somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলাদেশ-ভারত সাইবার-যুদ্ধ!

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১২ সকাল ১০:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশ ও ভারতের কম্পিউটার হ্যাকাররা সাইবার-জগতে ওয়েবসাইট বেদখল ও অকার্যকর করার প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। বিষয়টিকে এখন বলা হচ্ছে সাইবার-যুদ্ধ।
হ্যাকারদের ফেসবুক গ্রুপ, বিভিন্ন বাংলা ব্লগসাইটের একাধিক ব্লগে বাংলাদেশি হ্যাকারদের আক্রমণের হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করা হচ্ছে। বাংলাদেশি হ্যাকার পরিচয় দানকারীরা বলছেন, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সীমান্তে হত্যকাণ্ড ও অত্যাচার বন্ধের দাবিতে বাংলাদেশি হ্যাকাররা এই সাইবার-যুদ্ধ শুরু করেছেন। টিপাইমুখ বাঁধসহ অন্যান্য বিষয়ের কথাও তাঁরা বলছেন।
৯ ফেব্রুয়ারি ভিডিও আদান-প্রদানের ওয়েবসাইট ইউটিউবে ভারত সরকারের প্রতি একটি ভিডিও বার্তা প্রকাশ করে ‘বিডি ব্ল্যাকহ্যাট হ্যাকারস’। ভিডিওতে মুখোশ পরা একজন হ্যাকারকে যান্ত্রিক (রোবটিক) গলায় কথা বলতে দেখা যায়। তাঁর বক্তব্য হলো, ‘হ্যালো বাংলাদেশের নাগরিকরা, আমরা বাংলাদেশ ব্ল্যাকহ্যাট হ্যাকারস। এখন সময় আমাদের চোখ খুলবার। বিএসএফ এক হাজারের বেশি বাংলাদেশি নাগরিককে হত্যা করেছে, তাদের গুলিতে আহত হয়েছে আরও ৯৮৭ বাংলাদেশি। অপহূত হয়েছে হাজারো মানুষ। এটি মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ। তারা অবিচার করছে। সংকটময় এ মুহূর্তে বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে আমাদের কিছু দায়িত্ববোধ রয়েছে, আমরা চাই ভারত সরকার নিরপরাধ বাংলাদেশিদের হত্যা করা বন্ধ করুক। নতুবা আমরা ভারতীয়দের বিরুদ্ধে সাইবার-যুদ্ধ শুরু করব। এটি চলতেই থাকবে।’
তথ্যমতে, গত ১৫ দিনে ভারতের বিভিন্ন ওয়েবসাইটে বাংলাদেশি হ্যাকাররা টুকটাক আক্রমণ চালালেও শুক্রবার রাত থেকে ব্যাপকভাবে আক্রমণ চলে ভারতীয় বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। পাল্টা আক্রমণ হিসেবে ভারতীয় হ্যাকাররাও বাংলাদেশের সরকারি-বেসরকারি বেশ কিছু সাইট অচল করে দেন। তবে গতকাল রোববার দেখা যায় বাংলাদেশের বেশির ভাগ আক্রান্ত সাইট ঠিকঠাক করা হয়েছে।
অনলাইনের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল রাত পর্যন্ত ভারতীয় প্রায় ১০ হাজার ওয়েবসাইটে হামলা চালানো হয়েছে বলে হ্যাকাররা দাবি করেছেন। এ ছাড়া হ্যাকাররা গতকাল বিএসএফের বিকল্প ওয়েবসাইট (bsf.nic.in) দখল করে সেটির প্রোগ্রামিং সংকেত (সোর্সকোড) উন্মুক্ত করে দেন। অপরদিকে ভারতীয় হ্যাকারদের দাবি অনুযায়ী বাংলাদেশের ৩০০ সাইটে আক্রমণ করা হয়েছে।
বাংলাদেশের ‘বাংলাদেশ সাইবার আর্মি’, ‘বিডি ব্ল্যাকহ্যাট হ্যাকারস’, ‘এক্সপায়ার সাইবার আর্মি’—এই তিনটি হ্যাকার দল এই সাইবার-যুদ্ধে নেতৃত্ব দিচ্ছে। কয়েকজন হ্যাকার এই প্রতিবেদককে জানান, ‘বাংলাদেশি হ্যাকারদের সমর্থন দিয়েছে আন্তর্জাতিক হ্যাকার দল ‘অ্যানোনিমাস’। এ ছাড়া পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া ও সৌদি আরবের শক্তিশালী হ্যাকাররা বাংলাদেশি হ্যাকারদের সমর্থন দিয়ে গতকাল থেকে ভারতীয় সাইটে আক্রমণ করছেন।
অপরদিকে ভারতের ‘ইন্ডিশেল’ হ্যাকার দল বাংলাদেশি সাইটগুলোতে আক্রমণে নেতৃত্ব দিচ্ছে। ইন্ডিশেল অনেকগুলো ভারতীয় ওয়েবসাইট থেকে বাংলাদেশি হ্যাকারদের হটিয়ে দিয়ে রোববার রাত পর্যন্ত সময় দিয়েছে। এই সময়ের মধ্যে ভারতের সাইটগুলোতে আক্রমণ বন্ধ না করলে বাংলাদেশের ওয়েবসাইটগুলো আক্ষরিক অর্থেই গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে বলে ইন্ডিশেল হুমকি দিয়েছে।
প্রথম আলোয় পাঠানো ব্ল্যাকহ্যাট হ্যাকারস দলের একটি ই-মেইলে বলা হয়েছে, এই আক্রমণ চলতেই থাকবে। ওই ই-মেইলে বাংলাদেশের কোনো সাইট আক্রান্ত হলে বা আক্রমণ ঠেকাতে ওয়েবমাস্টারদের কী করতে হবে, তার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিসচিব রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাইবার-যুদ্ধের মতো কোনো ঘটনার কথা আমাদের জানা নেই। আমাদের সরকারি পাঁচটি সাইট গত শনিবার ঘণ্টা দেড়েকের জন্য বন্ধ ছিল, তবে তা হ্যাকিং কি না, নিশ্চিত নই।’ সচিব আরও বলেন, ‘সরকারি ওয়েবসাইটগুলো সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় রক্ষণাবেক্ষণ করে। আমরা আইসিটি মন্ত্রণালয় থেকে অনেক সময় বিশেষজ্ঞ পরামর্শ দিয়ে থাকি।’
তথ্যপ্রযুক্তির নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা বিডি সার্টের (কম্পিউটার ইমারজেন্সি রেসপন্স টিম) চেয়ারম্যান সুমন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘এসব হ্যাকিংয়ের ঘটনা মূলত তরুণ প্রজন্মের প্রোগ্রামাররা ঘটিয়ে থাকেন। তবে যেহেতু পাল্টাপাল্টি আক্রমণ হচ্ছে, তাই আমাদের দিক থেকে সতর্ক থাকতে হবে। আর এই হ্যাকিংকে রাজনীতির সঙ্গে জড়ানো ঠিক হবে না। হ্যাকারদের অন্য কোনো উপায়ে দমন না করে সচেতন করতে হবে। তাঁদের বোঝাতে হবে, এসব করে কোনো ইতিবাচক ফল আসে না।’
ছদ্মনামধারী বাংলাদেশি কয়েকজন হ্যাকার প্রথম আলোকে জানান, এখন বিচ্ছিন্নভাবে ভারতীয় ওয়েবসাইটে আক্রমণ চালানো হচ্ছে। সারা বিশ্বে এখন প্রায় এক হাজার হ্যাকার এতে সক্রিয় আছেন। তিনি হুমকি দিয়ে বলেন, ‘১০ হাজার ওয়েবসাইটে আক্রমণ কিছুই না। আমাদের আসল আক্রমণ শুরুই হয়নি।’
আরও কয়েকজন হ্যাকার জানিয়েছেন, বিএসএফ সীমান্তে হত্যা বন্ধ করছে না। বারবার বলেও কোনো কাজ হচ্ছে না। তাই এই আক্রমণ। ভারতের সাইট হ্যাক করলে দুনিয়াজুড়ে বাংলাদেশের দাবিদাওয়া ছড়িয়ে যাবে। তাই আক্রমণ চলছে। ভারত সরকার দাবি মেনে নিলে আক্রমণ বন্ধ হবে। (প্রথমআলো)
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×