somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রেম

২৯ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১১:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


চিত্রার জন্য বাসা থেকে বিয়ের পাত্র দেখা হচ্ছে। মা চায় চিত্রা রাজি হোক বিয়ের জন্য, অন্তত পাত্র দেখুক, কিন্তু সে রাজি না। চিত্রা চাই না বিয়ে করতে, তার মতে বিয়ে জীবনে শুধু কষ্টই দেই । ভার্সিটি পরার সময় একটা ভালো বন্ধু ছিল চিত্রার, বন্ধুত্ব থেকে প্রেম। দুই জনের ধর্মের মিল না থাকায় সেটা শেষ পর্যন্ত টিকে নাই। বিচ্ছেদের বিরহে সে তাই বিয়ের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। চিত্রার এক খালাতো বোন, বয়সে তার ৬বছরের বড় হলেও, দুই জনের ঘনিষ্টতা অনেক। যেকোন বিষয় দুই বোনের নির্দিধায় আলাপ আলোচনা হয়, কখনো অভিমানও চলে পরস্পরের।
বাসার সবাই তাই বোনকে দিয়ে চিত্রাকে ছেলে দেখার কথা বললো। আর বোনের কথায় জীবনে প্রথম বিয়ের জন্য ছেলে সাথে দেখা করতে রাজি হলো। কথা হলো এই ছেলে দেখতে সমস্যা নেই, ভালো না লাগলে না করা যাবে। আই ডি বি ভবনের অপর পাশে তখন সবে বিমান নিয়ে পার্ক চালু হয়েছে। পরিবার একত্রিত হলো ছেলে মেয়ে সহ প্রথম আলাপ আগাতে। প্রথম দেখায় ছেলের মা চিত্রাকে বেশ পছন্দ করে তাই সে বলেই দেই,সামনের অগ্রহারনে প্রথম তারিখে বিয়ে। মজার ব্যাপার চিত্রা না করার আগে তার বাবা তারিখ পিছানোর কথা বলে, কেননা মাস্টার্সের ৩সেমিস্টার বাকি। বাবা চাইলেন মেয়ে পড়া শেষ করে বিয়ে বসুক ততো দিন কথা আগানো থাক। কিন্তু পাত্র পক্ষের অনেক তাড়া । এই নিয়ে দুই বাবা মার কথা চলতে থাকে, এরি মধ্যে ছেলে মেয়েকে আলাদা কথা বলার সুযোগ দেওয়া হলো।
তেমন কিছূ ভালো কথা হলো না দুইজনের। বরং চিত্রা কি কাজ করে সেটা নিয়ে আলাপ হলো। কিছুক্ষণ যেতেই সবাই আজকের মত ইতি টানলো।
এদিকে বাসায় ফিরতে ফিরতে, সব মায়ের মত চিত্রার মা বলতে লাগলো, ছেলে তার বেশ ভালো লেগেছে, একটাই ছেলে, মা বাবা ছাড়া আর কোন ঝামেলা নাই তাই এখানেই হ্যা বলতে। মায়ের কথা শুনে মেয়ে বিরক্ত হয়ে বললো সময় নিয়ে ভেবে বলবো এখন আপাততো আমরা এটা নিয়ে কথা না বলি। বাসায় ফিরে এক চিন্তা মাথায় ভন ভন করছে কি করবে সে। পাঁচ দিন গেলো, তখন সে বোনের সাথে পরামর্শ করে ভাবলো আর একবার দেখা করি ছেলের সাথে। এভাবে দেখা করার কথা বাসায় বলায় প্রথমে মা বাবা ঘ্যান ঘ্যান করতে লাগলো। অবশেষে রাজি হলো। মা বাবা চাচ্ছিলো না বোনকে নিয়ে সে যাক, কেননা চিত্রার ধর্মের সাথে বোনের ধর্মের মিল নেই, যদি বিয়েতে এটা কোন প্রভাব ফেলে। কিন্তু চিত্রার কথা সব জেনে কেও তাকে পছন্দ করলে সে আগাবে, এভাবে লুকাচুরি খেলার কিছু নাই। অতপর দেখা হয় দুই জনের। প্রথমে বোনের সাথে আসলেও পরিচয় হবার পর তারা দুই জন বসে এক সাথে কথার বলার জন্য। বোন কাছে এক মার্কেটের দোকানে থাকে, ইতিমধ্যে এক অপরিচিত যুবকের আগমন। এসে সে পরিচয় দিল যে, ছেলের বন্ধু। চিত্রা একটু অপ্রস্তুত, এভাবে না বলে কাউকে সে আনবে ভাবে নি। তার বোন আসবে ছেলা জানতো কিন্তু বন্ধুর ব্যাপারটা সে একদম জানতো না। সবচে বিরক্ত লেগেছে বন্ধু এসে ছেলেটাকে বলে তুই যা খাবার অর্ডার দে আমি এখানে আছি, এর পর মনে হলো চিত্রার র‍্যাগিং দিতে আসছে ছেলেটা। আরো বলে আমি যা তোমার কাছে আমার বন্ধুও একি, তুমি বলো তোমার ব্যাপারে। কিছু অবান্তর প্রশ্ন শুনে কথার উত্তর পাচ্ছিলো না চিত্রা। কথার মাঝে বোনকে এস এম এস দিলো আসো কোন এক ছেলে আসছে আমাকে কি সব প্রশ্ন করতে। বোন ১০মিনিটের মধ্যে হাজির, বোনকে দেখে দুই জনের গলা যেন শুকাই গেলো। এরপর বোন পাত্রকে কিছু উল্টা প্রশ্ন করলো যার উত্তর সে নিজে ঠিক মতো দিতে পারলো না। এভাবে যে উদ্দেশ্যে আসলে দেখা, তার উল্টা ঘটনা ঘটে কাহানি অন্য দিকে মোড় নিলো।

চিত্রা বাসায় ফিরে এই বিয়েতে অনম্মতি জানালো।. অপরদিকে ছেলের বাবা মা তাও কিছুদিন যোগাযোগ করলো অগ্রগতি নিয়ে। মেয়ের বাসায় তখনও সম্মতি দেই নি।
এর আরো এক সপ্তাহ যেতে চিত্রার ছোটবেলার স্কুলের ঘনিষ্ঠ বান্ধবী মিম হাঠাত দেখা করতে চাইলো। বেশ কিছুদিন দুই জনের যোগাযোগ হচ্ছিলো না তাই বান্ধবির ডাকে চিত্রা উত্তিজিত হয়ে দেখা করলো। অনেকদিন পর দেখা হওয়ায় গল্প মেতে উঠেছে। এর মধ্যে চিত্রা তার ছেলে দেখার অভিজ্ঞতা বান্ধবীর সাথে শেয়ার করলো। বেশ কিছুক্ষণ যেতে মিমের ফোনে একটা কল এলো। কলটা রাখতেই মিম বলে আমার এক কলিগ আসছে রে, চিত্রা শুনে চলে যেতে চাইলে মিম তাকে বসতে বলে কলিগের সাথে দেখা করার জন্য। অতপর এক সুন্দর যুবকের আবির্ভাব হলো। পরিচয় করিয়ে দিতেই গল্প জুড়ে বসলাম আমরা তিন জন। কথা বলার কায়দায় চিত্রা যেন প্রেমে পরে গেলো যুবকের। যদিও সে বুঝতে দিলো না, খানিকক্ষণ যেতেই সে বাসায় ফিরার জন্য দাড়িয়ে পরলো। মিম আর তার কলিগ বলার পরো সে সেদিনের মতো বিদায় নিলো, কেননা বাসায় কাজিন এসেছে হঠাত তাই তাকে ফিরতে হবে।
এদিকে বাসায় ফিরতে মা বাবা আবার শেষ বারের মতো তাকে জিজ্ঞাস করলো আমরা কি তাহলে আমাদের দেখা ছেলের সাথে সামনে কথা আগবো? জবাবে চিত্রা বলে উঠলো, আমার আজ একটা ছেলার সাথে দেখা হয়েছে, আমার ভালো লেগেছে তাকে। আমাকে আর একটু সময় দেও শীঘ্র জানাবো তোমাদের। মেয়ের মুখে এই উত্তর মা বাবাকে চমক দিলো সাথে ভয়। ওদিকে চিত্রা ভাবছে, বলে দিলাম যে আমি তো জানি না ছেলেটা আমাকে পছন্দ করবে কিনা, কি হবে তাহলে সামনে...।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১১:২৭
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×