somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রবাসীদের মরদেহ দেশে পাঠানো প্রসংগে

১৭ ই মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রবাসীদের মরদেহ দেশে পাঠানো প্রসংগে
- মাসুদুল হাসান রনি

সারাবিশ্বে ছড়িয়ে থাকা বাংলাদেশীর সংখ্যা সরকারী হিসেবে প্রায় এককোটির উপরে। বেসরকারী মতে এই সংখ্যা প্রায় সোয়া কোটি। সংখ্যা যাইহোক এই প্রবাসীরা বর্হিবিশ্বে দেশের প্রতিনিধিত্ব করছে। তাদের কর্মস্পৃহা, মেধা ও কঠোর পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে সুনাম অর্জন করেছেন। মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিন পূর্ব এশিয়ার শ্রমবাজারে আমাদের শ্রমিকভাইদের চাহিদা স্বাধীনতার পর থেকেই অদ্যাবধি অটুট রয়েছে। এর বাইরে ইউরোপ, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া ও কানাডায় বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশীর বসবাস। যাদের অধিকাংশই নিজ যোগ্যতায় প্রবাসে পাড়ি জমিয়েছেন। আশির দশক থেকে প্রতিনিয়ত প্রচুর বাংলাদেশী শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষা অর্জনের জন্য গিয়েছিলেন। কিন্তু দেশে পর্যাপ্ত পরিমান কর্মক্ষেত্র না থাকায় তাদের একটি বিরাট অংশ দেশে ফিরে আসেননি। আজ তারাই স্ব স্ব ক্ষেত্রে প্রতিস্টিত এবং দক্ষতা ও যোগ্যতার সাথে কাজ করার মধ্যদিয়ে দেশের জন্য সুনাম বয়ে আনছেন। এর বাইরেও যেসব প্রবাসী ইউরোপ, আমেরিকা,কানাডা বা অস্ট্রেলিয়ায় ছড়িয়ে আছেন তাদের বিশাল অংশই ভাগ্যান্বষনে বিভিন্ন উপায়ে পাড়ি জমিয়েছিলেন। তারাও আজ কঠোর পরিশ্রম ও অধ্যাবসায় শুধু নিজের ভাগ্যই বদলাননি, জাতীয় অর্থনীতিতে রির্জাভ বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন এবং দেশের ভাগ্যকেই পরিবর্তনে সহায়ক ভুমিকা রেখে চলেছেন।
ইতোমধ্যে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের অর্থে গড়ে উঠা রির্জাভ অতীতের সকল রের্কড ভংগ করেছে। যার পরিমান ২৮ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়ে গেছে। দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নে এই অর্থ বিরাট ভুমিকা যেমন রাখছে , তেমনি অর্থনীতির চাকা সচল রেখেছে। গার্মেন্টস, হিমায়িত খাদ্য রপ্তানীর পর প্রবাসীদের পাঠানো অর্থই হচ্ছে দেশের রির্জাভ বৃদ্ধির প্রধান চালিকা শক্তি।
যারা দেশের অর্থনীতিতে রক্তসঞ্চালনের কাজটি করছেন উদয়স্থ হাড়ভাংগা পরিশ্রমে, সেইসব প্রবাসীদের দেশ নিয়ে রয়েছে অনেক বেদনা ও অভিমান। প্রথমত তাদের দাবী ছিলো দেশের নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগের অধিকার। সেই দাবী সব সরকারের কাছে উপেক্ষিতই থেকে গেছে। দেশে ফেরার পথে বিমানবন্দরের হয়রানি কিছুটা কমলেও পুরোপুরি শেষ হয়ে যায়নি। ব্যবসায়ী প্রবাসীদের সিআইপি মর্যাদাদানের বিষয়টিও উপেক্ষিত হয়েছে। সম্প্রতি ইউরোপের ফ্রান্সের প্যারিস- বাংলা প্রেসক্লাব প্রবাসীদের পক্ষ থেকে দাবী তুলেছে ' প্রবাসীদের মরদেহ সরকারী খরচে দেশে ফিরিয়ে আনার। "
ইতোমধ্যে এ দাবীর স্বপক্ষে ইউরোপ, আমেরিকাসহ সর্বত্রই ব্যাপক প্রচার ও জনমত গড়ে উঠছে।
প্রশ্ন হচ্ছে কেন, সরকারী খরচে প্রবাসীদের মরদেহ দেশে ফেরত আনা হবে। এর আগে একটি বিষয় পরিস্কার থাকা উচিত । মধ্যপ্রাচ্য, মালেয়শিয়াসহ অন্যান্য শ্রমবাজারে যে সব শ্রমিকভাই প্রবাসে যাচ্ছেন তারা সবাই কোন না কোন কোম্পানীর অধীনে চুক্তিবদ্ধ হয়ে যান। তাদের চুক্তিতেই থাকে শাররীক অসুস্থতা বা মৃত্যুজনিত কারনে দেশে ফেরত পাঠানোর বিমানভাড়া ও মর্গের পাওনা সমুদয় অর্থ উক্ত কোম্পানী বহন করবে। তাই এই অংশটির কথা এই বিবেচনায় তখনই অন্তর্ভুক্ত হবে যখন চাকুরীদাতা কোম্পানী দায় অস্বীকার করবে। কিন্তু শ্রমবাজার ছাড়া, চুক্তিছাড়া যে সব প্রবাসী নিজ প্রচেস্টায় বিদেশ গিয়েছেন এবং বছরের পর বছর দেশে কস্টার্জিত অর্থ প্রেরন করছেন, তাদের মরদেহ প্রবাস থেকে দেশে ফেরত আনার ক্ষেত্রে সরকারকেই অগ্রনী ভুমিকা গ্রহন করতে হবে। এ জন্য সরকারের পররাস্ট্র মন্ত্রনালয়, প্রবাসীকল্যান মন্ত্রনালয়ে যৌথ ডাটাবেজ তৈরি করা জরুরি। যার ভিত্তিতে পরবর্তী সময় সংশ্লিস্ট দেশের দুতাবাস লাশ প্রেরনে পদক্ষেপ গ্রহন করতে পারে। প্রসংগক্রমে উল্লেখ করা যেতে পারে ইউরোপ হতে একটি লাশ দেশে প্রেরনে প্রায় ৪ হাজার ইউরো এবং আমেরিকা, কানাডা হতে একটি লাশ প্রেরনে সমপরিমান ডলার ব্যয় হয়। বছরে সারাবিশ্ব হতে প্রায় হাজার দুয়েক লাশ প্রবাস হতে দেশে আসে। যদি বিদেশ হতে এ সংখ্যক লাশ আনায়নের জন্য সরকারী অর্থ ব্যয় করতে হতো তার পরিমান রেমিটেন্সের ২ শতাংশ অর্থের বেশী হতো না।
এ স্পর্শকাতর বিষয়টি সরকারকে অবশ্যই মানবিক দৃস্টিকোন থেকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় নিতে হবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:০৪
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারতে পচা রুটি ভাত ও কাঠের গুঁড়ায় তৈরি হচ্ছে মসলা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩০

আমরা প্রচুর পরিমানে ভারতীয় রান্নার মশলা কিনি এবং নিত্য রান্নায় যোগ করে খাই । কিন্তু আমাদের জানা নেই কি অখাদ্য কুখাদ্য খাচ্ছি দিন কে দিন । এর কিছু বিবরন নিচে... ...বাকিটুকু পড়ুন

যমদূতের চিঠি তোমার চিঠি!!!!

লিখেছেন সেলিম আনোয়ার, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:০৮

যমদূতের চিঠি আসে ধাপে ধাপে
চোখের আলো ঝাপসাতে
দাঁতের মাড়ি আলগাতে
মানুষের কী তা বুঝে আসে?
চিরকাল থাকার জায়গা
পৃথিবী নয়,
মৃত্যুর আলামত আসতে থাকে
বয়স বাড়ার সাথে সাথে
স্বাভাবিক মৃত্যু যদি নসিব... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×