somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জাবি ছাত্রীর আত্মহত্যা ফুটতে ফুটতে অকালেই ঝরে গেল ফুল

১৪ ই এপ্রিল, ২০১০ বিকাল ৫:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


একটি ফুলের গাছ। গাছের গোড়ায় এতদিনের যতেœর জলসিঞ্চন। নিবিড় পরিচর্যা। পরিবারের কতদিনের স্বপ্ন সাধ। গাছে ফুল ফুটবে, সৌরভ ছড়াবে। ছেয়ে যাবে চারদিক, মুগ্ধ হবে সবাই। কিন্তু না, পূর্ণ প্রস্ফুটিত হবার আগেই ফুটতে ফুটতে অকালেই ঝরে গেল ফুলটি। সে ফুল আর কেউ নয়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ৩৭তম ব্যাচের মেধাবী ছাত্রী ফারহা নাজ রুহি। গত সোমবার রাতে তার কথিত স্বামী বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ৩২তম ব্যাচের ছাত্র সাখাওয়াত হোসেনের সাথে অভিমান করে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। এ ঘটনায় সাখাওয়াত হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে সাভার থানা পুলিশ। একই থানায় নিহতের বাবা বাদি হয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেছে।
জানা গেছে, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র সাখাওয়াত হোসেন জিমির সাথে ফারহা-নাজ রুহির প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তারা নিজেদেরকে স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে সাভারের ব্যাংক কলোনীর ই-২ নম্বর বাসার নিচাতালার একটি রূম ভাড়া নেয়। ওই রুমে সাখাওয়াত হোসেন নিয়মিত থাকত এবং রুহি মাঝে মধ্যে এসে থাকত বলে জানা গেছে।
বিভিন্ন সুত্রে জানা যায়, গত সোমবার রাত ৯টার দিকে ক্যাম্পাসে থাকা অবস্থায় রুহি ও জিমির মধ্যে মনমালিন্য হয়। এতে রুহি রাগ করে সাভারের ভাড়া ভাসায় চলে আসে। এর কিছুসময় পরই জিমি বাসায় যেয়ে বাসার দরজা বন্ধ দেখে। অনেক ডাকা-ডাকির পরও দরজা না খুললে জিমি তার ক্যাম্পাসের বন্ধু জাকিরের কাছে থাকা রুমের কেচিগেটের চাবি নিয়ে আসতে বলে। পরে রাত সারে ১০টার দিকে দরজা খুলে রুহির মৃতদেহ ফ্যানের সাথে ঝুলতে দেখে। পরে ঘটনাটি ওই বাড়ির মালিক এ কে মে বজলুর রহমান জানতে পেরে পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে সাভার থানা পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। এসময় রুহির কথিত স্বামী জিমিকে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার রুহির পিতা বাদি হয়ে একটি হত্যায় প্ররোচিত মামলা করছে।
এ বিষয়ে ওই বাড়ির মালিক এ কে এম বজলুর রহমান বলেন, জানুয়ারি মাসে রুহি ও জিমি নিজেদের স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে বাসা ভাড়া নেয়। জিমি প্রতিদিন বাসায় থাকলেও রুহি মাঝে মধ্যে এসে থাকত। তবে প্রায়ই তাদের মধ্যে ঝগড়া বাধত।
অন্যদিকে মৃত্যুর সংবাদ শুনে গতকাল মঙ্গলবার সকালে রুহির সহপাঠিরা থানায় দেখতে যায় রুহিকে। এসময় সহপাঠিদের কান্নায় ভারি হয়ে ওঠে সমস্ত এলাকা। হত্যার জন্য রুহির সহপাঠিরা দায়ি করছে সাখাওয়াত হোসেন জিমিকে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তার একাধিক সহপাঠি জানান, ২০০৮ সালের শেষের দিকে রুহি ও জিমির মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিন্তু অল্প কিছুদিনের মধ্যেই রুহি বুঝতে পারে জিমি চরিত্র খারাপ। সে এর আগেও বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে গোপনে বিয়ে করে। পরে তাকে বাদ দিয়ে রুহিকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে। রুহি এসব জানতে পেরে সম্পর্ক না রাখার কথা জানালে জিমির কাছে থাকা রুহি ও জিমের কিছু ঘনিষ্ঠ ছবি দেখিয়ে বলে সম্পর্ক ছিন্ন করতে চাইলে এই ছবিগুলো তোমার মা বাবা কে দেখাবো। রুহি তখন ভয়ে তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে না। তার সহপাঠিরা আরো জানায়, রুহি প্রায় সবসময় মন খারাপ করে থাকত। কান্না কাটিও করত।
এদিকে রুহির পিতা অধ্যাপক আবদুল কাদের অভিযোগ করে বলেন, ওই ছেলে দীর্ঘদিন ধরে আমার মেয়েকে ফোনে বিরক্ত করত। ওর যন্ত্রনায় আমি রুহির মোবাইল নম্বর পর্যন্ত বদল করি তার পরও নতুন নম্বর জোগাড় করে বিরক্ত করত। তিনি এ মৃত্যুর জন্য সাখাওয়াত হোসেন জিমিকে দায়ি করেন।
সাভার থানার এস আই হুমায়ুন কবীর বলেন, প্রাথমিক ভাবে আলামত বিশ্লেষন করে একে আত্যহত্যা মনে হচ্ছে। তবে ময়না তদন্তের রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত নিশ্চিত ভাবে কিছু বলা যাবে না। তবে এ ঘটনায় রুহির পিতা বাদি হয়ে একটি হত্যায় প্ররোচিত মামলা করেছেন। মামলার নম্বর ৪১ বলে তিনি জানান। সাভার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ কে এম নাসিরউলাহ বলেন, লাশ ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় সাখাওয়াত হোসেন জিমি নামে একজন কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আটক করা হয়েছে। এদিকে রুহির মৃত্যুর ঘটনায় অর্থনীতি বিভাগের সভাপতি আনু মুহাম্মদ বলেন, এসকল ঘটনায় সাধারনত মেয়েকেই দায়ী করা হয়। কিন্তু এটা উচিত না। এই হত্যার জন্য যে দায়ী তারি বিচার হওয়া উচিত। তবে অভিযুক্ত সাখাওয়াত হেসেন বলেন, আমরা কোরআন শরীফ ছুয়ে বিয়ে করেছি। তিনি তার বিরুদ্ধে আনা রুহির বাবার সব অভিযোগ অস্বীকার করেন।
উলেখ্য রুহির গ্রামের বাড়ি নোয়াখালির চর জোগলি সুবর্ণচর গ্রামে। তার পিতা ফেনি সরকারি কলেজের দর্শনের শিক। মাতা আখতারী বেগম, কবি নজরুল কলেজের অর্থনীতি বিভাগের সভাপতি। দুই ভাই বোনের মধ্যে রুহি বড়।


৮টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

লিখেছেন অপলক , ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯



গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।

কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কম্বলটা যেনো উষ্ণ হায়

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭


এখন কবিতার সময় কঠিন মুহূর্ত-
এতো কবিতা এসে ছুঁয়ে যায় যায় ভাব
তবু কবির অনুরাগ বড়- কঠিন চোখ;
কলম খাতাতে আলিঙ্গন শোকাহত-
জল শূন্য উঠন বরাবর স্মৃতির রাস্তায়
বাঁধ ভেঙ্গে হেসে ওঠে, আলোকিত সূর্য;
অথচ শীতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×