somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভাত দেবার মুরোদ নাই, কিল মারার গোঁসাই

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ২:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বায়োমোট্রক সিম নিবন্ধন নিয়ে জনগণের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে। সে বিষয়ে এবার লেখক ও কলামিস্ট ফরহাদ মজহর একটি স্ট্যাটাস পোস্ট করেছেন।

তিনি লিখেছেন: যারা বায়োমেট্রিক সিম নিবন্ধনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন ও গণপ্রতিরোধের ডাক দিচ্ছেন আমি তাদের সমর্থন করি। অন্যদের সমর্থন করবার জন্য আহ্বান জানাই।

খোলা মুক্ত বাজার ব্যবস্থার এই যুগে অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, বাসস্থান, শিক্ষা ইত্যাদি সংস্থানের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের কোনো প্রকার ভূমিকা থাকবে না, এটাই এখন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। একে সাম্রাজ্যবাদ বলুন, লিবারেলিজম বলুন কিছুই আসে যায় না, আপনি বুঝতে পারছেন কিনা সেটাই আসল কথা।

এক সময় এই পঞ্চনীতি কায়েমের কথা বলে ব্যাক্তির অধিকার হরণ করা হয়েছিল। প্রবল ও প্রকট কেন্দ্রীভূত ক্ষমতা সম্পন্ন আধুনিক রাষ্ট্র বানিয়ে নাম দেওয়া হয়েছিল 'সমাজতন্ত্র'। মানুষকে স্রেফ জীব বানিয়ে ফেলা হয়েছিল। সেই ব্যবস্থা তার নিজের দোষে ভেঙ্গে পড়েছে, কারণ মানুষ জন্তু জানোয়ার নয়, তার মনের আরও অনেক চাহিদা আছে যেদিকে আমরা মনোযোগ দেই নি। এখন চলছে তার উল্টো যুগ।

যার যার তার তার, আপনি এই নিখিলে একা। আপনার বেঁচে থাকবার ব্যবস্থা প্রতিযোগিতা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতায় হিংস্র পুঁজিতান্ত্রিক সমাজে নিজেকেই আদায় করতে হবে। এই বাস্তবতায় বাস করেও আপনি তা বুঝতে চান না। আপনি ন্যায়বিচার ও রাষ্ট্রের রূপান্তরের মধ্য দিয়ে নতুন সমাজের জন্য লড়াই করলেন না। শাহবাগী হয়ে গেলেন! ইসলামপন্থীদের ফাঁসিতে ঝোলালেন আর মিষ্টি খেলেন। ইসলামপন্থিরাও নাস্তিক আর মুরতাদদের ফাঁসির দাবি তুলছে, কেউ কেউ নাস্তিক মুরতাদদের কুপিয়ে মারছে, আপনি মুক্তমনা ব্লগার হয়ে বিদেশে পালালেন।

বুঝুন, সাম্রাজ্যবাদ আর নিউলিবারেজিম বারো হাত কাঁকুড়ের তেরো হাত বীচি নয় -- আস্তিক বা নাস্তিক এটা আপনার নিজেরই জীবন। হালার রাষ্ট্র যদি কিছুই করবার না পারে তার কাজ হয় কিলানো। ভদ্র ভাষায় শুধু সিকিউরিটি নিশ্চিত করা -- সাম্রাজ্যবাদের এই নতুন পর্যায়টা -- নিউলিবারেলিজম, গ্লোবালাইজেশান যাই বলুন -- আমাদের বোঝা দরকার।

সিকিউরিটি নিশ্চিত করতে গিয়ে রাষ্ট্র জঙ্গিবাদ দমনকেই তার একমাত্র কর্তব্য মনে করে, বিচার ব্যবস্থাকে ব্যবহার করে নাগরিকদের বিরুদ্ধে ভূয়া অভিযোগ এনে রিমাণ্ডে নির্যাতন করা ও স্বীকারোক্তি আদায়, তারপর তাদের পোষা গণমাধ্যমে প্রচার করবার জন্য। আপনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করবার নামে রাষ্ট্র আপনার নাগরিক ও মানবিক অধিকার হরণ করে। আপনার কোন আইনী সুরক্ষার ব্যবস্থা নাই, আপনি দার্শনিকদের ভাষায় (bare life) -- ল্যাংটা হনুমানে পরিণত হয়ে গিয়েছেন। আপনার কোনো খবর নাই।

এখন সিকিউরিটি নিশ্চিত করবার জন্যই আপনার ওপর নজরদারি কঠোর করা দরকার। আপনি রাষ্ট্রের চোখে সবস্ময়ই সম্ভাব্য জঙ্গি, ক্রিমিনাল, কোন না কোন অপরাধের আসামী। তো আপনার নাম পরিচয় সাকিন সহ ন্যাশনাল আই ডি কার্ড দরকার, দরকার ফিঙ্গার প্রিন্ট। বায়োমেট্রিক পদ্ধতিকে আপনাকে ডিজিটাল বাইটসে ধারণ করা হবে। তারপর ডিজিটাল টেকনলজি দিয়ে আপনার ওপর নজরদারী চলবে।

ফলে বায়োমেট্রিক সিম নিবন্ধনের বিরোধিতাকে হাল্কা ভাবে নেবেন না। যারা এটা বুঝে গিয়েছেন তাদের লাল সালাম আর সবুজ শুভেচ্ছা। আছি আপনাদের সঙ্গে।

আসুন সিকিউরিটি স্টেইট আর তার নজরদারির পাতানো জালের বিরুদ্ধে নাগরিকদের মানবিক অধিকারের জন্য লড়ি। আমাদের নিরাপত্তা আমাদেরকেই, সমাজকেই নিশ্চিত করতে হবে। ভাত দেবার মুরোদ নাই, কিল মারার গোঁসাই -- আসুন এই রাষ্ট্রের বিলয় ত্বরান্বিত করি।

লেখক ও কলামিস্ট ফরহাদ মজহর একটি স্ট্যাটাস থেকে
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ২:৪৭
১৫টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামাত কি দেশটাকে আবার পূর্ব পাকিস্তান বানাতে চায়? পারবে?

লিখেছেন ঋণাত্মক শূণ্য, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:২৮

অন্য যে কোন সময়ে জামাতকে নিয়ে মানুষ যতটা চিন্তিত ছিলো, বর্তমানে তার থেকে অনেক বেশী চিন্তিত বলেই মনে করি।



১৯৭১ এ জামাতের যে অবস্থান, তা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×