somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সমাজের সংকট নিরুপন ও সমাধান জরুরী

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১২ দুপুর ১:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একটি সুস্থ ও স্বাভাবিক রাষ্ট্র গঠন করতে যেসব বিষয়কে ভিত্তি ধরা হয় 'শিক্ষা' নামক দার্শনিক বিষয়টি অন্যতম ও প্রধান অনুসঙ্গ। আমাদের ৫৬ হাজার বর্গ মাইলের এই ভুখন্ডে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হয়েছে ৯১ বছর। তারমধ্যে প্রথম ২৬ বছরে যারা পড়ালেখা করেছে তাদের অধিকাংশই ১৯৪৭ সালের ভারত-পাকিস্তান বিভক্তির ফলে পার্শ্ববর্তী দেশে পাড়ি জমিয়েছে। ভারত থেকে এসেছে এমন সংখ্যা যে পরিমানে ভারতে গেছে তারচেয়ে অনেক কম। উপরন্তু যারা এসেছে সেখানে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকের চেয়ে আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যাই বেশি। আলীগড়ের কথা এজন্যই বলছি যে, গয় শতকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকেই পৃথিবী যেদিকে পথ চলছে আলীগড়ের স্নাতকগন উচ্চশিক্ষিত হলেও তাঁরা মুলত ধর্মীয় জাতীয়তাবাদের রাজনৈতিক অনুসারীই। সেজন্য বলা যায়, দেশ ভাগের ফলে আমরা পাওয়া থেকে হারিয়েছি অনেক বেশি।

তারপরে ১৯৪৭ সাল থেকেই আমাদের পূর্বপুরুষেরা ব্যাস্ত থেকেছে ভাষা, স্বায়ত্বশাসন, স্বাধীকার আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় স্বাধীনতা অর্জনের প্রস্তুতি গ্রহনে। আক্ষরিক অর্থেই পরাধীন বাংলায় সকল শ্রেণী পেশার মানুষ রাজনৈতিক আন্দোলনে মনোনিবেশ করেছিল। তাঁরা আমাদেরকে একটি দেশ এনে দিয়েছে।

তারপরে শুরু দেশ গঠন। কিন্তু সমস্যা হলো দক্ষ জনবল। সকলেই দেশোদ্ধারের আন্দোলনে যোগ দেওয়ায় দক্ষ জনশক্তি গড়ে উঠেনি বলেই বঙ্গবন্ধু সরকারকে হিমশিম খেতে হয়েছে বরাবরই। এই সংকটকে কাটিয়ে উঠার সকল রাজনৈতিক চেষ্টাকেই সামরিক-বেসামরিক আমলাতান্ত্রিকতায় ব্যর্থ প্রতিপন্ন করতে একাট্টা হয়েছিল ব্রিটিশদের ফেলে যাওয়া সকল প্রশাসনযন্ত্র। এই প্রশাসনযন্ত্র ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ফেলে যাওয়ার পরে পাকিস্তানের কব্জির প্যাচমোচড়ে হস্তগত হয়েছিল সর্বগ্রাসী মার্কিনীদের। এই প্রশাসনের একটা বিরাট অংশ পাকিস্তানের অখন্ডতা রক্ষায় নিরলস কাজ করেও ব্যর্থ হয়। কেননা, এদেশের রাজনীতিতে ১৯৪৭ এর পর থেকেই যে দ্রুততার সহিত জনতা স্বদেশীয় আচরনের ব্যাপ্তি ছড়িয়েছে প্রশাসন ছিল তার থেকে শতমাইল দূরে। প্রশাসনের খুব ক্ষুদ্র অংশ মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিলেও পরবর্তীতে দক্ষ জনবলের অভাবে সকলকেই একীভুত করে আগের ধারাবাহিকতায় যাত্রা শুরু করে আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশের প্রশাসনযন্ত্র।

প্রশাসনের পোয়াবারো শুরু পঁচাত্তরের মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের পরে ব্যাপকারে বৃদ্ধি পায়। রাজনীতির বিভাজন বৃদ্ধি হলেও প্রশাসন বরাবরই তাদের সুবিধার ক্ষেত্রে একজোট।

এখানে আবারও আসতে হয় সেই শুরুর কথা 'শিক্ষা' নিয়ে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে দেশ গঠনের জন্য শিক্ষার প্রসার ঘটানো শুরু হতে হতেই পঁচাত্তর এসে গেলো। তারপরের বাস্তবতা হলো বঙ্গবন্ধু সরকারের সময়ে কেউ হয়ত একটা অন্যায় করে ফেলেছে, সে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়েছিল বা যেকোন ভাবেই হোক মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি হিসেবে নিজেকে হয়ত ক্ষমার জায়গায় পৌঁছুতে পেরেছে। কিন্তু কোনোভাবেই অন্যায়কে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া হয়নি। কিন্তু সামরিক শাসনের শুরু থেকেই রাষ্ট্রে আইন করে অন্যায় করার বৈধতা দেওয়া শুরু করে। যেকারনে ক্ষমা প্রাপ্তি বা ভয়ের কোনো বালাই ছিলনা। রাষ্ট্রযন্ত্রই বলে দিয়েছে তুমি অন্যায় করো। আর এক্ষেত্রেই সবচেয়ে বড় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমাদের শিক্ষা তথা ছাত্ররা। এমন অস্থিরাবস্থা থেকেই আমরা পেয়েছি রাজনৈতিক নেতা ও সামরিক-বেসামরিক আমলা। আবারো দেশ গঠনের জন্য দক্ষ জনবলের শুন্যতার জন্ম। সেই প্রজন্মই এখন আমাদের সার্বিক কর্মসূচী প্রনয়ন করছে এবং বন্দুক তাক করে রেখেছে।

এখন প্রশ্ন হলো এমনিতেই আমরা প্রাকৃতিক সংকটে যাত্রা শুরু করেছিলাম। একাত্তরকে প্রাকৃতিক বলাই শ্রেয়। তারপরে পরিকল্পিতভাবে অদক্ষতার আনয়ন। এগুলোকে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়ার উপায় নেই। কারন এগুলো আমাদের প্রায় সকলের সুবিধা-অসুবিধার অংশীদার। তাই বিবেকবান মানুষের উচিত আমাদের সুস্থ ও স্বাভাবিক দেশ নির্মাণের যেসব শর্ত জরুরী সেগুলো নিরুপন। কারন একটা কিছু চাইলেই পাওয়া যায়না। পেতে হলে কিছু শর্ত মেনে চলতে হবে। আবার সেই শর্তগুলো পুরনের জন্য পরিবেশ তৈরি করতে হবে। কাজেই সেই পরিবেশ তৈরি করতে হলে কী কী থাকা লাগবে সেগুলো নির্ধারণ জরুরী। সেইমতো দর্শন শাস্ত্রমতে প্রশ্ন উত্থাপন, বিজ্ঞানের মাধ্যমে প্রশ্নের সমাধান এবং আমাদের অপর্যাপ্ত ভুমিতেই পরিশ্রমের মাধ্যমে অর্থের বহমানতা নিশ্চিত করে পথ চলতে হবে। এভাবে হয়ত একধরনের স্থিতিশীলতার নাগাল পাওয়া যেতে পারে। তাই দর্শনগতভাবে রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো সম্পর্কে প্রশ্ন উত্থাপন ও উত্তর খোঁজার নিমিত্তে বিজ্ঞান সম্মতভাবে সেসব প্রশ্নের উত্তরের সমাধান ও ব্যবহারগত বিষয়টিকেই এখানে গুরুত্ব দিয়েছি।

পুনশ্চঃ বাংলাদেশে সামাজিক বিজ্ঞান তথা সামাজিক জ্ঞানকাঠামো ভিত্তি গড়ার আগেই বিজ্ঞানকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে অপরদিকে বিজ্ঞান অপরিপক্ক থাকতেই কিছু মানুষের অর্থের প্রবাহতায় মানুষ লোভী হতে বাধ্য হয়েছে। যা সুস্থ ও স্বাভাবিক দেশ গঠনের পুরোপুরি অন্তরায়।
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের বিধান হতে হলে কোন কথা হাদিসে থাকতেই হবে এটা জরুরী না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৫



সূরাঃ ৫ মায়িদাহ, ৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩। তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত, রক্ত, শূকরমাংস, আল্লাহ ব্যতীত অপরের নামে যবেহকৃত পশু, আর শ্বাসরোধে মৃত জন্তু, প্রহারে মৃত... ...বাকিটুকু পড়ুন

লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন সম্রাট সাদ্দাম, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১:৫৪

ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।



মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশ এগিয়ে যাচ্ছে; ভাবতে ভালই লাগে

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৩


বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল নেতিবাচক। একই বছরে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ১ শতাংশ। ১৯৭৩ সালে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭... ...বাকিটুকু পড়ুন

×