somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বোকা মেয়ের ডায়রী.. .. ..১৯শে মার্চ,২০০৯ইং

১৯ শে মার্চ, ২০০৯ রাত ১২:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


.. ..ভালো আছি আমি।
আমাকে ছাড়া যতটা ভালো আছো তুমি, ঠিক ততটা ভালো আছি আমিও। বিশ্বাস করো- এতটুকু কম নয় তোমার থেকে।

ভালো আছি আমি। সুখেও আছি তোমার মতো।
শুধু আজ যখন লোডশেডিং আমার এলাকাটাকে ডুবিয়ে দিয়েছিল অন্ধকারে,আর আমি ছয় তলার ছাদের নিঃসঙ্গতায় ডুবে ডুবে যাচ্ছিলাম বসন্তের অপার্থিব জোসনার শরীরে.. .. ..সব কিছু কেন যেন ম্লান ঠেকছিল ভীষণ!
কংক্রীট নগরীর পাষাণ বুকে ছড়িয়ে পড়া রূপালী জোসনা,অপার রহস্য নিয়ে ঝিকমিকিয়ে ওঠা এক আকাশ নক্ষত্র,ছাদের এক কোণে সৌরভ ছড়ানো আমার লেবু গাছটা.. .. ..হঠাৎ করেই যেন নিস্প্রভ হয়ে এসেছিল তাদের সকল সৌন্দর্য্য আমার চোখে। হয়ে উঠেছিল প্রাণহীন,বিষন্ন।

এছাড়া আর সবকিছুই তো ঠিক আছে। বিশ্বাস করো,ভালো আছি আমিও।
শুধু মাঝে মাঝে কোনো ব্যস্ততম সড়কের ভীড়ে থমকে আসে আমার হৃদয়। পাশে পাশে চলতে থাকা কোলাহলমুখর নগরীটা সহসাই নিঃস্তব্ধ হয়ে যায় আমার কানে। পৃথিবী এগোয়,কেবল থমকে থাকি আমি.. .. ..
যখন কখনও নীলচে জিনস আর শুভ্র একটা শার্ট শরীরে জড়িয়ে হেঁটে যায় অপরিচিত কেউ। মুহূর্তের জন্যে তাকে তুমি ভেবে বড্ড ভ্রম হয় আমার। নেহাত অপরিচিত সেই মানুষটাকে বড় আপন লাগে ক্ষণিকের জন্যে.. ...
আর স্থবির হয়ে যায় আমার বর্ণহীন পৃথিবী!

কিন্তু বিশ্বাস করো ক্ষণিকের জন্যেই মাত্র। এছাড়া তোমার কথা একদম মনে করি না আমি।
একদম না।একটুও না।
শুধু সন্ধ্যার আলো-ছায়া প্রহরটাতে কলিংবেলে আওয়াজ হওয়া মাত্র দৌড়ে যাই দরজায়। স্মৃতির অবয়বে আটকে থাকা আমার ঘুণপোকা মনটা বাধ্য করে আমাকে।

লেবু গাছটাকে আজকাল আর আগের মত ভালোবাসতে ইচ্ছা করে না,বেলীর টবগুলোকে আর বলতে ইচ্ছা করে না-আসছে সিজনে ভালো মত ফুল ফোটাবি! আমগাছটায় আর ছাই দিতে ইচ্ছা করে না তোমার অপ্রিয় পোকাগুলি তাড়াতে। শুকনো পাতায় ক্রমশ ছেয়ে যেতে থাকে ছাদটা আমার অবহেলায়। বসন্ত আসে সবখানে,শুধু যেন এই ছাদটাতেই আসে না। আর নিজেকে আমার মনে হতে থাকে ছাদময় ফুটে থাকা গাঁদা ফুল গুলোর মতোই শুধু.. .. ..
রঙিন।
সৌরভবিহীন।

এটুকু ছাড়া ভালোই আছি আমি। অনেক ভালো আছি। হাসছি, ঘুরছি, তোমায় ছাড়া থাকছি.. .. ..
শুধু মাঝে মাঝে কখনও গভীর রাতে ঘুমটা ভেঙে যায়- বুকের গহীনে চাপা অস্বস্তি নিয়ে,দমবন্ধ করা একরকম অনুভব নিয়ে। আর বাকি রাতটা বসে বসে কাটে কম্পিউটার টার সামনে। রাত জাগি বলেই কিনা হয়তো,চোখ ভেঙে পানিও গড়ায়। অশ্রু নয়,পানি। কেবল পানিই।
তোমার জন্যে কাঁদি না আমি। অন্য নারীর একান্ত পুরুষের জন্যে কাঁদা যায় না।

তোমাকে তাই মনেও করি না আমি।
শুধু গতবছর যখন তোমার ভালোবাসায় প্রতারিত আমি ভীষণ অভিমানে পাড়ি জমাচ্ছিলাম অন্য শহরে,আর সেই তুমিই এসেছিলে আমাকে বাসে তুলে দিতে.. .. ..সেই মুহুর্ত গুলির কথা মনে পড়ে।
বাসটা যখন চলতে শুরু করেছিল আপন গন্তব্যের পথে,ক্ষণিকের জন্যে হলেও তোমার মুখোশে ঢাকা চেহারাটায় অসচেতন বেদনার ছায়া দেখেছিলাম আমি। যে বেদনা আমাকে বাধ্য করেছিল তোমায় ক্ষমা করতে, পৃথিবীর উপহাস মাথা পেতে নিয়ে আবার এসে ধরতে তোমার প্রতারক হাত।
আমি তো ধরেছিলাম ঠিকই,ধরিনি বলো?? এই পৃথিবীর সমস্ত কিছুকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে আমি ধরে রেখেছিলাম শুধু তোমার হাতটা। এক মুহুর্তের জন্যেও ছাড়িনি কখনও.. .. ..কখনও না!
তুমিই ধরে রাখতে পারোনি,ধরে রাখতে চাওনি বলেই। চেয়েছিলে আমি আঁকড়ে রাখি প্রাণপণে তোমার অস্তিত্ব,যেভাবে কোনো লতানো গাছ তার আশ্রয়দাতা বৃক্ষকে। চেয়েছিলে আমি ভালোবাসা দেই তোমাকে নিজেকে উজার করে,কিন্তু জবাবে ভালোবাসতে পারবে না তুমি।
তাই কি হয় কখনও? না হতে পারে?ভালোবাসা পেতেই তো তোমার কাছে যাওয়া আমার,ভালোবাসা পেতেই তো এত কাঙালিপনা.. ..

সে যাই হোক.. ..
শোনো-ভালো আছি আমি!
এতটা ভালো আছি আমি যে বসন্তের দিনগুলো এখন আর স্পর্শ করে না আমাকে।

সুখে আছি.. ..
ঠিক তোমার মতোই।
ঠিক যতোটা তুমি আছো।এতটুকু কম নয়!!!

(এই লেখার সমস্ত চরিত্র কাল্পনিক )


সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে মার্চ, ২০০৯ রাত ১:০২
৯টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×