somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নফ্‌স ও রূহের পার্থক্য (পর্ব-৪)

১৪ ই অক্টোবর, ২০১১ ভোর ৪:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পড়ে দেখুন না! অজানা কিছু পাইলেও পাইতে পারেন!

পর্ব-১

পর্ব-২

পর্ব-৩

কোরান-এর ৮ নম্বর সূরা আন্‌নিসা-র ১৭১ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে ঃ "ইন্‌নামাল্‌(নিশ্চয়ই) মাসিহু(মসিহ) ইসাব্‌নু(ঈসা [যিনি] পুত্র) মারিয়ামা(মরিয়মের) রাসূলুল্লাহি(আল্লাহ্‌র রাসূল) ওয়া(এবং) কালিমাতুহু(তাহার কালাম) আল্‌কাহা(তিনি [আল্লাহ্‌] যাহা নিক্ষেপ করিয়াছিলেন) ইলা(দিকে) মারিয়ামা(মরিয়মের) ওয়া(এবং) রূহ্‌হুন্‌(রূহ্‌) মিন্‌হু(তাহার [আল্লাহ্‌র] হইতে)" অর্থাৎ, নিশ্চয়ই মরিয়মের পুত্র ঈসা মসিহ্‌ আল্লাহ্‌র রসূল এবং তাহার কালাম। তিনি (আল্লাহ) যাহা নিক্ষেপ করিয়েছিলেন মরিয়মের দিকে এবং তাহার (আল্লাহ্‌র) হইতে রূহ্‌।
এই আয়াতে ঈসা মসিহ্‌(আঃ) কে মরিয়মের পুত্র এবং আল্লাহ্‌র একজন রসূল এবং আল্লাহ্‌রই কালাম যাহা আল্লাহ্‌ মরিয়মের দিকে করেছিলেন এবং আল্লাহ্‌ হতে একটি রূহ বলা হয়েছে। এই আয়াতটির সামান্য ব্যাখ্যা লিখতে গিয়ে প্রথমেই যে-প্রশ্ন সবার মাঝে জেগে উঠবে উহা হলো, মরিয়মের পুত্র কেন বলা হলো? সবার পরিচয় বহন করে পিতার মাধ্যমে, কিন্তু ঈসা মসিহে্‌র বেলায় মায়ের পরিচয়ে তথা মরিয়মের পরিচয়ে তথা নারীর পরিচয় কেন পরিচিত করা হল? ইহার প্রধান কারন হলো প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মকে লঙ্ঘন করে পিতা ছাড়া ঈসা মসিহ-র জন্ম গ্রহন করাটা সম্পুর্ন একটি ব্যতিক্রমধর্মী বিষয় তথা ঘটনা। যদিও ইহা একটি বিষয় তথা ঘটনা, কিন্তু এই বিষয়টি তথা ঘটনাটি একটি অভাবনীয় বিস্ময়কর দৃস্টান্তস্বরূপ মানবজাতির সামনে আল্লাহ্‌ দাঁড় করিয়ে দিলেন। অন্যত্র আল্লাহ্‌ ঈসা মসিহ্‌কে একটি বিশেষ নিদর্শন বলেও অভিহিত করেছেন।এই ঈসা মিসিহ্‌ পিতা ছাড়া দুনিয়াতে আগমন করেছেন বলে কোরান-এর ভাষাটি হলো ঃ মরিয়মের দিকে নিক্ষেপ করা হয়েছে। পিতা-মাতার মিলনে যে সন্তান প্রকৃতির নিয়মে জন্ম গ্রহন করে, উহা একান্ত স্বাভাবিক ব্যাপার। স্বাভাবিক এবং নিক্ষেপ করার মাঝে আকাশ-পাতাল পার্থক্য। ইহা সবার চোখে ধরা পড়ে না। তাই পিতা ছাড়া ঈসা মসিহ্‌কে মরিয়মের দিকে নিক্ষেপ করা হয়েছে বলা হলো। তার পর বলা হলো জন্মলগ্ন হতেই ঈসা মসিহ্‌ আল্লাহ্‌র একজন রসূল। কোরান-এর অন্যত্র ঈসা মসিহ্‌কে নবী বলা হয়েছে, কিন্তু এখানে বলা হয়েছে আল্লাহ্‌র রসূল। তিনি রেসালাত এবং নবুয়ত উভয় গুনেগুনান্বিত। তারপর আল্লাহ্‌ ঈসাকে আরেক ধাপ উপরে উঠিয়ে বলছে 'কালিমাতুহু' তথা আল্লাহ্‌র কালাম। এবং তারপরে আবার আল্লাহ্‌ বললেন যে, ঈসা মসিহ্‌ 'ওয়া রুহুন মিনহু' তথা 'এবং তাহার হইতে রূহ'। প্রথমে রসুল, তারপরে আল্লাহ্‌র কালাম, তারপর আল্লাহ্‌ হতে একটি রুহ্‌ বলা হয়েছে। এখানে কিন্তু নফ্‌স বলা হয়নি কারন নফ্‌স হলো প্রান। এই নফ্‌স তথা প্রানের কথাটি না বলে আল্লাহ্‌র আদেশ তথা রূহ্‌ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। তাই এই রহস্যময় রূহ্‌-শব্দটির রহস্য বুঝতে না পেরে অনেকেই আবোল-তাবোল উল্টা-পাল্টা লিখেছেন। অবশ্য না বুঝেই এরকমটি করা হয়। অনেকে তো পন্ডিতি করে রূহ্‌কে পাঁচ ভাগে ভাগ করে ফেলেন, যেমন ১.রূহে ইনসানি ২. রুহে হায়ানি ৩. রূহে নাবাতি ৪. রূহে জামাদি ৫. রূহে বাতেনী। কি চমৎকার পাঁচ ভাগে ভাগ করার বাহারি লীলাখেলা! তবে একটা কথা না বলেই পারলাম না, আর সেটা হিলো রূহে হায়ানি তথা জীবজন্তুর রূহ্‌। সমগ্র কোরান-এর একটি আয়াতেও জীবজন্তুকে রুহ্‌ দান করার কথাটি পেলাম না, অথচ চোখ বুজে ইনারা জানোয়ারের মধ্যেও আল্লাহ্‌র রূহের আবিস্কারটি করে ফেলেছেন। এরাই আবার মারেফতের রহস্যগুলো গলা উঁচু করে পন্ডিতি ভাষায় লিখে চলেছেন। এই সব অখাদ্য-মার্কা মারেফতের গোপন বিষয়গুলো পড়ে-পড়ে সরল-সহজ অর্ধশিক্ষিত এবং শিক্ষিতরা ভুল পথে পরিচালিত হয়। ইহাও কি তকদিরের লীলাখেলা বলে চালিয়ে দেব? (চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই অক্টোবর, ২০১১ ভোর ৪:৩২
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

সচিব, পিএইচডি, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তারদের মুখ থেকে আপনি হাদিস শুনতে চান?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:৪৫


,
আপনি যদি সচিব, পিএইচডি, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তারদের মুখ থেকে হাদিস শুনতে চান, ভালো; শুনতে থাকুন। আমি এসব প্রফেশানেলদের মুখ থেকে দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি, সমাজনীতি, বাজেট,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×