somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্পঃ কুটুম পাখি

০৭ ই নভেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

চৈত্র মাসের শুরুতে বেজায় গরম পরেছ। কর্দমাক্ত ফসলি মাঠগুলো শুকিয়ে প্রস্তরসম কঠিন হতে হতে এক পর্যায়ে কঠিনত্ব সহ্য করতে না পেরে ফেটে চোচির হয়ে গেছে। গরমের তীব্রতায় রাস্তার নেড়িকুকুরগুলোর জিহ্বা মুখের অভ্যন্তরে জায়গা করতে না পেরে বেড়িয়ে এসেছে। ওদের মুখ থেকে ঝরতে থাকা লালা প্রমাণ করে এবারের চৈত্রে সূর্যদেবের রোষের মাত্রা। দীঘলিপাড় গাঁয়ের অতিপরিচিত এই কুকুরের দল গাঁয়ের কাঁচা রাস্তার উপর সঙ্গিনী ও বাচ্চাদের নিয়ে এবার চৈত্রেও সংসার পেতেছে। গাঁয়ের প্রবেশ পথটার মুখে দাঁড়িয়ে থাকা মাঝারি উচ্চতার ছিপছিপে গড়নের মরা মান্দারগাছের বাসিন্দা একদল তৃষ্ণার্ত দাঁড়কাক সর্বক্ষণ বিশ্রি কা কা শব্দ করে ক্লান্ত-শ্রান্ত অবস্থায় দুপুরে ঘরে ফেরা পথিকদের ক্লান্তি যে আরও কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেয়। বিরক্ত পথিকেরাও কর্কশ গলায় দাঁড়কাকগুলোকে অলক্ষুণে অপবাদ দিয়ে খেকিয়ে ওঠে। কাকগুলোর দিকে শুন্য হাত তুলে ঢিল ছুড়ার ভঙ্গিমা করে ভয় দেখিয়ে তাড়ানোর চেষ্টা করে। কিন্তু কাকগুলো অনড়। ওভাবেই গাছের ডালে বসে থেকে অলক্ষুণে কাকগুলো আরও বেশি কা কা শব্দ করে ডাকতে থাকে।

ঘর্মাক্ত শরীরে গাঁয়ের চাষাভুষা মানুষগুলো প্রতিদিনকার নিয়মে শতবর্ষী বটবৃক্ষের নিচে জমায়েত হয়ে খোশগল্পে মেতে উঠেছে। দীঘলিপাড় গ্রামটি সভ্যতা থেকে অনেকটা দূরে অবস্থিত বিচ্ছিন্ন দ্বীপের ন্যায় একটা অজপাড়া গাঁ। এ গাঁয়ের অশিক্ষিত মানুষগুলো সভ্যতা থেকে এতোটাই দূরে যে, গাঁয়ের বাইরে ঘটে যাওয়া ঘটনা এদের কাছে অন্যের মুখে মুখে পৌঁছাতে সময় লাগে দশ-বারোদিন। কখনও কখনও অনেক খবর তাদের একেবারেই অজানা থেকে যায়।

গাঁয়ের প্রবীণদের মধ্যে অন্যতম গনু মিয়া তার বয়েসী অন্যান্যদের মত নয়। তার বয়েসী অন্যরা বার্ধক্যের কাছে পরাজিত হলেও গনু মিয়াকে যে বার্ধক্য এখনও ছুঁতে পারেনি। মুখের অভ্যন্তরে দু’পাটি দাঁতের একটিও খোয়া যায়নি তার। প্রতিদিন সে দশ মাইল পায়ে হেটে গঞ্জের হাটে যায় আর ফেরার সময় গাঁয়ের মানুষগুলোর জন্য বিভিন্ন খবর নিয়ে আসে।

গনু মিয়া তার পাশে বসে থাকা কালু শেখকে বলল, "হুনছানি কালু, শউরের তন মাইনসেরা বঊ-পোলাপান লগে কইরা নাহি গেরামে আয়তাছে। শউরে হুনলাম ম্যালা গ্যাঞ্জাম চলতাছে। মানুগুলারে মাইরা যেইহানে সেইহানে ফালায় রাখছে।"



ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধ গনু মিয়ার কথায় খোশগল্পে মেতে থাকা লোকগুলো তাদের গল্পে ইতি টেনে গনু মিয়া আর কালুর দিকে ফিরে তাকালো।

" হ গো কাহু, হুনছি শউরের তন মানুগুলান গেরামে আয়তাছে।" মানুষ মেরে ফেলার গল্পটা কালুর কাছে ভূত দেখার গল্পের মতই অবিশ্বাস্য মনে হল। মনের বিস্ময় কণ্ঠে ফুটিয়ে তুলে কালু বলল, "তয় শউরে মানু মাইরা যেইহানে সেইহানে ফালায় রাখছে হেইডা তোমার তন হুনলাম।"

" হুনলাম দ্যাশের অবস্থা নাকি ভানা নারে, কালু। মিলিটারি না যেন কি নামছে দ্যাশে। হ্যারা মানু মাইরা, বাড়িঘরে আগুন দিতাছে। হেন্দু-মুসলমান ব্যাবাকরে চিতা দিতাছে।"

" এত খবর তুমি জানলা কইত্তন, কাহু?"



"গঞ্জে শউরের দু'গা মানু আইছেলো।" সামনে বসে থাকা লোকগুলোর দিকে ফিরে গনু মিয়া বলল, "হোইটেলে ভাত খাইতে বয়া হ্যারাই তো এই গল্প কইল। ঢেহায় নাহি রাইতে ঘর-বাইত্তে আগুন দিছে, মানু মারছে। রাস্তার চাইরধারে খালি মরা মাইনসের লাশ পইরা আছে। মরা মাইনসের লাশগুলান রাস্তায় পইরা পইরা পচতাছে। গোর দেওনের কেউ নাইক্কা। লাশগুলান কুত্তায় আর হগুনে খায়তাছে!" "



কালু গনু মিয়ার হাটুর উপর হাত রেখে বলল, "কও কি , কাহু! মানুরা কি মানুগোরে এ্যামবালে মারবার পারে!"

কালুর দিকে ঘুরে গনু মিয়া বলল, "মানুরা মানুগো মারে নাই তো, মারছে তো মিলিটারিরা। কইলাম না মিলিটারি নামছে ঢেহায়। দ্যাশ দখল করবার চায়।"


গ্রামের সহজসরল চাষাভুষা মানুষগুলোর কাছে গনু মিয়ার মুখে শোনা ঘটনাগুলো শহরের ইট-পাথরের তৈরী অট্টালিকার মতই কঠিন আর অভেদ্য মনে হয়। মানুষ মেরে রাস্তায় ফেলে রেখেছে- এই খবর শুনে তারা বিস্মিত না হয়ে পারে না। কেননা মিলিটারি কর্তৃক কৃতকর্মটি তাদের কল্পনাতীত। মিলিটারি কি তারা তা জানে না, কখনও দেখেনি; কিন্তু গনু মিয়ার গল্পে মিলিটারির কথা শুনে তারা তাদের মনের মাঝে রূপকথার দৈত্য, দেও-দানবের সদৃশ মিলিটারিরও একটা ভয়ংকর মুখাবয়ব এঁকে ফেলে।



গনু মিয়া আর কালুর পাশে বউ আর মেয়েকে নিয়ে বসে থাকা হারু বেপারী এবার মুখ খুলল, "তুমি আর আমি হেই কতা কইয়া কি কইরবার পারুম, জ্যাডা? আমরা মুক্কু-সুক্কু মানু কি-ই-বা কইরবার আছে আমাগো? তয় আমার মনে অয় আমাগো গেরামে মিলিটারি আইবো না; এইহানে আইবো কি কইরবার! গরমে সেদ্দ হইতে!"

"হ, ঠিকি কইছস তুই।" হারু বেপারীর কথায় সহমত পোষণ করে গনু মিয়া বলল, "আমরা মুক্কু-সুক্কু মানু, কম বুঝি। আমারও মনে হয় এইহানে মিলিটারি আইবো না। আমাগো এইহানে মিলিটারি কিছুই পাইব না। এইহানে মনে হয় না ওরা আইবো .... .... "

গনু মিয়ার কথা চলতে থাকে আর সবাই নিরবে তা শুনে যায়। ছোট বাচ্চাগুলোর মধ্যে মিলিটারি নামক ভয়ের ঘুরাফেরা করে। গনু মিয়া আর অন্যদের কথোপকথনের মাঝে হারুর মেয়ে বিনতি তার মাকে চুপি চুপি জিজ্ঞাসা করে, "মা।, মিলিটারি কি?"

হারুর মুর্খ বউ জুলেখা তার পাঁচ বছরের মেয়ে বিনতির প্রশ্নের কোন উত্তর জানে না। গ্রামের অন্যদের মতই জুলেখাও জানে না মিলিটারি কি। তার কাছেও এ শব্দটা একেবারেই নতুন। মেয়ের ভয় ভাঙাতে মিথ্যার আশ্রয় নেয় জুলেখা।

"মিলিটারি হইল গেরামের কুটুম। তুই নক্কী হইয়্যা থাকলে তোর লাইগা ভালা ভালা জিনিস নিয়া আইবো ।"

মায়ের কথায় অবুঝ মেয়ে খুশি হয়ে আবার প্রশ্ন করে, "কহন আইবো মিলিটারি?"

মেয়ের বারবার প্রশ্ন করে যাওয়া অজ্ঞ মায়ের বিরক্তি সৃষ্টি করে। তবুও বিরক্তি দমিয়ে রেখে জুলেখা তার মেয়েকে সন্তোষজনক উত্তর দেওয়ার ব্যর্থ চেষ্ট করে।

"কুটুম কি আর এমনে এমনে আহে! আইবো, কুটুম পাখি ডাকলেই আইবো।"

মায়ের কথায় সন্তুষ্ট না হয়ে মেয়ে আবারও মায়ের কাছে প্রশ্ন করে, "কুটুম পাখি কহন ডাকবো?"

এবার আর নিজেকে সংবরণ করতে পারে না জুলেখা। ক'বার আর বানিয়ে বানিয়ে মিথ্যা বলা যায়, তাই একটু রাগান্বিত স্বরে চোখ রাঙিয়ে উত্তর দেয় জুলেখা।

"ডাকবো, ডাকবো; সময় হইলেই ডাকবো। অহন তুই চুপ কইরা ব, নইলে মিলিটারি আইসা তোর মুখ হিলাই কইরা দিবো। গরমে মানু বাঁচে না আর তুই এত কতা কস ক্যা?"

মা রেগে গেছে তা বুঝতে বাকি থাকে না মেয়ের। তাই আর সে প্রশ্ন বাড়ায় না। মা-মেয়ের আলাপন শেষ হতে না হতেই মাথার উপরে বট গাছের প্রকাণ্ড শাখায় বসে থাকা একটা কালো দাঁড়কাক ভাঙা গলায় খ্যা... খ্যা... শব্দ করে বার কয়েক খেকিয়ে উড়ে গিয়ে অদূরে থাকা মেহগনি গাছটায় বসে আবারও বিশ্রি শব্দে ডেকে উঠে। সারাদিন কাকটা দীঘলিপাড় গাঁ'য়ের বাড়ি বাড়ি উড়ে ডেকে বেড়িয়েছে। ওটাকে তাড়া করে রাস্তায় সংসার পাতা বেয়াড়া নেড়ি কুকুরগুলোও সারাগ্রামে দৌড়ে বেড়িয়েছে আর ঘেউ ঘেউ শব্দে গ্রামের শান্ত বাতাস ভারী করেছে।

ভর দুপুরে গায়ের সিধু পাগলা হঠাৎ করেই রাস্তায় দৌড়ে দৌড়ে চিৎকার করে করে বলতে লাগল, " আয়তাছে, আয়তাছে; কারুর বাঁচন নাইক্কা, ব্যাবাকরে মাইরকা হেলাইব; নয়া কুটু আয়তাছে।"

সিধু পাগলা '৪৭ সালে দেশ বিভাগের সময় সৃষ্ট দাঙ্গায় পরিবারের সব হারিয়ে এই দীঘলিপাড় গ্রামে এসে উঠেছে। নাম ব্যতীত কোন কিছুই উদ্ধার করা যায় নি তার সম্পর্কে। সিধু পাগল হলেও সুস্থ্য মানুষের ন্যায় ক্ষতিকর নয়; গ্রামে এর বাড়ি ওর বাড়ি থেকে খায় সে, আর রাতে হারুর বাড়ির গোয়াল ঘরে পড়ে থাকে। তেইশ বছরে গ্রামের মানুষগুলোর সাথে মিশে মিশে ওদের ভাষা ভালোভাবেই রপ্ত করেছে সিধু।

বেলা বাড়ার সাথে সাথে গরমের তীব্রতাও কিছুটা বেড়েছে- ভ্যাপসা গরমে চারপাশটা সংকীর্ণ হয়ে আছে। একফোঁটা বাতাস নেই কোথাও, যেন পবন দেবতা পুত্র হনুমানের মৃত্যুশোকে দীঘলিপাড় গাঁয়ের বায়ু প্রবাহ বন্ধ করে দিয়েছে। লক্ষণ দেখে মনে হচ্ছে যেন ঝড় আসবে, অনেক জোড়েসোড়ে ঝড় আসবে যার পূর্বপ্রস্তুতি এটা।

বিকালে আকাশে মেঘ জমতে শুরু করে। মরা মান্দারগাছে বসে থাকা উশৃঙ্খল দাঁড়কাকগুলোর অস্থিরতা সারাদিনের তুলনায় বেড়ে গেছে। অপয়া দাঁড়কাকগুলো গ্রামজুড়ে বিশ্রি কা কা শব্দ করে যাচ্ছে। দাঁড়কাকগুলো যেন হেঁড়ে গলায় কা কা ডাকার কন্ট্রাক্ট নিয়েছে সরকারের কাছ থেকে তাই তারা যেন আর থামতেই চাচ্ছে না। গ্রামের মানুষগুলো দাঁড়কাকগুলোর ডাকাডাকিতে বিরক্ত হলেও সিধু পাগলা কাকেদের দলটাকে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছে।

"ডাক ব্যাডারা , আরও জোরতে জোরতে ডাক। ব্যাবাকরে পলাইতে ক; নইলে ব্যাবাকরে মাইরা ফ্যালবো।"

রাতে কাকের ডাকাডাকিজনিত উৎপাত বন্ধ হল, কুকুরগুলোও পরিবাবের সদস্য নিয়ে চুপচাপ ঘুমাচ্ছে। বৃষ্টির সম্ভবনা দেখে সকলেই সন্ধ্যার মধ্যেই ঘরে ফিরেছে। কিন্তু সেই সম্ভাবনা মিথ্যায় পরিনত হল; বৃষ্টি বা ঝড় কোনটারই আগমন ঘটল না। চারদিকের অন্ধকারটা যেন আরও তীব্র হয়েছে, চারপাশটা কার মৃত্যুশোকে যেন নিরবতা পালন করছে। হঠাৎ করেই সিধু পাগলার চিৎকার দূর থেকে ভেসে আসতে লাগল অস্পষ্টভাবে। সময়ের সাথে সাথে তা স্পষ্ট হয়ে উঠল।

"আয়া পরছে, ব্যাবাকে ভিডা-বাড়ি ছাইড়া পলাও। বাঁচপার চাইলে পলাও। কাউরে বাঁচপার দিবো না ওরা। পলাও ব্যাবাকে, আয়া পরছে ... ..."

সিধু পাগলার চিৎকারের সাথে সাথে দূর থেকে অস্পষ্টভাবে আগুন আগুন শব্দটা ভেসে আসতে শুরু লাগল। একসাথে অনেক নারী-পুরুষের আর্তনাদ, শিশুর চিৎকার, গবাদিপশুর ডাকাডাকি, কাকের কা কা শব্দ, রাস্তার নেড়ি কুকুরের ঘেউ ঘেউ চিৎকার, আর তারসাথে সকলের একেবারেই অপরিচিত ঠা ঠা ঠা..., চি চি... শব্দ ভেসে আসতে লাগল। শব্দগুলো চারপাশের নিরবতা ভেঙে শান্ত-স্থির পরিবেশকে মুহুর্তের মধ্যেই অস্থির , অশান্ত করে তুলল। চারপাশের এমনরূপ দীঘলিপাড় গাঁয়ের মানুষগুলো আগে কখনও দেখেনি, তাদের পূর্বপুরুষদের গল্পেও কখনও এমন কিছুর গল্প শোনেনি। বিদঘুটে অন্ধকার রাতে তিমিরের রাজত্ব দখল করে নিলো গ্রামের ছোট ছোট ছনের ঘরগুলোতে দেওয়া আগুনের আলো।

অকস্মাৎ শুরু হওয়া আর্তনাদ, চিৎকার, কা কা শব্দ, ঘেউ ঘেউ শব্দ, অপরিচিত ঠা ঠা ঠা... ও চি চি... শব্দ কিছু বুঝে ওঠার আগেই সব শেষ করে দিয়ে বন্ধ হয়ে গেলো। আবারও শান্ত হয়ে গেল দীঘলিপাড় গাঁ, একেবারে শান্ত আর নিশ্চুপ। কাকগুলো চুপচাপ বসে রইল পোড়া মরা মান্দারগাছের ডালে; পোড়া গন্ধ মৌ মৌ করছে চারপাশে- মানুষ, গবাদিপশু, গাছ, ছনের ঘর পোড়ার গন্ধ; রক্ত পোড়ার উৎকট গন্ধ, মাংশ পোড়ার উটকো গন্ধ, বারুদের গন্ধে চারপাশ ছেয়ে গেছে। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই দীঘলিপাড় গ্রামটা মুহুর্তে শশ্মানে পরিনত হয়ে গেলো।

হারুর বাড়ির পোষা কুকুর ভোলা আর ওর সঙ্গিনী কুকুরটা উঠোনের একপাশে পড়ে আছে। কুকুরের ছানা দুটো উ... উ... শব্দে বারবার কেঁদে যাচ্ছে সব হারানো বেদনায়। ওদের পাশেই হারুর পাঁচ বছরের মেয়ে বিনতি দাঁড়িয়ে। এক মুহুর্তে এসব কি ঘটে গেল তা কিছুই সে বুঝতে পারে না। কেন-ই-বা এত চিৎকার চেচামেচি; আবার হঠাৎ করে সেগুলো কেন বন্ধ হয়ে গেল কিছুই জানে না সে। জানে না মা-বাবা'ই বা কেন এভাবে উঠানের মাঝে শুয়ে আছে। বিনতির একটু দূরে কপালে হাত রেখে সিধু পাগলা বসে আছে। তার ময়লা, ছেঁড়া জামা আর পুরনো লুঙ্গিতে রক্ত লেগে আছে।



পূবের আকাশে আলোর ফ্যাকাশে রেখ পরতে শুরু করেছে। হারুর ছোট্ট ছনের ঘরের পেছনে পুড়ে কালো হয়ে যাওয়া আমড়াগাছটাতে একটা পাখি উড়ে এসে বসে 'কুড়া কুটো... কুড়া কুটো' শব্দ করে ডাকল। ডাকটা শুনে ছয় বছরের মেয়ে বিনতির মুখের হাসি ফুটে উঠল। সিধু পাগলার কাছে ছুটে গিয়ে তার মুখখানা হাত দিয়ে তুলে বলল, "কাহু, কুটুম পাখি ডাহে, দেইক্ক কুটুম আইবো, মিলিটারি কুটুম আইবো, মা'য় কইছে।"

বিনতির কথা শুনে সিধুর পাগলার চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পরে যার অর্থ বিনতি বুঝে না। বাবা ঘুমালে তাকে ডেকে তোলা বারণ আছে তাই বিনতি উঠানে ঘুমিয়ে থাকা মা'য়ের প্রাণহীন দেহটা নেড়ে মাকে ডাকতে থাকে।

"মা, ও মা- উডো; দ্যাহো কুটুম পাখি ডাহে। মিলিটারি কুটুম কহন আইবো? কও না মা , কও না কহন আইবো। আমার লাইগা ভালা ভালা কি আনবো। ও মা উডো.....
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই নভেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৫
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×