somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আজ পিলখানার ঘটনা মুছে ফেলার জন্যই কি গতকালের বেহায়াপনা?

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১১ সকাল ৯:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পিলখানা ট্র্যাজেডির দুই বছর
ঘটনার দিন বিডিআর সপ্তাহ উপলক্ষে পিলখানায় বসেছিল বার্ষিক দরবার। সকালে আনন্দমুখর পরিবেশে শুরু হয়েছিল দরবারের নিয়মমাফিক কর্মসূচি। দরবার হলে সবাই সারিবদ্ধভাবে বসেছিলেন। সামনে ছিলেন বিডিআর ডিজিসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। হঠাত্ এক জওয়ান দাঁড়িয়ে উত্তেজিতভাবে কথা বলতে শুরু করেন। অস্ত্রহাতে ১৩ রাইফেল ব্যাটালিয়নের সিপাহী মঈন ও কাজল এগিয়ে যান মঞ্চের দিকে। ডিজিসহ কয়েজন সেনা কর্মকর্তা তাদের থামাতে দৌড়ে আসেন। নিরস্ত্র করে মাটিতে শুইয়ে দেন। এ অবস্থায় দরবারে অবস্থানরত জওয়ানদের একজন জাগো বলে চিত্কার করে ওঠে। মেগাফোনধারী মুখোশ পরা সশস্ত্র ৫ যুবক দরবার হলে প্রবেশ করে। ব্রাশফায়ার শুরু করে। হঠাত্ গুলির শব্দ। এরপর ক্ষণিকের নীরবতা, সবাইকে থামানোর চেষ্টা করেন ডিজি মেজর জেনারেল শাকিল আহমদ। তার কথায় কেউ কর্ণপাত করেনি। গুলি চলতে থাকে অবিরাম। সব উত্সব-অনুষ্ঠান ম্লান করে দিয়ে প্রায় দুই দিন ধরে চলে বিদ্রোহ। নারকীয় তাণ্ডবে মেতে ওঠে একদল বিডিআর জওয়ান।
পিলখানা হত্যার সেই বীভত্সতা সমগ্র জাতির কাছে কলঙ্কিত এক ইতিহাস। শতাধিক সেনা পরিবার বিডিআরের বিপথগামী ঘাতকদের হিংস্র পৈশাচিক থাবায় ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এতিম হয় অনেক শিশু। অর্ধশতাধিক নারী হয়েছিলেন বিধবা। বহু পিতা-মাতার বুক খালি হয়। এই অভিশাপ কেবল ভুক্তভোগী পরিবারগুলোরই নয়; গোটা দেশ ও জাতির।
২৫ ফেব্রুয়ারি সকাল থেকে পিলখানা বিডিআর সদর দফতরে নজিরবিহীন নৃশংসতার পর ২৬ ফেব্রুয়ারি বিকালের দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। দু’দিনের বিভীষিকা থামিয়ে অস্ত্র সমর্পণ করে বিদ্রোহীরা। আগেই পালিয়ে যায় প্রকৃত খুনিরা। এরপর থেকে শুধু স্তব্ধ স্তম্ভিত আর বাকরুদ্ধ হওয়ার পালা।
প্রায় ৩৬ ঘণ্টা বিদ্রোহের পর পিলখানা পরিণত হয় একটি মৃত্যুপুরীতে। পিলখানায় শুধু লাশ আর লাশ। রক্ত আর রক্ত। পোড়া গাড়ি, পোড়া বাড়ি, ভাঙা গ্লাস, ঘাসের ওপর তাজা গ্রেনেড; চারদিকে শুধু ধ্বংসচিহ্ন। সেনা কর্মকর্তাদের কোয়ার্টারগুলোর তছনছ অবস্থা। বিভিন্ন স্থাপনায় জ্বালাও-পোড়াওয়ের ধূসরিত দৃশ্য। ড্রেনের ম্যানহোল থেকে আসে রক্তের উত্কট গন্ধ। প্রথম দফায় কামরাঙ্গীরচরে একটি স্যুয়ারেজ লাইন থেকে কয়েক দফায় ৯ সেনা কর্মকর্তার লাশ উদ্ধার করা হয়। ২৭ ফেব্রুয়ারি বিডিআর হাসপাতালের পেছনে একটি গণকবর থেকে তোলা হয় একসঙ্গে ৩৯টি লাশ। একটি গ্যারেজ মাঠের পাশের গণকবর থেকে উদ্ধার করা হয় আরও ৯টি লাশ। এ বিদ্রোহে ৫৭ সেনা কর্মকর্তা, একজন অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা, একজন সৈনিক ও দু’জন সেনা কর্মকর্তার স্ত্রীসহ ৬১ জন নিহত হন। সেনা কর্মকর্তাদের বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ হারান ৭ বিডিআর জওয়ান। বিভিন্ন গেট থেকে ফাঁকা গুলি ছোড়ায় আশপাশের আরও সাতজন পথচারী নিহত হন। এ ঘটনায় নিহতের সংখ্যা দাঁড়ায় ৭৫-এ।

সব কি আমরা ভুলে গেলাম?
১০টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অসীম শুণ্যতা

লিখেছেন আহমেদ রুহুল আমিন, ১১ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:২৭

মৃত্যু ঘুরে পদে পদে
মৃত্যু আছে পাছে,
এ জীবনে ভাবিনা কেউ
মৃত্যু কতো কাছে.... ।

ভাবছি যারা এই ধরাটা
শুধুই লীলা-খেলা,
একপলকে শেষ হবে'যে
দিবস-রাত্রি বেলা ।

ঢেউ এর পরে ঢেউ ঢলে যায়
ভাসান কেবল থাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মার্কা দেখে ভোট দেওয়া সমর্থন করা যায় কি?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১১ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:০১



মার্কার লোকটি অযোগ্য হলে তিনি তাঁর এলাকার সঠিক প্রতিনিধিত্ব করতে পারবেন কি? ভোটার মার্কা না দেখে যোগ্য লোক দেখে ভোট দিলে সমস্যা কি? যোগ্য লোকেরা কি তাঁর দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাষ্ট্রপতি হিসাবে ড. ইউনুসের বিকল্প বাংলাদেশে নেই !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১১ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:৫৪


রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন চুপ্পু সাহেবের মন ভালো নেই। জুলাই আন্দোলনের পর থেকে তিনি রীতিমতো কোণঠাসা! শেখ হাসিনা ভারতে প্রস্থানের পূর্বে তাকে জানিয়ে যান নি। শেখ হাসিনা চুপ্পু সাহেবকে উনার দুরবস্থার জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতী এখন পুরোপুরিভাবে নেতৃত্বহীন ও বিশৃংখল।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩



শেরে বাংলার নিজস্ব দল ছিলো, কৃষক প্রজা পার্টি; তিনি সেই দলের নেতা ছিলেন। একই সময়ে, তিনি পুরো বাংগালী জাতির নেতা ছিলেন, সব দলের মানুষ উনাকে সন্মান করতেন। মওলানাও জাতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাময়িক পোস্ট

লিখেছেন আরোগ্য, ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:১৬



ওসমান হাদী অন্যতম জুলাই যোদ্ধা, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র, স্পষ্টবাদী কণ্ঠ, প্রতিবাদী চেতনা লালনকারী, ঢাকা ৮ নং আসনের নির্বাচন প্রার্থী আজ জুমুআর নামাজ পড়ে মসজিদ থেকে বের হওয়ার পর গুলিবিদ্ধ হয়েছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×