পৃথিবীতে প্রায় ৩৫০০ প্রজাতির সাপ আছে যার মাঝে ২৫০ টি প্রজাতি বিষধর।এর মধ্যে এশিয়া তে আছে ২১৬ প্রজাতি যার মাঝে ৫২ প্রজাতি বিষধর।
এর মাঝে বিষধর সাপদের কে ৫ টি গোত্রে ভাগ করা হয়েছে--
Crotalidae- -Rattelsnake,Copperhead,Pit viper,Bushmaster
Viperidae- -Russel's viper.Puff adder,Saw scaled viper,Gaboon viper
Elapidae- Cobra,Krait,Taipan,Death adder,Mamba.
Colubridae- -Boom slang,Bird snake.
Hydrophidae or Sea snakes
এবার আসুন জেনে নেই আমাদের পাশে যে ৫ ধরনের বিষাক্ত সাপ পাওয়া যায় তাদের পরিচিতি বা তাদেরকে চেনার উপায়-
কোবরা বা গোখরা সাপ- এই সাপের ফনা আছে আর সহজে চেনার উপায় হলো এই ফনায় চশমা আকৃতির অথবা ডিম্বাকৃতির দাগ থাকে। লম্বায় প্রায় ২ মিটার পর্যন্ত হয়।বিষদাঁতের পাশে ছোট কিছু দাঁত থাকে।এই সাপের কামড়ে ১/২ থেকে ৬ ঘন্টার মধ্যে মৃত্যু ঘটতে পারে।
শন্খচূড় বা কিংকোবরা বা নাগরাজ এর ফনায় কোন রকম নক্শা থাকেনা।লম্বায় ৩-৪ মিটার পর্যন্ত হতে পারে।হলুদ,সবুজ,খয়েরি বা কালো রংয়ের হয়। গায়ে সাধারনত সাদা ডোরাকাটা থাকে।
গোখরা-
শন্খচূড় বা কিংকোবরা-
কমন ক্রেট বা শন্খিনী - মেটে নীল রংয়ের এই সাপের পেটের কাছে সাদাওপিঠের উপরে চকচকে সাদা দাগ কাটা থাকে।লেজটা গোলাকৃতির হয়।মাথায় একধরনের ঢাকনা থাকে নীচের চোয়ালের দুই পাশে চারটা করে ঢাকনার মত আশ থাকে। এরা স্বভাবে নিশাচর।
রাসেলস ভাইপার বা চন্দ্রবোড়া- এই সাপের মাথা চ্যাপ্টা ত্রিকোনাকৃতি এবং এতে সাদা রংয়ের ভি আকৃতির চিহ্ন আছে।এর গায়ে তিন সারিতে ডায়মন্ড শেপের কালো বা খয়েরী দাগ থাকে লেজ তুলনা মূলক ভাবে ছোট।এটি হিস হিস শব্দ করে। এই সাপের কামড়ে ১-২ দিনের মধ্যে মৃত্যু ঘটতে পারে।
দাড়াশ সাপ বা স স্কেলড ভাইপার- আধা মিটারের মত লম্বা এই সাপটির পেটের দু্ই পাশে আকাবাকা সাদা রংয়ের লাইন থাকে আর এর মাঝে ডায়মন্ড আকৃতির জায়গা থাকে। ত্রিকোনাকৃতির মাথায় পাখির পায়ের ছাপ আকৃতির বা তীর আকৃতির সাদা দাগ থাকে। লেজ ছোট ও চ্যাপ্টা।
পিট ভাইপার-এই সাপের নাক ও চোখের মাঝে একটি পিট বা ছিদ্র থাকে তাই এই নামকরন
আসুন জানে নেই এবার কিভাবে বিষধর ও নির্বিষ ও বিষধর সাপ আলাদা করা যায়-
মাথা দেখে-
চোখ দেখে-
দাত ও দাতের সারি দেখে-
লেজ দেখে-
এবার জেনে নেই কিছু জানা অজানা তথ্য-
১।সাপের বিষ-সাপের বিষ সাপের লালাগ্রন্থি নিসৃত লালারস। এই রস লাল গ্রন্থি থেকে একটি ফাপা নালী দিয়ে সাপের বিষদাতের মধ্যস্ত সরু নিলী দিয়ে নিসৃত হয়।বিষের তীব্রতা শীতনিদ্রার পর ও রাত্রিকালীন সময়ে বেশী থাকে। কোবরার ১২ মিগ্রা,চন্দ্রবোড়ার ১৫ মিগ্রা ওশন্খিনীর ৬ গ্রাম বিষই মৃত্যুর জন্য যথেষ্ঠ।
২।বিষদাত- বিষাক্ত সাপের চোয়ালের দুই পাশে দুটি বড় বিষ দাত থাকে ।এতে দাতের মাঝে ফাপা সরূ নালী থাকে যা দিয়ে বিষ লালাগ্রন্তি বায়ে নামে আসে।নির্বিষ সাপের দাতের মাঝে নিরেট থাকে তাছাড়াও সেখানে ছোট ছোট দাতের সারি থাকে।
৩।সাপে কামড়ালে সে যায়গার কিছু উপরে শক্ত বাধন দিতে হবে।খেয়াল রাখতে হবে যেন রক্ত চলাচল পুরোপুরি বন্ধ না হ্য় সেক্ষেত্রে হিতে বিপরীত হতে পারে।কারন বিষ দেহে লসিকা ও সুপার ফিসিয়াল ভেইন দিয়ে ছড়ায়।তাই খেয়াল রাখতে হবে যেন আর্টারী সাপ্লাই বন্ধ না হয়। কাটা জায়গার উপরে ১ ইন্চি মত জায়গা পরিষকার ব্লেড দিয়ে কেটে রক্ত ঝড়িয়ে দেয়া যেতে পারে।তবে তা কামড়ানোর ১০ মিনিটের মধ্যে হলে ভালো হয়। বাধন প্রতি ১০ মিনিট পরপর ৯০ সেকেন্ডের জন্য ঢিল দেয়া যেতে পারে।
৪।আক্রান্ত জায়গা নাড়াচড়া না করানো ভালো না হলে বিষ দ্রুত ছড়ানোর আশন্কা থাকে।
৫।কাটা জায়গায় বরফ না লাগিয়ে বরং পানি দিয়ে বার বার ধুইয়ে দেয়া উচিৎ।
৬।মনে রাখতে হবে সাপে কাটলে বিষক্রিয়ার চাইতে দ্রুত কাজ করে ভ্য়। আক্রান্ত ব্যাক্তিকে দ্রত হাসপাতালে নিন।
৭।কাপড়ের উপর দিয়ে সাপ বিষ ঠিক মত উগড়াতে পারেনা তাই সাপের ভ্য় থাকলে নিজেকে আবৃত রাখুন।
৮।সাপ শান্ত প্রানী বিরক্ত না হলে সাধারনত আক্রমন করেনা বললেই চলে। তাই সাপ দেখলে শান্ত থাকুন।আপনার কাছ থেকে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা নাই এটা বুঝতে পারলে সাপ আপনা আপনিই চলে যাবে।
৯।সাপের কামড়ের পর শক্ত বাধন দেয়ার কিছু ছবি দেয়া হলো-
অল্পের ভিতরে কিছু বললাম-আশাকরি এই গ্রীষ্মে বা আসন্ন বর্ষায় সতর্ক থাকবেন।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মার্চ, ২০১২ রাত ২:৫১