প্রথম পর্ব
দ্বিতীয় পর্ব
৩য় পর্ব ১৭।
নীল ঠিক তো করলো মেয়েটাকে খুজে বের করা দরকার। কিন্তু খুজবে কোথায়? শহর তো আর ছোট না। আগে তো জানতে হবে কথায় খুজবে।
প্রথমে ঠিক করলো মেয়েদের কলেজ তো শহরে দুইটাই। ঠিক আছে, ২/১ দিন ওগুলার সামনে দাড়াই। দেখি দেখা যায় কি না।
কিন্তু কাজটা যত সহজ ভেবেছিলো, তত সহজ আসলে না। হাজার হাজার মেয়ে। কয়জনের দিকে চোখ রাখবে। আর ইউনিফর্ম পরা অবস্তায় সবাইকেই এক রকম লাগে।
নাহ, এইভাবে হবে না। আচ্ছা , এক কাজ করি। মেয়েটিকে প্রথম দেখেছিলাম জিলা স্কুলের মোড়ে। নিশ্চ্য় সেখানে কোনো স্যারের বাসা থেকে বের হয়েছিলো।ওখানেই মনে হয় পাওয়া যাবে।
পরবর্তী কয়েকদিন নীলের রুটিন হলো ডেইলী সেই টাইম এ গিয়ে ওই মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকে যেখানে প্রথম দেখেছিলো।
তেমনি একদিন দাঁড়িয়ে আছে, হঠাত পেছন থেকে শুনে কে যেনো ডাকছে।
“আরে নীল ভাই, আপনি এখানে?”
“আরে অনীতা, তুমি এখানে কি করো?”
“আমি তো এখানে স্যারের বাসায় ডেইলী পড়তে আসি। কিন্তু আপনি এখানে কি করছেন? কারো জন্য অপেক্ষা করছেন?”
“আরে না, ইয়ে মানে হ্যা, আমার এক ফ্রেন্ড আসার কথা।”
“গার্লফ্রেন্ড?”
“আরে না।”
“গার্লফ্রেন্ড না হলে চলেন আইস ক্রীম খাই”
“ঠিক আছে চলো।”
আইস ক্রীম খেতে খেতে হঠাত অনীতার প্রশ্নঃ”আচ্ছা, আপনার গার্ল ফ্রেন্ড নাই?”
“নাহ”
“কেনো নাই?”
“আরে এটা কোনো প্রশ্ন হলো, কেনো নাই? এটা তো আর জোর করে হবার জিনিষ না। এম্নিতেই হয়”
“তা আপনার কেমন মেয়ে পছন্দ?”
“জানি না। আসলে আমি এটা কখনো চিন্তা করি নাই। ”
“চিন্তা করে আমাকে জানাবেন।”
“তুমি জেনে কি করবা?”
“কাজ আছে। পরে বলবো”।
“ঠিক আছে, চলো বাসার দিকে যাওয়া যাক”।
১৮।
“কিরে তোর কি কথা ছিলো? ছুটিতে এসে আমাকে হেল্প করবি? কিন্তু তোকে তো আজকাল পাওয়াই যাচ্ছেনা। গোপনে প্রেম শুরু করলি নাকি?” হাসান বেশ বিরক্ত হয়ে বললো।
নীলঃ নারে একটা কাজে একটু ব্যস্ত ছিলাম। শূন, তোর রাজকন্যা কোথাও কোচিং করে?
হাসানঃ হ্যা, করে ।
নীলঃ ঠিক আছে, কালকে ওইখানে যাবো। তারপর তুই সরাস্ রি কথা বলবি।
হাসানঃ কি বলবো?
নীলঃ বলবি ওর বিয়েতে তোকে দাওয়াত দিতে। শালা, তুই যে ওকে পছন্দ করিস সেই কথা বলবি।
হাসানঃ যদি সীন ক্রিয়েট করে?
নীলঃ থাক, আমি শুধু শুধু সময় নষ্ট করতেছি। তোকে দিয়ে এইসব হবে না।
হাসানঃ আরে রাগ করিস কেন? আরে আমি তো ওকে দেখলেই নার্ভাস হয়ে যাই।
নীলঃ তাহলে বিয়ের পর কি করবি?
হাসানঃ সেটা তোকে বলে দিতে হবে না।
নীলঃ চল, সোহেলের বাসায় যাই।দেখি উনি কি করতেছে।
১৯।
পরদিন হাসান, নীল, সোহেম গেলো সেই মেয়ের কোচিং এ। দাড়িয়ে আছে অনেক খন ধরে।
নীলঃ কিরে কখন আসবে?
হাসানঃ কি জানি ডেইলি তো এই সময় আসে।
নীলঃ কই তাহলে।
হাসানঃ দাড়া আসবে।
নীলঃ আর কত খন? ওদের ব্যাচের নাম্বার বা নাম জানোস?
হাসানঃ হ্যা জানি।
নীলঃ তাহলে যা, ভেতর থেকে জেনে আয়।
হাসান ভিতরে যেতেই সোহেল বল্লো “হাসানের কাহিনি কিন্তু আসলেই খারাপ, ওর পড়াশোনা কিচ্ছু হচ্ছে না।”
নীলঃ হুম। তোর কি মনে হয়, এই মেয়ে রাজি হবে?
সোহেলঃ দোস্ত, কঠিন হবে। এই মেয়ে কে শহরের অনেকে অফার করছে। সবাইকে মানা করছে।
নীলঃ কারন কি? ওর কি কারো সাথে কিছু আছে?
সোহেলঃ এখন পর্যন্ত কারো সাথে দেখা যায়নাই।
নীলঃ তাহলে প্রব্লেম কি?
সোহেলঃ কি জানি।
এই টাইমে হাসান ফিরে এলো। নারে আজকে ওদের ক্লাস টা ক্যান্সেল করা হইছে।
নীলঃ ধুর, এতোটা সময় নষ্ট।ঠিক আছে তোরা যা আমি ঘণ্টাখানেক পরে আসতেছি।
হাসানঃ কই যাস?
নীলঃ আছে, একটা কাজ। যা তোরা।
নীলের কাজ তো এখন এক্টাই। সেই মোড়ে গিয়ে দাড়ানো।কিন্তু আজকে মোড়ে যেতেই দেখে অনীতা দাঁড়িয়ে আছে।
অনীতাঃ কি আজকেও এখানে?
নীলঃ আরে না। এদিক দিয়ে যাচ্ছিলাম এক ফ্রেন্ডের বাসায়।
অনীতাঃ ওকে, আপনাকে একটা কথা বলার জন্য এখানে দারিয়েছিলাম। মনে হচ্ছিলো আপনি আসবেন।
নীল; বাহ, তুমি দেখি ট্যালিপ্যাথিও জানো।
অনীতাঃ জানি অনেক কিছুই। আস্তে আস্তে টের পাবেন। বিকাল এ আপনার একটু সময় হবে?
নীলঃ কেনো বলো তো?
অনীতাঃ একটু বই মেলাতে যাবো। আমার দুই টা বই কিনতে হবে । একা যেতে পারবো না। চিন্তা করবেন না। বেশি টাইম নষ্ট করবো না।
নীলঃ উমম, ঠিক আছে। ঠিক ৪ টায় আমি তোমাদের বাসার সামনে থাকবো।
অনীতাঃ ঠিক আছে। গেলাম।
২০।
নীল বেশ বুঝতে পারছে বই কিনা ছিলো একটা বাহানা। কারন মেলায় এসেছে প্রায় দুই ঘন্টা। অনীতা একটি বইও কিনে নাই। খালি ঘুরছে। ওর ও ভালই লাগছে ঘুরতে। আচ্ছা, সে কি অনীতাকে পছন্দ করতে শুরু করেছে? কি জানি। কিন্তু সেই মেয়েটার চেহারাটা ভুলতে পারে না কেনো?
অনীতাঃ চলেন তো ওইদিকে। ফুচকা খাবো।
নীলঃ হ্যা, তোমাদের তো আবার যেকোনো জায়গায় ফুচকা না খেলে চলেই না।
অনীতাঃ জি, চলেন এইবার।
ফুচকার দোকানে ঢুকতে গিয়ে একটা মেয়ের সাথে প্রায় ধাক্কা খেলো নীল।সরি সরি। আমি আসলে ইচ্ছা করে করিনি।
“ইটস ওকে।”। মেয়েটি ওকে প্রায় না দেখে এই কথা বলে বের হয়ে গেলো।
কিন্তু, নীল তো দেখে কি করবে বুঝতে পারতেছে না। সে মেয়েটি। কতো জায়গায় খুজলো কিন্তু এইভাবে দেখা হবে ভাবে নাই।
কয়েক মূহুর্ত নীল কি করবে বুঝতে পারতেছিলো না।
হঠাত সম্বিত ফিরে ফেলো।
“অনীতা, একটু বসো। আমি আসছি।“
অণিতাঃ কই যান?
নীলঃ এক ফ্রেন্ড কে দেখলাম। একটা কথা বলে আসি।
অনীতাঃ তাড়াতাড়ি আসবেন। একা একা ফুচকা খেতে আমার ভালো লাগে না।
নীল ওর কথা শেষ হবার আগেই মেয়েটির পেছনে ছুটলো।
(চলবে…)