মহান আল্লাহ পাক উনার সৃষ্ট জীবের মধ্যে সবচেয়ে নিকৃষ্ট হচ্ছে কাফিরেরা- এ কথা মুসলমান মাত্রই সকলকে মনে প্রাণে বিশ্বাস করতে হবে। এ কথা যে মুসলমান বিশ্বাস করবে না, সে মুসলমান থাকতে পারবে না। কেননা এ কথা মুবারক স্বয়ং খালিক্ব, মালিক, রব মহান আল্লাহ পাক উনার। আর মুসলমানকে মহান আল্লাহ পাক উনার কালাম বা উনার নাযিলকৃত কিতাবসমূহের উপর বিশ্বাস স্থাপন করেই মুসলমান হতে হয়। মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার পবিত্র কালাম কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন, “নিশ্চয়ই সমস্ত প্রাণীর মাঝে মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট কাফিরেরাই সবচেয়ে নিকৃষ্ট, যারা ঈমান আনেনি।” (পবিত্র সূরা আনফাল শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৫)
উল্লেখ্য, কাফির শব্দটি আম বা ব্যাপক। অর্থাৎ মুসলমান উনাদের বিপরীত জাতির নাম হচ্ছে কাফির। ইহুদী, নাছারা, হিন্দু, বৌদ্ধ, মজুসী, মুশরিক, জৈন, পারসিক, শিখ ইত্যাদি যত বাতিল ধর্মের লোক রয়েছে সকলেই কাফিরের অন্তর্ভুক্ত। এছাড়া আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনাদের অনুসরণকারীগণ ব্যতীত মুসলমান পরিচয় দাবিদার ৭২টি বাতিল ফিরক্বার অনুসারীরাও তাদের কুফরী আক্বীদার কারণে কাফিরের অন্তর্ভুক্ত।
কাফিরদের পরিণতি সম্পর্কে স্বয়ং খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন, “নিশ্চয়ই যারা কাফির এবং কুফরী অবস্থায় মারা গেছে, তারা যদি তাদের কুফরীর কাফফারা বাবদ যমীন পরিপূর্ণ স্বর্ণ মহান আল্লাহ পাক উনাকে দেয় (শাস্তি থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য) তবুও তা গ্রহণ করা হবে না। তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি এবং তাদের জন্য কোনো সাহায্যকারীও থাকবে না। অর্থাৎ কাফিরদের প্রতি মহান আল্লাহ পাক তিনি এত অসন্তুষ্ট যে, এরা মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে কোনো রকম সাহায্য তো পাবেই না; বরং মহান আল্লাহ পাক উনার লা’নত এবং উনার কঠিন আযাবে-গযবে অনন্তকালের জন্য গ্রেফতার থাকবে।
বদ সংগ বা তাছীরের একটি উদাহরণ
বদ বা খারাপ তাছীর অনেক প্রকারের। খারাপ তাছীর থেকে বেঁচে থাকা প্রত্যেক মুসলমানের অপরিহার্য কতর্ব্য। কেননা খারাপ তাছীরের কারণে মুসলমানের আমল-আখলাকই শুধু নষ্ট হয় না, পবিত্র ঈমান ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার থেকেও খারিজ হয়ে যায়।
মহান আল্লাহ পাক উনার নবী ও রসূল হযরত নূহ আলাইহিস সালাম উনার এক ছেলে ছিলো কেনান। সে কাফিরদের সাথে মেলামেশা, চলাফেরা, সম্পর্ক রাখার কারণে নুবুওওয়াতি খান্দান তো হারিয়েছেই এমনকি সে ঈমানহারা হয়ে কাফির অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছে। নাঊযুবিল্লাহ!
এখন কথা হচ্ছে, মহান আল্লাহ পাক উনার মনোনীত হযরত নবী ও রসূল আলাইহিস সালাম উনার ছেলে কাফিরদের সাথে মেলামেশা, চলাফেরা ও সম্পর্ক রাখার কারণে যদি ঈমানহারা হয়ে কাফির অবস্থায় মৃত্যু মুখে পতিত হতে হয়, তাহলে যারা কোনো হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের ছেলে-সন্তানের অন্তর্ভুক্ত নয়, তারা যদি কাফির-মুশরিকদের সাথে সম্পর্ক রাখে, মুহব্বত রাখে, চলাফেরা করে, মেলামেশা করে, পরামর্শ গ্রহণ করে, তাদের কৃষ্টি-কালচার, বেশভুষা গ্রহণ করে, তাদের অনুষ্ঠানে যোগ দান করে তাহলে তাদের পবিত্র ঈমান কতটুকু বহাল থাকবে সেটা অবশ্যই অবশ্যই চিন্তা-ফিকিরের বিষয়।
কাজেই মুসলমানদের উচিত কাফিরদের সঙ্গ ও সম্পর্ক ত্যাগ করা। অন্যথায় কাফিরদের পরিণতির সম্মুখীন তাদেরও হতে হবে।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ১:৫৪