somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সৈয়দ হাসানুজ্জামান (নয়ন)
জীবন চলার পথে অনেক কিছু দেখেছি জেনেছি । অনেক দিন থেকেই লেখার চেষ্টা করছি কিন্তু সাহস পাই না । অবশেষে সিদ্ধান্ত নিলাম ভাল, খারাপ যাই হোক লিখব । ব্লগের সকলের সহযোগিতা চাই ।n

সবার উপরে মানুষ

০৯ ই মে, ২০১৬ দুপুর ১:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমরা মানূষ, মানব জাতী । বড় বিচিত্র এই মানব প্রজাতী । যে যত অভিনয় করতে পারে সে তত ভাল মানুষ । অথচ পৃথিবীর সবচেয়ে ঘৃণ্য, সবচেয়ে নীচ কাজগুলো এরাই করে।
পৃথিবীর মানুষের চরিত্র বেশ দারুণ! যুগে যুগে যাঁরাই মানবতার কথা বলেছে, এদেরকে এক করার চেষ্টা করেছে তাদেরকে এরা নাস্তিক বলেছে, বলেছে কাফের। পৃথিবিতে শুধুমাত্র নিজের ক্ষমতা রক্ষা করতে গিয়েই সৃষ্টি হয়েছে বিশ হাজারেরও বেশি আলাদা আলাদা ধর্ম ও আলাদা আলাদা সৃষ্টিকর্তা! হ্যাঁ, ব্যক্তিগত স্বার্থ আর ক্ষমতার জোরেই এগুলোর সৃষ্টি হয়েছে। অন্তত ইতিহাস তাই-ই বলে। এটাই অবিশ্বাস্য যে এই মানুষগুলোর মতে যে সৃষ্টিকর্তা এত শক্তিমান, সে তাকিয়ে তাকিয়ে এই রঙ্গ কিভাবে সহ্য করছে! তার নামে মানুষ মানুষকে খুন করছে। তার নামে মানুষ তার মতই আরেক রক্ত-মাংসের মানুষকেই তার সাথে জাতের দোহাই দিয়ে বসতে দিচ্ছে না, স্পর্শ করতে দিচ্ছে না। আর পরম করুণাময়(!) সেটি বসে বসে দেখছেন!
যখন বলি যে, এত অন্যায় অবিচার সৃষ্টিকর্তা কিভাবে সহ্য করছেন? তখন উত্তর আসে, “অন্যায় না থাকলে ন্যায় এর মর্ম বোঝা যায় না।” বাহ! তাহলে মোটা মোটা ধর্মগ্রন্থগুলোতে কেন বলা হয়েছে যে “সদা সত্য কথা বলিবে। মিথ্যা বলিবে না। মিথ্যা বলা মহাপাপ?” এই যুক্তি অনুসারে মিথ্যা না বলাই তো মহাপাপ! কারণ, মিথ্যা বলা ছেড়ে দিলে সত্যের মর্ম বোঝা যাবেনা! কিন্তু এই কথা বলতে গেলে এখন পালটা যুক্তি না পাওয়া গেলেও মাথার পিছনে চাপাতির কোপ পাওয়া যাবে!

মানুষ বড্ড অলস। নিজের সৃষ্টির রহস্য খুঁজতে তার পরিশ্রম করতে বড়ই অনীহা। তার চেয়ে সহজ পন্থায় নিজের ও এই মহাবিশ্বের সৃষ্টির কারণ হিসেবে সে যুক্তিহীন ও অজ্ঞতায় পরিপূর্ণ কথাবার্তাতেই বিশ্বাসী। আর এই অজ্ঞতার রাস্তাকে কাজে লাগিয়েই সে হয়ে ওঠে মস্ত বড় ধার্মিক। সাথে সাথে ফুলে ওঠে তার পকেটও! আমাদের জামায়াতে ইসলামীর কথা বলি, এরা কোমল মনা কিশেরদের ইসলামের কথা বলে, ভাল কথা বলে পথভ্রষ্ট করছে, অথচ এরা নিষ্পাপ । যারা এই কিশোরদের পথভ্রষ্ট করছে তারা কি করছে, অধ্যক্ষ গোলাম আজম, তিনি মাদ্রাসা শিক্ষার কথা বলেন, অথচ উনার সন্তানদের একজনকেও তিনি মাদ্রাসা শিক্ষায় শিক্ষীত করেননি । আমার জানামতে বিনপির আমলে সারদেশে জামায়াতে ইসলামীর লোকেরা অনেক হাসপাতাল এবং মাল্টিপারপাস কোম্পাণী খুলেছে, সারাদেশের সাধারণ মানুষকে মুনাফার লোভ দেখিয়ে তাদের টাকা হাতিয়ে নিয়ে নিজেদের পকেট ভারী করেছে । কিন্ত তারা মানুষকে ঠকানোর জন্য তাদের ধর্মীয় লেবাস মাথার টুপি, মুখের দাড়ি, আল্লাহ্ রাসুলের কথা বলেছে । মানুষ ধর্ম ভীরু তাই তারা এই পদ্ধতি ব্যবহার করেছে । কেন এই ভন্ডামী ?
এইসব লোকজন যুক্তিবাদী ও বাস্তববাদী মানুষদের বলে, “বিশ্বাসে মিলায় বস্তু, তর্কে বহুদুর।” ঠিক আছে, আপনি একটু পরে চোখ বন্ধ করুন। এবার মনে মনে বিশ্বাস করুন । যে দুই মিনিটের মধ্যে আপনার সামনে একটি দশ টাকার নোট চলে আসবে। কিন্তু পৃথিবী প্রলয় হয়ে গেলেও তা আসার কথা না! এবং আসবেও না! এটিই বাস্তব। কঠিন বাস্তব। হে ধার্মিকগণ, বিশ্বাসে সামান্য দশ টাকাই মিলছে না! আর কোথায় আপনারা এই বিশ্বাসের মাধ্যমেই মহাবিশ্বের সৃষ্টি রহস্য খুঁজছেন! আপনাদের এই ভন্ডামির জন্যেই আজ গ্যালিলিওর মত বিজ্ঞানীকে প্রাণ দিতে হয়েছে।

সারা পৃথিবী জুড়ে কোণঠাসা মানুষগুলো বুঝতে চায়না যে তারা যে জিনিসের ওপর অগাধ বিশ্বাস নিয়ে বেঁচে আছে সেটি কিছু ব্যবসায়ীর সৃষ্টি। আরে বাবা, এই কাগজ আর লিপিই সৃষ্টি হয়েছে মাত্র কয়েক হাজার বছর আগে। তার আগে নিশ্চয়ই কোনো ধর্মগ্রন্থ ছিল না। অর্থাৎ, এখন পৃথিবীতে বর্তমানে রাজত্ব করা এই নামীদামী ধর্মমতেরও কোনো অস্তিত্ব ছিল না! কিন্তু মানুষ তো সেই দুই মিলিয়ন বছর ধরে এই পৃথিবীতে রয়েছে। আরও মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই ধর্মগ্রন্থ গুলোতে যত কাহিনী এবং নিয়মনীতি বর্ণনা করা হয়েছে তা আমাদের চৌদ্দগুষ্টির জন্মের আগের কাহিনী। এ যদি সর্বসময়ের সব মানুষের ধর্মগ্রন্থই হয় তাহলে একুশ শতকের মানুষ কী দোষ করল?



আজ ধর্মের ফ্যাশনধারী মানুষের সংখ্যাই বেশি। শ্রীকৃষ্ণের ছবি বিকৃত করলে, মহানবী(স) কে নিয়ে কটুক্তি করলে এদের পরাণ জ্বলে যায়। দা-চাপাতি নিয়ে সেই বেজন্মা(!)কে কুপিয়ে শেষ করতে পারলেই যেন ধর্ম রক্ষা হয়। ওহে ধর্মপুরের যুধিষ্ঠিরের দল, আমি নই, তোদের ইতিহাসই বলে মহানবী(স) কে পাথরের আঘাতে মৃত্যুশয্যায় নিয়ে গেছিল পৌত্তলিকেরা। তিনি কি তাদের চাপাতি দিয়ে কুপিয়েছিলেন? আমি তো জানি, তিনি তার সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করেছিলেন,”হে প্রভু, এদের জ্ঞান দাও।“ তিনি চাপাতি নিয়ে ওই পৌত্তলিকদের কোপাতে যাননি। মহানবী(স) কে নিয়ে এই মৌলবাদি গুলো স্রেফ ব্যবসা করে। তাঁর আদর্শ কেউই মানে না। দাঁড়ি রেখে, নামাজ পড়ে বাহ্যিকভাবে তাকে অনুকরণ করে আর ঘরে গিয়ে বউকে পেটায়, রাস্তায় মেয়েদের উত্ত্যক্ত করলে বাধাও দিতে আসেনা। এদের মতে পৃথিবীতে কোনো মুক্তচিন্তার (প্রকৃতপক্ষে এদের ব্যবসাবিরোধী) মানুষ থাকতে পারবেনা। এরা যদি এতই ধর্মপ্রাণ হয় তাহলে চাপাতি দিয়ে কোপানো এদের কোন ধর্মগ্রন্থে লেখা রয়েছে? সবচেয়ে দুঃখের বিষয় সাধারণ মানুষও সস্তায় পুণ্য বা সোয়াব অর্জনের জন্য এদেরকে অকুন্ঠ সমর্থন দেয়। এদের কাছে বোরখা না পরে মেয়েদের বাইরে বেরোনো ভয়ঙ্কর অপরাধ। কিন্তু যে নষ্ট, বিকৃত মানসিকতার জানোয়ারগুলো মেয়েদের ইজ্জত নিয়ে টানাটানি করে তাদের বিরুদ্ধে এদের কন্ঠ সোচ্চার হতে শোনা যায়নি। ঘরে শৌচাগার নেই, ঘরের বউকে রাতের বেলা বাইরে যেতে হয় বাধ্য হয়ে। তাতে জাত যায় না, জাত যায় নিকটাত্মীয়ের সামনে মুখের ঘোমটা সরে গেলে। ঘরের কাজের মুসলমান কাজের মহিলা থালাবাসন একবার ধুয়ে গেলে তা পুনরায় নিজে একবার ধুয়ে নেয় ধর্মপ্রাণ হিন্দু গৃহিণী। অথচ নামী রেস্তোরায় যেয়ে প্লেটটিতে খায় সেটিতে আগে কোনো মুসলমান খেয়ে থাকলেও তার গায়ে লাগে না, সেই প্লেটটিতে যদি কোন মুসলমান ধুয়ে থাকে তাতেও তার জাত যায় না। এমনকি ওই রেস্তোরার খাবার যদি মুসলমানের রান্না করা হয় তাতেও আমাদের ধর্মপ্রাণ হিন্দুর জাত যাওয়ার ভয় থাকেনা।

মানুষের আজ সময় নেই এই ধর্মব্যবসাকে বোঝার। আজ পহেলা বৈশাখে নারীর শাড়ির আঁচল ধরে টান দেওয়ার প্রতিবাদে আন্দোলন করে না হেফাজতে ইসলাম। তারা আন্দোলন করে আমাদের পাঠ্যপুস্তক থেকে রবীন্দ্রনাথের লেখা কাটার জন্যে। কারণ, রবীন্দ্রনাথ হিন্দু লেখক!
আজ শিবসেনারা চলন্ত বাসে নারীদের গণধর্ষণের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেনা। তারা আন্দোলন করে গরুর মাংস খাওয়ার বিসুদ্ধে। কারণ, গরুর মাংস মুসলমানরা খায়!

সৃষ্টিকর্তা যদি থেকেই থাকতেন তাহলে এই ভন্ডামি গুলো কখনই হত না। আজ হবার সুযোগ পাচ্ছে। কারণ, এই মানুষ গুলোই এই ভন্ডগুলোই আজ আমাদের মনে বিশ্বাসের ভাইরাস ঢোকাচ্ছে। এই ভন্ডগুলো বলতে চাইছে তাদের সৃষ্টিকর্তার নামে কিছু বললে কাউকে ছাড় দেওয়া হবেনা। এই ভন্ডগুলো আবার তাদের সৃষ্টিকর্তাকে সর্বশক্তিমান বলে। যিনি সর্বশক্তিমান তিনি নিজের রক্ষা নিজেই করতে পারেন। যে ভন্ড নিজের জীবনেরই গ্যারান্টি দিতে পারেনা সে নাকি সর্বশক্তিমানকে রক্ষা করবে! কিন্তু এই ভন্ডামি ঠেকানোর কেউই নেই। সর্বশক্তিমান বলে যদি কেউ থাকতেন তিনি নিশ্চয়ই ঠেকাতেন।

ধর্ম মুল বিবেচ্য নয় । আমরা মানুষ, মানুষের ক্ষতি করতে পারি না । আমাদেরকে খারাপ বুঝতে হবে । সহজ কথায় অন্যকে দেখে যে কাজ লুকিয়ে করতে হয় সেটাই খারাড় কাজ ।

“সবার ওপরে মানুষ সত্য,
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই মে, ২০১৬ দুপুর ১:৩২
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অনির্বাণ শিখা

লিখেছেন নীলসাধু, ০৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



রাত ন’টার মত বাজে। আমি কি যেন লিখছি হঠাৎ আমার মেজো মেয়ে ছুটতে ছুটতে এসে বলল, বাবা একজন খুব বিখ্যাত মানুষ তোমাকে টেলিফোন করেছেন।

আমি দেখলাম আমার মেয়ের মুখ উত্তেজনায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

=ইয়াম্মি খুব টেস্ট=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৪



©কাজী ফাতেমা ছবি
সবুজ আমের কুচি কুচি
কাঁচা লংকা সাথে
ঝালে ঝুলে, সাথে চিনি
কচলে নরম হাতে....

মিষ্টি ঝালের সংমিশ্রনে
ভর্তা কি কয় তারে!
খেলে পরে একবার, খেতে
ইচ্ছে বারে বারে।

ভর্তার আস্বাদ লাগলো জিভে
ইয়াম্মি খুব টেস্ট
গ্রীষ্মের... ...বাকিটুকু পড়ুন

অণু থ্রিলারঃ পরিচয়

লিখেছেন আমি তুমি আমরা, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৭


ছবিঃ Bing AI এর সাহায্যে প্রস্তুতকৃত

১৯৪৬ কিংবা ১৯৪৭ সাল।
দাবানলের মত সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়েছে সারাদেশে।
যে যেভাবে পারছে, নিরাপদ আশ্রয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। একটাই লক্ষ্য সবার-যদি কোনভাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পেইন্টেড লেডিস অফ সান ফ্রান্সিসকো - ছবি ব্লগ

লিখেছেন শোভন শামস, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:১৯

"পেইন্টেড লেডিস অফ সান ফ্রান্সিসকো", কিংবা "পোস্টকার্ড রো" বা "সেভেন সিস্টারস" নামে পরিচিত, বাড়িগুলো। এটা সান ফ্রান্সিসকোর আলামো স্কোয়ার, স্টেইনার স্ট্রিটে অবস্থিত রঙিন ভিক্টোরিয়ান বাড়ির একটি সারি। বহু... ...বাকিটুকু পড়ুন

এশিয়ান র‍্যাংকিং এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান !!

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:২০

যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী 'টাইমস হায়ার এডুকেশন' ২০২৪ সালে এশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে। এশিয়ার সেরা ৩০০ তালিকায় নেই দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়।তালিকায় ভারতের ৪০, পাকিস্তানের ১২টি, মালয়েশিয়ার ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×