কিউটের ডিব্বার মামার বাড়ি ভ্রমনঃ পর্ব-২
=================================
আমি উনাকে নিয়ে কিছুটা পথ হেঁটে সিএনজিতে উঠলাম। উনাকে পাশে বসালাম।
সিএনজির গতিতে একটু পর পর সামনের দিকে আর পিছনের দিকে ঝুঁকে পড়ছে।
উনি আমাকে বললেনঃ কোলে নাও।
আমি বললামঃ কোলে নিবো কেনো ? তুমি না বড় হয়ে গেছো।
উনিঃ ধুর বোকা আঙ্কেল। আমি এতো বড় হই নি তো। দেখো না বার বার পড়ে যাচ্ছি।
আমি কোলে নিলাম। এবার উনি আমাকে একটু পটানোর চেষ্টা করছে।
উনিঃ আঙ্কেল বলো তো, কে তোমাকে বেশি পছন্দ করে?
আমিঃ জানি না। আমি তো বোকা আমাকে আবার কে পছন্দ করবে!
উনি একটা পাপ্পি দিয়ে বললোঃ কে বলছে আমার আঙ্কেল বোকা!
আমি বললামঃ তুমি ই তো বলো।
উনিঃ আমি তো মজা করে বলি। আমি তোমাকে বেশি আদর করি তো তাই বলি
দেখো না আব্বু আমাকে কতো আদর করে তাই তো বেশি বেশি বকে।
আমি বললামঃ এই জন্যই তো তোমাকে হাতির ডিম ডাকি।
উনিঃ না তুমি হাতির ডিম...
আমিঃ না তুমি...
উনিঃ না তুমি তুমি তুমি ... তুমি ইয়া বড় একটা হাতির ডিম। আমি তো ছোট।
তুমি বড় তুমি ইয়া বড় একটা হাতির ডিম..
সিএনজির মধ্যে আমাদের দু'জনের কিছুক্ষণ মারা মারি চললো।
ড্রাইভার মামা মাঝে মাঝে হাসছে। এক বার বললোঃ
ভাইজান ওটা কী আপনার ভাইয়ের মেয়ে?
আমি বললামঃ না আমার শত্রু...
বেছ আবার শুরু। এবার ডিসুম ডিসুম... অনেকক্ষণ চললো...
সিএনজিতে থেকে নামলাম। সিএনজির ড্রাইভার জানতে চাইলো কিডির কাছে
কোথায় যাচ্ছেন?
উনিঃ মামার বাড়িতে।
আসার সময় সে সিএনজির ড্রাইভার কে টাটা দিলো।
আমি অবাক হলাম। এর আগে ও সে আমার সাথে অনেক জায়গায় ঘুরেছে।
কিন্তু কোন ড্রাইভার কে কখনো টাটা দেয় নি। কিন্তু আজ দিয়েছে।
মনে মনে ভেবে দেখলাম। ওর ব্রেইন এখনি অনেক কিছু বিচার করতে পারে।
কারন অন্যান্য ড্রাইভার কোন দিন তার কাছে জানতে চায় নি কোথায় যাচ্ছে... বা...
মামার বাসার গেইটের ভেতর ঢুকলাম।
দাড়োয়ান কে সে খুব ভালো করেই চেনে। দাড়ানোয়ান তাকে কোলে নিতে চাইলো
সেও দাড়োয়ানের কোলে উঠে গেলো। আমি মনে মনে ভেবেছিলাম হয় তো না করবে।
মামা মামি সবাই তাকে নিয়ে ব্যস্ত। ও মামা মামি কে নানা রকম প্রশ্ন করছে...
আমি ভাবলাম এই ফাঁকে একটু বিড়ি ফুকে আসি। কিন্তু তার ও সুযোগ নাই।
কিডি তার মামাকে বলে দিলো।...
মামা আঙ্কলে কোথায়?
মামঃ বাইরে গিয়েছে বোধ হয়।
কিডিঃ না না, বাইরে যায় নি তো...
মামাঃ তাহলে কোথায় গিয়েছে?
কিডিঃ ছাদে। ছাদে গিয়ে কাগজের আগরবাতি খাচ্ছে...
মামা অনেকটা বেকুব হয়ে গেলো। জিজ্ঞেস করলোঃ
মামনি কাগজের আগরবাতি দেখতে কেমন তুমি দেখেছো?
কিডিঃ হ্যাঁ, দেখেছি তো। তুমি কাগজের আগরবাতি দেখো নি!
মামা আর মামি কিডির কথা শুনে হাসতে হাসতেই শেষ।
হাসি শুনে আমি পাশের রুমের বারান্দা থেকে আসলাম।
এবার কিডি একটু মন খারাপ করেছে। আমি তার কাছে জানতে চাইলাম
আম্মু কী হয়েছে? মন খারাপ কেনো?
কিডিঃ এমনিতেই। বলো তো তুমি কাগজের আগরবাতি খাও না।
আমি হাসি পেচে রেখে বললামঃ হ্যাঁ খাই তো।
কিডিঃ আমি তো এটাই মামা আর মামিকে বলেছি।
তহালে মামা মামি খিল খিল করে হাসছে কেনো!
আমি কী হাসির কথা বলেছি...
আমরা সবাই হাসি বন্ধ করে ওকে সাথে করে বাগানে গেলাম।
বাগানে ঢুকেই সে টুনটুনি পাতা খুঁজে খুঁজে অস্থির।
মামা বললোঃ আম্মু তুমি কী খুঁজ?
কিডিঃ টুনটুনি পাতা
আমি মামাকে চিমটি কেটে চোখ মারলাম। তারপর মামা বললোঃ
তুমি খুঁজে না পেলে চলে আসো। তোমার আঙ্কেলের কফি খাওয়া হয়ে গেলে
তোমাকে টুনটুনি পাতা খুঁজে বের করে দিবে।
কিডিঃ আঙ্কলে তো কফি খায় না পিকে...
মামাঃ ও আচ্ছা, তোমার আঙ্কলের কফি পিকা শেষ হলে খুঁজে দেবে
তুমি আমাদের সাথে বসে খাও...
কিডিঃ না আমি খাবো না।.. টুনটুনি পাতা না নিয়ে আসবো না
আমিঃ ঠিক আছে তুমি টুনটুনি পাতা খুঁজতে থাকো। আমি আসছি...
মামাকে কানে কানে বললাম। ও থানকুনি পাতাকে টুনটুনি পাতা বলে।
কিডিঃ এই, কী কানাকানি করছো....
আমিঃ কিছু না আম্মু...
কিডিঃ না, বলো আমাকে....
বেছ যুদ্ধ শুরু.............................................. (চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১:১৪