somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার শৈশব এবং জাদুর শহর। (তৃতীয় কিস্তি)

০৬ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ১০:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এ শহরে প্রথম এসে উঠেছিলাম এম পি হোস্টেলে, শেরে বাংলা নগর । (যদিও লিখা উচিৎ শের ই বাংলা, কিন্তু আমরা শেরে বাংলা নগরেই অভ্যস্ত তাই এভাবেই লিখছি)। তখনো অনেককেই সেকেন্ড ক্যাপিটাল বলতে শুনেছি। সে সময়কার স্মৃতি আজ খুব বেশি জমা নেই, শুধু মনে আছে এরোপ্লেন উড়ে গেলে দৌড়ে বারান্দায় আসতাম, বড় বোনরা একটু অপছন্দ করতো, একী কান্ড এরোপ্লেন দেখলেই এমন করতে হয়, যতসব মফস্বলই কান্ডকারখানা, কিন্তু এরোপ্লেনের শব্দ হলেই দৌড়ে টানা বারান্দাটায় আমার চলে আসা চাই চাই। নীল আকাশটার বুক চিরে সোনালী ডানায় উড়ে যেত সে হাওয়াই জাহাজ, আমি আবাক দেখতাম, বড় বড় চোখ করে।

খুব বেশি দিন সেখানে ছিলাম না, খুব অল্পসময়ের মাঝেই আমার বাসা পেয়েগিয়েছিলাম, এখন যেখানে গণভবন ঠিক তার পিছনেই, সারি সারি লাল লাল দোতলা বাসা, বাসার নম্বর ছিল এস টি এম সি ফাইভ, লুই আই কানের ডিজাইন, সে হিশেবে আমি ভাগ্যবান, কানের ডিজাইন এর সাথে পরিচয় হয়ে গেল সে শৈশবেই। কোন বাউন্ডারি ওয়াল ছিল না, পোর্টিকো তে নামলেই বিশাল দরজা, খুললেই ডবল হাইট স্পেইসে প্রশস্ত সিঁড়ি দোতলায় উঠে গেছে, বামদিকে ড্রইংরুম আর ডানদিকে বিশাল ডাইনিং হল, সে দিক দিয়ে গারাজ আর সারভেন্ট কোয়াটারে যাওয়ার দরজা, এন্ট্রি থেকে সিঁড়ি তে না উঠে সোজা গেলে লন, সবুজ দূর্বা ঘাসে ছাওয়া, এক রত্তিও মাটি দেখা যেত না ! সিঁড়ি দিয়ে উঠলেই গাড়ীবারান্দার দিকে মুখ করে ডানে বাবার ঘর, আমি রাত্তিরে সেখানেই ঘুমাতাম, বামে বড় একটা ঘর, বোনদের সিঁড়ির পাশ দিয়ে প্যাসেজ গিয়ে একটা টানা বারান্দা, বারান্দা থেকে বাবার ঘরে ঢোকার আরেকটা দরজা, বাম পাশে আরও ঘর কি স্টোররুম কি কিছু ছিল আজ আর মনে নেই, বারান্দা থেকে লনটা দেখা যেত। তবে সবচেয়ে অবাক করে ছিল আমায় মামুলি এক “কলিং বেল” ছোট্ট কালো গোল্লামত, লালচে কমলা বাটন, চাপ দিলে বিকট “ক্রং” একটা শব্দ হয়, কেউ এসে দরজা খুলে দেয়। এ জিনিশ ইহ জন্মে দেখিনি, আমাদের কিশোরগঞ্জের বাসায় এ জিনিশ তো ছিল না! কেউ এলে টিনের গেইটে কড়া নাড়ত। বাহ! কি দারুন জিনিশ, টিপ্লেই “ক্রং”! আমি আর আমার ইমিডিয়েট বড় বোন ব্যাক ইয়ার্ড দিয়ে এসে ক্রং একটা চাপ দিয়েই দেয়ালের আড়ালে লুকিয়ে যেতাম, সে এক মজার খেলা! আরও একটা খেলা খেলতাম, “পান্তা বুড়ি পান্তা বুড়ি”, টিভিতে তখন দেখাত পান্তা বুড়ি। আজকের তারানা হালিম তখন সেখানে অভিনয় করতেন মনে আছে, সে খেলার কি যে নিয়ম কি বা ফলাফল আজ আর নেই মনে, তবে মনে আছে বেশিরভাগ সময় জেন্ডার ডেস্ক্রিমিনেশনের কারনে আমাকেই চোরটা সাজতে হত। আর ছিল লুকোচুরি খেলা বড়রা বের হয়ে গেলেই, শুরু হত প্রলয়ঙ্করী সে খেলা।

এ বাসাতেই আমার প্রথম অক্ষর পরিচয় হয়, আমার মেজ ভাই এর হাতে। বেশ মনে আছে একটা ফুটবল আর একটা বই নিয়ে এসেছিল ও, একটা করে অক্ষর শিখতাম আর ফুটবলে লাথি দিতাম, সে ছিল চ্যাম্পিয়ন খেলোয়াড়, বাসা ভর্তি মেডাল, আর পানি খাওয়ার জাগ মানেই তার খেলার পুরস্কার, এপেন্ডিসাইটিসের অপারেশন না হলে ব্রাদার্সে খেলার প্রায় সব ঠিক হয়ে গিয়েছিলো, হয়তো ও ভেবেছিলো ওর মতই আমি হব। খেলা ধুলা বিস্তর করেছি, তবে দাবা ছাড়া কোনটাতে আর চ্যাম্পিয়ন হয়ে উঠিনি, গলায় কখন মেডাল পরিনি, তাই আমার ছেলে যখন প্রথম মেডাল পেয়েছিল ওকে নিয়ে গেছিলাম, ওর জেঠুর কাছে, আমি পারিনি আমার ছেলে জেঠুকে খুশী করেছে ঠিকি। বাবাও খুব খেলতেন, ঢাকা কলেজ আর মেডিক্যাল কলেজের ফুটবল টিমে ছিলেন, টেনিস খেলতেন, আর বাসায় আমাদের সাথে তাস কি দাবা খেলতেন, এক হাতে বই হিচকক কি সমারসেট মম কি দাবার বই- একাই দাবা খেলছেন আর আমদের সাথে খেলছেন রাশান স্ক্রু কি স্পেইড ট্রাম্প, সে এক দৃশ্য বটে এমন মাল্টি টাস্কিং আর দেখিনি খুব বড়!

আমরা খুব সকালে হাটতে বেরুতাম, সোহরওয়ারদি হসপিটাল তখনো কমপ্লিট হয়নি ওদিকেই বেশি যেতাম, খোলা খোলা মাঠ ছিল হাটতে হাঁটতে কখনো কৃষি কলেজের কাছেও চলে যেতাম কোথায় যেন বড় একটা পুকুর ছিল,জায়গাটা খুব বেশি মনে নেই আর আজ। এ পাড়ায় সব হোমরা চোমরা লোকজনরাই থাকতেন, শান্ত নিরিবিলি একটা জায়গা, বিকালে ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা সাইকেল চালাত মজা করে, পুরো পাড়া জুড়ে, সন্ধ্যায় আজানের পর সব শুনশান, গাড়ীবারান্দার হলদে আলো অলস পরে থাকে, গোল গোল গারডেন লাইটের ডোম, নির্বাক চেয়ে থাকে ব্যাঙের ছাতার মত। আমারও রাজ্যের ঘুম চোখে জড়িয়ে আসতো। কয়েলের গন্ধ আর বাবার শুনতে থাকা নাজাকাত আলির তানে আরও তলিয়ে যেতাম গভীর ঘুমে।

তখনো স্কুল শুরু হয়নি আমার সবে অক্ষর পরিচয় হয়েছে, কিন্তু তাতে কি বাঘ মার্কা সিকি দিয়ে যে একটা আইস্ক্রিম কেনা যায় সে হিসেব শিখে গেছি,দুপুরে অধির আগ্রহে অপেক্ষা করতাম কখন শুনব আইস্ক্রিময়ালার টুন টুন। সনি আইস্ক্রিম,অই সিকি দিয়ে একটা অরেঞ্জ ললি পাওয়া যেত। এমনই একদিন একখানা সিকি কি আধুলি নিয়ে অপেক্ষা করছি কখন আসবে আইস্ক্রিউওয়ালা এরই ফাঁকে পয়সাটা মুখে নিয়ে চুষছি, হঠাৎ সুরুত করে পয়সা খানা চলে গেল, বাবা সে কি ভয়! বরই কি তেতুলের বীচি খেলেই গাছ হয়, মাথা ফুঁড়ে বের হয়, আমার না জানি কি হয়! সাহস করে কাউকে বলতেও পারিনা সইতেও পারিনা, কি যে উৎকণ্ঠা! তবে কবে যে হজম হয়ে গেছিলো টের পাইনি। আর আজকাল কি বলব আমার এক ভাগ্নের মেয়ে, এক টাকার কয়েন খেয়ে ফেলায় কি কাণ্ড! স্কয়ার হস্পিটালে দৌড়া দৌড়ী, নগত হাজার চল্লিশের ধাক্কা! বলি, একটা টাকার জন্য একটু বেশি খরচ হয়ে গেল না! ভাগ্নে পাংসু মুখে হাসে! আর আমদের যুগে সিকি আধুলি খাওয়া কোন বেপারই ছিল না। হাত পা ছিলে একসা দুর্বা ঘাস দু হাতে ডলে লাগিয়ে দাও কি একটু গাঁদা পাতা চটকে লাগিয়ে দাও। কিসের কি! বাবা বড় ভাইকে ডাকতে বলেছেন, দৌড়ে তিনতলায় উঠলাম নামার পথে দেড়তলা থেকে পা ফস্কে গড়াতে গড়াতে একতলা, মুভির মত, বাবার কাছে গেলাম কাঁপতে কাঁপতে, মুখে টু শব্দ নেই। বাবা বললেন কিরে কাঁপছিস কেন না তাড়াতাড়ি নামলাম তাই। ওসব ছোট খাটো বিষয় পাত্তাই দিতাম না! অত সময় কোথায়? বাবা খুবই খানেওয়ালা লোক ছিলেন, সেবার ময়মনসিং না কোথা থেকে এক কেরোসিন টিন ভরা শিং মাছ এসেছে,জীয়ল মাছ, খলবল খলবল করছে, না আমি ক’দিন আগেই জানলাম লবণ দিলে নাকি শিং মাছ মরে যায়, এটাই সায়েন্স, ওমন সুযোগ আর কই পাই? ঢালও ঢালও লবণ ঢালও! কি বিস্ময় সব মাছ মরে শেষ! দুপুরে খাওয়ার সময় মালেক ভাই এর ডাক পরল, বাবা ঠিক বুঝে গেছেন, মাছ তাজা ছিল না, মালেক ভাই দিরুক্তি না করে আসামি আমায় হাজির করল!, আমার সরল স্বীকারোক্তি আমি একটা এক্সপেরিমেন্ট করেছি! বাবা অবশ্যি আর কিছু বলেন নি, কে জানে কি ভাবেছিলেন, এ ছেলে বড় হলে নিশ্চয়ই ... কে জানে সে কথা আর হয়নি জানা!

ছেলে বড় হয়ে কিছুই হয়নি, সবার কামিয়াব কাবিল হলে চলবে দুনিয়া? দুনিয়া চলবে দুনিয়ার নিয়মে আর বাংলা চলবে দুনিয়ার বাইরের নিয়মে। ঢাকা সহ সমগ্র বাংলাদেশ পাঁচ টনই আজ বাণিজ্যিক কার্জক্রম , বেলা দেড়টা থেকে না, দিন মান, অহোরাত। যার এতটুকুন জায়গা খালি সেখানেই কর একটা দোকান, যেন একটি বাড়ি একটি দোকান, শেষ নেই এর। কি দোকান? আলু, পটল, আনাজ পাতি, নয়ত আর এম সি, নয়ত সিডি! চলেন তো পাঠক আজ দুটো ভালো বই কিনি আপনার বাড়ির আস পাস থেকে, অই তো বই এর দোকান, বেশ! গাইড বই, ইংলিশ মিডিয়ামের গাদা গুচ্ছের বই, এর ফাঁকে ফোঁকরে, দুই চারটে হুমায়ুন কি আনিসুল হক, আরে আরও আছেতো, নির্লজ্জ ছায়া কপি, এক সময় রেইল ষ্টেশনে কিছু বই পেতাম, শংকর কি নিমাই কি আশুতোষ পাতলা ফেলে ফেলে কাগজে চড়া কালির প্রচ্ছদ তারই এক প্রতিচ্ছবি যেন আজ সব খানে এমন কি জ্ঞানকোষও আজকাল ওসব বিক্রি করছে। কে কিনবে বই, মুজতবা আলী নমস্য লোক কবে বলে গেছেন বই সেও একখানা আছে ঘরে! বই পড়বার সময় কই? আর পাইরেটেড হউক আর যা হউক কিছুই আসে যায় না। মুরি মুড়কির এক দর! দোকান আর বাসা, বাসা আর অফিস, অফিস আর বাজার, ছুটির দিনে লোকারণ্য খোলা জায়গা গুলি, দম ফেলার জায়গা নেই, ধুলায় অন্ধকার। খাঁচা থেকে বের হয়ে কোন খাঁচায় ঢুকবে লোকগুলি বাচ্চা কাচ্চা সমেত? চিরিয়াখানা, ও বাবা! ডাকাত ওরা! প্রথম খাঁচার পূর্বসূরিরাও আমাদের নিয়ে হাসবে। পাশেই বোটানিক্যাল গার্ডেন, খুব সুন্দর জায়গা, ছায়াময়, সুন্দর শীতল দীঘি, বসবার জো নেই এটা্র খেথে হবে ওটা খেতে হবে না খেলেও বিপদ খেলেও বিপদ, আক্কেল সালামী দিতে দিতে পালাতে হবে। কোথায় একটু খোলা জায়গা পাই? ছেলে পুলেদের নিয়ে একটু বেশ একটা পিকনিক করবার মত! নাহ নেই! স্মার্ট প্রেমিক যুগলদের বিনিমাগনা সিনেমার ভয়ে লেকের ধারে যাওয়ার উপায় নেই! একটা শহরের নির্দিষ্ট পরিমাণ গ্রিন থাকতে হয়, বাঁচার জন্যই, অ্যামাজনকে বলে পৃথিবীর ফুস ফুস, আর এই শহরের ফুস ফুস, কি অবাক কোথাও নেই যা ছিল পেশি বহুল লোকেদের টাগ অফ ওয়ারে ছিন্ন ভিন্ন কিংবা অদ্ভুত আরবান ডিজাইনারদের গিনিপিগ হয়ে মুখ থুবড়ে পরে আছে।

লিখাটি শুরু করেছিলাম যে কারনে, কোন একদিন হাতির ঝিল দিয়ে গুলশানের দিকে যাচ্ছিলাম, নিকেতনের অবধারিত জ্যামে, ভয়ংকর নৌকোর স্কাল্পচারটার পাশে আটকে, সুন্দর শেষ বিকেল, আকাশে কনে দেখা লালচে রোদ, খুব ভাল্লাগছিল, হঠাৎ দেখি একটা ফুট ওভার ব্রিজ পেরিয়ে গেছে ব্যস্ত সড়ক, বেশ চওড়া সিঁড়ি আর খুব সুন্দর গ্রাফিক্স লাইনের এক র‍্যাম্প, বেশ, ফিজিক্যালি চ্যালেঞ্জদের কথা মাথায় রেখেছেন ডিজাইনার, ভাবতেই ভালো লাগে, দেখতে দেখতে চোখ নেমে এল নিচে যাকে বলে ডাউন টু দ্য আর্থ, চেয়ে দেখি র‍্যাম্পের শুরু ফুটপাতে কিন্তু ফুটপাত রাস্তা থেকে দেড় হাত উঁচু, হুইল চেয়ারে এসে একটা লোক র‍্যাম্পের গোঁড়ায় পৌঁছুবে কিভাবে? মেজাজ গেল খিচড়ে, কত্ত কত্ত টাকা খরচ হয়েছে এখানে , এ বিলাসিতার মানে কি? একই পয়েন্টে আপনি পউছাবেন একবার উপর দিয়ে, একবার নিচ দিয়ে তাই কি হয় নাকি? কার পকেট ভারি হল কেজানে? সেখান থেকেই অলস মাথায় এল কি সুন্দর একটা শহর ছিল ঢাকা! কলকাতা, ব্যাংকক আশির দশকেও লজ্জাবনত ছিল এই তিলোত্তমা নগর এর কাছে। হায় একটু যদি কেউ ভাবতো! আমি অবাক হই এক ট্যাক্সি ড্রাইভার ট্রাফিক লুপের নক্সা করে আর বড় বড় কাগজে তা ছাপে, কেনও এমন হবে কেউ কি এ যন্ত্রণার দাওয়াই দেয়ার মত, আরবান স্কেলে কাজ করবার মত স্মার্ট নেই। তাহলে অত গুলি এঞ্জিনিয়ারিং স্কুল বন্ধ করে দেই, আমরা সবাই বুয়েটে কমার্স পড়ি। বাণিজ্যই সব! এ বানিজ্য বাতাসে সব ভেসে যাক, ভেসে গেছে অবিশ্যি এরই মাঝে। শহরের কানেক্টিভিটি লাগবে, কে বলবে, আপনি কমলাপুর কি মহাখালি নামলেন, তারপর? সবাই ঝাঁপিয়ে পর চলমান বাসে কেন এগুলি ট্রাফিক এক্সচেঞ্জ হাব হতে পারে না? পৃথিবীর প্রতিটি সিটিতে এমনই হয়, এমনটি হতে হয়!

কে শুনবে কার কথা... এখানে হাত দিও না, হাত দিও না গভীর অন্ধকারে...এ এক অদ্ভুত আঁধার! কেউ দেখবার নেই, বলবার নেই, বুঝবার নেই, নেই বুঝাবারও কেউ। আমার সে খোলা হাওয়ার শৈশব আমি কিভাবে দেই আমার অবুঝ বালকদের। ওরা তো দেখেনি কাকের বাসা পরে গেলে ক্যামন উতলা হয় সে জননী কাক! সেই ভাঙ্গা বাসায় হারানো ক্যাসেট কি হাতঘরি পাওয়ার বিস্ময় কি আর দিতে পারে এক্সবক্স আজ! ছোঁ মেরে নিয়ে গেছে হাতের বিস্কুট সাহসী দাঁড়কাক। কসমস কি ডালিয়া ফুলে হলদে কালো প্রজাপতি দেখতে ক্যামন? বৃষ্টির পর গন্ধ ক্যামন সবুজ ঘাসের? ওরা পড়ে “কোন দেশেতে তরুলতা সকল দেশের চাইতে কোমল?” কিসের তরুলতা! আসে পাশে আতি পাতি করে খুঁজেও ওসব লতা পাতা দূরে থাক মুড়ানোর মত নটে শাঁকটিও খুঁজে পাব না। যত দূরে দূরে যাবে বন্ধু, একি যন্ত্রণা পাবে,একি ব্যাথা পুড়াবে তোমায়। তুমি বলবে “ এই খানে একটা অর্জুন গাছ ছিলনা?” উত্তর শুনবে “হ আসিলো কাইট্টা ফালাইসি”, কাট, ফেলো আর বানাও! ঘর বাড়ি দোকান বাজার। আলু বেচো, ছোলা বেচো আর পয়সা গুন! যে পয়সায় ভাবি আমরা কিনে নিতে পারি গোটা বিশ্ব! হায় কি বিস্ময়! নিউক্লিয়ার বোমা বুঝো, ভালোবাসা বুঝো না, বেঁচে থাকা বুঝো না!

যেদিন সব হবে বৃক্ষ নিপাত, নিঃশস্য হা হা কার চারিধারে, ছায়ারাও হারাবে পথ, কি হবে এই কাগুজে নোটে, কি হবে ধাতব মুদ্রায়! সুরম্য নগর, প্রশস্ত রাজপথ, চলমান জীবন থমকে দাঁড়াবে, মুখ থুবড়ে থাকবে পরে! এ আমার প্রতি তোমার অবহেলা! হে শহর! প্রানের শহর আমার! জাদুর শহর আমার!! এ লেখা তোমার তেষ্টার জল নয় জানি, নয় সঞ্জীবনই সুধা, অতটুকু বাড়বে না প্রবাহ প্রানের তোমার ধমনীতে, এ লিখা শুধুই আমার ভালোবাসা। মূল্যহীন এ প্রেম আমার খড় খুটোর মত উড়ে যাবে জানি! তবু আশায় বাঁধি বুক একদিন আসিবে বিস্ময়! আসবেই জানি!!
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ১০:৪৮
৪টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=হিংসা যে পুষো মনে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৫৮


হাদী হাদী করে সবাই- ভালোবাসে হাদীরে,
হিংসায় পুড়ো - কোন গাধা গাধিরে,
জ্বলে পুড়ে ছাই হও, বল হাদী কেডা রে,
হাদী ছিল যোদ্ধা, সাহসী বেডা রে।

কত কও বদনাম, হাদী নাকি জঙ্গি,
ভেংচিয়ে রাগ মুখে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

গণমাধ্যম আক্রমণ: হাটে হাঁড়ি ভেঙে দিলেন নূরুল কবীর ও নাহিদ ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:০৫


জুলাই গণঅভ্যুত্থানের রক্তস্নাত পথ পেরিয়ে আমরা যে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম, সাম্প্রতিক মব ভায়োলেন্স এবং গণমাধ্যমের ওপর আক্রমণ সেই স্বপ্নকে এক গভীর সংকটের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। নিউ এজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

রিকশাওয়ালাদের দেশে রাজনীতি

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৪৯

রিকশাওয়ালাদের দেশে রাজনীতি

সবাই যখন ওসমান হাদিকে নিয়ে রিকশাওয়ালাদের মহাকাব্য শেয়ার করছে, তখন ভাবলাম—আমার অভিজ্ঞতাটাও দলিল হিসেবে রেখে যাই। ভবিষ্যতে কেউ যদি জানতে চায়, এই দেশটা কীভাবে চলে—তখন কাজে লাগবে।

রিকশায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিএনপিকেই নির্ধারণ করতে হবে তারা কোন পথে হাটবে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:০৫




অতি সাম্প্রতিক সময়ে তারেক রহমানের বক্তব্য ও বিএনপির অন্যান্য নেতাদের বক্তব্যের মধ্যে ইদানীং আওয়ামীসুরের অনুরণন পরিলক্ষিত হচ্ছে। বিএনপি এখন জামাতের মধ্যে ৭১ এর অপকর্ম খুঁজে পাচ্ছে! বিএনপি যখন জোট... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় আগ্রাসনবিরোধী বিপ্লবীর মৃত্যু নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৭



শরিফ ওসমান হাদি। তার হাদির অবশ্য মৃত্যুভয় ছিল না। তিনি বিভিন্ন সভা-সমাবেশ, আলোচনা ও সাক্ষাৎকারে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি অনেকবার তার অস্বাভাবিক মৃত্যুর কথা বলেছেন। আওয়ামী ফ্যাসিবাদ ও ভারতবিরোধী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×