মা,
তোমাকে শুধু মা বলেই সম্বোধন করলাম। এর
থেকে মধুর শব্দ এই পৃথিবীতে অাছে বলে
অামার মনে হয়না।
মা, অামি ভূলিনি তোমার শরীরের
একটি নল থেকে অক্সিজেন এসে আমাকে শ্বাস দিত।
তখনো আমার ফুসফুসটি চালু হয়নি,
কেবল তৈরী হচ্ছে। তোমার ভাত, মাছ, ডাল, সব্জি,
সব খাবারের ভাগ চুপি চুপি নিয়ে নিতাম অন্ধকার প্রকোষ্ঠে । মাঝে মাঝে চোখ- মুখ বন্ধ করে লাথি দিতাম, ব্যথা পেতে,
তবু তুমি রাগ করতে না। বরং নড়াচড়া না পেলে উদ্বিগ্ন হতে।
মা, আমি কিছুই খেতে পারতাম না। মোটেও দাঁত ছিল না।
এমন কি খাবারের কথাটা বলার মত ভাষা অামি জানতাম না।
তবু তুমি আমার ভাষা বুঝতে।
পৃথিবীর শুদ্ধ ভাষাবিদদের কাছে নিছক
কান্না হলেও তুমি এর মর্মার্থ বুঝতে।
একমাত্র তুমিই বুঝতে অামার কখন কি প্রয়োজন। Carbohydrate, Protein, Fat,
Minerals, Vitamins, Water যা যতটুকু লাগে তার
প্যাকেজ নিয়ে তুমি এগিয়ে আসতে আমার
ঠোঁটের মাঝে। সময় নেই, কান্ডজ্ঞান নেই
নির্বোধের মত মল-মূত্র ত্যাগ করে বড্ড বিরক্ত
ও বিব্রত করতাম তোমায়। তবুও তুমি রাগ করতে না।
পরম স্নেহ অার ভালবাসায় জড়িয়ে ধরতে অামাকে।
যেই অামি পৃথিবীর কোন ভাষাই বুঝতাম না,
সেই অামাকেই তুমি ঘুম পাড়ানির গান শুনাতে।
নতুন নতুন পোষাক পরিয়ে দিতে,
অামি নষ্ট করতাম, অাবার পরিয়ে দিতে।
রাতের বেলা তুমি নিশ্চন্তে
ঘুমাতে পারতে না, অামার জন্য। অামি
কেঁদে- কেঁদে উঠতাম, সারারাত তুমি
অামাকে পাহারা দিতে। স্কুলের জন্য তৈরি
করে দিতে, অার পথের দিকে তাকিয়ে
থাকতে অামি কখন ফিরবো, মা বলে
তোমাকে ডাকবো। মা, অামার অসুখ-বিসুখ
হলে তুমি বারবার অাল্লাহ্কে ডাকতে অার
চোখের পানি মুছতে। মাগো ও মা অামি
এভাবে রাতের পর রাত জেগে তোমার ভালবাসার
কথা লিখে শেষ করতে পারবোনা। শুধু অামার
জন্য এতটুকু দোয়া করো অামি যেন মৃত্যুর অাগ
পর্যন্ত তোমার এই ভালবাসার কথা ভূলে না যাই।
ইতি
তোমার খোকা।