প্রচার যেটা দিয়ে ভেনিজুয়েলার মানুষকে মিসগাইড করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
কেন সাম্রাজ্যবাদীরা মাদুরো সরকারকে ঘৃণা করেঃ
২8 শে জানুয়ারী,২০১৯-এ ফক্স নিউজে ইউএস ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাডভাইজার এবং যুদ্ধবাজ জন বোল্টনের একটি সাক্ষাত্কারে তিনি প্রকাশ করেন কেন যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্ট মাদুরোকে উৎখাত করার এতটা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ-
তিনি বলেন যদি "মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তেল কোম্পানিগুলি ভেনেজুয়েলার তেল সেক্টরে বিনিয়োগ করতে পারে এবং তেল উৎপাদন করতে পারে তাহলে এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অর্থনৈতিকভাবে বড় পার্থক্য সৃষ্টি করবে।"
বলিভারিয়ান বিপ্লবের অনেকগুলু সুবিধার একটি ছিল ভেনিজুয়েলার তেল কোম্পানিকে বহুজাতিক কোম্পানিগুলুর হাত থেকে বের করে নিয়ে আসা।এর মাধ্যমে তেল বিক্রির অর্থ দিয়ে সমাজের দরিদ্র অংশের সামাজিক প্রোগ্রাম চালু করা হয়।যাতে ক্ষেপে যায় বিত্তশালীরা।যার কারনে ভেনিজুয়েলার সাধারন মানুষের কাছে বিপ্লব এখনো জনপ্রিয়।
আবারো, জন বোল্টনের কথাগুলি মার্কিন সরকার এবং তাদের সাম্রাজ্যবাদী বন্ধুদের কৌশলগত চিন্তাভাবনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর, মিয়ামির ফ্রিডম টাওয়ারে তিনি একটি বক্তৃতা দেন, যেখানে তিনি নিকারাগুয়া, ভেনিজুয়েলা এবং কিউবার সরকারগুলির রেফারেন্সে "ট্রয়িকা অফ টিরানি" শব্দটি প্রথম ব্যাবহার করেন।তিনি বলেনঃ
তবুও আজ এই গোলার্ধে, আমরা আবারও নিপীড়ন, সমাজতন্ত্র ও সর্বগ্রাসী ধ্বংসাত্মক শক্তির মুখোমুখি। ভেনেজুয়েলা,নিকারাগুয়া এবং কিউবায়, আমরা বিষাক্ত মতাদর্শ এবং আধিপত্য ও দমনের বিপদগুলির মুখোমুখি।
এই মন্তব্যগুলি প্রকাশ করে যে ভেনেজুয়েলা শুধুমাত্র ল্যাটিন আমেরিকায় যুক্তরাষ্ট্রের স্বৈরাচারের জন্য হুমকি নয়, এটি হুমকি কারণ এটি পুঁজিবাদী মতাদর্শকে তথাকথিত সমাজবাদের মাধ্যমে মৃত্যুর ঘোষণা দিয়েছে। রাষ্ট্রপতি মাদুরো এবং বলিভারিয়ান বিপ্লবী প্রক্রিয়ার সরকার ঘোষণা করেছে যে একটি উন্নততর বিশ্বের, জনগণের স্বার্থকে সবার আগে রাখা হয় এবং সেটা কেবল প্রয়োজনীয় নয়, বাস্তবেও সম্ভব।
গত ২০ বছরে বলিভারিয়ান বিপ্লব ভেনিজুয়েলার দরিদ্র ও নিপীড়িত মানুষের জীবনযাপনের মানকে উচ্চতর করেছে। বিপ্লবী সরকার এই পুঁজিবাদ বিরোধী পদক্ষেপের কারনে সাম্রাজ্যবাদী শক্তির মধ্যে ভয় ও উদ্বেগ সৃষ্টি করতে পেরেছে।১৯৯৮ সালে প্রেসিডেন্ট হুগো শ্যাভেজের নির্বাচনের পর এই পুঁজিবাদ বিরোধী পদক্ষেপ ভেনিজুয়েলার বঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে একটি ভাল জীবন এবং সুন্দর ভবিষ্যতের পথ তৈরি করার চেষ্টা করেছে। নিষেধাজ্ঞা, উস্কানি, সহিংসতার উদ্দীপনা, এবং সামরিক হামলার হুমকি দিয়ে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই ঘটনায় বাধা দিচ্ছে।
অতএব, প্রেসিডেন্ট ট্রামের "সামরিক বিকল্প", কখনোই টেবিলের বাইরে নেওয়া হয়নি। এখন মাইক পম্পেও, প্রাক্তন সিআইএ পরিচালক, নিরাপত্তা উপদেষ্টা, জন বোল্টন,নিকারাগুয়াতে গণহত্যার নায়ক,সিনেটে মিথ্যা বলার দায়ে অভিযুক্ত এলিয়ট আব্রামকে দিয়ে ভেনিজুয়েলাকে আরেকটা লিবিয়া বানাতে চাই।কিন্তু এই যাত্রায় সিরিয়ার মত তারা আবারো পরাজিত হবে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ২০১৯ সালে এসে মাদুরো সরকারকে ক্ষমতা থেকে সড়াতে চাই,অর্থনৈতিক দুরবস্থার কথা বলে।কিন্তু ভেনিজুয়েলার দুরবস্থার জন্য দায়ী কে??ভেনিজুয়েলার উপর অবরোধ আরোপ করেছে কে??২০০২ সালেতো ভেনিজুয়েলাতে কোন অর্থনৈতিক সমস্যা ছিল না।তখন কেন হুগু শেভেজকে ক্ষমতা থেকে সড়াতে চেয়েছিল?
১৯৫৩ সালে ইরানের মোহাম্মদ মোসাদ্দেক,১৯৫৪ সালে গুয়াতেমালার জ্যাকবো আরবেঞ্জ এবং ১৯৭১ সালে চিলির অ্যালেনডে।এরা সবাই গনতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত ছিল।কিন্তু আমেরিকা এদের সবাইকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করেছিলো।কারন এরা সবাই নিজের দেশের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়েছিল। আপনি ইউএস বহুজাতিক কর্পোরেশনগুলির স্বার্থে আঘাত করবেন তাহলে আপনি উৎখাত হবেন।
বিভিন্ন দেশে মার্কিন রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ প্রমাণ করে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার নিজস্ব এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য "গণতন্ত্র" শব্দটি ব্যবহার করে। শ্যাভেজ বহুবার নির্বাচিত হন, তার নীতিগুলি বিভিন্ন গণভোটে জনগণের দ্বারা অনুমোদিত হয় কিন্তু তারপরেও তিনি আমেরিকার গণতন্ত্রের দ্বারা নির্বাচিত নন। নিকোলাস মাদুরো জাতিসংঘ এবং বহিরাগত নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের ভেনেজুয়েলার নির্বাচন পর্যবেক্ষনে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন কিন্তু আমেরিকার চাপে তারা সেটা করতে পারেনি।কারন আমেরিকা জানে ভেনিজুয়েলাতে তাদের রাজনৈতিক এলিটদের গ্রহণযোগ্যতা নেই।
যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের প্রচারের অর্থ কী?
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রদূত উইলিয়াম ব্রাউনফিল্ড ২০০৬ সালে এই প্রক্রিয়ার ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য ওয়াশিংটনে একটি তার বার্তা পাঠিয়েছিলেন।সেখানে তিনি পাঁচটি পয়েন্ট উল্লেখ করেছিলেনঃ
১)গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান শক্তিশালীকরন
২)চ্যাভেজের রাজনৈতিক ভিত্তির উপর তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখা
৩)শ্যাভিজমোতে বিভক্তি সৃষ্টি করা
৪)গুরুত্বপূর্ণ মার্কিন ব্যবসা রক্ষা
৫)আন্তর্জাতিকভাবে শ্যাভেজ বিচ্ছিন্ন করা
এটা হল ভেনেজুয়েলার রাজনীতিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভয়ানক হস্তক্ষেপের উদাহরণ। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান শক্তিশালীকরণএদের মধ্যে সর্বাধিক অরওয়েলিয়ান। ইউএসএইড,ন্যাশনাল এন্ডোমেন্ট ফর ডেমোক্র্যাসি এবং সিআইএ- অর্থ এবং পলিসি সাহায্যের মাধ্যমে "নাগরিক সমাজ" একটা গোষ্ঠীর জন্ম দিয়েছেন।যেগুলুর কাজ হল ভেনেজুয়েলার নির্বাচনী প্রক্রিয়ার বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করা।
আরেকটা গ্রুপ সৃষ্টি করা হয় তথাকথিত নির্বাচনী পর্যবেক্ষক গ্রুপের নাম করে।তাদের কাজ হল ভেনিজুয়েলাতে প্রত্যেকটা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা।আরেকটা গ্রুপকে অর্থায়ন করা হয়েছিল রাস্তায় নেমে সহিংসতা সৃষ্টির জন্য। ইউএসএইডের এডয়ার্ডো ফার্নান্দেজ স্বীকার করেছেন যে এসব গোষ্ঠীগুলুকে ছিল তাদের অর্থায়ন করা।যদিও পরে মাদুরো সরকার আইন করে এসব অর্থায়ন বন্ধ করে দিয়েছেন।
সৌভিয়েত রাশিয়ার পতনের পর মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ এবং তার অলিগারকিক এলাইরা ভেবেছিল দুনিয়াতে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী কেউ নেই।কেউ যদি তাদের চ্যালেঞ্জ করতে আসে তাহলে তারা তাঁকে ধ্বংস করে দিবে।তাদের কাছে দুনিয়ার সবচেয়ে বড় সমরশক্তি।আছে মিডিয়া এবং শক্তিশালী কারেন্সি।
মার্কিন সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি বোঝার জন্য,সর্বোত্তম নথি হল ২০০২ সালে প্রণীত ‘’মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা কৌশল’’।এই কৌশলে বলা হয়েছে-
‘’দুনিয়াজুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের রয়েছে অভাবনীয় ও অতুলনীয় শক্তি ও প্রভাব।এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই যুক্তরাষ্ট্রের কাছে রয়েছে দুনিয়ার বৃহৎ এবং সবচেয়ে শক্তিশালী সামরিক বাহিনী।যেটা যেকোন সম্ভাব্য প্রতিপক্ষকে দমন করার জন্য যথেষ্ট’’।
কিন্তু তারা অহংকারের বশে ভুলেই গিয়েছিল দিন বদলে গেছে অনেক আগেই।দুনিয়াতে এখন শুধু তারাই শেষ কথা বলার মালিক নয়।তাদের পরেও কথা বলার কেউ আছে এবং ভেনিজুয়েলাকে নিয়ে সেটাই বলা হচ্ছে।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ৯:৩৩
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জীবনের গল্প

লিখেছেন ঢাকার লোক, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৩৫

মাত্র মাস দুই আগে আমার এক আত্মীয়ের সাথে দেখা আমার এক বোনের বাড়ি। তার স্ত্রী মারা গেছেন তার সপ্তাহ দুই আগে। মক্কায় উমরাহ করতে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমান

লিখেছেন জিনাত নাজিয়া, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:১২

" অভিমান "

তোমার ঠোঁটে বোল শিখেছি
তুমি আমার মা, কেমন করে
ভুলছ আমায় বলতে
পারিনা। এমন করে চলে
গেলে, ফিরে ও এলেনা। হয়তো
তোমার সুখেই কাটছে দিন,
আমায় ভাবছ না।

আমি এখন সাগর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার কিছু ভুল!

লিখেছেন মোঃ খালিদ সাইফুল্লাহ্‌, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮

১। ফ্লাস্কে চা থাকে। চা খেতে টেবিলে চলে গেলাম। কাপে দুধ-চিনি নিয়ে পাশে থাকা ফ্লাস্ক না নিয়ে জগ নিয়ে পানি ঢেলে দিলাম। ভাবছিলাম এখন কি করতে হবে? হুঁশ ফিরে এল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×