সকাল সকাল প্রতিষ্ঠিত এক অনলাইন পত্রিকার নিউজ নজরে আসলো। তারা ময়ননসিংহসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন বাসা বাড়ির মেঝে দুপুরের দিকে ভিজে স্যাঁতস্যাঁতে হয়ে যাওয়া নিয়ে রিপোর্ট করেছে। কিন্তু এর জন্য বিশেষজ্ঞ কারও মতামত প্রকাশ করেনি। এটা নাকি বড় ধরনের বিপর্যয়ের লক্ষন। কথাটা আংশিক সত্য। কারন এটা জলবায়ু পরিবর্তনের একটা ইফেক্ট বলা যায়। কিন্তু তারা যে অর্থে বলেছে সেটা ঠিক নয়। আবার অনেকে বলেছে এটা নাকি বড় ধরনের ভূমিকম্পের পুর্বাভাস। ফেইসবুক স্ট্যাটাসেও অনেকের উৎকন্ঠা দেখলাম। যাই হোক, মুল কথায় আসি। এটা একটা সাধারন প্রাকৃতিক ঘটনা, এতে ভয়ের কিছু নেই। বাতাসের উষ্ণতা বেড়ে গেলে এমনটা হতে পারে। কারন আমরা জানি মাটি বা কংক্রিট অনেক বেশি সময় তাপ ধরে রাখতে পারে। যার কারনে প্রায় দুপুর পর্যন্ত মেঝে ঠান্ডাই থাকে। আর গরম কালে বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমান বেশি থাকে। যার জন্য এই উষ্ণ বাতাস যখন শীতল মেঝের সংস্পর্শে আসে তখন ঘনিভূত হয়। যার কারনে মেঝে ভিজে স্যাঁতস্যাঁতে হয়ে যায়। একে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এর ভাষায় Concrete Sweating বলে।
আর এই জলীয় বাষ্প পানিতে রুপান্তরিত হতে কিছু তাপ বাতাসে ছেড়ে দেয়। যার জন্য এমন ভ্যাপসা গরম লাগে।
এবার আসি কেন এমন হচ্ছে। এর কারন হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলাফল। পরিবেশের ভারসাম্য দিন দিন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বায়ুমন্ডলের তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য দিন দিন সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে যাচ্ছে (প্রতিবছর প্রায় ৩.৬ মি. মি. করে)। যার দরুন পৃথিবী পৃষ্ঠের তাপমাত্রা কমে যাচ্ছে। মানে পৃথিবী পৃষ্ঠের তাপমাত্রা কমে যাচ্ছে আর বায়ুমন্ডলের তাপমাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। তাই পৃথিবী দিন দিন ভারসাম্যহীন হয়ে যাচ্ছে। যার কারনে এই মেঝে ঘেমে যাওয়া, অকালে বন্যা সহ নানান সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এর সমাধানের বেশির ভাগই নির্ভর করছে বিশ্বনেতাদের হাতে। প্রয়োজন কার্বন নিঃসরন কমানো সহ পরিবেশ সংক্রান্ত বিষয় গুলোতে সবার ঐক্যমতে পৌছে এক যোগে কাজ করা। আর আমাদেরও করণীয় হলো বেশি বেশি গাছ লাগানো, সবাইকে পরিবেশ দুষনরোধে সবাইকে সচেতন করা।